পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

ব্রহ্মতেজ ও বাণী

  • 24 April, 2021
  • 0 Comment(s)
  • 1977 view(s)
  • লিখেছেন : হুতোম প্যাঁচা
অ্যান্টিন্যাশনালরা বলছে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে সরকার কিছুই করছে না। একদম বাজে কথা। আসলে সরকার দারুণ লড়ছে। দেখল হুতোম প্যাঁচা

অনেককাল হুতোমের নকশা লেকা হচ্চে না। কোন দিকে তাকালে উত্তম নকশা কাটা যাবে সেইটে বুজতে হিমশিম। ভূত বলে তো হুতোমের পাছে আর দুটো চোক গজায়নি। ভোটের তোপ পড়তেই এদিকে খেলা, ওদিকে দেবেন ঠাকুরের কনিষ্ঠ পুত্রের দাড়ির সাথে পোইট্রির ফিউশন, সে দিকে সুনার জুমলা --- হরেক রঙ্গ চলেচে। কনফিউশনে জেরবার হচ্চি, এম্নি সময় এক দল খেলতে খেলতে গুড়ুম করে বন্দুক চালিয়ে দিলে। সে কালের জমিন্দারের লেঠেল বাহিনী কোন না দু চার চাষাভুষো মেরেচে? এ কালের গানেল বাহিনী কিঞ্চিৎ মাতা গরম কল্লে গোল করা কর্তব্য হয় না। বাবু বিবি এম্নি বলচেন শুনে বুজলেম বাংলা বোতলের ভিতর যত আচে, মানুষের মদ্যে তত নেই। পাইকিরি হারে বানর হয়ে গ্যাচে। সম্পাদকের ফ্রিজ হতে ধোকলা নে চিবোলেম, তারপর ভারত ভ্রমণে বেরোলেম।

দু বচ্ছর আগের অগস্ট হতে ম্যাপের মাতাটি কুয়াশায় ঢাকা পড়েচে, হুতোমের ১৮০ বচ্ছরের চোকে দ্যাকা যায় না। তাই গলা হতে ঘুরতে শুরু কল্লেম। দেকি কোতাও শান্তি নেই। লোকে দিনে মাস্ক পরে, আচ্ছা না পরেই হল, বুক ফুলিয়ে ঘুরচে আর রাতে কার্ফু করে ভাইরাস ঠ্যাকাচ্চে। কোভিড বাবাজি নেচে কুঁদে চাদ্দিকে জনসভা করে বেড়াচ্চে। ভাবখানা যেন ভাইরাস নয়, প্রধান সেবক। সর্বত্রই কোভিডের মেলা মিত্র। মাস্ক পল্লে তেনাদের জাত যায়। কোন রাজ্যে দেকলেম ছোট সরকার পাগড়ির ওপর দিয়েই মাতা চুলকোচ্চেন, কোতাও কেবল সম্পাদক ম্যানেজ কচ্ছেন। কোতাও ছোট সরকারের কত্তা দাবি কচ্ছেন তিনি কোভিডের খুড়া মহাশয়। যতক্ষণ না বলচেন, ততক্ষণ মাস্ক পত্তে হবে না। তবে যোগসিদ্ধ কত্তা সকলের পিতামহ, কোভিডকে বেজায় জব্দ করেচেন। কলার তুলে কত্তাকে অ্যাটাক করেছিল, তিনি যোগবলে আর গোমূত্রবলে এম্নি আটক করেচেন যে একন সে রাজ্যে কারো বডিতে সেঁধোতে হলে তেনার আপিস হতে পারমিট নিতে হচ্চে। স্থূল শরীর ধারণ করে কত্তার এক ভক্তকে বল্লেম, ভায়া তোমাদের বাবুটি তো সিদ্ধপুরুষ। কেবল পারমিট না দিয়ে ভাইরাস আটকাচ্চেন? সে বল্লে, তবে? কলিযুগ বলে এটুকুন। সত্যযুগ হলে ব্রহ্মতেজে কোভিডকে ভস্ম করে দিতেন। তবে মহিমা ওকানে শেষ নয়। দেকে আসুন ফুটপাথে কেমন VCS চালু করেচেন। শুধোলেম, সেটি কী বাবা?

গোরুখেকো সায়েবকে অড়হর ডাল খেতে দিলে যেমন মুখব্যাদান করে তেম্নি করে বল্লে, ভেদিক ক্রিমেশন সিস্টেম। খানিক চাপেই সায়েন্টিফিক শ্মশান ফেল পড়ে গ্যাচে, তাই যোগীবাবা বৈদিক যুগের মতন মড়া পোড়ানোর বেওস্তা করেচেন। তবে কিনা উনি নিজ হাতে গাছ লাগান, কাটা পচন্দ করেন না। তাই কাঠের বদলি পেট্রোল দিয়ে ক্রিমেট করা হচ্চে। শুনে হুতোমের সন্দ হল, তাই শুধোলেম, এত লোক কিসে মরচে? কোভিডে নয় তো? ভক্ত মশায় বিষম রেগে গাল দিয়ে বল্লে, আদার ব্যাপারী জাহাজের খোঁজ করেন কেন? আপনি মোসলমান নাকি অ্যান্টিন্যাশনাল? আপনারা যে দুবেলা বলেন পেট্রোল ডিজেলের দাম বেড়ে গ্যাচে, দেকচেন সে কতা কেমন মিথ্যা? অ্যাতো লোক অ্যাতো পেট্রোল তবে পাচ্চে কেমনে? হুতোমকে লিঞ্চ করবে বলে হোয়াটস্যাপে মেসেজ পাঠানোর আগেই আপনাদের হুতোম বাতাসে মিলিয়ে গেলেন, ভক্তটি তা দেকে ভির্মি খেলেন।

বাতাসে ভেসে চলতে চলতে কান ফাটার যোগাড়। হাসপাতালে অক্সিজেন ফুরোতে বসেচে, ডাক্তাররা মোক্তারদের শরণ নিয়েচেন, জজেরা সরকার বাহাদুরকে ধমকাচ্চেন। এরি মদ্যে আকাশবাণী হল, প্রধান সেবক জাতির কানে কানে দুটি মনের কতা কবেন। এক হাসপাতালের জানালায় গিয়ে বসে পড়তে হল। প্রধান সেবক যে বাংলার ময়দান ভিন্ন অন্যত্রও কতা বলেন সেটি ভোলবার যোগাড় হয়েচিল। এক বচ্ছর আগের লকডাউনের ভাষণটি মনে পড়ে মেজাজটি ভারী মোলায়েম হয়ে এল।

প্রধান সেবকবাবুর বাণী দেয়ায় ফাঁকি নেই। আপনাদের এক আধ ল্যাঙটা বুড়ো নেতা নাকি বলেছিল, আমার জীবনই আমার বাণী। এই বাবুটি অটোবায়োগ্রাফিতে লিকবেন, আমার বাণীই আমার জীবন। তা এ বাণীটিও শুনতে ভালো। ছেলে, বুড়ো, টুকটুকে, কুচকুচে, নধর, রোগা সকলের জন্যে বাণী দিয়েচেন। কার কী কর্তব্য তার তালিকাটি টেলিপ্রিন্টার থেকে পড়তে গিয়ে একটিবারও ভুল করেননি। তবে বাবুর চশমায় রিফ্লেকশন দেকে ধত্তে পাল্লেম না নিজের কর্তব্যটি পড়তে ভুল গেলেন, নাকি যার লেকার ডিউটি ছিল, তার ভাগে অক্সিজেন কম পড়ে গিয়েছিল। এ সওয়ায় হুতোম ভাবলে দেড়শত বচ্ছর আগে পটল তুলে জোর বাঁচা গ্যাচে। অক্সিজেনের চিন্তা কত্তে হচ্চে না।

https://twitter.com/sumonseng/status/1385247603202289672?s=20

0 Comments

Post Comment