ভূমিকা:
দশ বছর পরও কোন শিক্ষা নিল না মনুষ্য প্রজাতি।
২০১৩ সালের কেদারনাথ বিপর্যয়ের এক দশক পরও উত্তরাখণ্ডের উন্নয়ন মডেল মূলত অপরিবর্তিত রয়েছে। তথাকথিত উন্নয়নের নামে পরিবেশকে বলি দেওয়া হয়েছে বারংবার। রাস্তা, বাঁধ ও পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গ বা টানেলের দ্রুত নির্মাণে ভগীরথীকে রুদ্ধ করা হয়েছে, পাহাড় কেঁপে উঠেছে। ফলশ্রুতি –জীবনহানি, ঘরবাড়ি ধ্বংস, আর মানুষের বিশ্বাস ভেঙে চুরমার।
২০২৫ সালের, আগষ্টের প্রথম সপ্তাহে খীরগঙ্গা গ্যাডে হঠাৎ প্রবল বন্যা ধ্বংস নামিয়েছে ধরালি ও হরশিল গ্রামে। শান্ত পাহাড়ি ধরালি গ্রামটি ভগীরথীর তীরে অবস্থিত, কাছেই হরশিল উপত্যকা। একসময় এই অঞ্চল পর্যটকদের কাছে ছিল স্বর্গসদৃশ। চারিদিকে বরফঢাকা শৃঙ্গ, ছোট ছোট পাহাড়ি ঝরনা যেমন খীরগঙ্গা, যারা ভগীরথীতে গিয়ে মিশতো। সেইসব ঝরনার প্রবাহে গড়ে উঠেছিল এই অঞ্চলের জীবন ও সৌন্দর্য।
ধরালি গ্রামের কাছেই ছিল গঙ্গোত্রীধাম যাত্রার একটি বিরতিস্থল। ভগীরথীর তীরে প্রাচীন ‘কল্প -কেদার’ মন্দির অঞ্চলের মানুষ ও ভ্রমণার্থীদের আধ্যাত্মিক গভীরতার নিঃশব্দ সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু আজ সেই সবই অতীত, ধূলিসাৎ। শুধু হোটেল রেস্তোঁরা আর ধূসর স্মৃতি। শান্ত খীরগঙ্গা আজ হিংস্র। বহু বছরের অবাধ নির্মাণ, পাহাড় কেটে রাস্তাঘাট ও হোটেল তৈরির ফলে তার স্বাভাবিক গতি রুদ্ধ হয়েছে। মেরে ফেলা হয়েছে একটি জীবন্ত প্রাণোচ্ছ্বল প্রাকৃতিক সত্তাকে। আর ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় – হিমালয়ের ক্ষয়ক্ষতির মূল উৎস বড় নদী নয়, বরং এই ছোট ছোট গ্যাড ও গাদেরা, যাদের প্রাকৃতিক পথ বারবার দখল করেছে নগরায়ন ও অপরিকল্পিত অযৌক্তিক উন্নয়নের রথ।
উন্নয়নের অন্ধ মোহ ও উপেক্ষিত সতর্কবার্তা :
চারধাম যাত্রার চাপ বহুদিন ধরেই ভঙ্গুর পরিবেশব্যবস্থাকে জর্জরিত করেছে। আজকের ভক্তরা আর শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক ভ্রমণকারী নন। বরং তাঁরা ক্রেতা, তাঁরা ট্যুরিস্ট বাবু বিবি। যাঁরা চান শহুরে বিলাসিতা, হিমালয়ের উত্তুঙ্গ শৃঙ্গেও। তাঁরা মনে করেন পর্যটনই উত্তরাখণ্ডের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। প্রশ্ন উঠছে, ট্যুরিজম ইন্ড্রাস্ট্রির বিনিময়ে প্রকৃতির ধ্বংসাধন কী হারে ত্বরান্বিত হচ্ছে?
(অনুবাদক : নৈসর্গিক হিমালয়ের সবুজে মোড়া সুউচ্চ পাহাড়রাজি, কুলকুল বেগে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা নদী, জলপ্রপাতের নির্ঝর শব্দ, অসংখ্য প্রজাতির গাছপালা, পাখিদের কলতান, বন্যপ্রানের উঁকিঝুঁকি, নাম না জানা কত শত পাহাড়ি ফুল, নির্মল সুনীল আকাশ, সূর্যোদয়- সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য অবলোকন ও উপলব্ধি করতে –প্রকৃতির টানে প্রকৃতি প্রেমিক একদল মানুষ নির্জন হিমালয়ের পথে প্রান্তরে পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াতেন, মাসের পর মাস কাটিয়ে দিতেন দুর্গম প্রকৃতির কোলে। ঝর্নার বিশুদ্ধ জল এবং রাস্তার ধারে সরাইখানায় বা স্থানীয় গ্রামে যেটুকু যা পাওয়া যেত, তা দিয়েই আহার সারতেন। প্রয়োজন পড়ত না নামীদামী রেস্টুরেন্টে খাওয়া বা তারকা-খচিত হোটেলে রাত্রিবাসের। যুগ যুগ ধরে ভারতীয় সংস্কৃতি সাহিত্য ধর্মে হিমালয়রাজি তার সুমহান উচ্চতা বজায় রেখেছে। পাহাড়ের প্রতি এই প্রেম-আবেগ-ভালোলাগা-ভালোবাসা সব বদলে গেল অর্থনীতির কুটিল আবর্তে। ভ্রমণ পিয়াসীর প্রাণের আরাম, শান্তি চাপা পড়ে গেল ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রির মোহজালে। এখন ট্যুরিস্ট বাবু-বিবিদের সুগম্য পাহাড়ে চায় –ঝাঁ চকচকে মাখন-মসৃণ রাস্তা, উচ্চমানের হোটেল, ২৪ ঘণ্টা গরম জল, দেশী বিদেশী গরমাগরম খাবার, শপিং মল, মোবাইলের নেটওয়ার্ক, আরও কত কী! আর বিলাসী পর্যটক টানতে, সরকারি মদতে মুনাফা লুঠতে কর্পোরেট বাহিনী যত্রতত্র হোটেল, রিসর্টের ডালি সাজিয়ে বসল। এশিয়ার উচ্চতম ও দীর্ঘতম চারধাম প্রকল্পের চকচকে রাস্তায় পিলপিল করে উঠে আসতে লাগল ট্যুরিস্ট। উপলক্ষ্য হয়ে গেল ভ্রমণবিলাস। আর বিলাস থেকে ব্যসন। শখের ট্যুরিস্টদের আরামের জন্য বিস্ফোরণ ঘটিয়ে, ধস নামিয়ে, উত্তরাখণ্ডের আদিমতা ও নির্জনতাকে খন্ডবিখণ্ড করে তৈরি হয়ে গেল সব সবকিছু। নব্য ট্যুরিস্ট রুচির চাহিদা মেটাতে গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে হয় হিমালয়কে, চাই অপর্যাপ্ত বিদ্যুৎ। সুতরাং মাটির নিচে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে এগোতে থাকল জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি গ্রাস করে নিল পাহাড়ের সব কিছু। যার হাত ধরে বিপর্যয় নেমে এল নৈসর্গিক হিমালয় ও স্থানীয় মানুষের জীবনে।হিমালয়কে রক্ষা করতে হলে সমগ্র পাহাড়, জঙ্গল, নদীসহ হিমালয়ের ইকোলজিকে টিকিয়ে রাখতে হবে। মেনে চলতে হবে প্রকৃতির অমোঘ নিয়মকে –সব পথে, সব পথিকের অধিকার নেই। সড়ক-সুড়ঙ্গ-শহর : উন্নয়নের এই তিন করাত থেকে রেহাই দিতে হবে হিমালয়কে)।
সাম্প্রতিক এই দুর্যোগকে অনেকে ক্লাউডব্রাস্ট বলে মনে করছেন। কিন্তু ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ থেকে জন্য যাচ্ছে –হরশিল, মুখবা বা গঙ্গোত্রীতে তেমন বৃষ্টিপাতই হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি সম্ভবত একটি গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড (GLOF)। আর এই গ্লেসিয়ার লেক আউটবার্স্ট বর্তমানে হিমালয়ের অন্যতম বিপজ্জনক প্রাকৃতিক হুমকি। (অনুবাদক: ২০২৩ এর অক্টোবরে উত্তর সিকিমে ভয়াবহ গ্লেসিয়ার লেক আউটবার্স্ট ও তার করুন পরিণতি পাঠকদের নিশ্চয় খেয়াল আছে)।
রিপোর্ট বলছে, উত্তরাখণ্ডে মোট ১,২৬৬টি হিমবাহ হ্রদ রয়েছে, যার মধ্যে ১৩টি 'উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ'। (অনুবাদক: উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে –২০১৩ ও ২১’র গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট-এর কারণে ঋষিগঙ্গার গতিপথে তৈরি হয়েছে বিপজ্জনক হ্রদ। সেই হ্রদের দেওয়াল ভেঙে পাহাড়ি পথে ফের নেমে আসতে পারে বিশাল জলরাশি, যেকোন সময় বিপর্যস্ত হবে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। আরও একটি ব্যাপার ঘটতে থাকে হিমালয়ীয় অঞ্চলে। বিশাল মাপের ভূমিধস (landslide) হলেও সেই জায়গায় তৈরি হয় বিপজ্জনক হ্রদ। এই হ্রদগুলিতে নুড়ি পাথর, বালি কাদা, বরফগলা জলের পরিমাণ বাড়তে থাকলে হ্রদের বাঁধ ভেঙে বিপুল জলরাশি নেমে আসে। ট্যুরিজম ও তথাকথিত উন্নয়নের যাঁতাকলে ডিনামাইট চার্জ করে পাহাড় ফাটিয়ে রাস্তাঘাট, হোটেল-রিসর্ট তৈরি সহ নানাবিধ নির্মাণকার্যের ফলে এইসব প্রাকৃতিক হ্রদগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। ফলে বারবার করে ঘটছে প্রাণঘাতী বিপর্যয়)।
আমরা এমন ঘটনা আগেও দেখেছি। সম্প্রতি নন্দাদেবী পার্বত্য অঞ্চলে একটি হিমবাহ বিস্ফোরণ রিশিগঙ্গা-ধৌলিগঙ্গা মোহনায় ব্যাপক ধ্বংস ডেকে আনে। সেটি ঘটেছিল সেই রেনি গ্রামে, যেখান থেকে চিপকো আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। হয়তো বা সেসব ভয়াবহ ঘটনা আমরা দ্রুত ভুলে যাই।
বর্তমানে হরশিল আর্মি বেসের কাছে একটি কৃত্রিম হ্রদের গঠনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেনাবাহিনী উদ্ধারকাজে এগিয়ে এসেছে, কিন্তু ভূমিধস ও দুর্গম ভৌগোলিক পরিস্থিতি তাদের কাজকে কঠিন করে তুলেছে। ধরালি এখন সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন, জাতীয় সড়ক ভেঙে পড়েছে একাধিক স্থানে।
প্রকৃতির প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ মানে না:
২০২৪ সালে উত্তরাখণ্ড সরকার হরশিল থেকে গঙ্গোত্রী পর্যন্ত হাইওয়ে প্রশস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। সমস্ত পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করেই। (অনুবাদক : সরকার প্রশাসন তবাবার আইন কানুন মানে না, সেসবই শুধু আমজনতার জন্য)। হাজার হাজার দেবদারু গাছ কাটার নির্দেশ আসে। এর বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষ বিক্ষোভ প্রতিবাদে সামিল হন। হিন্দুস্তান টাইমস (২৯ আগস্ট, ২০২৪) ভাটওয়ারীর প্রাক্তন প্রধান, পুষ্পা চৌহান-এর বক্তব্য তুলে ধরেছে –“এই রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পটি পুরোপুরি পরিবেশ সংবেদনশীল (ইকোলজিকাল সেনসিটিভ) অঞ্চলের নিয়ম ভঙ্গ করে গড়ে উঠছে। অথচ মহামান্য BRO বলছে, এই এলাকা সংবেদনশীল নয়। এটা কীভাবে সম্ভব? আমরা উন্নত রাস্তা চাই, তবে আমাদের বন উজাড় করে নয়"।
এই এলাকা, অর্থাৎ উত্তরকাশী থেকে গোমুখ পর্যন্ত ১৩৫ কিমি ২০১০ সালে 'ইকো সেনসিটিভ জোন' হিসেবে ঘোষিত হয়, এবং ২০১২ সালে চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। রাজনীতিকেরা তখন একে বলেছিলেন “উন্নয়ন বিরোধী পদক্ষেপ।” ( অনুবাদক : আমাদের মহান গণতান্ত্রিক দেশের মহান রাজনৈতিক দলগুলোর আজ চিন্তাভাবনায় ঠিক এতটাই দৈন্য)। সরকার ও রাজনীতির কারবারীদের দেখানো সেই তথাকথিত “উন্নয়ন” এর পথ আজ ওই অঞ্চলকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
নিয়মভঙ্গ আর ধ্বংসের সতর্কবাণী :
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ও ‘জাতীয় পরিবেশ আদালত’ (NGT) অনেক আগেই পাহাড়ি নদীর ৫০ মিটারের মধ্যে নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছিল। আর পাহাড়ি নদীর ১০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত অঞ্চল ‘নিয়ন্ত্রিত এলাকা’ হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল। তবুও ঝাঁ চকচকে বিলাসবহুল হোটেল, রিসর্ট, রেস্তোঁরা গজিয়ে উঠেছে, উঠছে নদীর চরেই নদীর গা ঘেঁষেই। এই নাহলে উন্নয়নের নমুনা! কে বা করা দেয় জীবন জীবিকা প্রকৃতি ধ্বংসকারী এইসব বেআইনি নির্মানকার্যের অনুমতি?
প্রতিবার যখন বিপর্যয় ঘটে, আমরা বলি “জেগে ওঠো, সচেতন হোন, প্রকৃতি পরিবেশকে রক্ষা করার জন্য কিছু তো করুন।” তারপর আবার নিদ্রায় ফেরত যাই। প্রকৃতি ও প্রাণের ধ্বংসলীলা চলতেই থাকে …..।
সড়ক প্রশস্তকরণ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, টানেল খনন, আর বিপুল পর্যটন শিল্পের চাপ : এইসব মিলিয়ে (সরকার নেতা ঠিকাদার জোট) আজ হিমালয়ের প্রাণবায়ু কেড়ে নিচ্ছে। চারধাম ও কেদার যাত্রা আজ আর শুধু ধর্মীয় ভ্রমণ নয়, রূপ নিয়েছে এক পিকনিকে। প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, আত্মিক মিলন হারিয়ে সেখানে সেলফি, হইচই, দেদার খানাপিনা রাজত্ব করে।
শুরুতে কেদারনাথ ধাম নির্মিত হয়েছিল এক হাজার যাত্রীর যাতায়াত ও থাকার জন্য। আজ বিশেষ বিদেশ দিনে সেই সংখ্যা পঁচিশ-তিরিশ হাজার ছাড়িয়ে যায়। প্রকৃতিরও তো ধারণ ক্ষমতা, সহ্য ক্ষমতার সীমারেখা আছে। তা লঙ্ঘন করার ফল যা হবার তাই হচ্ছে।
উপসংহারের পরিবর্তে:
হিমালয় বাজার নয়। নৈসর্গিক হিমালয় আমাদের সম্বল, উত্তরাধিকার। উন্নয়ন দরকার, তবে সমস্ত নিময়কনুন ও বিধি নিষেধ মেনে প্রকৃতির সুরক্ষাও অপরিহার্য। হিমালয় শুধু পাহাড় নয়, এটি একটি আন্তর্জাতিক সীমানা, জীববৈচিত্রে ভরপুর বাস্তুতন্ত্র, আর পবিত্র স্থান। এখান থেকেই জন্ম নেয় আমাদের সব বড় বড় নদী। (অনুবাদক : এইসব নদীর অবিরল ধারায় শস্য শ্যামলা সুজলা সুফলা হয় আমার দেশ)। হিমালয় আমাদের বাঁচায়, বাঁচিয়ে রাখে। যেমন জীবনে, তেমন মৃত্যুতেও।
তবুও আমরা একে ট্যুরিস্ট স্পষ্ট, বাজার আর মুনাফার কেন্দ্র বানিয়েছি।
সমাধান কোন পথ ধরে?
সর্বপ্রথম নদীর চরে এবং পাহাড় কেটে বা ফাটিয়ে সমস্ত ধরনের নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। NGT-এর আদেশ কার্যকর করতে হবে। যাত্রা নিয়ন্ত্রিত করতে হবে। বনভূমি ও সবুজ সম্বল রক্ষা করতে হবে। ধসপ্রবণ এলাকায় রাস্তা নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। এগুলো আহামরি কিছু চরম দাবি নয়, অযৌক্তিক বা অবাস্তবও নয়। এইসব জরুরী পদক্ষেপ কার্যত নেওয়া সম্ভব এবং নিতেই হবে নিজেদের টিকে থাকার জন্য, পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।
ধরালির বিপর্যয় আর একটি সাধারণ খবর হয়ে হারিয়ে যাক, তা হতে দেওয়া যায় না। এটি একটি ক্রান্তিকালীন মুহূর্ত। এই ভয়াবহ ঘটনা নীতিনির্ধারকদের বাধ্য করুক জরুরী পদক্ষেপগুলো গ্রহণ ও কার্যকরী করতে। জীবন জীবিকা ও প্রকৃতি বিপণনকারী এই ধ্বংসলীলা মানুষকে সচেতন করুক, পরিবেশ রক্ষা করার দাবিতে জোটবদ্ধ হয়ে সহায়ক হোক।
আমরা যারা আপনজন হারিয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। সৈনিক, NDRF ও SDRF-এর সাহসী সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা—তারা নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে অন্যদের রক্ষা করছেন। উত্তরাখণ্ডবাসীর এর চেয়ে অনেক বেশি প্রাপ্য। শুধু সহানুভূতি নয়, বরং এমন একটি টেকসই ও মানবিক পরিকল্পনা –যা তাদের মাটি, জীবন ও ঐতিহ্যকে সম্মান করে।
আশা করি ধরালি হবে শেষ জাগরণ সঙ্কেত।