রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপর বীতশ্রদ্ধ হয়েই রাজতন্ত্র ফেরত চাইছেন নেপালবাসীরা। ২০০৮ সালে এ দেশে প্রথম নির্বাচন হওয়ার পর একটি সরকারও পূর্ণ মেয়াদ ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। গত ১৭ বছরে এক ডজনের বেশি প্রধানমন্ত্রী বসেছেন নেপালের শীর্ষপদে। নড়বড়ে সরকারগুলি নীতিপঙ্গুতে ভোগে, উন্নয়নের কাজে এগোয় না, বেকারত্ব ঘোচে না, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে, ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে সাধারণ মানুষের দুর্দশা। সেই জায়গা থেকেই কি আজকে নেপালের এই পরিস্থিতি?
প্রখ্যাত ইংরেজ লেখক ফ্রান্সিস বেকন বিচারকদের উদ্দেশে বলেছিলেন যে তাঁদের কর্তব্য হচ্ছে দেশের জনসাধারণের কল্যাণসাধন। কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে তিনি লক্ষ্য করেছিলেন যে বিচারব্যবস্থাটাই মোটের ওপর শাসকদলের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী সম্পর্কসূত্রে আবদ্ধ হয়ে গিয়েছে!—বেকন-এর এই ক্ষোভ যে কতটা সত্য তা আমরা তো আমাদের দেশে অহরহ প্রত্যক্ষ করে চলেছি। উমর খালিদ, শার্জিল ইমাম সহ অন্যান্যদের বিনা বিচারে জেলে রাখা তার প্রকৃষ্ট ও সাম্প্রতিকতম উদাহরণ।
জাভেদ আখতার স্বঘোষিত নাস্তিক। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখার জন্য একাধিকবার তিনি সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত মতামত ধর্মপালনকারী মুসলমানদের কাছে আপত্তিকরও বটে! এ'কথা সত্য। আর এতেই মৌলবাদীদের আপত্তি। সে আপত্তি থাকতেই পারে। তবে তার জন্য একটা সরকারি প্রতিষ্ঠান নিজেদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করবে কেন?
সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্ট উমর খালিদ, শার্জিল ইমাম সহ ৬ জনের জামিন নামঞ্জুর করেছে। বিনা বিচারে তাঁরা এখন জেলেই থাকবেন। এর কিছুদিন আগে মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও হিন্দু চরমপন্থী রাজনৈতিক নেতারা "প্রমাণের অভাবে" মুক্তি পেয়ে গেছেন। এই দুটি ঘটনা দেখিয়ে দেয়, ভারতীয় বিচারব্যবস্থার দৈন্যতা। বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা, রাজনৈতিক প্রভাব, তদন্তকারী সংস্থার পক্ষপাতিত্ব এবং আইনি বৈষম্য—এই সবকিছু মিলে আইনের শাসনের মূল ভিত্তিকেই দুর্বল করে দিচ্ছে।
গ্লাভস ঢাকা তর্জনী দীপনের গালের ভেতরের দাগটার উপর বোলাতে বোলাতে অঙ্কোলোজিস্ট জিজ্ঞেস করলেন, " এই দাগটার কথা বলছেন ? " ব্যাদিত মুখগহবরে কথা বলা সম্ভব না, তাছাড়া ডাক্তারবাবু ঠিক কোথায় আঙ্গুল বোলাচ্ছেন সেটা দীপনের দৃষ্টিগোচর নয়, তবে গত পনেরো দিন রোজ আধঘন্টা ধরে আয়নাতে ওই দাগটিই খুঁটিয়ে লক্ষ্য করে করে দাগটির অবস্থান সম্পর্কে একটা ধারণা জন্মেই গেছে, তাই দীপন আন্দাজে বুঝলো অঙ্কলোজিস্ট ঠিক জায়গাতেই আঙ্গুল বোলাচ্ছেন।
সন্তানরা সবাই কি কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন বলে পরিবার তথা সমাজের উদ্বৃত্ত এই শ্রেণির মানুষেরা এখন অসহায়। লক্ষ্য করে দেখবেন এই ধারণাটিকে খুব সচেতনভাবে প্রচার করা হচ্ছে। এটি সাধারণত ‘শিক্ষিত’ শহুরে শ্রেণির সন্তানদের ফন্দি। গ্রাম উজাড় করে আমাদের পরিযায়ী শ্রমিকেরা ছড়িয়ে আছেন রাজ্য দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও। তাঁরাও তো ‘কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন’- তারা এমন ফন্দি আঁটছেন?
দেশ ও রাজ্যে দুর্নীতি এখন প্রাতিষ্ঠানিকতার মেডেল গলায় ঝুলিয়েছে। কিন্তু যে ছেলে বা মেয়েটি নিজের মেধাকে পুঁজি করে দিনরাত এক করে পরিশ্রম করে গেছে শিক্ষক হয়ে স্টাফরুম আলো করার, তাদের জন্যে ‘এক হাজার ভাগের এক ভাগ গাফিলতি’র সুপ্রিম নিদান কি পারবে রবীন্দ্রনাথের কবিতা গলায় মালা করে পরে জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে বলতে, “অন্যায় যে করে,আর অন্যায় যে সহে/ তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে।”
বিজেপি/আরএসএসের প্রচারযন্ত্র, বিশেষ করে মূলধারার গণমাধ্যমকে দখলে নিয়ে এসে তাতে লাগাতার প্রচার, ইতিমধ্যেই সাভারকারের তত্ত্বায়নকে জনমানসে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। ভারতে কারা থাকবে বা ভারত দেশটা কার? —- এর উত্তরে সাভারকারের পরিষ্কার অভিমত ছিল যে, যাদের পিতৃভূমি এবং পূণ্যভূমি ভারত তারাই ভারতের অধিবাসী, তারাই ভারতীয়। খেয়াল করলে দেখা যাবে বর্তমানে নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকত্বের ধারণা নিয়ে সারা ভারতে যে বিতর্ক চলছে তাতে বিজেপি ঘুরিয়ে সাভারকারের বক্তব্যকেই প্রতিধ্বনিত করে চলেছে, তাই সিলেবাসে সাভারকার থাকলে, তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশী।
ফ্যাসিবাদ হল, “সমস্ত ধরণের বিমূর্ত, যুক্তিবাদী, অ-ধর্মীয়, এমনকি অস্বাভাবিক উদারতাবাদ ও যথেষ্ট মাত্রার বস্তুবাদী ফ্রি-ম্যাসন সৌভ্রাতৃত্ব ইত্যাদির সমস্ত ধরণ ও ব্যবস্থার” ঘোষিত জাতশত্রু। এখানে আমরা দেখি যে ছদ্মবেশ ছিন্ন করে আধ্যাত্মিকতাবাদ তার আসল চেহারায় প্রকাশিত হয়ে দাঁড়ায়। ফ্যাসিবাদ রিলিজিয়াস; তাই সে যুক্তিবাদকে বিপদ হিসেবে আর উদারতাবাদকে অনাসৃষ্টি বলে ঘোষণা করে। এই কথাগুলো লিখেছিলেন এম এন রায় ১৯৩৮ সালে। আজকের সময়ে ২০২৫ সালে ঐ লেখার অনুবাদ করলেন মলয় তেওয়ারি। আজ সপ্তম অধ্যায়- ফ্যাসিবাদের অনুশীলন।
বিদায় সভায় দুচারটে কথা বলেই ডাক্তার কমলিনী মিত্র নিঃশব্দে কর্ডলেস মাইকটা টেবিলের ওপরে রেখে দিয়েছিলেন।
বিদায় সভায় দুচারটে কথা বলেই ডাক্তার কমলিনী মিত্র নিঃশব্দে কর্ডলেস মাইকটা টেবিলের ওপরে রেখে দিয়েছিলেন।
ফ্যাসিবাদ হল, “সমস্ত ধরণের বিমূর্ত, যুক্তিবাদী, অ-ধর্মীয়, এমনকি অস্বাভাবিক উদারতাবাদ ও যথেষ্ট মাত্রার বস্তুবাদী ফ্রি-ম্যাসন সৌভ্রাতৃত্ব ইত্যাদির সমস্ত ধরণ ও ব্যবস্থার” ঘোষিত জাতশত্রু। এখানে আমরা দেখি যে ছদ্মবেশ ছিন্ন করে আধ্যাত্মিকতাবাদ তার আসল চেহারায় প্রকাশিত হয়ে দাঁড়ায়। ফ্যাসিবাদ রিলিজিয়াস; তাই সে যুক্তিবাদকে বিপদ হিসেবে আর উদারতাবাদকে অনাসৃষ্টি বলে ঘোষণা করে। এই কথাগুলো লিখেছিলেন এম এন রায় ১৯৩৮ সালে। আজকের সময়ে ২০২৫ সালে ঐ লেখার অনুবাদ করলেন মলয় তেওয়ারি। আজ সপ্তম অধ্যায়- ফ্যাসিবাদের অনুশীলন।
মহাত্মা গান্ধীর দেখানো পথে ‘আইন-অমান্য আন্দোলন’কেও বেআইনি ঘোষণা করার সংস্থান রয়েছে এই ‘মহারাষ্ট্র স্পেশাল পাবলিক সিকিউরিটি বিল ২০২৪’ বিলে। গান্ধীর অহিংসাকে ‘আহাম্মকি’ বলে অভিহিত করেছিলেন গোলওয়ালকর । সুতরাং, গান্ধী প্রবর্তিত আইন-অমান্য আন্দোলনকে তাঁরা বেআইনি কার্যকলাপের তকমা লাগাবেন তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। রাজ্যের নতুন আইনে মহারাষ্ট্রে কোনও রকম সরকার-বিরোধিতা আর চলবে না
মিডিয়ার স্টুডিও আলো করে কয়েকজন দাবি করে চলেছেন এসব নাকি ঠিক বাংলা ভাষার বা বাঙালি কৃষ্টির ওপর নাকি আঘাত নয়, এটা অর্থনৈতিক রেষারেষি থেকে শ্রমজীবি শ্রেণীর ওপর আঘাত। তা "ওরা কাজ করে" শ্রেণীর ওপর এই আঘাত কতটা পুরনো এবং যাঁরা এনাদেরকে "ওরা" বানিয়ে রাখেন তাদের এই দেখেও না দেখার প্রবণতাটা যে কতটা গভীর তা একটু খতিয়ে দেখা যাক।
নির্বাচন কমিশনকে সরাসরি কাজে লাগিয়ে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, দিল্লি জয়টা নিশ্চিত করতে পেরেই ঝাঁপি খুলে দিল এসআইআর। ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনীর নামে বেছে বেছে দলিত, সংখ্যালঘু, মূলনিবাসী, গরিব মানুষদের ভোটাধিকার কেড়ে নাও। এ শুধু বিহারেই থেমে থাকবে না, সব রাজ্যে হবে। পুরোনো ভোটার তালিকাকে খারিজ করে নতুন ভোটার তালিকা বানানোর প্রস্তুতিপর্ব। স্বৈরাচারী-গণতন্ত্রকে আশ্রয় করে এসআইআর গণতন্ত্রের ভিত নাড়িয়ে দিচ্ছে।
এই খাস কলকাতার বাংলাভাষী সুশীল সমাজের একাংশ যখন বাঙালির একাংশকে অবলীলায় বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করতে পারেন, কেউ চোখে আঙুল দিয়ে তাঁদের এই ভ্রান্তির কথা ধরিয়ে দেওয়ার পরও তাঁদের কোনো আত্মসমীক্ষা যখন দেখা যায় না, শিয়ালদায় কারমাইকেল হস্টেলে বাঙালি ছাত্রদের নির্যাতনকারী হিন্দি-উর্দুভাষীদের কাছে আমরা আর কীই বা আশা করতে পারি!