পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh
ব্যঙ্গচিত্র

পুরানো লেখাগুলি

কে কার অলঙ্কার?

আধুনিক যুগে পেট্রোলিয়াম হল জ্বালানি ও শক্তির অন্যতম উৎস। পরিবেশ আন্দোলনকারী দের অনেকেই মনে করেন, পেট্রোলিয়াম বেশি কার্বন নিঃসরণ করে। সেই বিচারে বায়োফুয়েল ইথানল অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব। এই ধারণা বেশ কিছু পরিবেশ আন্দোলনকারীর ভাবনায় ঢুকে গেছে। ফিদেল কাস্ত্রো এই ধারণার ভ্রান্তি গুলি দূর করতে বেশ কিছু নামিদামি অধ্যাপক গবেষকদের লেখা পত্র ও মতামতের সাহায্য নিয়েছিলেন। লক্ষ্যণীয় পরিবেশ কর্মীর চিন্তা ও দাবি গুলি কিভাবে পুঁজিবাদের স্বার্থের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে যায়।

‘ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র…..’

প্রশ্নটা কেবল প্রীতির নয়, প্রশ্নটা অধিকারের দায়িত্বের সম্মানের আত্মপরিচয়ের। সেইখানেই হিন্দু-মুসলমানের সাম্প্রদায়িকতা। দাঙ্গা তার খুব ক্ষণসাময়িক একটা প্রকাশ মাত্র। প্রতিদিনই আমাদের সমাজে যে মানসিক দাঙ্গা ঘটে চলেছে, মানসিক বিচ্ছেদের যে বিস্তার ছড়ানো আছে আমাদের পরস্পরের অজানা-অচেনায় তার চেয়ে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িকতা আর কিছু নেই।” লিখেছিলেন শঙ্খ ঘোষ। আজ মুর্শিদাবাদ জেলার সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরে এই কথাগুলোই আবার মনে করতে হচ্ছে।

উন্নয়নের পথ না ঋণের জাল?

২০২৫ সালে ভারতের সরকারি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩.৫৮ ট্রিলিয়ন ডলার, যা আমাদের টাকায় প্রায় ২৯৫ লক্ষ কোটি। পশ্চিমবঙ্গের ঋণ এখন ৬.৯৩ লক্ষ কোটি টাকা। এই বিশাল ঋণ নিয়ে একটা বড় প্রশ্ন উঠছে—এটা কি আমাদের উন্নতির পথ দেখাচ্ছে, নাকি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমস্যা বাড়াচ্ছে? এই ঋণের পরিমাণ, এর ভালো-মন্দ দিক, সমস্যা আর সমাধান নিয়ে আলোচনা করলে বুঝতে পারি কি পরিস্থিতির মধ্যে আমরা আছি।

তৃণমূল এবং বিজেপির ক্ষমতার দড়ি টানাটানির শিকার কমবেশি ১৭-১৮ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী

শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগ নিয়ে শাসকদল তৃণমূল, তাদের নেতৃত্ব, মায় মন্ত্রীসভা বিপুল দুর্নীতি করেছে, যা তৃণমূলের স্বভাবসিদ্ধ, এবং ধরা পড়ে যাওয়াতে সেই দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার অপরিসীম কিন্তু অপরিণত চেষ্টা করেছে।কিন্তু তা বলে সুপ্রীম কোর্টকে ছাড় দেওয়া যায়? তাঁরা কি এর আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংবিধানের কথা মাথায় রেখেছে? যোগ্য শিক্ষকরা কিন্তু তৃণমূলের দুর্নীতি এবং সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এখনও আন্দোলনে আছেন এবং যতদিন না দাবি আদায় হয়, রাস্তায় থাকবেন।

বিকেলের চাতক

সবাই যখন চলে গেল হুদো আলিকে একা ফেলে। তাঁর গ্রামকে ফেলে সে যেতে পারেননি। এখানে প্রতি নিঃশ্বাসে তাঁর বাপ দাদার ঘামের গন্ধ পান। মায়ের আদরের স্পর্শ এখনো চোখ বন্ধ করলে অনুভব করেন। জীবন যখন একটাই তখন আবার কোথায় যাবেন? তিনি অনড়। বড়ো ছেলে কামাল বার বার তাঁকে নিয়ে যেতে চেয়েছে। তিনি কিন্তু সে কথায় কর্ণপাত করেননি। বরং তিনি বলেছেন, কামাল, তুই যা। এখানে ছেলে মেয়েকে রেখে ভালো স্কুলে পড়াতে পারবি না। তোর কাজ যখন শহরে। সেখানেই গিয়ে থাক। বউমাও তাই চাইছে।

আখাড়া: রামের ভাসান অস্ত্রের নয়

হুগলী চাঁপদানিতে আখাড়ার অস্ত্র যাত্রা সূচনা হয়, ২০১০ সাল থেকে। তখন লাঠি, বাঁশ হাতে মিছিল করতেন কিছুজন গেরুয়াধারী। প্রধানত, ২০১৬-২০১৭ পর থেকে রামের ভাসানে অস্ত্রের ঝনঝনানি, মুসলমানের কার্যত বনধ পালন করা শুরু হয়। তা স্বচক্ষে দেখে আপ্লুত সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি। এই অনুষ্ঠান থেকে স্যোশাল মিডিয়ার পোস্টের মাধ্যমে রাজ্যবাসীকে জানিয়েছেন, "রামনবমী উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রায় আজ অংশগ্রহণ করেছিলাম, চাঁপদানী বিধানসভায়। সাধারণ মানুষ এবং দলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আবার বুঝলাম, মানুষ সম্প্রীতির পক্ষে, শান্তির পক্ষে, মানুষের পক্ষে। কিন্তু এই কথার সত্যতা কী ? আসলে এই আখাড়াগুলোই কি আছে বাংলায় সাম্প্রদায়িক হিংসার পিছনে ?

হিন্দুত্ববাদের পোড়া দুপুরে হিন্দুরাষ্ট্রের বৈশালীদের গল্প

হিন্দু মেয়েদের ‘রক্ষা’ করতে যেমন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো সদা তৎপর, তেমনি মুসলিম মেয়েদের প্রতি যৌন হিংসাকে অনেক সময় হিন্দু পুরুষের ‘কর্তব্য’ হিসেবে দেখা হয়। আরএসএসের পথপ্রদর্শক সাভারকর তাঁর লেখায় শিবাজীর সমালোচনা করেন, কারণ তিনি মোঘলদের সাথে যুদ্ধের সময় মুসলিম নারীদের ধর্ষণের নির্দেশ দেননি। তাই বিজেপি ক্ষমতায় আশার পর থেকে কেন্দ্রীয় আর ডাবল ইঞ্জিন সরকারগুলির প্রত্যক্ষ মদতে পুনর্নিমিত হচ্ছে ‘রাম’ ও ‘শিবাজী’র চরিত্র—তারা আর ভক্তি বা ন্যায়ের প্রতীক নন, বরং অস্ত্রধারী, আগ্রাসী পুরুষত্বের প্রতীক।

সদ্য চাকরি হারা এক শিক্ষিকার কথা

বহু মানুষ বহু কথা বলছেন, চাকরিহারা শিক্ষকদের ডেকে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিচ্ছেন, কিন্তু অনিশ্চিত হয়ে যাওয়া একজন মানুষের জীবন সেই সব কথা শুনতে নারাজ। তাঁদের দাবি, তাঁদের ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। আন্দোলন করতে গিয়ে জুটছে পুলিশের লাথি, লাঠি। সদ্য চাকরি হারা এক শিক্ষিকার আখ্যান থাকলো আপনাদের সামনে। কী করা উচিৎ, ভাবুন। এই মানুষদের হয়ে কথা না বলে শুধু রাজনীতি আপনি করতেই পারেন, কিন্তু তাতে কি খুব কিছু লাভ হবে?

আরও পুরানো লেখাগুলি

সংসার

(১) অবশেষে আর্য আর ইরার বিয়েটা হয়েই গেল। পরেরদিন ইরার মা মন্দিরে পুজো দিয়ে এসে ওর বাবার কানেকানে বলল—যাক বাঁচা গেছে। একত্রিশ বছরের নাকউঁচু মেয়ে শখানেক ছেলেকে রিজেক্ট করার পরে ফাইনালি স্বেচ্ছায় বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে, এই অনেক। আমাদের দুশ্চিন্তা ও আর কী বুঝবে!

আজ থেকে পাঠশালা বন্ধ

২০১৬ সালের এস এস সি নিয়োগে শাসক দলের ওপর তলা থেকে নীচের তলার নেতাদের ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে গ্রুপ সি, ডি নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ এর সমস্ত নিয়োগই এক কলমের খোঁচায় পুরো বাতিল করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এখন এসএসসির ২৫০০০ শিক্ষক বাতিলের সুপ্রীম কোর্টের রায়ের পরে আবার দুর্নীতি ইস্যু সামনে এসেছে। এই ইস্যুতে সরকার পরে গিয়ে তো আর নতুন বাম সরকার হবে না, হবে বিজেপির সরকার। আর বিজেপি এলে সরকারি স্কুলগুলো উঠে গিয়ে সেখানে আদানি, আম্বানি দের মত বড় বড় কর্পোরেট দের নামী স্কুল খোলার পথই প্রশস্ত হবে। সেই জন্যেই কি এই ধরনের অমানবিক রায়?

আখ্যান

আজ থেকে পাঠশালা বন্ধ

২০১৬ সালের এস এস সি নিয়োগে শাসক দলের ওপর তলা থেকে নীচের তলার নেতাদের ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে গ্রুপ সি, ডি নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ এর সমস্ত নিয়োগই এক কলমের খোঁচায় পুরো বাতিল করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এখন এসএসসির ২৫০০০ শিক্ষক বাতিলের সুপ্রীম কোর্টের রায়ের পরে আবার দুর্নীতি ইস্যু সামনে এসেছে। এই ইস্যুতে সরকার পরে গিয়ে তো আর নতুন বাম সরকার হবে না, হবে বিজেপির সরকার। আর বিজেপি এলে সরকারি স্কুলগুলো উঠে গিয়ে সেখানে আদানি, আম্বানি দের মত বড় বড় কর্পোরেট দের নামী স্কুল খোলার পথই প্রশস্ত হবে। সেই জন্যেই কি এই ধরনের অমানবিক রায়?

সংসার

(১) অবশেষে আর্য আর ইরার বিয়েটা হয়েই গেল। পরেরদিন ইরার মা মন্দিরে পুজো দিয়ে এসে ওর বাবার কানেকানে বলল—যাক বাঁচা গেছে। একত্রিশ বছরের নাকউঁচু মেয়ে শখানেক ছেলেকে রিজেক্ট করার পরে ফাইনালি স্বেচ্ছায় বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে, এই অনেক। আমাদের দুশ্চিন্তা ও আর কী বুঝবে!

ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্বের সশস্ত্র রাজনৈতিক যাত্রা

আসছে ৬ই এপ্রিল রামনবমীর 'শোভাযাত্রা'। উদ্বিগ্ন গ্রামের কৃষক, মফস্বল, শহরের শ্রমিক মহল্লা, ক্ষুদ্র ব্যবসাদার, অধিকাংশ মেয়েরা। দাঙ্গাপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে এই সময়ে বড় অংশের সংখ্যালঘু, দলিত শ্রমিকেরা থাকবার জায়গাগুলোর পরির্বতন করেছেন। 'স্পর্শকাতর' অঞ্চলগুলোতে কাজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। অনেক সংখ্যালঘু শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, যখন তখন 'দাঙ্গা' লেগে যাওয়ার ভয়ে সেই দিনটিতে তাঁরা কেউ পরিবার ছেড়ে ঘর থেকে বেরোবেন না। এ বিষয়ে গভীর ভাবে চিন্তিত বুদ্ধিজীবী মহল, প্রগতিশীল নানা গণসংগঠনগুলো। রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনও বিবৃতি দিয়েছে।

আমার সেই আরএসএস জীবন — আরো কিছু না বলা কথা

ইন দ্য বেলী অফ দ্য বীস্ট, গান্ধীজ কিলার্স ইন্ডিয়াজ রুলার্স এসব ইংরিজি বই আর তাদের বাংলা অনুবাদ দানবের পেটে দু দশকে অনেক ব্যক্তিগত স্মৃতির কথা লিখেছি আরএসএস ও তথাকথিত সঙ্ঘ পরিবার সম্পর্কে। কিন্তু অনেক কথাই লেখা হয়নি। হয়তো অনেক কথা লেখা যায়ও না, কারণ তা এতোই গোপন ও ব্যক্তিগত। কিন্তু আজ এই দানবের ভারতব্যাপী ও বিশ্বব্যাপী নতুন উত্থানে মনে হচ্ছে, কিছু কিছু কথা স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বের করে দেখা এবারে দরকার। যারা সাম্প্রদায়িকতা, ফ্যাসিবাদ, ধর্মান্ধতা, ঘৃণা ও হিংসার রাজনীতি নিয়ে কাজ করছেন ঘরে ও বাইরে, তাঁদের হয়তো কাজে লাগতেও পারে।

আবার হুডিস – আবার শুধু মার্ক্স!

মার্ক্সবাদের অনুশীলন ও অনুসরণকারীদের অনেকেরই বোধ হয় জানা নেই, ১৯৯০-এর দশক থেকে মার্ক্স এঙ্গেলসের সমগ্র রচনাবলি (Marx-Engels Gesamtausgabe, MEGA) প্রকাশের সাম্প্রতিক প্রকল্পের অঙ্গ হিসাবে মার্ক্সের চিন্তাধারার সঙ্গে এঙ্গেলস প্লেখানভ লেনিন স্তালিন প্রমুখ সমস্ত মার্ক্স-উত্তর মার্ক্সবাদীদের চিন্তাভাবনার একটা বিরোধ দেখানোর একটা ভুবন জোড়া প্রয়াস শুরু হয়েছে। এই প্রকল্প যদি সফল হয় তবে গত প্রায় ১৮০ বছরের মার্ক্সবাদী রাজনীতি চর্চা এবং বিপ্লবের ইতিহাস সম্পূর্ণ অমার্ক্সবাদী বলে পরিত্যাগ করতে হবে। সুতরাং আমরা যারা মার্ক্সবাদের মার্ক্স উত্তর ধারাবাহিকতায় আস্থা রাখি, তাঁদের এই ব্যাপারে খোঁজখবর রাখতে হবে এবং প্রয়োজন মতো বিতর্কে অংশগ্রহণও করতে হবে। পিটার হুডিস নামক আরও একজন বুদ্ধিজীবীর ২০০৪ সালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধের উপরে আমি কয়েক দিন আগে কিছু সমালোচনামূলক বক্তব্য লেখার পরেই আর একটি সাম্প্রতিক রচনার সন্ধান পেলাম। নীচে তার সম্পর্কেই দুচার কথা।

বোতলবন্দী জিন

বন্ধুবান্ধবরা একজায়গায় হলে কোনও না কোনও সময় ভূতের গল্প কখনও না কখনও করেনি, এটা কখনো হয়নি। সুরমা, সবিতারাও করেছিল। তখন তাদের উচ্ছ্বল কলেজ জীবন। সেদিন মানে সেই সন্ধ্যায় হস্টেলে আড্ডাটা একেবারে জমে ক্ষীর হয়ে উঠেছিল।