ভারতবর্ষের জলের ভান্ডারটি বরাবর ঈর্শনীয় জায়গা দখল করে রয়েছে, পুরো পৃথিবীর প্রক্ষাপটে। তার পেছনে অবশ্যই এই দেশে অঝোর ধারায় ঝরে পরা মৌসুমী জলবায়ুর আশীর্বাদ ধন্য ‘বৃষ্টিকে’ অস্বীকার করা যায় না। তা সত্বেও ভারতের মত দেশে মাটির তলার জলের সংকট। সদ্য প্রকাশিত হল ‘সেন্ট্রল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ড’ ফরিদাবাদ থেকে ‘ন্যাশানাল কমপাইলেশন অন গ্রাউন্ড ওয়াটার রিসোর্সের অফ ইন্ডিয়া,২০২৩’ শীর্ষক রিপোর্ট। এই রিপোর্ট থেকেই জানা যাচ্ছে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এই চার মাস আমাদের দেশের মাটিতে সারা বছরের মোট বৃষ্টিপাতের ৭৫ শতাংশ বৃষ্টি পরে। এই বৃষ্টি ভারতবর্ষের ৬০ শতাংশ মাটির তলার জলের ভান্ডারটি(গ্রাউন্ড ওয়াটার)-কে সমৃদ্ধ বা ‘রিচার্য’ করে। জলতলের নিচে মাটির অনেক গভীরে লুকিয়ে থাকে ভূগর্ভস্থ জলের এই সমৃদ্ধ ভান্ডার বা ‘অ্যাকুইফার’। পৃথিবীর এই জল ভান্ডারের অবস্থান কোথাও জল তলের খুব কাছাকাছি থাকে। আবার কোথাও একেবারে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকে। পৃথিবীর পেটের ভিতর এমন অনেক জল ভান্ডার রয়েছে, যাদের বয়স পাঁচ থেকে দশ হাজার বছরেরও বেশি প্রাচীন।
আমাদের দেশের কোথায় কতটা মাটির তলায় জল প্রবেশ করবে, তা নির্ভর করে সেই এলাকার শিলাস্তরের গঠন, শিলাস্তরের জল ধারণ ক্ষমতা ও প্রবাহ ক্ষমতা প্রভৃতি বিষয়গুলোর ওপর। এই দেশের মাটির ওপরের যে জলের ভান্ডারটি রয়েছে, তা মাটির তলার জলের ভান্ডার থেকে অনেক বেশি সমৃদ্ধ। তবে দেশের সব জায়গায় ভূপৃষ্ঠের জলের প্রাপ্যতা সমান নয়। কোথাও অনেক বেশি। আবার কোথাও অনেক কম। তা সত্বেও মনে রাখা প্রয়োজন আমাদের দেশে সব থেকে খরা প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত রাজস্থান, সেখানেও বৃষ্টির প্রতিটি বিন্দুকে ধরে রাখার পরম্পরা গত পদ্ধতি (ট্রাডিশনাল টেকনিকস) ছিল। কিন্তু সেচ নির্ভ্র কৃষি-শিল্প-বিলাসের অতিরিক্ত বাড়বাড়ন্তের কারণে মাটির ওপরের জল সেই চাহিদা মেটাতে পারল না। হাত পড়ল হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর পেটের ভিতর জমিয়ে রাখা জলে। বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের সাহায্যে ক্রমশ তুলে নেওয়া হল মাটির তলার তল ‘ওয়াটার টেবিল’ ও ‘অ্যাকুইফার’ থেকে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এই প্রবণতা বাড়বাড়ন্ত শুরু হচ্ছ ১৯৫০ এর দশকের থেকে।
আমাদের দেশ কৃষি নির্ভর। কৃষিতেই ভূ-গর্ভস্থ জল সব থেকে বেশি ব্যবহার হয়। বেসরকারি কিছু গবেষণার হিসেব বলছে ৯০ শতাংশ। সদ্য প্রকাশিত(২০২৩)-এর কেন্দ্র সরকারি রিপোর্ট বলছে ৬২ শতাংশ (পৃ-১)। পরিসংখ্যান কম বেশি যাই হোক না কেন আমাদের মতন কৃষি নির্ভর দেশে কৃষিতে সেচের জলের ব্যবহার ‘অপচয়’ হিসেবে ভাবার কোন প্রশ্নই ওঠে না। কৃষিতে উৎপাদন না হলে প্রায় একশো কুড়ি কোটি মানুষের দেশ খাবে কি? প্রয়োজনের জলের ব্যবহারকেতো কিছুতেই অপচয় বলা যায় না। তাহলে অপচয় কথাটি আসছে কেন? অপচয়ের পেছনে আসল কথাটি হল যেকানে যে শস্যের চাষ করার কথা না, সেখানে সেই শস্যের চাষ হচ্ছে। তুলো ধান আঁখ সয়ারিল এই সব চাষ করতে বেশি জলের প্রয়োজন হয়। কম বৃষ্টিপাত যুক্ত এলাকায় এই সব চাষ করার অর্থ সেচের জন্য মাটির তলার জলের ব্যবহার এখানে বেশি হবে। মাটির তলার জলের এটাই অপচয়। আবার নানা রকম রাজনৈতিক কারণে ও আর্থ সামাজিক কারণে দেশের অনেক এলাকা মাটির তলার জলের উপরেই নির্ভরশীল। কারণ খুঁজলে দেখা যাবে অনেক জায়গায় খাল পথে কৃষকের কাছে পোঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। বা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা রকম জমি জমা সংক্রান্ত জটিলতা তৈরি হয়েছে। এটাও এক প্রকার অপচয়। শিল্প ক্ষেত্রে মাটির তলার জলের ব্যবহার হলেও, কতটা হচ্ছে তা নিয়ে ধোয়াসা রয়েছে। কারণ ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে ঠিক ভাবে ‘থার্ড পার্টি ওয়াটার অডিট’ হয় না। শিল্প সামগ্রী উৎপাদনের ক্ষেত্রে যতটা জলের দরকার তার থেকে বেশি ব্যবহার হলেই তা অপচয় হিসেবে ধরা হবে।
কৃষি ক্ষেত্রে মাটির তলার জলের অপচয়কে কি রুখে দেওয়ার রাস্তা ছিল না? এই ক্ষেত্রে পথ দেখিয়েছে গুজরাতের জ্যোতিগ্রাম যোজনা। যে যোজনার হাত ধরে ইলেকট্রিক সাপ্লাইকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মাটির তলার জলের ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছিল। ২০০৩-২০০৬ সালে গুজরাতের সরকার এই যোজনা শুরু করে। প্রকল্পটি রূপায়ণের জন্য খরচ করা হয়েছিল ১হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। দু’রকম ভাবে বিদ্যুৎ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হল। গ্রামের বাড়ি, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতাল, গ্রামের কারখানার জন্য ছিল পৃথক ভাবে বিদ্যুৎ সংযোজন, যেখানে চব্বিশ ঘন্টায় বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে। মিটার ট্যারিফের মাধ্যমে তাদের কাছে যাবে বিদ্যুত-এর বিল। আর গ্রামের বাইরে টিউবওয়েল মালিকেরা টানা আট ঘন্টার জন্য ভালো ভোল্টেজের বিদ্যুৎ সরবরাহ পাবেন, খুবই স্বল্প মূল্যের বিনিময়ে। ২০০৬ সালের মধ্যে গুজরাতের ১৮ হাজার গ্রামকে ‘জ্যোতিগ্রাম যোজনা’-র অধীনে জুড়ে নেওয়া গিয়েছিল। এই প্রকল্প বিদ্যুৎ-এর সংযত ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে কৃষি ক্ষেত্রে মাটির তলার জলের ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছিল।
ভারতবর্ষে রাজ্য ও জাতীর স্তরে ‘গ্রাউন্ড ওয়াটার রিসোর্স ম্যনেজমেন্ট’ পোগ্রামটি শুরু হয়েছিল ১৯৮০ সাল থেকে। তার পর এই পোগ্রামের অধীনে ১৯৯৫, ২০০৪, ২০০৯, ২০১১, ২০১৩, ২০১৭, ২০২০, ২০২২ ও ২০২৩ সালে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। কাজেই বোঝা যাচ্ছে যত দিন গড়াচ্ছে মাটির তলার জলের ভান্ডার উদ্রেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে পুরো দেশের কাছে। আর সেই ধারণাকেই স্পষ্ট করে দিচ্ছে যখন আমরা দেখতে পাচ্ছি ২০২২ সালের পর থেকে প্রতি বছর কেন্দ্র মাটির তলার জলের ভান্ডারটি নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করছে।
ভারতের সংবিধান দেশের মানুষকে জলের অধিকার দিয়েছে ৩৮, ৪৮ A, ৫১A(g), ২১ নং ধারার মাধ্যম দিয়ে। এছাড়াও রয়েছে ভারত সরকারের জল নীতি। ১৯৮৭ সালের প্রথম জাতীয় জল নীতি তৈরি হয়। তার পর সেই নীতি তৎকালীন কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বদলে ২০০২ সালে আবারো নতুন জল নীতি আনা হয়। আশার কথা পরবর্তীতে ২০১২ সালে যে জল নীতি আনা হয়েছে তাতে ‘জল সঙ্কট’ ও ‘জল সংরক্ষণ পরিকল্পনা’-র কথা সংযুক্ত হয়েছে।
২০২৩ সালের কেন্দ্রের ভৌম জলের রিপোর্টটি থেকে পশ্চিমবঙ্গের মাটির তলার জলের যে ছবি ফুটে উঠছে, তা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। রাজ্যে সব থেকে বেশি মাটির তলার জল তোলা হচ্ছে নদিয়া থেকে। আঞ্চলিক ইতিহাসের গবেষকদের মতে নদী থেকে ‘নদিয়া’ নাম এসেছে। গ্যারেট সাহেবের লেখা গেজেটিয়ারে উল্লেখ রয়েছে ছোট বড় প্রচুর নদী এখানে জালের মত করে রয়েছে। এমনি এক নদী বহুল জেলাতে নদীর জলের ব্যবহার সব চেয়ে বেশি হবার কথা। কোন খোঁজ খবর না নিয়ে শুধু সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে চোখ রাখলেই বোঝা যাবে নদিয়ার মাটির তলার জল একেবারে তলানিতে। বর্ষার সময় নদিয়াতে যে টুকু জল মাটির তলার জলের ভাণ্ডারে জমা হয়, তার প্রায় পুরোটাই তুলে নেওয়া হচ্ছে। নদিয়াতে নদী ছাড়াও খাল, বিল, পুকুরের সংখ্যা নেহাতি কম নেই। বৃষ্টিপাত পর্যাপ্ত। তার পরেও মাটির তলার জলের যথেচ্ছ ব্যবহার প্রশাসনিক সদিচ্ছার দিকে আঙ্গুল তোলে। ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রাউন্ড ওয়াটার রিসোর্স (ম্যানেজমেন্ট, কন্টোল অ্যান্ড রেগুলেশন) অ্যাক্ট ২০০৫ লাগু হওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন মাটির তলার ভৌমজল সেচের কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আনতে অনায়াসে পারত। সে ক্ষমতা আইনেই স্থানীয় প্রশাসনকে দেওয়া ছিল। বাস্তবে স্থানীয় প্রশাসন সেই নিয়ন্ত্রণ আনতে পারেনি। নদিয়ার সাপেক্ষে রাজ্যের অন্যান্য জেলার মাটির তলার জলের ব্যবহারের প্রবনতা তুলনায় কম। নদিয়াতে মাটির তলার লাগাম ছাড়া জল তোলার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রন টানতে পারল না কেন? কারণ প্রশাসনিক সদিচ্ছার অভাব।
মাটির তলার জল সংরক্ষণের ব্যাপারে দেশের বিভিন্ন রাজ্য সচেতন হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পাশের প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা মাটির তলার জলের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে অভূতপূর্ব ভাবে। ২০০২ সালে ওড়িশা সরকার নিয়ে আসে ‘পানি পঞ্চায়েত আইন’। এই আইনের প্রয়োগ শুরু হয় ওড়িশা ২০১৫ সাল থেকে। পানি পঞ্চায়েত গঠন হয় ভোটের মাধ্যমে। স্থানীয় মানুষেরাই সেখানে অংশগ্রহণ করেন। এলাকার পানি পঞ্চায়েত ঠিক করে কোথায় কোন কোন ক্ষেত্রে কতটুকু জল ব্যবহার করা হবে স্থানীয় সেচ প্রকল্প থেকে। জলের সুস্থায়ী সংরক্ষণ ও ব্যবহারের জন্য স্থানীয় মানুষকে জুড়ে নেওয়ার ফলে দেখা গেল অভূরপূর্ব পরিবর্তন। মাত্র কয়েক বছরেই মাটির তলার জলের ঘাটতিকে ৩৬ শতাংশ পূরণ করে ফেলেছিল ওড়িশা, শুধু মাত্র পানি পঞ্চায়েত মডেলকে ব্যবহার করে।
দেশের কিছু রাজ্যে ভৌম জলের ঘাটতি রয়েছে। আবার কোন কোন রাজ্যে নিজের উদ্যোগী হয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করে ভৌমজলের ভান্ডারটিকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে। এই বৈসম্য ঠিক কেন হচ্ছে , তা যদি আমরা গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করি, তাহলে দেখব- রাষ্ট্রের হাতে জল বিষয়ক সিস্টেম হিসেবে রয়েছে ‘সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন’, ‘সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ড’, ‘সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার অথরিটি’, ‘সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড’। কেন্দ্রের এই স্বতন্ত্র অর্গানাইজেশনগুলো জলের দূষণ , মাটির তলার জলের ঘাটতিকে চিহ্নিত করতে পারছে; সতর্ক করতেও পারে রাষ্ট্রকে। কিন্তু এদের কারো হাতে বাস্তবিক সময়ে পর্যবেক্ষণ(রিয়েল টাইম মনিটরিং) ও কোন বিধি নিষেধ সরাসরি জারি(এনফোর্স) করার ক্ষমতা নেই। এর সঙ্গে রয়েছে ভারতবর্ষে প্রত্যেকটি দফতরের সঙ্গে প্রতিটি দফতরের কো-অর্ডিনেশনের অভাব। আবার রাজনৈতিক কারণে রয়েছে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের নানা বোঝা পড়ার গল্ডগোল। কাজেই কোন পরিকল্পনাকে বা পলিসিকে একেবারে সরাসরি পঞ্চায়েত স্তরে রাষ্ট্রের জল বিষয়ক অর্গানাইজেশনগুলো নিয়ে যেতে পারে না। রাজ্যের চালিকা শক্তির সদইচ্ছার অভাব থাকলে স্থানীয় প্রশাসনিক স্তরে তার প্রভাব পড়ে। যেমন কয়েক বছর আগেই দেখা গিয়েছিল কেন্দ্র থেকে মাটির তলার ভৌম জলের রিপোর্ট দেশের প্রতিটি রাজ্যের কাছে চাওয়া হইয়েছিল। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো সেই রিপোর্ট দিলেও কংগ্রেস ও আঞ্চলিক দল শাসিত রাজ্যগুলো সেই রিপোর্ট দিতে গড়িমসি করেছিল এমন কী দুটি রাজ্য দিতে অস্বীকার করে। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ছিল। ফলে সেই বছর ভৌমজল সম্পর্কিত রিপোর্ট প্রকাশ করতে অনেক দেড়ি হয়েছিল কেন্দ্রের।
দ্যা কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ক্যাগ)-এর রিপোর্ট বিভিন্ন সময়ে মাটির তলার জলের অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছে। তাদের উল্লেখযোগ্য পরামর্শগুলোর মধ্যে ছিল ‘মানরেগা’ বা একশো দিনের কাজের মাধ্যমে বৃষ্টির জলকে ধরে রাখা। আর ‘গ্রাউন্ড ওয়াটার রিচার্যিং’ –এর কাজকে গ্রাম স্তরে করা। দেশের পরিবেশ কর্মীরা দাবি করছেন ‘কেন্দ্র বাজেটে একশো দিনের প্রকল্পের বরাদ্দ ক্রমশ কমিয়ে আনছে। কাজেই এতো অল্প বরাদ্দে জল সংরক্ষণের কাজ কার্যত অসম্ভব। আর পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কারণে একশো দিনের কাজের বরাদ্দ টাকা বন্ধ। চিন্তা হচ্ছে যে কোন সময় কেন্দ্র এই প্রকল্প বন্ধ করে দিতে পারে’।
মাটির তলার জল না থাকলে সভ্যতাকে বাঁচানো যাবে না। মাটির তলার জলের ভান্ডার থেকে চুঁইয়ে আসা জল নদীকেও সজীব রাখে। কাজেই মাটির তলার জলের ভান্ডারটিকে ভরে রাখতে হলে কতগুলো পদক্ষেপ নেওয়া এখন খুব দরকার। এক , পঞ্চায়েত স্তরে গিয়ে ‘অ্যাকুইফার ম্যাপিং’ করা । প্রতিটি রাজ্যের ‘গ্রাউন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট পলিসি’ তৈরি করা। জেলা স্তরে ‘ওয়াটার বাজেট’ তৈরি করা। কৃত্তিম ‘গ্রাউন্ড ওয়াটার রিচার্যিং পিট’ তৈরি করা। জন সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরো প্রচার করা। যে ভাবে সরকারি প্রকল্পগুলো নিয়ে প্রচার হয় , ভৌমজলস্তরের সংরক্ষণ ও তার সুপরিকল্পিত ব্যবহার নিয়ে সেই উচ্চতাতে প্রচার অভিযান খুব প্রয়োজন। ‘জল সাবলম্বী গ্রাম’ গড়ে তুলতে না পারলে এই দেশকে জল সংকটের হাত থেকে বাঁচানো যাবে না।