প্যালেস্টাইন ও লেবানন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমি দেশগুলো এক অমানবিক দ্বিচারিতায় লিপ্ত। একদিকে গাজা বা লেবাননে ইসরায়েলি সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করছে। অন্যদিকে ইসরায়েলকে অস্ত্র, বোমা, গোলাবারুদ সরবরাহ করছে, যা ব্যবহার করা হচ্ছে শিশু,নারী, পুরুষ নির্বিচারে হত্যা করতে। এই দ্বিচারিতায় এখন সামিল আমাদের দেশ ভারতও।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর ইসরায়েল দূর নিয়ন্ত্রিত কারিগরি কৌশল ব্যবহার করে লেবাননে হিজবুল্লাহর সদস্যদের দ্বারা ব্যবহৃত শত শত হ্যান্ডহেল্ড পেজার-এ বিস্ফোরণ ঘটায়, কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়। সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের মধ্যে দুই শিশু ছিল, আর হাজার হাজার আহত মানুষকে লেবাননের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।আবার ১৮ সেপ্টেম্বর, গোটা লেবানন জুড়ে ওয়াকি-টকি বিস্ফোরিত হয়, ২০ জনের মৃত্যু হয়। এর ঠিক দুই দিন পর ২০ সেপ্টেম্বর লেবাননের রাজধানী বেইরুটে একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিমান হামলায় বহু মানুষ নিহত হয়।২৩ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী লেবাননের বিভিন্ন সেক্টরে স্বতঃস্ফূর্ত সাইকোপ্যাথিক বোমা হামলা শুরু করে, যাতে ৫০ শিশু সহ ৫৫০ জনেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়। এদিন প্রকাশিত এক ভিডিওতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন, ‘আমরা লেবাননে আমাদের হামলা তীব্রতর করেছি। দক্ষিণ ইসরায়েলের বাসিন্দাদের নিরাপদে তাঁদের বাড়িঘরে পাঠানোর লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এ হামলা অব্যাহত থাকবে।’ ২৬ সেপ্টেম্বর লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত বন্ধে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স সহ পশ্চিমা ও আরব মিত্ররা। তবে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সর্বশক্তি দিয়ে লেবাননে হামলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। লেবানন জুড়ে এই সন্ত্রাসবাদী হামলা যখন চলছে তখন বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানরা সমবেত হয়েছিলেন নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের ৭৯ তম সাধারণ সভায় অংশ নিতে।বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান কিভাবে সম্ভব, তা নিয়ে গুরুগম্ভীর আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপ্রধানরা যখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন লেবাননের ঘরে ঘরে টেলিফোনগুলি বেজে উঠেছিল ইসরায়েলি সেনার সৌজন্যে। টেলিফোনে সন্ত্রাসীদের মতোই লেবাননের নাগরিকদের ইসরায়েলি সেনা হুমকি দিচ্ছিলো নিরাপদ স্থানে চলে যেতে। হুমকি শুনে আতঙ্ক ছড়িয়েছিলো নাগরিকদের মধ্যে। নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে যেতে বলে, তাদের উপর বোমাবর্ষণ ইসরায়েলি সেনার বহুদিনের পুরানো কৌশল। ২০০৬ সালে লেবাননের উপর ইসরায়েলের ৩৪ দিনের যুদ্ধের সময়, দক্ষিণ লেবাননের মারওয়াহিন গ্রামের ২৩ জন বাসিন্দাকে একটি ইসরায়েলি সামরিক হেলিকপ্টার থেকে খুব কাছ থেকে হত্যা করা হয়েছিল, কারণ তারা তাদের বাড়িঘর পরিত্যাগ করার জন্য ইসরায়েলের নির্দেশ অনুসরণ করেছিল। নিহতদের অধিকাংশই ছিল শিশু। এরকম অসংখ্য নারকীয় ঘটনা ঘটিয়েছে ইসরায়েল, সেকথা স্মরণ করেই টেলিফোন হুমকি আতঙ্ক ছড়িয়েছিলো জনমানসে।
২২ সেপ্টেম্বর বিশ্বের সরকারগুলি নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের 'সামিট অফ দ্য ফিউচার'-এ বৈশ্বিক শাসনপ্রক্রিয়াকে জনস্বার্থে রূপান্তরিত করার জন্য একাধিক অঙ্গীকার করেছে।উচ্চাভিলাষী নামকরণ করা শীর্ষ সম্মেলনটিকে "আমাদের ভবিষ্যত কেমন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে একটি নতুন বৈশ্বিক ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য "একটি প্রজন্মের একবার সুযোগ" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল। অথচ, ইউক্রেইন, প্যালেস্টাইন, লেবানন, সুদানের রক্তাক্ত সংঘাত বন্ধ করার কোন শক্তিশালী, দৃঢ় উদ্যোগ দেখা গেলোনা রাষ্ট্রসংঘের ৭৯ তম সাধারণ সভায়। বরং, লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আগ্রাসনের বৃদ্ধি দেশটিকে এবং গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে সংঘাতের একটি নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে।ইসরায়েল জুলাইয়ের শেষের দিকে হিজবুল্লাহ কমান্ডার ফুয়াদ শুকরের হত্যার মাধ্যমে একটি বিস্তৃত এবং আরও ব্যাপক সংঘাতের জন্য তার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়েছিলো।সাম্প্রতিক হামলাগুলিকে হিজবুল্লাহর ওপর বড় ধরনের আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। বহুসংখ্যক বেসামরিক নিরীহ মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি এসব হামলায় হিজবুল্লাহর এলিট বাহিনী রাদওয়ান ইউনিটের শীর্ষস্থানীয় কমান্ডাররাসহ সংগঠনটির কয়েক ডজন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। দক্ষিণ লেবানন এবং বেক্কা উপত্যকায় কয়েক দফা হামলা চালিয়ে এক হাজারের বেশি বেসামরিক লোক মেরে ফেলেছে। হিজবুল্লাহর যোগাযোগ নেটওয়ার্কে ইসরায়েলের ঢুকে পড়া এবং সংগঠনটির ওপরের সারির নেতাদের হত্যা করার ঘটনা হিজবুল্লাহর প্রতিরোধ সক্ষমতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।লেবানন জুড়ে যোগাযোগের যন্ত্র উড়িয়ে দিয়ে এবং একের পর এক বিমান হামলায় নারী ও শিশু সহ - শত শত মানুষকে হত্যা করে, ইসরায়েলের উদ্দেশ্য নিছক সীমান্তে হিজবুল্লাহ কে নিয়ন্ত্রণ করা নয়, এর বাইরেও বড় কিছু আদায়ের লক্ষ্যে সন্ত্রাসকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত করছে।এই যুদ্ধ আর শুধু হিজবুল্লাহকে গাজায় প্যালেস্টাইনের সমর্থনে পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত করার জন্য নয়। বরং ইসরাইল হিজবুল্লাহ কে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিতে চাইছে। শুকরের হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে, হিজবুল্লাহ কিভাবে সর্বাত্মক যুদ্ধের প্ররোচনা না দিয়ে প্রতিশোধ নেওয়া যায় সে সম্পর্কে একটি অনিশ্চিত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছিল।ইসরাইল এই দ্বিধাকে হিজবুল্লাহর সামরিক দুর্বলতা এবং কৌশলগত স্বচ্ছতার অভাব ধরে নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনা সাজিয়েছে।এই মাসের আক্রমণগুলো হঠাৎ করে একটি উত্তাল গ্রীষ্মের সমাপ্তি ঘটিয়েছে এবং এই শরৎকালে সন্ত্রাসের পথ প্রশস্ত করেছে।
গত মে মাসে বিমান দুর্ঘটনায় ইরানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সন্দেহজনক মৃত্যুর পর থেকে এসব ঘটনার হার বেড়েছে। ইসরায়েলের দুটি প্রাথমিক কৌশলগত লক্ষ্য হলো গাজা থেকে উত্তর ফ্রন্টকে বিচ্ছিন্ন করা এবং উত্তর প্যালেস্টাইন থেকে বিতাড়িত হওয়া কয়েক হাজার ইহুদিকে আবার সেখানে ফিরিয়ে নেওয়া। তবে এ দুটি লক্ষ্য এখনই ইসরায়েল পূরণ করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল নাইম কাসিম ঘোষণা করেছেন, যুদ্ধ আরও ‘উন্মুক্ত মাত্রায়’ প্রবেশ করেছে ।হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি শহর ফাঁকা হয়ে গেছে এবং সেখানকার কয়েক হাজার বাসিন্দা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অন্যত্র চলে গেছেন। এসব শহরের স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলোকে তাদের কাছে চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিদের ভূগর্ভস্থ নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনায় কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়, কারণ তেল আবিব এসব স্থাপনার ক্ষতির খবর সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরার বিষয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এটি সত্য যে এই স্থাপনাগুলো হিজবুল্লাহর রকেটের পাল্লার সীমার মধ্যে রয়েছে এবং ইসরায়েলের বহুল পরিচিত আয়রন ডোম এসব রকেট সর্বাংশে ঠেকাতে সক্ষম নয়। হিজবুল্লাহর দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সীমানা থেকে দূরে ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারগুলোয় রাখা আছে। এ কারণে লিতানি নদীর দক্ষিণে লেবাননের ভূখণ্ডে ইসরায়েল স্থল আক্রমণ চালালে তা তাদের জন্য খারাপ পরিণতি বয়ে আনতে পারে। ইসরায়েল এ ধরনের বেপরোয়া আক্রমণ অব্যাহত রাখলে তা হিজবুল্লাহ বাহিনীকেও বেপরোয়া করবে এবং উত্তরাঞ্চলীয় ইহুদি বসতিগুলোকে হিজবুল্লাহর ছোড়া রকেট থেকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।ইসরায়েলের হামলার পর প্যালেস্টাইন, ইয়েমেন ও ইরাকে থাকা হিজবুল্লাহর মিত্রদের মধ্যে সংহতি জোরদার হয়েছে বলে খবর । তারা ইতিমধ্যেই বিবৃতি দিয়ে হিজবুল্লাহর প্রতি সমর্থনমূলক সামরিক পদক্ষেপের দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। এটি সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, বর্তমান এই যুদ্ধকে কোনো বিচ্ছিন্ন যুদ্ধ হিসেবে দেখা যাবে না। গোটা মধ্যপ্রাচ্যের খণ্ড খণ্ড যুদ্ধ একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। এক জায়গার ক্ষতি বা লাভের সঙ্গে অপর জায়গার ক্ষতি বা লাভ সংযুক্ত।মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মে মাসে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, অবৈধ ইসরায়েলি দখলদারি ও ভূখণ্ড অবরোধের অবসান এবং বন্দীদের মধ্যস্থতামূলক বিনিময়ের যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, হামাস তা মেনে নিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল তাতে রাজি নয়।উত্তর ফ্রন্টে আচমকা গোলাগুলির মধ্য দিয়ে ইসরায়েলে এটি প্রকাশ করছে যে তারা একটি ন্যায্য ও যুক্তিসংগত সমাধানের প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করায় আগ্রহী। এর জন্য তারা নির্লজ্জভাবে লেবাননে হামলা চালাচ্ছে এবং গাজা অবরোধ করে সেখানে মাসের পর মাস সন্ত্রাসী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। জরুরি প্রশ্ন হলো, এ অঞ্চলে ইসরায়েলের অন্যায্য হামলা বন্ধে পশ্চিমারা কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। প্রশ্ন হচ্ছে, তারা আর কতদিন বসে থাকবে এবং চেয়ে চেয়ে সব দেখবে।
আসলে প্যালেস্টাইন ও লেবানন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমি দেশগুলো এক অমানবিক দ্বিচারিতায় লিপ্ত। একদিকে গাজা বা লেবাননে ইসরায়েলি সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করছে। অন্যদিকে ইসরায়েলকে অস্ত্র, বোমা, গোলাবারুদ সরবরাহ করছে, যা ব্যবহার করা হচ্ছে শিশু,নারী, পুরুষ নির্বিচারে হত্যা করতে। এই দ্বিচারিতায় এখন সামিল আমাদের দেশ ভারতও।বছরখানেক ধরেই শোনা যাচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে প্যালেস্টাইনের গাজায় চলা যুদ্ধের দামামায় লাগাম টানা। সেই সঙ্গে এ যুদ্ধ যাতে সর্বাত্মক আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ না নেয়, তা নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে নানা সময় ইসরায়েলের প্রতি সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন তিনি।অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই ইজরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী। প্রযুক্তিগতভাবে বিশ্বের অন্যতম অত্যাধুনিক সামরিক বাহিনী গড়ে তুলতে ইজরায়েলকে সাহায্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) তথ্য অনুসারে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইজরায়েলের প্রচলিত অস্ত্র আমদানির ৬৯ শতাংশই এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১০ বছর মেয়াদি একটি চুক্তির আওতায় ইজরায়েলকে ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বার্ষিক সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন তাঁর মেয়াদের সর্বশেষ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার সময় লেবাননে ইসরায়েলের বড় পরিসরে হামলা দৃশ্যত, বাইডেনের সতর্কবার্তার অকার্যকারিতাকেই তুলে ধরেছে।মধ্যপ্রাচ্যে ‘উত্তেজনা প্রশমনের’ লক্ষ্য নিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ২৬ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে ইসরায়েল ও লেবানন কে আবেদন জানানো হয় ২১ দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার জন্য। কাতার, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, ইতালি, জাপান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত এই আবেদনকে সমর্থন করে। কিন্তু ঐ আবেদন সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল।নেতানিয়াহু তার সেনাবাহিনীকে সর্বাত্মক স্থলযুদ্ধের প্রস্তুতি নেবার নির্দেশ দিয়েছেন। কোনো আবেদন নিবেদনে সাড়া দিতে রাজি নন বর্তমান বিশ্বের পয়লা নম্বর অমানবিক দক্ষিণপন্থী শাসক বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানির তৈরী আজকের ফ্রাঙ্কেনস্টাইন।একথাও নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব সর্বদা গণহত্যার পূর্বাভাস দেয়।এমন একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা যা গাজা উপত্যকায় চলমান গণহত্যা সৃষ্টি করেছে, যেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে এক বছরেরও কম সময়ে ৪১,০০০ প্যালেষ্টাইনীকে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা নিঃসন্দেহে অনেক গুণ বেশি।লেবাননে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের বিস্ফোরণ এবং মানসিক যুদ্ধের আকস্মিক আক্রমণ ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক প্রচেষ্টাকে স্বাভাবিকের চেয়ে আরও বেশি জর্জ অরওয়েল এর বিখ্যাত বই '১৯৮৪' এ বর্ণিত রাষ্ট্রব্যবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।বইটিতে এমন একজন ব্যক্তির কথা বলা হয়েছে যিনি এমন একটি সর্বগ্রাসী রাষ্ট্র বা সমাজের কল্পনা বা ভবিষ্যদ্বাণী করেন যেখানে সীমাহীন যন্ত্রণা বা অবিচার রয়েছে।বইটি ১৯৪৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল - ঘটনাক্রমে প্যালেস্টাইনের মাটিতে ইসরায়েলের রক্তাক্ত স্ব-আবিস্কারের এক বছর পরে।