দরজার দিকে মুখ তুলে দেখল রবি ঢুকছে। মুখটা নামিয়ে খবরের কাগজে নিবদ্ধ করে বলল,'আয়; বোস।' শব্দ করে চেয়ার টেনে ধপ করে বসে পড়ল রবি।
টেবিল পেরিয়ে ওপারের চেয়ার থেকে উদয় বলে উঠল, 'বিয়ে করে তো ডুমুরের ফুল হয়ে গেছিস। এত দিনে মনে পড়ল?'
' কিচ্ছু ঠিক নেই উদয়দা। এই পূর্ণিমার চাঁদ জ্বালিয়ে মারল!', বিরক্তকন্ঠে বলে উঠল রবি।
খবরের কাগজটা ভাঁজ করে টেবিলে রেখে উদয় বলে ফেলল, 'এই স্বাভাবিক। রবি আর চাঁদের তো শত্রুতা থাকবেই। রবি আর পৃথিবীর প্রেমে চাঁদ বাধা দিল বলেই তো কাল গ্রহণটা হল। তোর দাম্পত্য প্রেমের চাঁদটা কে শুনি?'
টেবিলে রাখা পেপারওয়েটটা হাতে নিয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে রবি বলল, 'অরিজিনাল চাঁদই আমার শত্রু গো। শুধু চাঁদ না, পূর্ণিমার চাঁদ।'
উদ্গ্রীব হয়ে উদয় তাকালো রবির মুখের দিকে। 'খুলে বল তো কী কেস!'
রবি একটা দম ছেড়ে হাতের পেপারওয়েটটা টেবিলে রেখে বলে উঠল, ' দেখো তোমার উকিলের বুদ্ধিতে এই কেস সলভ্ করতে পারো না কি।'
উদয় বলে উঠল, 'আগে বল তো শুনি।'
বলতে শুরু করল রবি-- এইতো বিয়ের মেয়াদ হল ছয় মাস। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে গেছি, সেদিন পূর্ণিমা। সন্ধ্যাবেলা তিথিকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। শ্বশুর-শাশুড়ি বেকায়দায় পড়লেন। এই ভরসন্ধ্যায় মেয়ে উধাও ! শাশুড়ি কিছুটা জড়সড় হয়ে জানালেন যে তিথি হয়তো দরকারি কিছু কিনতে বাজারে গেছে। কিন্তু বলে যাওয়া উচিত ছিল বলে অনুযোগ করলেন। চিন্তায় পড়ে গেলাম। নতুন বউ প্রেমিকের সঙ্গে পালাল নাকি! কিছু ক্ষণের মধ্যেই তিথির বোন বিথী টিউশন পড়ে ফিরে জানাল, 'আজ পূর্ণিমা,সুতরাং দিদি নিশ্চয় ছাদে আছে।' আমি তো অবাক, তিথির বাবা-মাও অবাক হলেন। সম্ভবত; তাঁরাও আমার সঙ্গেই প্রথমবার জানলেন যে তাঁদের বড়মেয়ের পূর্ণিমার চাঁদ খুব পছন্দের। বিথীর সঙ্গে ছাদে গিয়ে দেখি কার্ণিশের পাশে দাঁড়িয়ে চাঁদ দেখছে তিথি। বিথীর ডাকে মুখ ফেরাতেই চোখে পড়ল, তিথির চোখে চিকচিক করছে জল। বিথী চলে গেল নীচে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কী হয়েছে? ও হাসল, কিছু বলল না। মনে করলাম নতুন বিয়ে হয়েছে, রাত পোহালেই শ্বশুরবাড়ি ফিরতে হবে, বাপের বাড়ির মায়া কাটিয়ে সেজন্যই হয়তো একা একা ছিল।
এতটা বলেই চুপ করে গেল রবি। ইতিমধ্যে মাধবী ঢুকল চেম্বারে। রবিকে দেখেই উৎফুল্ল হয়ে বলে উঠল, 'ব্যাপার কী! নতুন বউ পেয়ে আমাদের ভুলেই গেলে?' শান্ত গলায় রবি বলল, 'কোথায় ভুলে গেছি, এই তো চলে এলাম। কেমন আছ বউদি?'
উদয়ের বউ মাধবী জবাব দিল, 'ভালো আছি ভাই। ভিতরে চল। দুপুরবেলা না খাইয়ে ছাড়ব না।'
উদয়ও তাড়া লাগাল, 'এত দিন পর এলি। চল একসাথে খাব।'
আপত্তি করতে পারল না রবি। বিশেষত সে ইচ্ছা করেই রবিবারের দুপুরটাকে বেছে নিয়েছে। ব্যস্ত উকিল উদয়দা। এই সময়টাই ফাঁকা থাকে। এ বাড়িতে এই প্রথম খাচ্ছে না। একসঙ্গে হস্টেলে থাকার সুবাদে এর আগেও এই বাড়িতে এসেছে, থেকেছে খেয়েছে। জেঠিমা-জেঠু বেঁচে থাকতে অনেক আদর-যত্ন পেয়েছে সে। কত হইচই হয়েছে উদয়দার বিয়েতে। জেঠিমা-জেঠু পরপর মারা গেলেন এক বছরের তফাতে। তারপর থেকে উদয়দা আর মাধবী-বউদির সংসার চলছিল। এখন তাদের মেয়ে চিকুকে নিয়ে জমে উঠেছে ওদের দাম্পত্য। উদয়ের বোন শ্রাবন্তীর বিয়ে হল বছর দুয়েক আগে। মোটের উপর ভালোই আছে ওরা। এতদিন তো রবিও ভালো ছিল। খুব খারাপ তো এখনো নেই। শুধু এই পূর্ণিমার চাঁদের বিষয়টা যদি তাদের মধ্যে না থাকত তবে তাদেরকেও সুখী দম্পতি বলা যেত।
খাওয়া সেরে উদয় আর রবি ডেরায় চলল। বাড়ির মধ্যে এই একটা ঘরে বউদির প্রবেশ অবাধ নয়। এটাই উদয়দার ডেরা। চার দিকে দেওয়াল আলমারি জুড়ে আইনের বই। বই ছাড়াও নানা রকম ফাইল-পত্র ভর্তি। একটা খাট। তার পাশে একটা টেবিলে কম্পিউটার। এটা উদয়দার কাজের ঘর। উদয়দার বাড়িতে এটাই রবিদের ডেরা। দু-চারজন মিলে এখানেই তাদের আড্ডা বসে ন'মাসে ছ'মাসে। রবি অবশ্য অনেক দিন রাত কাটিয়েছে উদয়দার সঙ্গে এ ঘরে।
আয়েস করে খাটে বসে কোলে একটা বালিশ নিয়ে উদয় বলে উঠল, 'বাকিটা বল শুনি।'
খাটের এক ধারে বসে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বলতে শুরু করল রবি, 'প্রতি মাসে তার পূর্ণিমার চাঁদ দেখা চাই। বারণ করলে শোনে না।'
চটকরে বলে উঠল উদয়, 'মানা কর বি কেন? চাঁদ দেখেতো তোর কী?',
'আমার কী সেটাই শোনো।'
রবি আবার বলতে শুরু করল -- শ্বশুরবাড়ি থেকে ফিরলাম। পূর্ণিমা-অমাবস্যা কাটিয়ে মোটামুটি ভাব হয়ে গেল ওর সঙ্গে। আবার পূর্ণিমা উপস্থিত। সেদিন রবিবার। সন্ধ্যাবেলা খবর দেখছি টিভিতে। একটু চা খেতে ইচ্ছে করছিল। ডাকলাম। সাড়া না পেয়ে রান্নাঘর, বাথরুমে নেই দেখে ছাদে গেলাম। দেখলাম চাঁদ দেখছে। আমারও একটু রোম্যান্স জাগল, পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। ঝটকামেরে সরিয়ে দিল।
'বেশ করেছে। বেয়াদব কোথাকার। ছাদের উপর বউকে জড়িয়ে ধরলি! তোর শজ্জা-শরম না থাকতে পারে, ওর নেই...!'
উদয়কে থামিয়ে দিয়ে বলে উঠল রবি, 'পুরোটা শুনে তারপর বলো। নিজে বিয়ের পর কত রোম্যান্স করলে, এখন আমায় জ্ঞান দিচ্ছ!'
বেকায়দা দেখে উদয় বলে উঠল, 'আচ্ছা বল। রাগ করিসনা।'
বলতে শুরু করে রবি -- দেখি চোখ থেকে জল ঝরছে টপটপ করে। আমি তো পুরো হতভম্ব। ওর আত্মসম্মানে লাগল না কি? নিজের বউকে জড়িয়ে ধরে কী অপরাধ করলাম! দৌড়ে নীচে চলে গেল তিথি। আমি বোকার মত দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলাম, ও কী আগে থেকেই কাঁদছিল না জড়িয়ে ধরলাম বলে কেঁদে ফেলল। ওকে পরে আর কিছু জিজ্ঞাসা করলাম না। কিন্তু রাতে বিছানায় ওকে টাচ করতেই গুটিয়ে সরে গেল। আমি জোর করিনি।
খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে উদয় প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল, 'অন্য দিনগুলোতে সব ঠিক থাকে তো?'
খুব আলতো জবাব দিল রবি, 'মোটামুটি। মন্দ নয়।' তারপর আবার বলতে শুরু করল -- আবারও পূর্ণিমা-অমাবস্যার পালাশেষে নতুন পূর্ণিমা। আমি স্কুল থেকে ফিরে কলিংবেল দিলাম। মোবাইলে কল করলাম।সাড়া না পেয়ে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ঘরে ঢুকে ব্যাগ রেখে সোজা গেলাম ছাদে। গিয়ে দেখি দু' হাঁটু জড়ো করে হাঁটুর উপর চিবুক রেখে বসে আছে। চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখছিলাম, একটু করে চাঁদের দিকে তাকাচ্ছে আর কাঁদছে। সেদিন বেশ শব্দ করেই কাঁদছিল। বোধ হয় আমি বাড়িতে নেই জেনেই। লজ্জা পেয়ে নীচে চলে গেল। বুঝে গেছিলাম টাচ করতে দেবে না। শুধু জিজ্ঞাসা করেছিলাম কী হয়েছে। উত্তরে শুধু বলেছিল, 'এমনি।'
দুজনেই চুপচাপ। মৌনতা ভেঙে বলে উঠল রবি -- তারপরের মাসে বাবা এল। রান্না চড়িয়ে ছাদে চলে গেছে চাঁদ দেখতে। এদিকে রান্না পুড়ে ঘর ধোঁয়ায় ভর্তি। বাবা ছিল ভাগ্যিস। গ্যাস অফ করেছিল। আমি বাড়ি ফিরে দেখি সারা ঘর জুড়ে পোড়া গন্ধ। বাবা ওকে ছাদ থেকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসা করেছিল, কেন সে সন্ধ্যাবেলা রান্না চাপিয়ে ছাদে গেছিল। আমি ভাবছিলাম কী বলা যায়, তার মধ্যেই তিথি বলেছিল, 'লঙ্কা আনতে।' উত্তর শুনে বাবা বলেছিল, 'আর কোনো দিন সন্ধ্যেবেলা গাছে হাত দেবে না।' এর পর থেকে কোনো না কোনো ছুতো করে পূর্ণিমার দিনগুলোতে বাপের বাড়ি চলে যাচ্ছে।
বিস্মীত কন্ঠে বলে উঠল উদয়, 'স্ট্রেঞ্জ! ইন্টারেস্টিং ব্যাপার তো। তবে আমার মনে হয় কোনো প্রেম ঘটিত ব্যাপার হতে পারে। কাউকে ও মনে করে বুঝলি।'
মরিয়া হয়ে বলে উঠল রবি, 'জিজ্ঞাসা করেছিলাম কিন্তু বলেছে, সে রকম কিছু নয়।'
তাচ্ছিল্যের সুরে বলে উঠল উদয়, 'যাক গে, অন্য দিন তো ঠিক থাকে। আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে দেখবি।'
উদয়দার সঙ্গে বিষয়টা শেয়ার করতে পেরে কিছুটা হালকা লাগে রবির। কিন্তু মনে যেন শান্তি নেই। তার বউ কাকে মনে করে? চাঁদের বুকে কার ছায়া সে দেখে? আবারও পূর্ণিমা আসছে। রবি জানে বাপের বাড়ি যেতে চাইবে তিথি। যেন রোখ চেপে যায়। এবার সে কিছুতেই ওকে বাপের বাড়ি যেতে দেবে না। রবি তিথিকে জানালো যে তার বুকে ব্যথা করছে। হার্টের সামান্য সমস্যা যে ছিল তা তিথি জানত। কারণ, বিয়ের সময় এই সমস্যার কথা জানিয়েই বিয়েটা হয়েছিল। তিথি রয়ে গেল। সন্ধ্যায় তিথি সিঁড়িতে পা দিতেই হাতটা খপ করে ধরে ফেলল রবি। বাধা দিতে পারল না তিথি। ঘরে নিয়ে গিয়ে আদর করল। সেদিন রাতে প্রচুর কাঁদল তিথি। সারা রাত রবিরও ঘুম হল না। ভোরে ঘুমিয়ে বেলায় উঠল রবি। রবিবার, ছুটির দিন। অবাক কান্ড! রবি ভেবেছিল তিথি তার সঙ্গে কথাই বলবে না। কিন্তু তা হল না। তিথি খুব নর্মালি কথা বলল। দিনটা মন্দ কাটল না। রবির মনে হল, তার হার্টের অসুখ ভ্যানিস হয়ে গেছে। তিথির এই পূর্ণিমার চাঁদ দেখার চোটে টেনশন বাড়ছিল রবির। হার্টের সমস্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছিল। যাক্, সমস্যা মিটে গেল মনে হয়। রাতে মনে হচ্ছিল তিথিকে সে অনেক আদর করে। কিন্তু ভাবল, তাড়াহুড়োতে দরকার নেই। একটু সময় দিতে হবে। ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে। অনেক দিন পর শান্তিতে ঘুমালো রবি। খুব ফ্রেশ লাগছে নিজেকে। স্কুলে যাওয়ার আগে তিথির গালে একটা চুমু দিয়ে গেল।
চাঁদ ওঠেনি তখনও। ছাদ থেকে জামা-কাপড় তুলে এনে পাট করে রাখল তিথি। রান্না সারল। স্নান করে ঘরে গেল। তত ক্ষণে আকাশে ঝকঝকে চাঁদ উঠেছে। দরজায় কলিংবেল বাজাল রবি। একটু খটকা লাগল। আজ তো না খোলার কথা নয়। একটু অপেক্ষা করে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে ঘরে ঢুকল। ডাইনিং টেবিলের উপর সমস্ত চাবি রাখা। হার্টবিট বেড়ে গেল রবির। ব্যাগটা ডাইনিং -এ রেখেই দ্রুতপায়ে বেডরুমে গেল। দরজা খোলা। থমকে গেল রবি। তিথি ঝুলছে সিলিংফ্যানে।
জামাইয়ের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই শ্বশুরবাড়ি থেকে। পূর্ণিমার চাঁদকে কেন্দ্র করে ঘটা সমস্ত ঘটনা পুলিশকে জানিয়েছে রবি। তিথির বোন বিথী জানিয়েছে সে কেবল জানত, দিদি পূর্ণিমার চাঁদ দেখত। কবে থেকে দেখা শুরু করেছিল তা সেও জানে না। উকিল উদয় আশ্বাস দিয়েছে যে সে পাশে আছে। বেডরুম থেকে একটা কাগজ ছাড়া সন্দেহজনক আর কিছুই পাওয়া যায়নি। কাগজে একটা কবিতা লেখা --
কী যায় আসে আকাশে ভাসছে চাঁদ
কী যায় আসে বাতাস দিচ্ছে দোল
মেঘবালিকার ঘর ভেঙেছে আজ
সবাই মিলে ওকেই চিতায় তোল।
কী যায় আসে নদীর বুকে ঢেউ
কুয়াশা নেই একটুকু কোত্থাও
মেঘবালিকার বুক ভেঙেছে আজ
পাল তুলেছে অন্য কারো নাও।
কী যায় আসে বৃষ্টি নামল ঝেঁপে
একলা ভিজে দাঁড়িয়ে আছে ঝাউ
মেঘবালিকা খুব কেঁদেছে আজ
তার মাথাতে হাত রাখেনি কেউ।
মেঘবালিকা শব্দ করে কাঁদে
মেঘবালিকা শব্দ করে হাসে
মেঘবালিকার বুকের মাঝে ব্যথা
মেঘবালিকার মৃত্যু শ্রাবণ মাসে।
বাইরে মূষলধারে বৃষ্টি ঝরছে। সোফায় বসে তিনজন। রবি, উদয় আর বসির। বসির রবির জুনিয়ার কলিগ। তিনজনের হাতেই জ্বলন্ত সিগারেট। মৌনতা ভেঙে বসির বলে উঠল, 'আমার মনে হয় বউদির কোনো সাইক্রিয়াটিক প্রবলেম ছিল। সেটা তোমার কাছে লুকিয়েছে। না হলে ওরা কোনো অভিযোগ করল না কেন তোমার বিরুদ্ধে?'
থামিয়ে দিয়ে রবি বলে উঠল, 'না না। ওরা সব শুনে নিজেরাই বুঝতে পারছে না কিছু।'
উদয় যোগ করল, 'আরে আমি তো ভাবলাম ওটা প্রেম পত্র। তাও নয়। বরং পাওয়া গেল কবিতা।' বসির বলে উঠল, 'কিন্তু যত দূর জানা গেল বউদি জীবনে কোনো দিন কিছু লেখেনি। মরার আগে কবিতা লিখে ফেলল!'
উদয় বলে উঠল, 'হতেই পারে। ও সব কবিতা-টবিতা হঠাৎ হঠাৎ হয় শুনেছি।'
বসির আবার মুখ খুলশ, 'এই রবিদা, আমাদের বাংলার ম্যাডাম সুতপাদিতো লেখেটেখে।বলছিল, কবিতাটা বড় কোনো কবির কবিতা নয়। হয় নিজে লিখেছে নয়তো কোনো অচেনা ছোটখাট কবির লেখা’।
আলোচনার মাঝখানে মোবাইলটা বেজে উঠল। রিসিভ করল রবি। ওপার থেকে ভেসে এল বিথীর কন্ঠ। বেশ উৎকন্ঠিত শোনাচ্ছে, 'জিজু, দিদির আলমারিতে একটা কাগজ পেয়েছি। ওতে ঐ কবিতাটাই লেখা। কিন্তু অন্য হাতের লেখা। কবিতার নীচে লেখা, 'মেঘবালিকা, দেখা হবে মেঘের দেশে।' রবির কাছে কথাটা শুনে উত্তেজিত হয়ে উঠল উদয়, 'পরিকল্পিত আত্মহত্যা !' বসির উচ্চ স্বরে বলে উঠল, 'মানে, কী বলতে চাইছেন? মানে বউদি আত্মহত্যা করতই? তাহলে এত দিন করেনি কেন? সেদিন যে রবিদা জোর করেছিল সেটা কোনো ম্যাটার নয়?'
রবি থানায় কল করল -- হ্যালো স্যার....
ঘটনার মোড় ঘুরল। ঐ অচেনা হাতের লেখাটা কার? আমি তো ভাবছি। আপনারও ভাবুন। তদন্ত চলুক।