পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

বেটি পড়াও বেটি বাঁচাও

  • 01 January, 1970
  • 0 Comment(s)
  • 466 view(s)
  • লিখেছেন : অশোকেন্দু সেনগুপ্ত 
এদেশে এখনও মেয়েদের সাক্ষরতার হার ছেলেদের তুলনায় অনেকটা কম। আর, এই যে মহামারীর কালে দেশের খেটে খাওয়া মানুষ আজও শিক্ষার আঙ্গিনায় মেয়েদের হাতে দিতে চায় না ( বা পারে না মোবাইল ফোন)। অথচ আমরা সকলেই জানি যে, বেটি যদি সুশিক্ষা পায় তো সে নিশ্চয় বাঁচবে। 'খাপ পঞ্চায়েতের' ভ্রুকুটি এড়িয়েই। 
 
বেশ ছোটবয়সে একটা গান শুনেছিলাম ঃ  'চাক্কু, ছুরিযা তেজ করালে'। একালের নেতা-নেত্রীর কথা শুনলেই মনে হয় তাঁদের জিভও যেন বাস করে সেই চাক্কু বা ছুরি! এবং ভয়ানক তেজে তাও জ্বলছে। সমস্যা কী? অন্তত মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের বিচারে কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি। তবু নিশ্চিত হতে পারি না। 
আমরা জানি ও মানি, অনেকে বলি অনেক সময়, সাহিত্য সমাজের প্রতিফলক। এতো নিশ্চয় সত্য। ভাবুন, যদি নেতা-নেত্রীদের ব্যবহৃত ভাষায় গল্প-উপন্যাস লেখা হয় তবে!
একটা উদাহরণ দেব? না থাক। নেতা-নেত্রীদের নিয়ে রসিকতাও নাকি অনেকের বিলকুল অপছন্দ। রবীশকুমার চাকরির মুখে ঝাঁটা মেরে নিজেই একটা চ্যানেল খুলেছেন। বেশ করেছেন। সে কথাও বলব, পরে।
রবীশকুমারের প্রধান কথাই যেন সেইসব নেতা-নেত্রীদের কথার ধার মাপার চেষ্টা।  তিনি প্রথমেই ধরেছেন  শাসকদলের সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুরের ভাষা।  আরে বাবা, তেমন কি খারাপ কথা বলেছেন তিনি। এর চেয়ে অনেক বেশি খারাপ খারাপ কথা বলে থাকেন আমাদের দিলীপবাবু বা কুনালবাবুরা। তবে তাঁরা অবশ্যি যা বলেন তা বাংলাতেই বলেন। 
সাধ্বী  চেয়েছেন মেয়েদের সুরক্ষা।  একথা তো সত্য যে সরকার পারছে না মেয়েদের সুরক্ষা দিতে। তারা কেবল একের পর এক আইন রচনা করে চলেছে। তারপরও দেখছি (টি ভি খুললেই) ধর্ষণের গল্প। এমন অবস্থায় সরকারও যে আর কিছু করতে পারে না সরকার তা স্বীকারও করে নিয়েছে ( NCRB - র রেকর্ড দেখুন,  বছরের পর বছর খুন বা ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে)। বাস্তব তো মানবেন যে, কোনও সরকারই সব করে দিতে পারে না। এই মোদী সরকারও পারছেন না, অপরাধীরা সংখ্যায় বাড়ছে( যদিও এই সরকারের আমলে কোনও নির্ভয়া কান্ড ঘটেনি)। সেনা, আধাসেনা, পুলিস- সান্ত্রী- সেপাই সবাই হার মেনেছে।  এবং এহেন পরিস্থিতি দেখে প্রজ্ঞাজি মেয়েদের ছুরি, চাকু, বঁটি, কাঁচি বা যার কাছে যা অস্ত্র আছে তাই ব্যবহার করতে বলেছেন আত্মরক্ষায়। সরকার পারছে না বলে বসে থাকবে নাকি দেশের মেয়েরা? সরকার পারছে না- এর চেয়ে সোজাসরল স্বীকারোক্তি কেউ শুনেছেন, দেখেছেন? রবীশকুমার উত্তরে 'বেটি বাঁচাও,'বেটি পড়াও' প্রসঙ্গ তুলেছেন। 
 
কিন্তু কেন? সরকারকে বেইজ্জত করতে! তিনি নিশ্চয় জানেন যে, এদেশে এখনও মেয়েদের সাক্ষরতার হার ছেলেদের তুলনায় অনেকটা কম। আর, এই যে মহামারীর কালে দেশের খেটে খাওয়া মানুষ আজও শিক্ষার আঙ্গিনায় মেয়েদের হাতে দিতে চায় না ( বা পারে না মোবাইল ফোন)। অথচ আমরা সকলেই জানি যে, বেটি যদি সুশিক্ষা পায় তো সে নিশ্চয় বাঁচবে। 'খাপ পঞ্চায়েতের' ভ্রুকুটি এড়িয়েই। 
রবিশ কুমার  কি জানেন না যে এই সরকারের কোনও ইজ্জতই নেই, যদি ইজ্জত থাকত তবে,  প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অর্থমন্ত্রী বাতিল করতে পারতেন না। পেতাম না অর্থিক সাহায্যের বদলে হাজার রকমের ঋণের প্রতিশ্রুতি।  অথবা, প্রতিবেশী দুর্বল ছোট ছোট দেশগুলিও (যথা নেপাল বা ভূটান) এমন অবহেলা করতে সাহস পেত? 
দেখছি তাই, এখন প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত হয়ে কখনও সংবাদমাধ্যম কখনও বিচারব্যবস্থাকে নিজের পক্ষে টানতে ব্যস্ত। রবীশকুমার জানেন না বুঝি কানাকে কানা বা খোঁড়াকে খোঁড়া বলতে নেই।
0 Comments

Post Comment