সকাল ৬টা বেজে ৩০ মিনিট। টিংটংটিংটং টিংটংটিংটং… টিংটংটিংটং টিংটংটিং…. বেজে উঠল ডোরবেল! নার্ভের ওষুধ খেয়েও রাতে ঘুম আসে না, ফলে যাবতীয় পড়াশুনো, লেখা, গানশোনা রাতের দিকেই করি। মাঝরাতে ঘুমিয়ে সকালে একটু দেরিতে উঠি। এত সকালে কেউ এই আবাসনে বেল দেওয়ার নেই ! আমাদের ইউনিটে কেউ এলে মেন-গেট ও টাওয়ারের নির্দিষ্ট ব্যক্তিই জানতে চাইবে তাকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা? এরকম কোন নোটিশ তো আসে নি। তবে কে দিল বেল? অনেকগুলো টাওয়ারের বৃহৎ আবাসন। তবে কি আবাসনের কেউ ? টলমল পায়ে চশমা চোখে আইহোল দিয়ে যাদের দেখলাম চিনতে পারলাম না। দরজা খুললাম।
- এটা কী?
- মানে? হলুদ-চাল? কী করব?
- বহুত পবিত্র চাউল হ্যায় জি, রামমন্দির সে অ্যায়া হ্যায়, ঘর মে রাখ দিজিয়ে । আপকা বহত উপকার হোগা । আউর এ লিজিয়ে আপকা নিমন্ত্রণ পত্র। রাম মন্দির যো হোতা হ্যায় না … উসকা চিটঠি । আপ আইয়েগা জরুর।অয়োধ্যামে। নমস্তে।
সাত সকালে আমি হতভম্ব। অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের ক’দিন আগে আচমকা এই ডোরবেলের অভিজ্ঞতা! সত্যি, ‘উপকারে' লাগবে এরকম হলুদ পবিত্র চাল সকালে এইভাবে পাওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। ফলে যারা এসেছিল তাদের সঙ্গে বাক্যব্যয় করার সদিচ্ছেও হয়নি। তাগিদও অনুভব করিনি। এক কাপ চা বানিয়ে আবাসনের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে ও ফেসিলিটি অফিসে জানিয়ে দিলাম যে এই নিমন্ত্রণ পত্র বা হলুদ চাল দিতে কে বা কারা এসেছিল তা দেখা হোক। এরকম নিমন্ত্রণ পত্র বা হলুদ চাল দিয়ে আমার ‘উপকার’ কাউকে করতে হবে না । ওয়াকফ আইনের সংশোধনের চেষ্টা অনেকটা মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি রাষ্ট্রের স্বঘোষিত অতি ‘উপকার'এর হঠকারী চেষ্টার নামান্তর! তবে ঠিক হঠকারী নয়। এর পেছনে নিহিত আছে আরএসএস নামের সংগঠনের সলতে পাকানোর অনেক ইতিহাস!
আমরা প্রথমে একজন ব্যক্তি মানুষ। তারপর সমাজবদ্ধ মানুষ । প্রতিটি ব্যক্তি-মানুষ হল প্রথমে পরিবার, তারপর গোষ্ঠী, তারপর সমাজ, দল, অঞ্চল, জেলা, রাজ্য, দেশ, মহাদেশ, গোলার্ধ ও এই বিস্তৃত পরিক্রমায় সারা পৃথিবীর মনুষ্য সমাজের একক। আর ‘গণতান্ত্রিক' দেশে এই একক মানেই ভোটার সংখ্যা। দেশের আয়-ব্যয়, ধন-সম্পত্তি ও ভোটার সংখ্যার অনুপাতে চলে অনেক বিভাজনের গল্প। বিভাজনের সঙ্গে চলে রাজনীতির খেরোর খাতায় লাভ লোকসানের অনেক হিসেব ও অনেক নিকেশের পরম্পরা! কখনো আইন কানুন আবার কখনো তার নিশানা হয় খোদ ভোটার। তখন ছদ্ম দেশহিতের আরোপিত গানে কোথাও যেন মিশেই যায় অস্থিরতার আবহ। যে আবহে আমরা হয়তো অহরহ প্রকটভাবে আছি সেই নোটবন্দীর সময় থেকে …
অস্থিরতার আবহ সৃষ্টি করা হয়, যাতে মূল সমস্যা থেকে চোখ সরে যায়। তৈরী করা হয় রাষ্ট্রীয় ভয়-ভীতির মঞ্চ । তাতে সার্কাস করতে নেমে পড়ে অনেক মিডিয়া। তৈরী হয় অনেক ভুয়ো খবর। আগে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার ভয়াবহ ছবি না-হওয়া কোন ঘটনার ছবি হিসেবে ভাইরাল হয়ে যায়। চলে আসে 'আমি সোমা বলছি'র মতো নানা রহস্যরোমাঞ্চ সিরিজের ‘সূত্র’। যদিও শেষমেশ সত্যি খবর সামনে আসে, ততক্ষণে ধৈর্য্য বা বাক সংযমের ধার না ধেরে খবর ক্রস চেক না করে বিপ্লবীরা নেমে পড়েন সোশ্যাল মিডিয়ায়, ছিপ নিয়ে পরিস্থিতির মাছ বা নেপোর দই তুলতে। শ্রীরামের নামে হনুমানজির লাফ দেবার হুড়োহুড়ি পড়ে যায়! আর রাজনীতিকদের অপলক নজর থাকে নিজেদের করতলের তাসে। কোন তাসের কোন নম্বর হাতে রাখা হবে, আর কোন তাসের কোন নম্বর ফেলা হবে…
তবে একটি মূল্যবান তাস বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সবসময় মজুত। কারণ লাট্টু চালিত হচ্ছে আরএসএসের গেরুয়া সূতোর প্যাঁচে। অ্যাজেণ্ডা হল উগ্র হিন্দুত্ব । এবং শেষমেশ নানা ভাষা নানা মতের দেশে এক জাতি, এক নির্বাচনের এজেন্ডাকে সামনে রেখে বহুত্ববাদের দেশে একনায়কত্ত্বের দিকে পা ফেলা হয় এগিয়ে পিছিয়ে ! ইংরেজ দার্শনিক জে এস মিলের ‘এক জাতি এক রাষ্ট্র’র ভাবনা আর হিটলারের ‘এক জাতি এক রাষ্ট্র’ ভাবনার প্রয়োগে বিস্তর প্রভেদ। মিল বিশ্বাস করতেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, প্রত্যেক জাতিসত্ত্বার স্বাধীনতায় - তা সে যত সংখ্যালঘুই হোক না কেন। কিন্তু হিটলার যে এক জাতি এক রাষ্ট্র এক নেতার ধারনার বাস্তবায়ন করেছিলেন তাতে ছিল প্রভুত্ববাদী কর্তৃত্ববাদী শাসন, যার মূলে ছিল জাতীয়তাবাদের নামে উগ্র দমন পীড়ন!
এখানে এখন অনেকটা সেই অবস্থা । নানা ভাবে চলছে সাধারণ মানুষের সামাজিক-অর্থনৈতিক লুঠতরাজ। আমি যা বলব আমিই গুরু। আর আমি সংখ্যাগুরুর গুরু…অতএব, সংখ্যালঘুদের মারতে হবে, ধরতে হবে, তাদের জমিজমা নিতে হবে, দরকার হলে আইন সংশোধন করতে হবে, তাদের আওতার জমির দিকে হাত বাড়াতে হবে, যাতে তাদের শক্তি কমে যায়। আর হ্যাঁ … এমনভাবে এই কাজ করতে হবে - যাতে তাদের বোঝানো যায় যে তোমরা বাপু নাদান লোক, আমরা যখন আছি তোমাদের আর চিন্তা কী? ওয়াকফ নিয়ে যা সংশয় যা কিছু গরমিল, প্রশ্ন… সব আমরা এমন ভাবে মিটিয়ে এই সম্পত্তিকে এমন উপযোগী করে দেবো যাতে তোমাদের পুরুষ এবং নারীদের উন্নতি তরতর করে হতে থাকবে - কেন্দ্রীয় বাজেটে দিনদিন আমরা যে বরাদ্দ কমিয়ে যাচ্ছি সেদিকটা তোমরা দেখো না, তোমাদের এমন উপকার করবো যে তোমরা আমাদের জয়জয়কার করবে ...আমরা হলাম তোমাদের বড়দাদা!
কিন্তু এভাবে তো আর বড়দাদা হওয়া যায় না । আন্দোলন হয়...রাজনীতির কুনাট্য হয় শুরু থেকেই, এবং এর মধ্যে যুক্ত হয় দাঙ্গার গুড়ো মশলা। এই মশলা যদি একবার কষে ওঠে আর ‘হিন্দু খতরে মে হ্যায়’ বলে যদি একবার রক্তপাতের বিনিময়ে দেশাত্মবোধ উসকে দিয়ে বিভেদ সৃষ্টি করানো যায়, তবে কেল্লা ফতে! কিন্তু মুশকিল এই যে রক্তের রং এক ও অভিন্ন। যারা দাঙ্গা চায় তারা হিন্দু নয়, মুসলিম নয়, তারা দাঙ্গাবাজ। তারা না জেনেই দাঙ্গা করে । ওয়াকফ কিছু একটা জমি বাড়ি সংক্রান্ত ঘটনা, তার কিছুটা খাওয়া যায় - কিছুটা মাথায় দেওয়া যায়, এইটুকু জেনেই রাম-রহিমের নামে দাঙ্গা করে । আর শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ চায় আলোচনার মাধ্যমে অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে, সুযুক্তি ও পারস্পরিক মত বিনিময়ের মাধ্যমে একটি সমাধান সূত্রে পৌঁছতে …
ইসলাম ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি যদি সেবা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কল্যাণমূলক কাজে শরিয়া আইন মোতাবেক সম্পত্তি উৎসর্গ করেন এই উৎসর্গকে বলা হয় ওয়াকফ। চার ধরনের ওয়াকফ আছে - দাতব্য ওয়াকফ, পারিবারিক ওয়াকফ, যৌথ ওয়াকফ, আত্মনিবেদিত ওয়াকফ। মুসলিম সম্প্রদায়ের নিজেদের প্রতিষ্ঠান এই ওয়াকফ। ইসলামের আগমনের পর সুলতানি ও মোঘল আমলে ওয়াকফ গঠিত হয় । সারা ভারতে ওয়াকফ সম্পত্তি প্রচুর । কিন্তু খ্রিষ্টান বা অন্য সম্প্রদায়ের তেমন সম্পত্তি নেই। মোঘল আমলে ছিল ফতয়াই-আলমগিরি যাতে ওয়াকফ সহ সমস্ত মুসলিম ধর্মীয় আইনকে সংহিতাবদ্ধ করা হয়। বৃটিশ ভারতে মুসলিম ওয়াকফ বৈধকরণ আইন ১৯১৩ ও মুসলিম ওয়াকফ আইন ১৯২৩ ছিল। এরপর বেঙ্গল ওয়াকফ ১৯৩৪ চালু হয়। দেশ স্বাধীন হলে ১৯৫৪ ওয়াকফ আইন হয়। ৫৯, ৬৪, ৬৯, ৮৪ সালে কিছু কিছু সংশোধনী হয়। পরে যৌথ সংসদীয় কমিটির সুপারিশে আরো কিছু সংশোধনী হয় । ১৯৫৪ ও ১৯৯৫ সালের আইনের ভিত্তিতে রাজ্যে রাজ্যে ওয়াকফ বোর্ড গঠিত হয়। ১৯৯৫ সালের আইনের ওপর ৪০টির বেশি সংশোধনী হয়েছে । সম্প্রতি অতি দ্রুততায় যে সংশোধনী হয়, তার নাম হয়েছে Unified Waqf Management, Empowerment, Efficiency And Development Act । এই আইনে বোহরা ও আফগানিস্থানি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব রাখতে পৃথক বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছে। ফলে মুসলিম জনগণের বিভাজন হয়েছে। সামগ্রিকভাবে সমগ্র মুসলিম জনগণের জন্য হয়নি। এই আইনে যে কেউ সম্পত্তি ওয়াকফ করতে পারবে না, কমপক্ষে ৫ বছর ইসলাম ধর্ম পালন করেছেন - তারাই করতে পারবেন। আগে বোর্ডে মুসলিম সাংসদ ও বিধায়কদের মধ্য থেকে সদস্য মনোনীত হত। বর্তমান আইনে বলা হয়েছে মুসলিম হতে হবে এমনটা নয়। ১৯৯৫ সালে বলা হয়েছিল কাউন্সিলে সদস্য মুসলিমরাই হবেন, এই আইনে অমুসলিমদের যুক্ত করা হয়েছে। ১৯৯৫ সালে বলা হয়েছিল ওয়াকফ সম্পত্তি বিষয়ে দক্ষ ব্যক্তিকেই রাখতে হবে, এই আইনে তা নেই। ১৯৯৫ আইনে দুজন মহিলা সদস্য থাকবেন, দুই-এর বেশিও থাকতে পারেন, কিন্তু এখানে বলা হচ্ছে ২ জনই থাকবে। নতুন আইনে ওয়াকফ সম্পত্তি সার্ভে কমিশনের কাছ থেকে সরকার নিযুক্ত কর্মকর্তার কাছে ন্যস্ত করা হবে, যাতে সরকারি নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে। আইনে বলা হয়েছে এই সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশনের অধিকার জেলাশাসকের। মৌখিক অনুমতির ভিত্তিতে অনেক ওয়াকফ সম্পত্তি আছে...সেগুলোর কী হবে ? ১৯৯৫ সালের আইন ছিল যদি কোনো দ্বিমত হয়, তবে ওয়াকফ ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এই আইনে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে জেলাশাসককে। নতুন আইনে সম্পত্তি সরকারের কাছে থাকলে তা ওয়াকফ হবে না। কেন্দ্রীয় সরকার সম্পত্তির হিসেব পরীক্ষার জন্য আইন প্রণয়ণ করতে পারবে, আগের আইনে তা ওয়াকফ বোর্ডের হাতে ছিল, রাজ্য সরকারের তদারকিতে । এবার ওয়াকফ আইনের ৪০ ধারা বাতিল করা হয়েছে । এর ফলে ওয়াকফ বোর্ড সম্পত্তির প্রকৃতি নির্ধারণের অধিকার হারাবে। দেশের বেশিরভাগ মৌখিক ভাবে ওয়াকফ ঘোষিত কিছু জমিতে অসঙ্গতি ও ত্রুটি ছিল। সংশোধন হওয়া ভালো, কিন্তু যেভাবে সংশোধন হচ্ছে তা ডাকাতির সামিল! এই সংশোধনী আইনের আরও অনেক জটিলতা ও বিস্তৃতি আছে।
তবু আশার কথা সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি চলবে। আপাতত: কোন অমুসলিম প্রতিনিধিকে সদস্য হিসেবে নিয়োগ করা হবে না। এবং এ পর্যন্ত ওয়াকফ বা ওয়াকফ ব্যবহারকারী হিসেবে নথিভুক্ত বা নিবন্ধিত হিসেবে ঘোষিত কোনো কিছুর চরিত্র বদল হবে না ।
কিন্তু এটা ঘটনা যে বিজেপি-আরএসএসের পাখির চোখ থাকবে এই সম্পত্তিতে। দেশে প্রতিরক্ষা ও রেলের পর সবচেয়ে বেশি জমি ওয়াকফে। একবার নজর পড়েছে! আর কি ফেরানো যায়! প্রায় ৮ লক্ষ ৭০ হাজার ওয়াকফ সম্পত্তি। তাতে মোট জমি ৯ লক্ষ ৪০ হাজার একরের মত। এর বাজার মূল্য ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। দেশের স্থায়ী সম্পদের ওয়াকফ ৮ লক্ষ ৭২ হাজার ৩২৮ টি, অস্থায়ী সম্পদের ওয়াকফ ১৬৭১৩ টি। এর মধ্যে ডিজিট্যাল রেকর্ডভুক্ত ৩ লক্ষ ২৯ হাজার ৯৯৫ টি। পশ্চিমবঙ্গে ১ লক্ষের বেশি ওয়াকফ আছে, যার ৮০ হাজারের বেশি রেকর্ড করা। ২০ বছর আগে সাচার কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বঞ্চনার কথা, পিছিয়ে থাকার কথা। এই সরকার তাদের তেলেই তাদের ভাজতে চাওয়ার টোপ দিচ্ছেন! তেল শেষমেশ কোথায় যাবে তা কালের গর্ভে, তবু ...এই বিষয়ে চর্চা চলুক ...আলোচনা চলুক, ন্যায় বিচার চাওয়া হোক সবাই মিলে। কারণ এই আগ্রাসন কখনো কাম্য নয়। কিন্তু কোনোমতেই দাঙ্গা আমরা কেউ চাই না। চাই সম্প্রীতির বাতাবরণ ...।
দাঙ্গাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয় ঘোলা জল । আর এই ঘোলা জলের অপশক্তি প্রচুর। ঘোলাজল যাতে পড়ে তাতেই পচন সুনিশ্চিত । অতএব ঘোলা জলের চটি পরা বিএসএফ ও দূরবীনের অন্তর্গত সব কিছুই র্যাডারে থাক । আমরাও সতর্ক থাকি ...কারণ …
যখন দেশে একটি নির্দিষ্ট গভীরতাহীন উগ্র জাতীয়তাবাদ শক্তি অর্জন করে এবং সংকীর্ণ ভাবনায় বর্ণবাদের ঢক্কানিনাদে বিভেদ সৃষ্টি ক’রে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়, তখন আসে ফ্যাসিবাদ । মানবাধিকার লঙ্ঘন করে গণমাধ্যমকে কব্জা করার প্রবণতা যখন হয় - তখন আসে ফ্যাসিবাদ । ফ্যাসিবাদ এলে সামগ্রিক জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায় । নিত্যনতুন ভয় ও নিত্যনতুন শত্রু সৃষ্টি করে ফ্যাসিবাদ। সংখ্যালঘুদের অবদমন, লাঞ্ছনা ও সেই খাতে নতুন নতুন ধারা আনার প্রয়াস যখন হয়, তখন আসে ফ্যাসিবাদ। ফ্যাসিবাদ আসে চরম পরমত-অসহিষ্ণুতায়। বৌদ্ধিক মননে আঘাত নিয়ে আসে ফ্যাসিবাদ। ধর্মীয় মোড়কে রাজনীতি মুড়ে নির্বাচন ব্যবস্থা ও দেশ পরিচালনায় স্বশাসিত সংস্থা ও গণতন্ত্রের স্তম্ভগুলোকে প্রায় পকেটে পুরে এসে যায় ফ্যাসিবাদ। ফ্যাসিবাদ আসে যখন - সরকার জনগণের ভাবনার চেয়ে পুঁজিপতির লাভের ভাবনা বেশি ভাবে । ফ্যাসিবাদ তখন আসে যখন সরকার বেসরকারি আধিপত্যে নিজেকে বিকিয়ে দেয় । সারা দেশজুড়ে চলতে থাকে প্রহসন ! এভাবেই চলতে চলতে হয়তো একদিন জনগণের চেতনার স্ফুলিঙ্গ দানা পাকতে থাকে । এই জন জাগরণ থেকে হয় গণ অভ্যুত্থান । কালের চাকা ঘোরে…'উপকারী' স্বৈরাচারী দোকান গোটায় ….