পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

মুর্শিদ

  • 01 January, 1970
  • 0 Comment(s)
  • 1024 view(s)
  • লিখেছেন : অমি
এমন সময় ভারি বুটের আওয়াজ পাওয়া গেল হাজারদুয়ারী চত্বরে। লোকজন ছুটে পালাতে লাগল। পুলিশ দেখলে নিরীহ সাধারণ মানুষও দৌড়ে পালায়। দোকানপাটের ঝাঁপ পড়তে লাগল একের পর এক। রাকিব-উলকে হামিদ আলি বললেন, তুই এখন বাজারের মধ্য দিয়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি যাস না। আমাদের কেল্লায় চল। খোঁজখবর নিয়ে তার পর বেরোবি!

নিতেন, এমনই ছিল তাঁদের উদারতা। এমনকি তাঁদের নাম ও ধর্ম অপরিবর্তিত রাখতেন। জলসাঘরের যেখানে শুটিং হয়েছিল, সেই নিমতিতা রাজবাড়িতে এক মুসলমান ছেলে দত্তক হিসাবে বড় হন, তাঁর বংশধরেরা এখন ওই প্রাসাদের একটি বড় অংশের মালিক। তবে সিরাজের যে পুত্রকে মামা মোহনলাল পূর্ববঙ্গে রেখে এসেছিলেন, নিরাপত্তার কারণে তাঁর নাম বদলে ফেলা হয়। তাঁর বংশধরেরা এখনো আছেন, এ কথা আমি এক ইতিহাসবিদের লেখা বইতে পড়েছি।’’

“যত্ত সব গাঁজাখুরি কথা!’’ হামিদ আলি মির্জা বলেন।

পরভিন বানু সঙ্গে সঙ্গে জানান, “যতই বানানো হোক না কেন, এই সব কাহিনি শুনতে বেশ লাগে!’’

হাজারদুয়ারি আর ইমামবাড়ার মধ্যের মাঠে তখন অন্ধকার ঘনীভূত হচ্ছে। রাকিব-উল বাড়ি যেতে উদ্যত হলে হামিদ আলি তাঁকে বলেন, খবরের কাগজে বা কোনও পত্রিকায় পড়েছিলাম, সিরাজের কন্যা জোহরা বেগমের পুত্র শামসের আলি বেঁচে ছিলেন। কালক্রমে সিরাজের বংশ বাড়তে থাকে। নবম ওয়ারিশন সৈয়দ গুলাম আব্বাস নাকি এখনও বেঁচে। সে তোমার ওই ইতিহাসবিদের কল্পনা নয়, খাঁটি কথা বলে মনে হয়েছে আমার।

পরভিন খিল খিল করে হেসে বলেন, “এখন যদি সেই আব্বাস এসে তোমার চাচা আব্বাসকে হটিয়ে দিয়ে মুর্শিদাবাদের মসনদ দখল করেন?’’

হামিদ বলেন, “অত সহজ! মির জাফর যেভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন, একই কায়দায় সরফরাজ খাঁকে হত্যা করে বিশ্বাসঘাতক আলিবর্দি ক্ষমতায় বসেন। আলিবর্দির নাতি সিরাজকেও সেই ভাবে সরানো হয়। এখন সিরাজের বংশধর নবাবি চাইলে সরফরাজের উত্তরাধিকারীও চলে আসতে পারেন! ওই ভাবে কিছু হয় না বেগম!’’

এমন সময় ভারি বুটের আওয়াজ পাওয়া গেল হাজারদুয়ারী চত্বরে। লোকজন ছুটে পালাতে লাগল। পুলিশ দেখলে নিরীহ সাধারণ মানুষও দৌড়ে পালায়। দোকানপাটের ঝাঁপ পড়তে লাগল একের পর এক। রাকিব-উলকে হামিদ আলি বললেন, তুই এখন বাজারের মধ্য দিয়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি যাস না। আমাদের কেল্লায় চল। খোঁজখবর নিয়ে তার পর বেরোবি!

রাকিব-উল বললেন, সেই দিন ওই খুনের পর পুলিশ নড়েচড়ে বসেছে মনে হচ্ছে। আমাকে আর কী বলবে! আমি বাড়ি যাই।

পরভিন বানু বলেন, “না, না, আপনি যাবেন না। পুলিশকে বিশ্বাস নেই। যাকে পাবে তাকে তুলে নিয়ে যাবে। কালপ্রিটরা গা ঢাকা দিয়ে থাকে, আর এরা সাধারণ মানুষকে হেনস্তা করে। আপনি আমাদের বাড়ি চলুন। বিয়েশাদি তো করেননি, এত ঘরের টান কেন!”

0 Comments

Post Comment