গান্ধী গীতাপ্রেসের অস্পৃশ্য নীতির তীব্র বিরোধী ছিলেন! সম্ভবত সেই বিরোধিতা ছিল একটি রাজনৈতিক কৌশল নইলে বাবা সাহেব আম্বেদকরের নেতৃত্বে ভারতের কোটি কোটি দলিত ১৯৩০ এর দশকেই বুদ্ধধর্মে নাম লেখাতো ! ভারতে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়তো ! সেই কারণেই কি নরেন্দ্র মোদী একই রাজনৈতিক খেলা খেলে, গীতা প্রেসকে গান্ধী শান্তি পুরষ্কার দিলেন?
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শ্রীযুক্ত দামোদর দাস মোদির সভাপতিত্বে গঠিত এক সরকারি কমিটি গোরক্ষপুরের গীতা প্রেসকে ২০২১ সালের গান্ধী শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে ! দীর্ঘ শতবর্ষ ধরে নিরলস ভাবে হিন্দু ধর্ম প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে গীতা প্রেস। গবেষক ও 'গীতা প্রেস এন্ড দা মেকিং অফ হিন্দু ইন্ডিয়া ' পুস্তকের লেখক অক্ষয় মুকুল উক্ত পুরস্কার প্রাপ্তির খবর শুনে বলেছেন :‘স্বাধীনতার আগে থেকেই গীতা প্রেস রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের পক্ষে সাম্প্রদায়িক প্রচারের একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে’!কতিপয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিরোধী নেতা মনে করেন মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারীর রাজনৈতিক সংগঠনের সহযোগী গীতা প্রেসকে গান্ধী শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা আদতে গান্ধীকেই অপমান করা ! বর্তমান প্রাবন্ধিক তা মনে করেন না কারণ গীতাপ্রেসের কর্মসূচি ও মূল বর্ণভিত্তিক দর্শনের সঙ্গে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর আদৌ কোনো বিবাদ ছিল বলে শোনা যায়নি ! তবে গান্ধী গীতাপ্রেসের অস্পৃশ্য নীতির তীব্র বিরোধী ছিলেন! সম্ভবত সেই বিরোধিতা ছিল একটি রাজনৈতিক কৌশল নইলে বাবা সাহেব আম্বেদকরের নেতৃত্বে ভারতের কোটি কোটি দলিত ১৯৩০ এর দশকেই বুদ্ধধর্মে নাম লেখাতো ! ভারতে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়তো মূলত অস্পৃশ্যতার প্রশ্নেই ১৯৩২ সাল থেকেই গীতাপ্রেসের কর্ণধার হনুমান প্রসাদ পোদ্দারের সঙ্গে গান্ধীর চরম মতবিরোধ হয় ! যদিও তাঁদের মধ্যে সদ্ভাব বজায় ছিল ! তবে গান্ধী হত্যার পর এককালের কংগ্রেসি হনুমান পোদ্দার হিন্দু মহাসভার সঙ্গী হন ! এ প্রসঙ্গে বলে রাখি, হনুমান প্রসাদ পোদ্দার যৌবনে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ভীর সাভারকারের মতই রাজভক্তির মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছিলেন !আমাদের স্মরণে থাকতে পারে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ প্রতিষ্ঠার (১৯২৫) দুবছর আগে গীতা প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কলকাতাস্থিত গোবিন্দ ভবন কার্যালয়ের একটি শাখা হিসেবে ! প্রতিষ্ঠানটি তৎকালীন সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৮৬০ এর অধীনে পঞ্জীভূত হয়েছিল ! তিন জন প্রধান উদ্যোক্তার নাম জানতে পারি : জয়াদয়াল গোয়েঙ্কা, ঘনশ্যাম দাস জালান ও হনুমান প্রসাদ পোদ্দার ! প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল 'সনাতন ধর্ম' প্রচার ! হাতিয়ার ছিল নিজস্ব ছাপাখানায় ছেপে সস্তায় গীতা রামায়ণ মহাভারত রামচরিত মানস মনুস্মৃতি সহ পুরানের গল্প হিন্দুদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া ! ১৯২৭ সালে কল্যাণ নামে হিন্দু ধর্মবিষয়ক একটি মাসিক পত্রিকাও ছাপতে শুরু করে গীতা প্রেস !কলকাতায় ধর্মগ্রন্থের বিক্রি আশানুরূপ না হওয়ায় গোয়েঙ্কা ও পোদ্দার বাবু গোরক্ষপুরে রামদাস জালানের শরণাপন্ন হন এবং তাঁর সহায়তায় ১৯২৭ সালে গীতা প্রেসের কার্যালয় বাবা গোরক্ষনাথের সাধন ক্ষেত্র গোরক্ষপুরে স্থানান্তরিত করেন ! (ইকোনমিক টাইমস)খবরে প্রকাশ গত একশ বছরে গীতা প্রেস দেশের চোদ্দটি ভাষায় ৪১.৭ কোটির বেশি ধর্মীয় পুস্তক ছেপেছে ! বর্তমানে গীতাপ্রেসের বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে !উল্লেখ করা প্রয়োজন গোবিন্দ ভবন ট্রাস্ট, যারা গীতাপ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা, একটি অত্যন্ত রক্ষণশীল সংস্থা ! সেখানে শুধু তিনবর্ণের হিন্দুদের -- ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য-- প্রবেশাধিকার আছে ! শূদ্র নমঃশূদ্র দলিত মূলবাসী ও অহিন্দু কোনো ব্যক্তির সেখানে প্রবেশাধিকার নেই ! সাংবাদিক জি সম্পত (২০১৬) অক্ষয় মুকুলের গীতাপ্রেস নামক পুস্তকটির আলোচনায় লিখেছেন, গীতাপ্রেসের মাধ্যমে মারোয়ারি সমাজ অভিজাত ভূস্বামীদের ধর্মীয় পৃষ্ঠষ্পোষকতার একচেটিয়া অধিকার খর্ব করে হিন্দু সমাজে পারম্পরিক 'ক্ষত্রিয় - ব্রাহ্মণ' ক্ষমতার সমীকরণের পরিবর্তে 'বৈশ্য-ব্রাহ্মণ' সমীকরণের জন্ম দিয়েছে ! নিঃসন্দেহে তা এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ! এই পরিবর্তনকে অক্ষয় মুকুল হিন্দুত্বের 'মারোয়ারিকরণ' (Marowarization of Hinduism) বলে বর্ণনা করেছেন !গোরক্ষপুর কেন ?১৯২৭ সালে গীতা প্রেস কলকাতা থেকে গোরক্ষপুরে স্থানান্তরিত হলো। পাশেই বেনারস (কাশী) ! হিন্দুদের পবিত্র স্থান ! সম্ভবত হিন্দি হিন্দু সমীকরণ অনুযায়ী বৃহত্তর হিন্দু সমাজের কাছে পৌঁছনোর একটা তাগিদ ছিল ! কিন্তু খটকা লাগে বাবা গোরক্ষনাথের সাধনা ক্ষেত্র গোরক্ষপুরকেই বেছে নেওয়া হলো কেন ? মনে রাখতে হবে গীতাপ্রেসের বর্ণবাদী সনাতন দর্শনের সঙ্গে বাবা গোরক্ষনাথের ধর্ম দর্শনের মিলের চেয়ে অমিল বেশি ! নাথ সম্প্রদায় শিবভক্ত ! বাবা গোরক্ষনাথ এই অঞ্চলে আশ্রম গড়েন আনুমানিক একাদশ শতকে ! গোরক্ষনাথের গুরু এক বৈপ্লবিক দর্শনের সূচনা করেন উপনিষদের শিক্ষাকে সরলীকরণ করে ! তিনি ভগবান শিবের নামে চালু করেন 'সবর মন্ত্র'-সেখানে মানুষে মানুষে জাত বর্ণের ভিত্তিতে কোনো ভেদাভেদ নেই !
বর্তমানে গোরক্ষনাথ মঠের দুটি মন্দির -গোরক্ষপুর ও নেপালে ! রীতি অনুযায়ী মন্দিরে কোনো জাতপাতের বিভাজন মানা হয় না ! মন্দিরের পুরোহিতও ব্রাহ্মণ নন ! যোগী আদিত্যনাথ একজন ক্ষত্রিয় - ঠাকুর সম্প্রদায়ের শিষ্য ! ( ইকোনমিক টাইমস ১৯/০৩/২০১৭) গীতা প্রেসের 'বৈশ্য - ব্রাহ্মণ ' সমীকরণের সঙ্গে নাথ সম্প্রদায়ের জাত বর্ণহীন শৈব দর্শনের মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ! বরং অমিলই প্রচুর !যদিও সঙ্গত কারণেই দাবি করা হয় যে গীতা প্রেস রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের 'হিন্দি হিন্দু হিন্দুত্ব'র প্রচার করছে গত প্রায় একশবছর ধরে, তবুও এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ কিছু মৌলিক তফাৎ আছে যা আলোচনার দাবি করে !গীতা প্রেসের জন্ম কলকাতায় - মারেয়ারি বানিয়া পুঁজির উদ্যোগে ! কলকাতার উদ্যোগ হলেও এতে বাঙালির কোনো ভূমিকা ছিল না ! কারণ বাঙালি তখন স্বাধীনতার লড়াই ও স্বদেশী উদ্যোগ প্রতিষ্ঠায় ব্যাস্ত ! তবে বাঙালি উদ্যোগপতিদের মধ্যে হিন্দুত্বের প্রতি ঝোঁক হয়তো কলকাতার মারোয়ারি বানিয়াদের শংকিত করেছিল বাণিজ্য ও ধর্ম দুক্ষেত্রেই বাঙালির আধিপত্য বিস্তারের আশংকায় ! মনে রাখতে হবে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় এক ফরাসী বিজ্ঞানীর ( মের্সেলিন বেথেলত ) তাগিদে ভারতের রসায়ন শাস্ত্রের ইতিহাস রচনায় মনোনিবেশ করেন ! তাঁর হিন্দু রসায়ন পুস্তকটির প্রথম খন্ড প্রকাশিত হয় ১৯০২ সালে ও দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশ পায় ১৯০৯ সালে ! দ্বিতীয় খন্ডের ভূমিকায় আচার্য লিখেছেন : "The Hindu nation with its glorious past and vast latent potentialities may yet look forward to a still more glorious future, and, if the perusal of these pages wIll have the effect of stimulating my countrymen to strive for regaining their old position in the Intellectual hierarchy of nations, I shall l not have laboured in vain."বাঙালি ভদ্রলোক সমাজে হিন্দু জাগরণও তখন বেশ গতি পেয়েছে! কিন্তু সেই নবজাগরণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বামুন কায়েতরা ! বাংলায় বৈশ্য/ বণিক সমাজ সেই বল্লাল সেনার আমল থেকে ব্রাত্য ! হয়তো নিজেদের স্বতন্ত্র বৈশ্য অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে মাড়োয়ারি সমাজ গীতা প্রেসকে গোরক্ষপুরকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়! অপরদিকে আরএসএস এর নির্মাণ হয় পশ্চিম ভারতে মূলত মারাঠি ব্রাহ্মণদের উদ্যোগে ! সংগঠনে চিতপাবন ব্রাহ্মণদের আধিপত্য ছিল গোড়া থেকেই !আরএসএস এর জন্ম
অধ্যাপক ডি এন ঝাঁ র মতে ব্রিটিশ ভারতে হিন্দু পরিচিতির (হিন্দু আইডেন্টিটি) শিকড় খুঁজে পাওয়া যায় ১৮৭২ সালের জনগণনায় যখন ব্রিটিশ সরকার জাতপাতের নিরিখে আদমশুমারি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে ! অবশ্য এর বেশ কিছুকাল আগে থেকেই কয়েকজন সংস্কারপন্থী হিন্দু চিন্তাবিদ তাঁদের লেখনীর জোরে এক নব জাগরিত সংস্কারমুখী হিন্দু আইডেন্টিটির জন্ম দিয়েছিলেন ! তাঁদের পথিকৃৎ ছিলেন রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩), দয়ানন্দ স্বরস্বতী যিনি ১৮৭৫ সালে আর্য সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন, স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩-১৯০২) রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন ১৮৯৭ সালে, রাজনারায়ণ বসু (১৮২৬-১৮৯৯), চন্দ্রনাথ বসু ১৮৯২ সালে লেখেন Hindutva-an authentic history of Hinduism, ১৮৮২ তে বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লেখেন আনন্দমঠ, ১৯১০ সালে অরবিন্দ ঘোষ প্রতিষ্ঠা করেন অরবিন্দ আশ্রম ! বালগঙ্গাধর তিলক ১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন 'গোবধ নিবারণী সমিতি', ১৯২৩ সালে ভির সাভারকার লেখেন Hindutva- Who is a Hindu? লোকমান্য গঙ্গাধর তিলকের শিষ্য মারাঠী ব্রাহ্মণ কবি হেগডেওয়ার (১৮৮৩-১৯৪০) ১৯২৫ সালে, গীতা প্রেস প্রতিষ্ঠার দুবছর পরে, প্রতিষ্ঠা করেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ !উপরে বর্ণিত হিন্দু প্রচারকরা অনেকেই সংস্কার পন্থী হলেও সবাই হিন্দু জাতিবাদের রূপরেখা নির্মাণ করেছিলেন বেদের দর্শন ও আর্য তত্ত্বের ভিত্তিতেই ! শুরু থেকেই আরএসএস এর দুটো উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো :ক) মারাঠী, বিশেষ করে, চিতপাবন ব্রাহ্মণদের একচেটিয়া প্রভাব !সাভারকার গডসে দুজনই চিত্পাবন ব্রাহ্মণ ! গত একশ বছরের ইতিহাসে মাত্র একজন অব্রাহ্মণ এই সংগঠনটির প্রধান হয়েছিলেন রাজেন্দ্র সিং তোমার (রাজু ভাইয়া)! উনি ১৯৯৪ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সংঘ প্রধান ছিলেন ! এই অব্রাহ্মণ রাজপুতকে সংঘের দরকার হয়েছিল ভারতীয় রাজনীতিতে, বিশেষ করে হিন্দি বলয়ে, মণ্ডলীকরণের ধাক্কা সামলাতে ! আরএসএস তাঁর আমলেই সংগঠনের তৃণমূল স্তরে মণ্ডলীকরন শুরু করে জোর কদমে ! এখন অনেক আদিবাসী, ওবিসি ও মূলবাসী আরএসএস এর পদাতিক সৈনিক ! ক্রিস্টান ও মুসলমানদের ঠেকাতে এঁদের দরকার ! এখন যেমন মনিপুরে মেইতেইরা (ওবিসি) কুকিদের (ক্রিস্টান) সঙ্গে লড়ছে !খ) আরএসএস প্রতিষ্ঠার সঙ্গে কোনো বৈশ্য পুঁজি বা ক্ষত্রিয় ভূস্বামীদের প্রতক্ষ যোগের কথা আলোচিত হয় না ! এত বড় সংগঠনের টাকার উৎসও অন্ধকারাচ্ছন্ন ! হিন্দুত্বের আধারেরাষ্ট্র ও সমাজ গঠনই যেন আরএসএস এর একমাত্র উদ্দেশ্য ! তুলনায় গীতপ্রেস ধর্মকে ব্যবসার সঙ্গে বেশি মাত্রায় জুড়েছে ! ধর্মীয় আচার বিচার মারোয়ারি সম্প্রদায়ের ব্যাবসায়িক সিদ্ধান্তকে বহুলাংশে প্রভাবিত করে ! বলা হয় বিরলারা হোটেলব্যবসায়ে পুঁজি বিনিয়োগ করেনি কারণ হোটেল চালাতে হলে নানা প্রকার আমিষ ভোজনের ব্যবস্থা করতে হবে !যেহেতু গীতা প্রেসের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বৈশ্য -ব্রাহ্মণ আঁতাতের মাধ্যমে পারম্পরিক ক্ষত্রিয় -ব্রাহ্মণ ক্ষমতার কেন্দ্রে আঘাত করা, দাবি করা হয় এই প্রতিষ্ঠানটি তুলনামূলক ভাবে কম সাম্প্রদায়িক! তবে জাতপাত ও বর্ণ বিচারে গীতা প্রেস আরএসএস ও নাথ সম্প্রদায় থেকে অনেক বেশি গোঁড়া !প্রশ্ন হচ্ছে মোদীজি হঠাৎ গীতাপ্রেসকে গান্ধী নামাঙ্কিত পুরস্কার দিতে ব্যাক্তিগত উদ্যোগ নিলেন কেন ? বেনারস মোদির নির্বাচনকেন্দ্র ! সেটা একটা কারণ হতে পারে ! শুধু কি তাই ? সমীকরণ গুলি একটু মেলানো যাক !
জাতে বানিয়া মোদির সঙ্গে আরএসএস এর বনিবনা হচ্ছে না বলে খবর ! আরএসএস এখনো সম্পূর্ণ ব্রাহ্মণ চালিত দল! দলিত ওবিসিদের সঙ্গে নেয় শুধু মাত্র ব্রাহ্মণদের হয়ে ভিন্নধর্মীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে! মোদী সম্ভবত আর এস এস সঙ্ঘচালকের বশে নেই আর ! সংঘ এখন মোদিকে ত্যাগ দিলেও দিতে পারে ! মোদী সেটা নিজেও জানে ! নাথ সম্প্রদায় জাতপাতে বিশ্বাস করে না ! ব্রাহ্মণদের আলাদা স্থান নেই মন্দিরে ! সবাই সমান ! ভক্তদের মধ্যে ক্ষত্রিয়দের সংখ্যা অনেক ! যোগী আদিত্যনাথ জন্মসূত্রে সম্ভবত ক্ষত্রিয়! ২০২৪ সালে পারম্পরিক ব্রাহ্মণ -ক্ষত্রিয় ক্ষমতার সমীকরণ অনুযায়ী যোগী আদিত্যনাথ হতে পারে আরএসএস মনোনীত প্রধানমন্ত্রীর মুখ !
হালে মারাঠী ও গুজরাটিদের রেষারেষিও বেড়েছে! বাঙালিদের মতোই কোনো মারাঠীও এখনো প্রধানমন্ত্রী হয়নি! নাগপুর সম্ভবত কোনো মারাঠী ব্রাহ্মণকে প্রধানমন্ত্রী চাইছে ! ২০২৪ সালে মোদীর মনোনয়নের সম্ভাবনা কম ! নিজের বানিয়া শিকড়ের কাছে হয়তো আশ্রয় খুঁজছে ! যে মারোয়ারি ব্যবসায়ীদের গত নয় বছর লাগাতার কোনঠাসা করেছে তাদেরকেই হয়তো আকঁড়ে ধরতে চাইছে নিজেকে বৈশ্য সমাজের প্রতিনিধি বলে! দেখা যাক এতে চিঁড়ে ভেজে কিনা ! তবে মোদীর এ উদ্যোগে বঙ্গের মারোয়ারি সমাজ বেশ চাঙ্গা হয়েছে বলে অনুমান