গোদি মিডিয়া তো দেখা হয় না! তবে দু-একজন জানালেন ৩০ মার্চ এবিপি আনন্দে একটি বিতর্কসভায় দিলীপ ঘোষ নাকি বিস্কুট চিবোতে চিবোতে এক মহিলা প্রশ্নকর্তাকে উত্তমমধ্যম বাক্যপ্রহার করেছেন। এবং তা যথারীতি অতীব কুৎসিত ও ভয়ঙ্কর। কেউ কেউ বললেন তা নিয়ে কষে দু কলম লিখতে।
তো যিনি অনুরোধ করেছেন তিনি ক্লিপিং'টিও পাঠালেন। দেখেও নিলাম। তারপর লিখতে বসে দেখি, কষিয়ে লিখব কী, আমার তো হাড় হিম হয়ে যাচ্ছে।
অনেকেই সে টিভি-দৃশ্য দেখেছেন, তাই দিলীপ কী বলেছেন তা আর চর্বিতচর্বণ করে লাভ নেই। শুধু ওনার দুটি বাক্য আবারও বলে নিই, কারণ তা শুধু হাড় হিম করা নয়, খুনীর ভাষ্য এবং মঞ্চে বসে বিস্কুট চিবোতে চিবোতে একটি দলের প্রধানের মুখে যে প্রকাশ্যে অমন হুমকি দেওয়া ও সন্ত্রাস প্রদর্শন করা সম্ভব তা হিন্দি ছবির ভয়ঙ্করতম মাফিয়াদের সঙ্গেই তুলনামূলক বিচারে ফেলা যায়।
প্রশ্নকর্তা মহিলার উদ্দেশ্যে তাঁর প্রথম কথা - 'ন্যাকামি করবেন না'। একজন অপরিচিত মহিলাকে তিনি নির্দ্বিধায় প্রকাশ্যে এমনতর হুমকি দিলেন। দ্বিতীয়ত বললেন, 'মহিলা সাজবেন না'। অর্থাৎ, একজন মহিলা আসলে মহিলা নন। তিনি মহিলা সেজে এসেছেন। দিলীপ কি আসলে পুরুষ নন? তিনি কি সেজে আসা পুরুষ? তারপর আরও বহু কিছু বলেছেন। আপনারা জানেন।
কিন্তু এসব বাদ দিন। প্রশ্ন হল, দিলীপের হঠাৎ এত রাগ হল কেন? তিনি কি মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন নাকি মস্তিষ্ক বিকৃতির শিকার হয়েছেন?
সম্ভবত, ইউপি, বিহার থেকে হাজারে হাজারে সংঘী সন্ত্রাসী এনে, কোটি কোটি টাকা খরচ করে, অন্য দল থেকে গুণ্ডা-বদমায়েশ কিনে, নাড্ডা-মোদি-শাহ-যোগীকে দিয়ে ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করিয়েও তাঁরা যে এ রাজ্যের নির্বাচনে গো-হারান হারতে চলেছেন সেটা কি বুঝে ফেলেছেন? আর এ রাজ্যে হেরে গেলে তাদের যে দেশের পাটও গোটাতে হবে তা তো তাঁরা জানেন। অতএব, কামড়টা বসাতে হবে নরম জায়গায়। তাই, তিনি শুধু মহিলাকে মহিলা সাজার কথা বলেননি, দলিত ও সংখ্যালঘুদেরও একই সঙ্গে জুড়ে দিয়ে মহিলা, দলিত ও সংখ্যালঘুদের একই 'সাজার গোত্রে' ফেলেছেন। বিজেপির দেখার চোখটা যে হায়নার মতো নৃশংস, তা আরও একবার বোঝা গেল। আর তা আরও প্রকট যখন মাটি হয় নরম। অতএব, সাধু সাবধান।
এর বেশি আর কী লিখব। পর্দা ফাঁস। খেল খতম পয়সা হজম। ২ মে'র পর পগার পার।
নো ভোট টু বিজেপি।