দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুক্ত বাণিজ্য নীতি অনুসরণ করে এসেছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, মুক্ত বাণিজ্য আমেরিকার লক্ষ লক্ষ কারখানায় কাজের সুযোগকে কমিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, "দেশের সমৃদ্ধিতে আমদানি শুল্ক একটি অত্যন্ত শক্তিশালী হাতিয়ার। যা রাজনীতিবিদরা এতদিন ব্যবহার করেননি। এখন আমরা তাকে ব্যবহার করব।"
গত ৪ মার্চ মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ট্রাম্প তাঁর ভাষণে জানিয়েছেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, ব্রাজিল, ভারত, মেক্সিকো এবং কানাডা সহ অসংখ্য দেশ দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকার উপর অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক আরোপ করে এসেছে। আমেরিকা সে তুলনায় ওই দেশগুলির উপর নামমাত্র শুল্ক চাপায়।” আমেরিকার তিনটি বড় বাণিজ্যিক অংশীদার কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের বিরুদ্ধে তিনি বাণিজ্য যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন তার প্রশাসন, ২ এপ্রিল থেকে বেশ কয়েকটি দেশের উপর পারস্পরিক শুল্ক ( X দেশ যতটা শুল্ক চাপাবে Y দেশ ও ঠিক ততটাই চাপাবে) আরোপ করবে।
কানাডা এবং মেক্সিকোর উৎপাদিত প্রায় সকল পণ্যের উপর আমেরিকা ২৫ % শুল্ক আরোপ করেছে। তবে কানাডিয়ান জ্বালানির উপর শুল্ক থাকবে ১০% । একই সঙ্গে সমস্ত চীনা পণ্যের (কৃষি ছাড়া ) উপর ২০ % শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যা আগে ছিল ১০ %। ‘হিস্ট্রি অফ ইউ এস ট্রেড পলিসি’ -র লেখক অর্থনীতিবিদ ডগলাস আরউইন, হিসাব কষে দেখিয়েছেন এই শুল্ক আরোপের ফলে আমেরিকার গড় শুল্ক হার ২.৪% থেকে বেড়ে ১০.৫% এ পৌঁছবে। যা ১৯৪০ সালের পর সর্বোচ্চ । ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে আমেরিকার উৎপাদন অনেকাংশে কমে যাবে এবং অসংখ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। অর্থনীতিবিদদের অনুমান এই শুল্ক নীতিতে সাধারণ মার্কিন পরিবারের বাৎসরিক ক্ষতি ১,২০০ ডলারেরও বেশি হতে পারে ।
পারস্পরিক শুল্ক ও ট্রাম্পের বিভ্রান্তিকর যুক্তি
ট্রাম্প, মেক্সিকো এবং কানাডার উপর শুল্ক আরোপ করতে গিয়ে পাঁচটি পরস্পরবিরোধী - যুক্তি দেখিয়েছেন।
১. ট্রাম্প দাবি করেছেন আমেরিকার উত্তর ও দক্ষিণের প্রতিবেশীরা ফেন্টানাইল এবং বেআইনি অভিবাসীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সাহায্য করছে। কানাডা এবং মেক্সিকোর উপর উচ্চ শুল্ক আরোপ আসলে দুটি দেশকে মাদক এবং অভিবাসীদের প্রবাহ বন্ধ করতে চাপ দেওয়া। তবে এই যুক্তি আদৌ গ্রহণযোগ্য নয় । কারণ ফেন্টানাইল পাচারে কার্যত কানাডার কোনও ভূমিকা নেই। আর মেক্সিকান সরকার ইতিমধ্যেই মাদক কার্টেলের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ বাড়িয়েছে এবং অভিবাসীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নৃশংস ভাবে বাধা দিয়েছে । এর ফলে আমেরিকায় ফেন্টানাইল প্রবেশ অনেকাংশে কমেছে ।
২. কানাডা, মেক্সিকো, চীন এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার। তাই ট্রাম্প উৎপাদনকারীদের আমেরিকায় উৎপাদনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন আমেরিকায় উৎপাদন করলে কোনও শুল্ক দিতে হবে না। কিন্তু ট্রাম্পের শুল্ক নীতি, আমেরিকাতে বিদেশী যন্ত্রাংশের দাম বাড়াবে। যার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন ব্যয় বাড়তে বাধ্য। যা ওই দেশে কারখানা স্থাপনে উৎসাহ কমাবে। অনুমান করা হচ্ছে, কানাডা এবং মেক্সিকোর উপর ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপ মার্কিন গাড়ি শিল্পের বার্ষিক ব্যয় ৬০ বিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দেবে। ফলে মার্কিন গাড়ি কোম্পানিগুলি দাম বাড়াতে বাধ্য হবে, তখন বিদেশী বাজারে তাদের প্রতিযোগিতা করা কঠিন হয়ে উঠবে।
৩. কানাডা আমেরিকান ব্যাংকগুলিকে কানাডায় ব্যবসা করার অনুমতি দেয় না, কিন্তু কানাডার ব্যাংকগুলি আমেরিকান বাজারে ব্যবসা করছে – এমনটাই ট্রাম্পের দাবি। তবে ট্রাম্পের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। বাস্তবে, মার্কিন ব্যাংকগুলি এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে কানাডায় ব্যবসা করে চলেছে ।
৪. ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন, “কানাডার উচিত, আমাদের ৫১তম রাষ্ট্র হওয়া। তাহলে জনগণের জন্য কম করের ব্যবস্থা, সামরিক সুরক্ষা এবং শুল্ক বিহীন বাণিজ্য সব মিলবে!” ২৫ % শুল্ক আরোপের সময় পুনরায় তিনি কানাডাকে আমেরিকার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। কানাডার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো -র বিশ্বাস, ফেন্টানাইল বা অভিবাসন বন্ধ করতে কিংবা বাণিজ্য ঘাটতি রুখতে ট্রাম্প এই পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা কিন্তু নয়। বরং তাঁর লক্ষ্য কানাডার উপর আধিপত্য বিস্তার করা ।
৫. ট্রাম্প প্রশাসন উচ্চ শুল্ককে রাজস্ব বৃদ্ধির একটি উপায় হিসেবে দেখছেন। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার আয়করের হার কমাতে সক্ষম হবে। কিন্তু বিদেশি পণ্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধি আমদানিকৃত দ্রব্যগুলির দাম বাড়বে যা ভোক্তাদের খরচ বাড়াবে। কিন্তু, আয়করের পরিবর্তে শুল্ক আরোপ অত্যন্ত পশ্চাদমুখী ধারণা। কারণ শ্রমজীবী পরিবারগুলি ধনীদের তুলনায় আমদানিকৃত পণ্যের জন্য তাদের আয়ের বেশি অংশ ব্যয় করে। এ ছাড়াও অস্থায়ী শুল্ক আরোপ কখনও স্থায়ী করের পরিপূরক হতে পারে না।
পারস্পরিক শুল্ক এবং কানাডা -মেক্সিকো- চীনের অবস্থান
কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের বিরুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বাণিজ্য যুদ্ধ ওই দেশগুলির আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে মেক্সিকোর মোটরগাড়ি উৎপাদনে এবং কৃষি ক্ষেত্রে। চীন, কানাডা এই পারস্পরিক শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিশোধ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। মেক্সিকোও এই বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে।
কানাডা প্রতিশোধ নিতে ৪ মার্চ, ২০২৫ থেকেই ৩০ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন রপ্তানির উপর ২৫ % প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছে। ২৩ শে মার্চ ৮৬.৭ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন রপ্তানির উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কথা জানিয়ে রেখেছে। যদি মার্কিন শুল্ক বহাল থাকে তবে ১৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে। যে সমস্ত পণ্যের শুল্ক বাড়ানো হবে তার প্রাথমিক তালিকায় রয়েছে কমলা লেবুর রস, চিনাবাদাম, মাখন, কফি এবং ওয়াইনের মতো কৃষিপণ্য । এছাড়া তালিকায় রয়েছে কারখানার যন্ত্রপাতি, পাল্প ও কাগজের পণ্য এবং মোটর সাইকেলের মতো শিল্পজাত দ্রব্যও ।
মেক্সিকান সরকারও বিভিন্ন মার্কিন পণ্যের উপর ২৫% শুল্ক আরোপ করেছে। পণ্যের তালিকায় ভুট্টা, গম এবং সয়াবিনের মতো কৃষিপণ্য যেমন রয়েছে তেমনই ইলেকট্রনিক্সের মতো শিল্প পণ্যও রয়েছে। তালিকা থেকে বাদ নেই পোশাক , জুতো সহ ভোগ্যপণ্যও। এই শুল্ক ৫ মার্চ, ২০২৫ তারিখ থেকেই কার্যকর হয়েছে । আমেরিকা, মেক্সিকান পণ্যের উপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত এটা বহাল থাকবে।
চীন, প্রতিশোধ হিসেবে ১৩.৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন রপ্তানির উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছে। ১০ মার্চ, ২০২৫ থেকে আমেরিকান কৃষি পণ্য - গম, ভুট্টা এবং তুলার উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে ১৫% । জোয়ার, সয়াবিন, শুয়োরের মাংস, গরুর মাংস, জলজ পণ্য, ফল, শাকসবজি এবং দুগ্ধজাত পণ্যের উপরও অতিরিক্ত ১০% শুল্ক চাপিয়েছে। রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য বিধিনিষেধের (কোটা) অধীনে থাকা মার্কিন কোম্পানিগুলির সংখ্যা বাড়িয়েছে।
প্রতিশোধমূলক শুল্ক ও ভারত
গত মাসে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফরের সময়, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় - ২০৩০ সালের মধ্যে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়া হবে। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে ট্রাম্প, 'প্রতিশোধমূলক শুল্ক' আরোপের কথা বলেন। তাঁর বক্তব্য, চড়া শুল্কের কারণে ভারতে ব্যবসা করা অত্যন্ত কঠিন। সাধারণত বিশ্বের যে কোনও দেশের তুলনায় ভারত মার্কিন পণ্যের উপরে বেশি শুল্ক ধার্য করে। এই পরিস্থিতিতে এবার থেকে মার্কিন পণ্যের উপরে ভারত যে হারে শুল্ক চাপাবে, সেই হারেই ভারতীয় পণ্যের উপরে আমেরিকাও শুল্ক ধার্য করবে। পারস্পরিক শুল্ক ঘোষণার পরপরই, হোয়াইট হাউস ভারতের উচ্চ শুল্ক সম্পর্কে একটি তথ্যপত্র প্রকাশ করে। কৃষি পণ্যের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গড় প্রয়োগকৃত ‘মোস্ট ফেভারড নেশন (এম এফ এন)’ শুল্ক ৫% । কিন্তু, ভারতের গড় প্রয়োগকৃত ‘এম এফ এন’ শুল্ক ৩৯%। এছাড়া, ভারত, মার্কিন মোটরসাইকেলের উপর ১০০% শুল্ক আরোপ করে, যেখানে আমেরিকা ভারতীয় মোটরসাইকেলের উপর মাত্র ২.৪% শুল্ক আরোপ করে।
ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব, ভারতীয় গাড়ি থেকে শুরু করে কৃষিক্ষেত্রের রপ্তানিকারকদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। এর ফলে ভারতের বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার হতে পারে - সিটি রিসার্চ এর বিশেষজ্ঞরা তেমনটাই জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য পারস্পরিক শুল্ক আরোপিত হলে, রাসায়নিক, ধাতব পণ্য, গহনা, অটোমোবাইল, ওষুধ এবং খাদ্যপণ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জি টি আর আই) এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে এই ধরনের পারস্পরিক শুল্ক বৃদ্ধি করে বসে, তাহলে চিংড়ি, দুগ্ধজাত পণ্য সহ ভারতের কৃষি ও খাদ্য রপ্তানি সবচেয়ে বেশি মার খাবে। কারণ সেখানে দুই দেশের মধ্যে শুল্কের পার্থক্য প্রায় ৪০% ।
তবে, বাণিজ্য উত্তেজনা কমাতে, ভারত ইতিমধ্যেই উচ্চমানের মোটরসাইকেলের উপর আমদানি শুল্ক ৫০% থেকে কমিয়ে ৩০% করেছে, বোরবন হুইস্কির ক্ষেত্রে তা ১৫০% থেকে নামিয়ে ১০০% করা হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য শুল্ক পর্যালোচনা করা, জ্বালানি আমদানি বৃদ্ধি করা এবং আরও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাই, ভারত আপাতত, ২ এপ্রিল থেকে চালু হতে যাওয়া পারস্পরিক শুল্কের মার্কিনি সিদ্ধান্তের বাইরে থাকছে। ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে উদ্বেগের জায়গাগুলি নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। সেখানে শুল্কের ইস্যু ছাড়া অন্যান্য বাণিজ্যিক 'বাধা' নিয়েও কথাবার্তা হচ্ছে।
আমেরিকান অর্থনীতিতে পারস্পরিক শুল্কের প্রভাব
আমেরিকান শিল্পকে বাঁচাতে , রাজস্ব আদায় করতে এবং বিদেশি দেশগুলিকে তাদের বাণিজ্য পদ্ধতি পরিবর্তনের জন্য চাপ দিতে - পারস্পরিক শুল্ক অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, এই কথা ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলেন। তাঁর মতে, আমদানি শুল্ক মার্কিন অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ। তবে অনেক অর্থনীতিবিদই এর সঙ্গে একমত নন। তাঁদের মতে ট্রাম্পের শুল্কনীতি মুদ্রাস্ফীতি বাড়াবে, অর্থনৈতিক বৃদ্ধির গতি কমিয়ে দেবে এবং মার্কিন কর্মীদের ক্ষতি করবে । এই শুল্ক আরোপের তাৎক্ষণিক পরিণতিগুলির মধ্যে অন্যতম ভোগ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি। এর ফলে আমেরিকান ভোক্তাদের ব্যয় বাড়বে। ২০২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা ৩.১ ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্যের ৪৩ শতাংশ এসেছিল চীন, মেক্সিকো এবং কানাডা থেকে। নতুন শুল্ক কার্যকর হলে, ইলেকট্রনিক দ্রব্য, পোশাক, গৃহস্থালি ও মুদিখানার দ্রব্য - আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ ঈশ্বর প্রসাদ সতর্ক করে বলেছেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক বৃদ্ধির কারণে, "মার্কিন রপ্তানিকারকরা সমস্যার মুখোমুখি হবেন, বিদেশি বাজারে তাদের ক্রমবর্ধমান শুল্ক বাধার মুখোমুখি হতে হবে। এছাড়াও, শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ডলারের দাম বৃদ্ধি পাবে এবং রপ্তানির প্রতিযোগিতায় আমেরিকানরা পিছিয়ে পড়বে।”
আমেরিকা – কানাডা- মেক্সিকোর মধ্যে বাণিজ্য চলে 'ইউ এস এম সি' চুক্তি অনুযায়ী । এই বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনে ট্রাম্প নিজেই মধ্যস্থতা করেছিলেন। তাই মেক্সিকো-কানাডার উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পারস্পরিক শুল্ক চাপানোর কথা এখনই না ভাবলেই পারত । কারণ ২০২৬ সালে এই চুক্তিটি পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ ছিল। যাই হোক, আমেরিকা আপাতত কানাডার ওপর শুল্ক লাগু করছে না । এই নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প সুর নরম করতেই কানাডাও সিদ্ধান্ত বদলেছে, ১২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর যে পাল্টা শুল্ক কানাডা আরোপ করতে চলেছিল, তা আপাতত তারা স্থগিত রাখছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের নীতি নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। কারণ ট্রাম্প সিদ্ধান্তে অবিচল থাকার মানুষ নন। প্রতি মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত বদল করেন। এখন দেখার আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট তাঁর গৃহীত বাণিজ্য নীতিতে অবিচল রইলেন না আবার নতুন কোনও ভাবনার আবির্ভাব ঘটালেন ।