সবাই যখন চলে গেল হুদো আলিকে একা ফেলে। তাঁর গ্রামকে ফেলে সে যেতে পারেননি। এখানে প্রতি নিঃশ্বাসে তাঁর বাপ দাদার ঘামের গন্ধ পান। মায়ের আদরের স্পর্শ এখনো চোখ বন্ধ করলে অনুভব করেন। জীবন যখন একটাই তখন আবার কোথায় যাবেন? তিনি অনড়। বড়ো ছেলে কামাল বার বার তাঁকে নিয়ে যেতে চেয়েছে। তিনি কিন্তু সে কথায় কর্ণপাত করেননি। বরং তিনি বলেছেন, কামাল, তুই যা। এখানে ছেলে মেয়েকে রেখে ভালো স্কুলে পড়াতে পারবি না। তোর কাজ যখন শহরে। সেখানেই গিয়ে থাক। বউমাও তাই চাইছে।
হুগলী চাঁপদানিতে আখাড়ার অস্ত্র যাত্রা সূচনা হয়, ২০১০ সাল থেকে। তখন লাঠি, বাঁশ হাতে মিছিল করতেন কিছুজন গেরুয়াধারী। প্রধানত, ২০১৬-২০১৭ পর থেকে রামের ভাসানে অস্ত্রের ঝনঝনানি, মুসলমানের কার্যত বনধ পালন করা শুরু হয়। তা স্বচক্ষে দেখে আপ্লুত সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি। এই অনুষ্ঠান থেকে স্যোশাল মিডিয়ার পোস্টের মাধ্যমে রাজ্যবাসীকে জানিয়েছেন, "রামনবমী উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রায় আজ অংশগ্রহণ করেছিলাম, চাঁপদানী বিধানসভায়। সাধারণ মানুষ এবং দলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আবার বুঝলাম, মানুষ সম্প্রীতির পক্ষে, শান্তির পক্ষে, মানুষের পক্ষে। কিন্তু এই কথার সত্যতা কী ? আসলে এই আখাড়াগুলোই কি আছে বাংলায় সাম্প্রদায়িক হিংসার পিছনে ?
হিন্দু মেয়েদের ‘রক্ষা’ করতে যেমন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো সদা তৎপর, তেমনি মুসলিম মেয়েদের প্রতি যৌন হিংসাকে অনেক সময় হিন্দু পুরুষের ‘কর্তব্য’ হিসেবে দেখা হয়। আরএসএসের পথপ্রদর্শক সাভারকর তাঁর লেখায় শিবাজীর সমালোচনা করেন, কারণ তিনি মোঘলদের সাথে যুদ্ধের সময় মুসলিম নারীদের ধর্ষণের নির্দেশ দেননি। তাই বিজেপি ক্ষমতায় আশার পর থেকে কেন্দ্রীয় আর ডাবল ইঞ্জিন সরকারগুলির প্রত্যক্ষ মদতে পুনর্নিমিত হচ্ছে ‘রাম’ ও ‘শিবাজী’র চরিত্র—তারা আর ভক্তি বা ন্যায়ের প্রতীক নন, বরং অস্ত্রধারী, আগ্রাসী পুরুষত্বের প্রতীক।
বহু মানুষ বহু কথা বলছেন, চাকরিহারা শিক্ষকদের ডেকে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিচ্ছেন, কিন্তু অনিশ্চিত হয়ে যাওয়া একজন মানুষের জীবন সেই সব কথা শুনতে নারাজ। তাঁদের দাবি, তাঁদের ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। আন্দোলন করতে গিয়ে জুটছে পুলিশের লাথি, লাঠি। সদ্য চাকরি হারা এক শিক্ষিকার আখ্যান থাকলো আপনাদের সামনে। কী করা উচিৎ, ভাবুন। এই মানুষদের হয়ে কথা না বলে শুধু রাজনীতি আপনি করতেই পারেন, কিন্তু তাতে কি খুব কিছু লাভ হবে?
শুভেন্দু অধিকারীরা আওয়াজ তুলেছেন, হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই! সারা রাজ্যে পোস্টার পড়েছে, হিন্দুদের ভোট যেন তৃণমূল কংগ্রেসে না যায়! ভোট আসলেই হিন্দুত্ববাদীদের হিন্দুদের কথা মনে পড়ে। এদিকে সারা দেশে হিন্দু জনসংখ্যার গরিষ্ঠ অংশের অবস্থা কী? ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গোটা দেশে দলিতদের ওপর সবর্ণদের অত্যাচার মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দলিত নির্যাতন, দলিত মহিলাদের ধর্ষণ, খুন চরমে উঠেছে। আর এ ব্যাপারে এগিয়ে আছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি।
২০১৬ সালের এস এস সি নিয়োগে শাসক দলের ওপর তলা থেকে নীচের তলার নেতাদের ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে গ্রুপ সি, ডি নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ এর সমস্ত নিয়োগই এক কলমের খোঁচায় পুরো বাতিল করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এখন এসএসসির ২৫০০০ শিক্ষক বাতিলের সুপ্রীম কোর্টের রায়ের পরে আবার দুর্নীতি ইস্যু সামনে এসেছে। এই ইস্যুতে সরকার পরে গিয়ে তো আর নতুন বাম সরকার হবে না, হবে বিজেপির সরকার। আর বিজেপি এলে সরকারি স্কুলগুলো উঠে গিয়ে সেখানে আদানি, আম্বানি দের মত বড় বড় কর্পোরেট দের নামী স্কুল খোলার পথই প্রশস্ত হবে। সেই জন্যেই কি এই ধরনের অমানবিক রায়?
(১) অবশেষে আর্য আর ইরার বিয়েটা হয়েই গেল। পরেরদিন ইরার মা মন্দিরে পুজো দিয়ে এসে ওর বাবার কানেকানে বলল—যাক বাঁচা গেছে। একত্রিশ বছরের নাকউঁচু মেয়ে শখানেক ছেলেকে রিজেক্ট করার পরে ফাইনালি স্বেচ্ছায় বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে, এই অনেক। আমাদের দুশ্চিন্তা ও আর কী বুঝবে!
আসছে ৬ই এপ্রিল রামনবমীর 'শোভাযাত্রা'। উদ্বিগ্ন গ্রামের কৃষক, মফস্বল, শহরের শ্রমিক মহল্লা, ক্ষুদ্র ব্যবসাদার, অধিকাংশ মেয়েরা। দাঙ্গাপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে এই সময়ে বড় অংশের সংখ্যালঘু, দলিত শ্রমিকেরা থাকবার জায়গাগুলোর পরির্বতন করেছেন। 'স্পর্শকাতর' অঞ্চলগুলোতে কাজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। অনেক সংখ্যালঘু শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, যখন তখন 'দাঙ্গা' লেগে যাওয়ার ভয়ে সেই দিনটিতে তাঁরা কেউ পরিবার ছেড়ে ঘর থেকে বেরোবেন না। এ বিষয়ে গভীর ভাবে চিন্তিত বুদ্ধিজীবী মহল, প্রগতিশীল নানা গণসংগঠনগুলো। রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনও বিবৃতি দিয়েছে।
বন্ধুবান্ধবরা একজায়গায় হলে কোনও না কোনও সময় ভূতের গল্প কখনও না কখনও করেনি, এটা কখনো হয়নি। সুরমা, সবিতারাও করেছিল। তখন তাদের উচ্ছ্বল কলেজ জীবন। সেদিন মানে সেই সন্ধ্যায় হস্টেলে আড্ডাটা একেবারে জমে ক্ষীর হয়ে উঠেছিল।
মার্ক্সবাদের অনুশীলন ও অনুসরণকারীদের অনেকেরই বোধ হয় জানা নেই, ১৯৯০-এর দশক থেকে মার্ক্স এঙ্গেলসের সমগ্র রচনাবলি (Marx-Engels Gesamtausgabe, MEGA) প্রকাশের সাম্প্রতিক প্রকল্পের অঙ্গ হিসাবে মার্ক্সের চিন্তাধারার সঙ্গে এঙ্গেলস প্লেখানভ লেনিন স্তালিন প্রমুখ সমস্ত মার্ক্স-উত্তর মার্ক্সবাদীদের চিন্তাভাবনার একটা বিরোধ দেখানোর একটা ভুবন জোড়া প্রয়াস শুরু হয়েছে। এই প্রকল্প যদি সফল হয় তবে গত প্রায় ১৮০ বছরের মার্ক্সবাদী রাজনীতি চর্চা এবং বিপ্লবের ইতিহাস সম্পূর্ণ অমার্ক্সবাদী বলে পরিত্যাগ করতে হবে। সুতরাং আমরা যারা মার্ক্সবাদের মার্ক্স উত্তর ধারাবাহিকতায় আস্থা রাখি, তাঁদের এই ব্যাপারে খোঁজখবর রাখতে হবে এবং প্রয়োজন মতো বিতর্কে অংশগ্রহণও করতে হবে। পিটার হুডিস নামক আরও একজন বুদ্ধিজীবীর ২০০৪ সালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধের উপরে আমি কয়েক দিন আগে কিছু সমালোচনামূলক বক্তব্য লেখার পরেই আর একটি সাম্প্রতিক রচনার সন্ধান পেলাম। নীচে তার সম্পর্কেই দুচার কথা।
মার্ক্সবাদের অনুশীলন ও অনুসরণকারীদের অনেকেরই বোধ হয় জানা নেই, ১৯৯০-এর দশক থেকে মার্ক্স এঙ্গেলসের সমগ্র রচনাবলি (Marx-Engels Gesamtausgabe, MEGA) প্রকাশের সাম্প্রতিক প্রকল্পের অঙ্গ হিসাবে মার্ক্সের চিন্তাধারার সঙ্গে এঙ্গেলস প্লেখানভ লেনিন স্তালিন প্রমুখ সমস্ত মার্ক্স-উত্তর মার্ক্সবাদীদের চিন্তাভাবনার একটা বিরোধ দেখানোর একটা ভুবন জোড়া প্রয়াস শুরু হয়েছে। এই প্রকল্প যদি সফল হয় তবে গত প্রায় ১৮০ বছরের মার্ক্সবাদী রাজনীতি চর্চা এবং বিপ্লবের ইতিহাস সম্পূর্ণ অমার্ক্সবাদী বলে পরিত্যাগ করতে হবে। সুতরাং আমরা যারা মার্ক্সবাদের মার্ক্স উত্তর ধারাবাহিকতায় আস্থা রাখি, তাঁদের এই ব্যাপারে খোঁজখবর রাখতে হবে এবং প্রয়োজন মতো বিতর্কে অংশগ্রহণও করতে হবে। পিটার হুডিস নামক আরও একজন বুদ্ধিজীবীর ২০০৪ সালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধের উপরে আমি কয়েক দিন আগে কিছু সমালোচনামূলক বক্তব্য লেখার পরেই আর একটি সাম্প্রতিক রচনার সন্ধান পেলাম। নীচে তার সম্পর্কেই দুচার কথা।
বন্ধুবান্ধবরা একজায়গায় হলে কোনও না কোনও সময় ভূতের গল্প কখনও না কখনও করেনি, এটা কখনো হয়নি। সুরমা, সবিতারাও করেছিল। তখন তাদের উচ্ছ্বল কলেজ জীবন। সেদিন মানে সেই সন্ধ্যায় হস্টেলে আড্ডাটা একেবারে জমে ক্ষীর হয়ে উঠেছিল।
মানব স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকারক প্রভাবের কারণে ১৯৯৩ সাল থেকে ভারত সরকার এ্যাসবেস্টস খনন নিষিদ্ধ করেছে। তবু এটি এখনও ক্রাইসোটাইল এ্যাসবেস্টস আমদানি এবং ব্যবহারের অনুমতি দেয়, যা হোয়াইট এ্যাসবেস্টস নামেও পরিচিত, মূলত নির্মাণ উদ্দেশ্যে যেমন এ্যাসবেস্টস-সিমেন্ট ছাদ এর জন্য।
এই ঔরঙ্গজেব সংক্রান্ত বিতর্ক শুধু আরএসএস বা বিজেপির মস্তিষ্কপ্রসূত নয়। যে কোনো ক্ষমতাবান রাষ্ট্রশক্তির কাছে, বিশেষত পশ্চিমের ক্ষমতার কাছে ঔরঙ্গজেব ছিলেন বিপদজনক। ঔরঙ্গজেব সহ গোটা মুঘল যুগকে অস্বীকার করার মধ্য দিয়ে আসলে ভারতের সবচেয়ে গৌরব জনক যুগ কে অস্বীকার করার অপচেষ্টা। এমন এক যুগ যখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ভারত হয়েছিল বিশ্বের সমৃদ্ধতম অঞ্চল। মুঘল যুগের পর থেকেই এই গৌরবের অস্তগামিতা শুরু হয়।
শাসক শ্রেণীর প্রোপাগান্ডায় রাষ্ট্রযন্ত্রে যখন 'আইনি' ও 'বেআইনি' এবং দেশদ্রোহিতার প্রসঙ্গ উঠে আসে তখন এদেশের মাটির চরিত্র, ইতিহাসকে প্রশ্ন করতে হয়, কারা এসবের বিরুদ্ধে কাজ করে আসছে? কারা আদতে দেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে? আদপে দেশের মাটির বিরুদ্ধে যারা কাজ করছে, যারা দেশের ইতিহাসের বিরুদ্ধে কাজ করছে, যারা দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করছে, এদেশের নির্বাচন পরিচালনা করছে, দেশের জনগণের সম্পদ লুঠ করছে, তারাই যে প্রকৃত দেশদ্রোহী, এ কথা একটি নিষ্পাপ শিশুও বোঝে।
সম্প্রতি ইলন মাস্ক সামাজিক নিরাপত্তাকে "সবচেয়ে বড় পঞ্জি স্কিম" বলে অভিহিত করেছেন এবং ভুল তথ্য ছড়িয়েছেন যে মৃত শতবর্ষীরা এখনো সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধা পাচ্ছেন। তবে, সরকারি কর্তৃপক্ষ এই দাবিগুলো নাকচ করেছে। রিপাবলিকানরাও মাস্কের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং বলেছেন যে সামাজিক নিরাপত্তা, মেডিকেয়ার বন্ধের কোনো পরিকল্পনা নেই। মাস্কের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টেসলা ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর হামলার ঘটনা বেড়েছে।