পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে আমেরিকা, ভারত এবং গোটা বিশ্ব

  • 17 February, 2025
  • 0 Comment(s)
  • 444 view(s)
  • লিখেছেন : মিলি মুখার্জী
বেকারত্ব, সামাজিক বৈষম্য, বর্ণবাদ এবং বন্দুক সংস্কৃতি। আমেরিকা হচ্ছে সেই দেশ যেখানে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ গুলিতে মরে, যেখানে পুলিশ রাস্তায় কৃষ্ণাঙ্গদের হত্যা করে এবং যেখানে পুঁজিপতিরা প্রতিদিন দরিদ্রদের আরও দরিদ্র করে তুলছে। এই দেশ নিজেকে গণতন্ত্রের স্বঘোষিত মসিহা মনে করে, কিন্তু এই একই আমেরিকা আফগানিস্তান, ইরাক, ভিয়েতনাম, চিলি এবং অন্যান্য অনেক দেশে রক্তের নদী ঝরিয়েছে। তাঁদের এই অভিবাসন নীতি তাঁদের জন্য নতুন বিপদ নিয়ে আসবে না তো?

আজকের বিশ্বে উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান

বিশ্বে বর্তমানে আনুমানিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী উদ্বাস্তু প্রায় ১০ কোটি মানুষ । এই পরিসংখ্যান আগামীদিনে কোথায় পৌঁছাবে আমরা তা জানি না । বিভিন্ন কারণে মানুষ উদ্বাস্তু হয় । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে অনেক দেশের বিপর্যস্ত মানুষ দেশান্তরী হয়ে যায়। অর্থনৈতিক কারণে জীবিকার সন্ধানে মানুষ পরিযায়ী জীবন যাপন করে। জাতিদাঙ্গা ও ধর্মীয় অত্যাচারের কারণে বহু মানুষ শরণার্থীর ঠিকানা খোঁজে। রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ও রাজনৈতিক কারণে কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়ে । ভাস্কোডাগামার দেশ আবিষ্কারের যুগ থেকে আধুনিক প্রযুক্তি ও শিল্পোন্নতির কাল অব্দি ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলি ধনবাদী অর্থনীতির সুবাদে এশিয়া আফ্রিকা ল্যাতিন আমেরিকার মতো অনুন্নত দেশগুলি থেকে মানুষের সস্তাশ্রম ও প্রাকৃতিক সম্পদ অবাধে শোষণ করে নিজেদের দেশগুলিকে সমৃদ্ধ করে এসেছে এবং সেই সাথে শোষিত দেশগুলিতে দাসত্বের ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছে। ধন-সম্পদের এই অসম বণ্টন দরিদ্র দেশগুলিতে দুঃখ যন্ত্রনা অভাব নির্যাতন দাসত্ব টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করেছে। এই বৈষম্যই বঞ্চিত দেশগুলিতে শিক্ষা ও চাকুরির অভাব, বেকারত্ব ক্রমশ বাড়িয়ে গেছে। এই দুরাবস্থার কারণে রাষ্ট্রগুলিতে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, আইনি বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছে জনগণ। এর থেকে মুক্তির আশায় এশিয়া আফ্রিকার হতদরিদ্র মানুষ দক্ষিণ এশিয়ার মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনজাতি থেকে সুদূর মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়া লিবিয়া লেবানন থেকে জীবন বিপন্ন করে অভিবাসনের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছে ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলিতে । গাজায় দীর্ঘকাল ধরে আমেরিকার মদতে ইজরায়েল সরকার ৫৫ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। রাশিয়ার পুতিন সকারের আক্রমণে ইউক্রেন ছেড়ে বহু মানুষ পালিয়েছে দেশ ছেড়ে। আর এই অবৈধ অভিবাসন রুখতে আমেরিকা সহ সারা বিশ্বে জাতীয় নাগরিক আইন রচিত হয়েছে। বিপন্নতা এখান থেকেই। গণতন্ত্রের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিভ্রম এখানেই একটি শিক্ষিত সমাজ সর্বদা নিজের জন্য একজন বুদ্ধিমান, ন্যায়পরায়ণ এবং দূরদর্শী শাসক বেছে নেবে কীভাবে। আবার গণতন্ত্রের সাফল্য শুধু একটি শিক্ষিত সমাজের ওপর নির্ভর করে না, সেই সমাজের চেতনা ও আত্মদর্শনের ওপরও নির্ভর করে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সংসদীয় ক্ষমতায় এলেন, দেশ নাকি আসল স্বাধীনতা লাভ করল। ভারত বিশ্বগুরু হয়ে উঠল। মোদির প্রচারে কোটি কোটি টাকা খরচ করলেও ভারতীয় নাগরিকদের আত্মসম্মান কিন্তু বিকিয়ে গেল। আমরা অনুপ্রবেশকারী হয়ে গেলাম, অপরাধী হয়ে গেলাম। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের দাবি করা ৫৬ ইঞ্চি বুকের অতিমানব এখন নীরব। ভাইব্রেন্ট গুজরাটের জালিয়াতি চলছে গত কুড়ি বছর ধরে। সেই ইভেন্টে গুজরাটের উপকার হলে গুজরাটিরা লাখ লাখ টাকা খরচ করে ডাংকি রুট দিয়ে আমেরিকায় প্রবেশ করত না। এবার ৭.৫ লাখ ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীর পালা। তারাও মুখ লুকিয়ে ফিরে আসবে। প্রত্যাখ্যাত, অসহায়। উন্নত ভারতে অপরাধ করা বা মদ্যপান করে রাস্তায় পড়ে থাকা ছাড়া তাদের কোনো কাজ থাকবে না।

 

NRC , CAA , NPR আইন নাগরিকত্বের প্রশ্নে

 

ভারতবর্ষের মোদী সরকার ২০২১ সালের জনগণনা বন্ধ করে রেখেছে। সরকারের অজুহাত, NRC , CAA , NPR লাগু হলে অবৈধ ঘুষপেটিয়া অর্থাৎ মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা হবে। এই অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ভারতবর্ষে ১০০ টি ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করার প্রস্তুতি চলছিল। আসামে ১৯ লক্ষ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করেছিল আসামের ডবল ইঞ্জিন সরকার। পরিসংখ্যানে দেখা গেল প্রায় ১২ লক্ষ তালিকাভুক্ত মানুষই হিন্দু। অনেক মানুষকে জবরদস্তি ডিটেনশন ক্যাম্পের খোঁয়াড়ে ঢুকিয়ে রাখা হত। অনেকে প্রাণও হারায় ।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন আনা এবং সেই আইনে মুসলমানদের আলাদা রাখার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল মুসলিমরা এর বিরোধিতা করবে এবং এই অজুহাতে আবার দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়বে। সরকার বুঝতে পারেনি যে সারা দেশের মানুষ ধর্মের বাধা ভেঙে এই আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে একযোগে দাঁড়াবে।

 

আসাম এবং উত্তর পূর্ব, যারা অনুপ্রবেশকারী সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভুগেছে, কোন সাম্প্রদায়িক পার্থক্য ছাড়াই এই আইনের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছিল। কারণ আসাম ও উত্তর-পূর্বে অনুপ্রবেশ সমস্যার বিরুদ্ধে এই আন্দোলন জন্মের পর থেকে কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক ছিল না। আজও সেই আন্দোলন অসমীয়া পরিচয়, অস্মিতা এবং ভাষা নিয়ে, হিন্দু মুসলিম ধর্মের অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে নয়। সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের তৎপরতা এখনও বিজেপি চালিয়ে যাচ্ছে। সংসদে এনআরসি ইস্যুতে তার কালপঞ্জি পেশ করার সময়, অমিত শাহ পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন যে প্রথমে সিএএ আসবে এবং তারপরে সারা দেশে এনআরসি কার্যকর করা হবে, এবং পিতৃপুরুষের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিয়ে হবে এন.পি.আর অর্থাৎ জনগণনা । পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বা হিন্দু নিপীড়ন নিয়ে বারবার চর্চা হয়েছে। এটাও সত্য যে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বা হিন্দু নিপীড়ন হয়েছে, এখনো হচ্ছে, এবং ভবিষ্যতে আর হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।  কিন্তু বিজেপি সরকার কি কখনো পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের সাথে এই ইস্যুতে তার প্রতিবাদ নথিভুক্ত করেছে এবং কখনো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে এই বিষয়টি তুলেছে ? সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের এই সমস্যার সমাধান করা লক্ষ্যই নয়, আসল উদ্দেশ্য হল এর আড়ালে দেশে সাম্প্রদায়িক উন্মাদনার আগুন জ্বালিয়ে রাখা। সরকার আজ যত অপ্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, এর একমাত্র উদ্দেশ্য জনগণকে নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়িয়ে রাখা এবং সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ অব্যাহত রাখা। সবকিছুকে সাম্প্রদায়িক চশমা দিয়ে দেখা, যাতে পতনশীল অর্থনীতি থেকে মানুষের মনোযোগ সরে যায়। কারণ সঙ্ঘ ও বিজেপির কোনো স্পষ্ট অর্থনৈতিক নীতি নেই এবং ছিল না।

 

সুপ্রিম কোর্টের বিখ্যাত আইনজীবী প্রশান্তভুষণ আদালতে আই এম ডি টি এক্টকে বদলে দিয়ে অমানবিক এই এন.আর.সি আইনকে ঘোষনা করার বিরুদ্ধে এক তীব্র সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে লিখেছিলেন, "৩০ বছরের সুপ্রিম কোর্টের জীবনে আমি এই পর্যায়ের অনুদার, কর্তৃত্ববাদী, প্রকৃতপক্ষে ফ্যাসিবাদী ও সাম্প্রদায়িক, মৌলিক আইনী নীতির প্রতি এই ধরণের অজ্ঞানতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আর মানবাধিকার ও মৌলিক মানবীয় মূল্যবোধের সংবেদনশীলতাহীন কোন বিচার এবং রায়ের সম্মুখীন হইনি ।

 

“আমেরিকা ফর আমেরিকানস” -ট্রাম্প

 

আমেরিকার শাসকেরা কোনো মানবতার ধার ধারেনা। ট্রাম্প আর এক কাঠি সরেস, সে কেবল প্যান আমেরিকান পুঁজিবাদী এবং পুঁজিবাদের সাথে সম্পর্কিত, তার সব কর্মকাণ্ড আমেরিকানদের ব্রেড - বাটারের জন্য। শ্লোগান – আমেরিকা ফর আমেরিকানস। অন্তরালে বিশ্বপুঁজির স্বার্থে ৪ হাজার ট্রিলিয়ন ডলারের ভূ-প্রাকৃতিক সম্পদ লুটের রাস্তা অবাধ করা , গ্রীনল্যান্ডের খনিজ সম্পদ কুক্ষিগত করা, পানামা খাল কুক্ষিগত করে উত্তর-দক্ষিণের বাণিজ্য সংযোগ বৃদ্ধি । আমেরিকার ম্যানুফাকচারিং ও আই.টি হাব হবে এশিয়ার দেশগুলোতে। পিল পিল করে পেটভাতার শ্রমিকেরা হ্যামলিনের বাঁশির টানে সারিবদ্ধ হয়ে নেমে যাবে সর্বনাশের সাগরে। সস্তা লেবারের শ্রম-ঘামের বিনিময়ে পুঁজির গজদন্ত-মিনারের চুড়োয় বসে নীরোর ভায়োলিন বাজাবেন বেণিয়াবাজ ট্রাম্প।

 

চীনের কারখানা থেকে শুরু করে ভারতের আইটি সেক্টর, ল্যাটিন আমেরিকার মাঠ থেকে আফ্রিকার খনি—সর্বত্রই মার্কিন লোভের শিকড় ছড়িয়ে আছে। আমেরিকার অহংকার চরমে, এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সবচেয়ে জঘন্য মুখ। ট্রাম্পের মতো বর্ণবাদী নেতাদের ধারণা যে তারা যেখানে ইচ্ছে প্রাচীর তৈরি করতে পারে এবং সারা বিশ্বকে তাদের পায়ের তলায় রাখতে পারে। আমেরিকা নিজেকে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি বলে দাবি করে, কিন্তু তার সমগ্র শিল্প শক্তি বিশ্বের শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমের উপর নির্ভরশীল একথা তারা বেমালুম অস্বীকার করতে চায়।

আমেরিকা তার অবৈধ অভিবাসীদের হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে সামরিক কার্গো বিমান সি-১৭ এ নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে এই বার্তা দিতে যে কেউ অবৈধভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করলে এটাই হবে তার পরিণতি। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো এর বিরোধিতা করেন এবং আমেরিকায় দুটি যাত্রীবাহী বিমান পাঠিয়ে তার নাগরিকদের সম্মানের সাথে দেশে স্বাগত জানান। ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পর, তার নির্বাহী আদেশে, দক্ষিণ সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণ পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দেওয়ায় মেক্সিকোর প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শিনবাউম পারডো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন।

 

অভিবাসন সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক আইন ও ট্রাম্প

ICCPR (International Covenant on Civil and Political Rights ) চুক্তির ৯ অনুচ্ছেদে গ্রেপ্তার ও ব্যক্তির ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বঞ্চনার সময় মানবিক মর্যাদাকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে, কারণ অবৈধ অভিবাসনকে আইনি লঙ্ঘন হিসাবে মনে করা হলেও, এটি সাধারণত অপরাধের শ্রেণীতে পড়ে না। বেশিরভাগ দেশে, অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে, তবে এটি সাধারণত একটি সামাজিক অপরাধ বা প্রশাসনিক নিয়ম লঙ্ঘন হিসাবে বিবেচিত হয়, গুরুতর অপরাধমূলক কাজ নয়। অবৈধ অভিবাসন সম্পর্কিত মামলাগুলি অপরাধ হিসাবে দেখা হয় না, কারণ তারা কোনও সহিংস বা অপরাধমূলক উপাদানের সাথে জড়িত নয়, বরং সেই ব্যক্তির স্থিতির সাথে সম্পর্কিত যারা বৈধভাবে প্রবেশ করতে পারে না। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এবং শরণার্থী সংস্থাও স্বীকার করেছে যে অবৈধ অভিবাসীরা শারীরিক, মানসিক বা অর্থনৈতিক শোষণের সম্মুখীন হয়, তাই তাদের অধিকার লঙ্ঘন না হয় তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করে কোনো ব্যক্তি অবৈধভাবে কোনো দেশে প্রবেশ করলে তাকে ফেরত পাঠানোর আন্তর্জাতিক নিয়ম হলো, সেই ব্যক্তিকে সেখানকার দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর করা এবং মানবাধিকারের সুরক্ষায় ডিপোর্ট করা ব্যক্তি যেন তার দেশে ফিরে যেতে পারে তা নিশ্চিত করা। কিন্তু আমেরিকা তাদের হার্ডকোর ক্রিমিন্যালের মতো হাতকড়া পরিয়ে, সামরিক কার্গো বিমানে করে বিভিন্ন দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে, এবং একই  অমানবিক প্রক্রিয়ায় ১০৪ জনকে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমেরিকায় এই ১০৪ জনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি বা কোনো এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়নি, সেখানে তাদের বায়োমেট্রিক্স করা হয়েছে এবং যখন সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর পাওয়া যায়নি, তখন তাদের আটক করে ডিটেনশন সেন্টারে ভরে দেওয়া হয়। ট্রাম্পের মতো বর্ণবাদী নেতাদের এই ভ্রম রয়েছে যে তারা একটি প্রাচীর তৈরি করতে পারে এবং বিশ্ব তাদের পায়ে পড়ে যাবে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে যে, ইতিহাসে দেয়াল চিরকালই সেই সব জাতির কবরস্থান হয়ে যায় যারা তাদের ক্ষমতার নেশায় মত্ত হয়ে দুনিয়া থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে।

 

বৈশ্বিক দ্বন্দ্ব ও আমেরিকার ভূমিকা  

আমেরিকা নিজেকে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি বলে দাবি করে, কিন্তু তার সমগ্র শিল্প শক্তি, অর্থনৈতিক ভিত্তি বিশ্বের শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমের উপর নির্ভরশীল। চীনের কারখানা থেকে শুরু করে ভারতের আইটি সেক্টর, ল্যাটিন আমেরিকার মাঠ থেকে আফ্রিকার খনি—সর্বত্রই মার্কিন লোভের শিকড় ছড়িয়ে আছে। কিন্তু এখন বিশ্ব জেগে উঠছে! আজ যদি বিশ্বের ৭০০ কোটি ভোক্তা আমেরিকান ব্র্যান্ডগুলোর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমেরিকান অর্থনীতি হাঁটু গেড়ে বসবে। এমনিতেই BRICS এর অন্তর্গত প্রাথমিক গঠন হয় ব্রাজিল , রাশিয়া, ইন্ডিয়া , চায়না , সাউথ আফ্রিকা এইসব দেশগুলি নিয়ে । পরবর্তীকালে অর্থাৎ ১লা জানুয়ারি ২০২৪ অনুসারে ইজিপ্ট, সংযুক্ত আরব আমীরশাহী, সৌদি আরব, ইথোয়োপিয়া ব্রিকস-এর অন্তর্ভুক্ত হয়। বর্তমানে ব্রিকস-এর নিয়ম অনুসারে যে কোন দেশ নিজ নিজ মুদ্রায় ব্রিকসের অন্তর্ভুক্ত দেশের সাথে বাণিজ্য করতে পারবে। এর ফলে বিশ্ববাণিজ্যের ৫৪ শতাংশ বাণিজ্যের অন্তর্ভুক্ত ব্রিকসের নিয়ম অনুসারে চলছে । এতেই ক্ষেপে গেছে আমেরিকা। কেননা এভাবে চলতে থাকলে ডি-ডলারাইজেশন ত্বরান্বিত হয়ে পড়বে। সেজন্যে আমেরিকার এতদিনের যুদ্ধাস্ত্র তৈরির নীতি, বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ লাগিয়ে রাখার পরিকল্পনা বাতিল করেছে ট্রাম্প। পরিবর্তে ইন্টারনেট সহযোগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার টুল আবিষ্কার, ফার্মাকোলজি, বায়োটেকনোলজি, অ্যাগ্রো-টেক প্রযুক্তি, মহাকাশ দখলের কারিগরিতে মনোনিবেশ করতে হচ্ছে। এজন্যে দেশবিদেশের শিক্ষিত ছাত্র-ছাত্রীদের আমেরিকায় বসে বেশী রোজগারের সুবিধা দিতে রাজি নয় ট্রাম্প-প্রশাসন। এইসব শিক্ষিত কারিগরেরা নিজের দেশে বসে সস্তাশ্রমে উৎপাদন করবে পণ্যসামগ্রী, আমেরিকার ফরমায়েসি মতো ।

 

ট্রাম্প কি মনে করেন প্রাচীর নির্মাণ করে তিনি আমেরিকাকে নিরাপদ রাখবেন?

 

আমেরিকায় নাগরিকদের প্রত্যেকের জন্য একটি মাত্র নম্বর এবং একটি কার্ড থাকে, যাতে একজন নাগরিকের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পুরো চার্ট ​​দেওয়া থাকে, এই নম্বরের সামাজিক নিরাপত্তা অ্যাকাউন্টে ড্রাইভিং লাইসেন্স, অপরাধ, জীবন বীমা, চিকিৎসা বীমা, ঋণ, গাড়ি, বাংলো এবং চাকরি সংক্রান্ত যাবতীয় আপডেট রাখা থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সমস্ত নাগরিক এবং বৈধ অভিবাসীদের জন্য একটি সামাজিক সুরক্ষা নম্বর (SSN) দেয়। এটি একটি নয় অঙ্কের শনাক্তকরণ নম্বর যার অধীনে সরকার অভিবাসীদের উপার্জন এবং কাজ করার বছরগুলোর হিসাব রাখে। যখনই নাগরিকরা অবসর নেয় বা আয়ের প্রয়োজন হয়, সরকার তখন এই নম্বরে রেকর্ড করা সমস্ত বিবরণ ব্যবহার করে যোগ্যতা নির্ধারণ করে এবং সুবিধা প্রদান করে।

সরকার আমেরিকায় কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দেয়, এবং সেদেশে শ্রমের একটি নিয়ম রয়েছে যা সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৮ ঘন্টা, সপ্তাহে পাঁচ দিন শ্রম দেওয়ার নিয়ম রয়েছে, যার জন্য প্রতি ঘন্টায় সর্বনিম্ন ৮ ডলার দিতে হবে । সরকার এর সমস্ত মনিটারিং নাগরিকের শোশ্যাল সিকিউরিটি নাম্বারের মাধ্যমে করে।

 

বৈধ্য- অবৈধ্য অভিবাসী প্রশ্নে আন্তর্জাতিক আইন কী বলে ?

অভিবাসী এবং অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে পার্থক্য বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক অভিবাসীই অবৈধ নয়, এবং প্রত্যেক অবৈধ অভিবাসীই অপরাধী নয়। কখনও কখনও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা সামাজিক পরিস্থিতির কারণে লোকেরা তাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়। এসব ক্ষেত্রে তাদের অপরাধী বললে তাদের সংগ্রাম ও দুর্ভোগকে উপেক্ষা করা হয়।

যতদূর অবৈধ অভিবাসনের প্রশ্ন, এই সমস্যার সমাধান কেবল আইনি পদক্ষেপ বা জোরপূর্বক বহিষ্কার নয়। এটি মানবিক সঙ্কটের বিষয়, যা সংবেদনশীলতার সাথে দেখা উচিত। কলম্বিয়ার গুস্তাভো পেত্রো যা বলেছেন তা অভিবাসীদের প্রতি সহানুভূতি ও মর্যাদার কথা, মানুষকে সম্মান জানানোর কালচার। তার উদ্দেশ্য অবৈধ কার্যকলাপকে সমর্থন করা নয়, বরং অভিবাসীদের অপরাধী হিসাবে দেখা না হয় তা নিশ্চিত করা।

 

এখানে বিষয়টি হচ্ছে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়ানোর প্রশ্ন। এটা যে কোনও দেশের সার্বভৌমত্বের বিষয় হতে পারে, তবে এই প্রক্রিয়াকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন ভারতে বাংলাদেশি অভিবাসী বা আমেরিকায় ভারতীয়দের সম্পর্কে কথা বলি, তখন আমাদের খতিয়ে দেখা দরকার যে কেন মানুষ তাদের জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য হয়। সমাধান কি শুধুই বহিষ্কার, নাকি এমন কোনো নীতিগত সমাধানের প্রয়োজন আছে যা সবাইকে উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ করে দেয়? আর তাই হাতকড়া পরানো বা মানুষকে নিছক অপরাধী হিসেবে দেখা নয়, বরং তাদের সমস্যাগুলো বোঝা এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে একটি সুষ্ঠু ও সংবেদনশীল সমাধান খুঁজে বের করাই এ সমস্যার সমাধান ।

আমেরিকা নিজেকে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি বলে দাবি করে, কিন্তু তার সমগ্র শিল্প শক্তি বিশ্বের শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমের উপর নির্ভর করে। আমেরিকার সবচেয়ে বড় শত্রু বেকারত্ব, সামাজিক বৈষম্য, বর্ণবাদ এবং বন্দুক সংস্কৃতি। মার্কিন রাজনীতিতে পর্দার আড়ালে আসল ইস্যু লুকিয়ে রাখা হচ্ছে। অমৃতসরে শিকলবন্দী ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে সামরিক বিমানের অবতরণ একটি নাটক মাত্র যা দেখাচ্ছে যে ট্রাম্প প্রশাসন তার প্রতিশ্রুতিতে অবিচল এবং অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে এবং যা বিদেশে বসবাসরত অভিবাসীদের মনে ভয়ও সঞ্চার করে। আসলে এর পেছনে চলছে পুঁজিবাদী রাজনীতির প্রতারণার খেলা। বাস্তবতা হলো, প্রায় সাড়ে সাত লাখ ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। এর মধ্যে মাত্র একটি ছোট গোষ্ঠী - প্রায় ২০,০০০ লোককে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, কারণ তাদের নির্বাসন করা সহজ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ট্রাম্প সরকারে সামিল ইলন মাস্ক, বিবেক রামস্বামী ট্রাম্পকে বুঝিয়েছেন আই.টি সেক্টরকে চাঙ্গা রাখতে গেলে নির্বিচারে ভারতীয়দের চ্যাংদোলা করে ভারতে ফেরত পাঠালে ঠিক হবে না। সেরকম দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করা শুধু অসম্ভবই নয়, অর্থনৈতিকভাবেও ধ্বংসাত্মক।

 

এই অবৈধ অভিবাসী শ্রমিকরা বড় শিল্প, কৃষি, হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণের মতো খাতের মেরুদণ্ড।

আসল প্রতারণা- ইলন মাস্কের এজেন্ডা, যা নিজের জন্য একটি নতুন পৃথিবী তৈরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে বিশ্ব তার খেলা বুঝতে অক্ষম। সরকার, পুঁজিপতি, বিজ্ঞানী সবাই তার পেছনে ছুটছে, কিন্তু আসল জাদুকর কে এখনো অনেকেই বুঝতে পারছেন না। স্পেসএক্সের মাধ্যমে মহাকাশ জয় করা, নিউরোলিংকের মাধ্যমে মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করা, টেসলার মাধ্যমে শক্তির ক্ষমতা দখল—এসবই নিছক প্রসাধনী সাফল্য নয়, বরং একটি গভীর খেলার অংশ। মাস্ক শুধু একজন শিল্পপতি নন, তিনি আমেরিকার ভবিষ্যতের সংজ্ঞা লিখে যাচ্ছেন। তিনি সরকারকে চ্যালেঞ্জ করছেন, ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা ব্যাহত করছেন এবং একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করছেন। এটা কি শুধুই কাকতালীয় যে বিশ্ব যখন তেলের উপর নির্ভরশীল ছিল, তখন সে বৈদ্যুতিক গাড়িকে মূলধারায় নিয়ে আসে। এটা কি নিছকই কাকতালীয় যে সরকার যখন ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিল, তার স্টারলিংকের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছিল, আসলে এটা একটা সুপরিকল্পিত কৌশল। আজ সরকারগুলো দেশ শাসন করছে, কিন্তু আগামীকালের শাসক হবে সেই ব্যক্তি যে মহাকাশ, এনার্জি এবং মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করবে। DOGE - ডিপার্টমেন্ট অফ গভরমেন্ট এফিসিয়েন্সির আড়ালে, আমেরিকান সরকারী প্রতিষ্ঠানের মেরুদন্ড ভেঙ্গে, কর্মচারীদের প্রান্তিক করে, এবং প্রযুক্তিগত জার্গনের পিছনে নীতি-নির্ধারণকে লুকিয়ে আমেরিকান গণতন্ত্রকে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করার পরিকল্পনা তৈরি। এই খেলা এভাবে চলতে থাকলে, আমেরিকান নাগরিকরা শীঘ্রই বুঝতে পারবে যে তারা মুষ্টিমেয় কিছু বিলিয়নেয়ারের লোভে, শুধু তাদের প্রকৃত গভর্ন্যান্স হারায়নি, তাদের শ্রম অধিকার, তাদের গোপনীয়তা এবং তাদের স্বাধীনতাও হারিয়েছে।

 

আমেরিকার সবচেয়ে বড় শত্রু বাইরে নয়, বরং তার ভিতরেই আছে।

 

বেকারত্ব, সামাজিক বৈষম্য, বর্ণবাদ এবং বন্দুক সংস্কৃতি। আমেরিকা হচ্ছে সেই দেশ যেখানে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ গুলিতে মরে, যেখানে পুলিশ রাস্তায় কৃষ্ণাঙ্গদের হত্যা করে এবং যেখানে পুঁজিপতিরা প্রতিদিন দরিদ্রদের আরও দরিদ্র করে তুলছে। এই দেশ নিজেকে গণতন্ত্রের স্বঘোষিত মসিহা মনে করে, কিন্তু এই একই আমেরিকা আফগানিস্তান, ইরাক, ভিয়েতনাম, চিলি এবং অন্যান্য অনেক দেশে রক্তের নদী ঝরিয়েছে। এটা সেই আমেরিকা যা প্রতিটি সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করে যারাই তার সুরে নাচতে অস্বীকার করে। আমেরিকার অর্থনীতি যদি এতই মহান হয়, তাহলে ২০২০ সালে মাত্র কয়েক মাসের লকডাউন তাকে নাড়া দিল কেন? কেন আমেরিকায় করোনার সময়ে সবচেয়ে বেশী মৃত্যুমিছিল। কেন খাবারের জন্য মানুষকে রাস্তায় লাইন দিতে বাধ্য করা হল? কেন সরকারকে বেকারদের সরাসরি বেতন দিতে হবে? বাস্তবতা হল আমেরিকার অর্থনীতি একটি মিথ্যা চমক, যা সম্পূর্ণরূপে ভোক্তাদের উপর নির্ভরশীল। যদি লাতিন আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার মানুষ আমেরিকান চলচ্চিত্র, ব্র্যান্ড এবং প্রযুক্তির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে এই তথাকথিত পরাশক্তি নিজেকে বাঁচাতে পারবে না। ইতিহাস সাক্ষী, যে দেশ নিজেকে সবচেয়ে শক্তিশালী ভাবতে শুরু করে, সেই দেশের পতন অবধারিত। এই ঔদ্ধত্যের কারণে রোমান সাম্রাজ্যেরও পতন ঘটে এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যও তার লুণ্ঠন ও নিপীড়নমূলক নীতির কারণে ধ্বংস হয়ে যায়। আর এখন আমেরিকাও একই পথে হাঁটছে। ট্রাম্পের মতো লোকেরা মনে করে যে তারা দেয়াল তৈরি করে নিজেদের বাঁচাতে পারে, কিন্তু তারা কী বুঝতে পারে না যে বিশ্ব যখন তার পথ পরিবর্তন করবে তখন এই দেয়ালগুলি তাদের কফিনে পরিণত হবে। মিঃ ট্রাম্প, আপনি আমেরিকাকে মহান করার দাবি করেন, কিন্তু সত্য হল আপনার সিদ্ধান্ত আমেরিকার জন্য আত্মহত্যার সমতুল্য। বিশ্ব যখন আপনার দেয়ালের দিকে তাকাতেও ঘৃণা করবে, তখন আপনি বুঝতে পারবেন যে আমেরিকা আর বিশ্বের কেন্দ্র নয়। তখন হয়তো এই অহংকারী রাষ্ট্র তার সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপের নিচে সমাহিত হবে এবং পৃথিবী আমেরিকাকে ছাড়াই এগিয়ে যাবে এবং সম্ভবত আরও দ্রুততর এবং আরও ভালভাবে ! চ্যাট জিপিটির বিপরীতে চীনের সস্তায় ডিপসিক আবিষ্কার একটিমাত্র উদাহরণ। ইসরোর সস্তায় মহাকাশ অভিযান চন্দ্রাভিযান, মঙ্গলাভিযান এর যথাযথ উদাহরণ। তোমাকে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে। গোকুল এখানে সারা বিশ্বের মানব সমাজ , যে সমাজ প্রযুক্তির মালিকানার দখল নেবে একদিন, প্রস্তুত হও তার লাগি। 

 

0 Comments

Post Comment