সেই মোরগডাকা ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছে। রাস্তা পাকা হয়েছে, ট্রেকার টেম্পো বেড়েছে কিন্তু সদরের দুরত্ব তো কমে যায়নি! তাছাড়া বাইরে বেরোলে রহমতের একটা ভয় কাজ করে, যদি ট্রেকার খারাপ হয়, যদি আদালতের জজ সাহেব বেরিয়ে যায়, যদি উকিলবাবু কোর্ট চত্ত্বরে এসে না পায় তাকে! যদি তারা উপস্থিত নেই বলে জজ মামলার রায় শুনিয়ে দেয়। কত রকমের চিন্তা তার মাথায় কাজ করে! আগে এতো চিন্তা হতো না সবকিছু নিয়ে। এখন হয়। ছেলে বাইরে থাকে সম্বৎসর। ঈদে কুরবানিতে আসে। বাকি সময় সংসারের সব ঝক্কি তাকেই সামলাতে হয়। আর কি পারে! শরীরের তাকদ কমছে, শরীরের তাকদ কমলে মনের জোর কমে বৈ কি! তরণি এসে পৌঁছালে তবু স্বস্তি। সনাতন আসবে না। ছেলে ফোনে পইপই করে বলে দিয়েছিল, মোরগডাকা ভোরে বেরিও না, কোর্টের কাজ ওত জলদি হয় না, হাজিরা দিতি ডাকছে দিয়ে দিবা, শালোরা হারবেই। লায্য জমি আমাদের।
রহমতের তবু ভয় যায় না। সকাল সকাল এসে উপস্থিত হয়েছিল কোর্ট চত্ত্বরে। এই চত্ত্বরে আজ সে নতুন আসছে তা তো নয়। যুবকবেলায় আসত বাপের সাথে, আজ সে বাপের বয়সী। সনাতনের হাঁটুর ব্যথা চাগাড় দিয়েছে। অমবস্যা পুর্ণিমায় বেচারি কাহিল হয়ে পড়ে। বটতলা জমি মামলায় সনাতন দাস, তরণি কর্মকার, রহমত মোল্লা প্রধান বিবাদী। বাদী প্রতাপ রায় । বাদী-বিবাদী কোন পক্ষের নিজের মামলা নয় এটি, বাপের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত। রহমতের বাপ আবদুল্লা, তরণির বাপ হারাধন আর সনাতনের বাপ পঞ্চানন বটতলার জমি মামলায় জড়িয়েছিল প্রতাপ রায়ের বাপের সাথে। তারা কেউই ইচ্ছে করে মামলায় জড়ায়নি। মামলার শমন পাঠিয়েছিল জানকী রায়। আসল বাদী-বিবাদী গত হয়েছে অনেকদিন তবু মামলা চলছে।
তরণি এসে পৌঁছেছে। তাকে দেখে একটু ভরসা পায় রহমত। কতবার আসা হলো এই চত্ত্বরে তবু ভয় কাটে না। এতো মানুষ, সবাই অজানা অচেনা। তাকে যদি চোর,পকেটমার ভাবে! হাজারো ভয়। সবচেয়ে ভয় ঐ আদালতে ভেতরে। প্রশ্নের মুখে খেই হারিয়ে ফেলে রহমত। বছরে একবার, দু'বার মামলার তারিখ পড়ে। প্রতিবার এসে একই কথা বলে। সে বলে, তরণি বলে, সনাতন বলে, শুধু তারা নয় তাদের বাপ ও বলে গেছে একই কথা। বলেছে, হুজুর এ জমি আমরা চাষ করছি। কতকাল আগে থেকে করছি বুলত্যে পারি না। আমার বাপ ঠাকুরদা চাষ করেছে, আমি করছি, আমার ছেল্যা পোতারা করবে। বট তলার জমি আমাদের জমি, এ আমরা জন্ম হুনে শুনে আসছি। সে আজকের কথা লয়, বাপদের লেগে আমানি বেঁন্ধে লিয়ে গেছি, বটতলার ছায়োতে ঘুমায় গেছি। বাপ হাল চষে কাঁন্ধে করে বড়ি লিয়ে এসেছে, সে সব তো আজকের কথা লয়।
বাদী উকিল বলেছে - আজকের কথা কালকের কথা জানি না। এ জমি চাষের জমি না। এ জমি দেবতার জমি। দেবোত্তর সম্পত্তি। মহাকালের নামে মন্দির ছিল বটতলায়। তার লাগোয়া সাত বিঘা জমি দেবতার নামে। সে জমি নিজেদের বলে চাষ করে চলেছে। এখন দাবি করছে নিজেদের বলে।
বিবাদী শিবকে স্মরণ করে নমস্কার করেছে। বলেছে - বাবা ভোলানাথের জমি কুন জাগা লয়? তামাম সংসারই আমাদের ভোলানাথের আর রহমতের আল্লার। ছুট একখান জমি, আমরা চাষ করি, সংসার চালায় তাতে ভোলাবাবার কি কম পড়ে যাবে! ভোলাবাবা বোকাসোকা মানুষ হলেও সংসারের কথা কি বুঝবে না!
বাদী বলেছে - ফালতু কথা ছাড়ো। ধাড়িবাজ। বটতলায় শিবলিঙ্গ ছিল, সে তোমরা তুলে ফেলছ। কিন্তু এখন আবার পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে। মন্দির হবে। চাষ বন্ধ। সেখানে আশ্রম হবে।
বিবাদী বলেছে - না খেতে পেয়ে মরে যাবো যে হুজুর। ঐ জমিটুকুই আমাদের জান।
কোর্টে ফয়সালা হয়নি চল্লিশ বছর হতে চলল। রহমতের বাপেরা থাকার সময় জমি চাষ করা ছাড়েনি। পার্টির জোর ছিল তখন। জমিদারদের জমি কমে গিয়েছিল অনেক। গরীব মানুষ পাট্টা করে নিজের নামে জমি করছিল। রায়দের জমি ও পাট্টা হচ্ছিল অনেক। নিজেদের আত্মীয় কুটুমদের মাঝে জমি ভাগ বাঁটোয়ারা করে জমি বাঁচানোর চেষ্টা হয়েছিল প্রবল। বাবা ভোলানাথ ও ভাগ পেয়েছিল। দেবত্তর সম্পত্তি বলে সাত বিঘা জমি উইল করে দিয়েছিল জানকী রায়ের বাবা। খাতা কলমে হলেও তখন কেউ জানতে পারেনি। তখন স্লোগান, লাঙল যার, জমি তার। জমিতে যার দখল, সেই জমির মালিক। চাষের জমি দেবতার হবার কথাও নয়। দেবতার জন্য নৈবেদ্য সাজানো থাকে, তাকে চাষ করতে হয় না। তাই চাষের জমির ভগবান চাষী।
জানকি রায় মামলা করেছিল জমির দখলের জন্য। জানকি রায়ের পক্ষে কাগজ ছিল, কিন্তু দখল করার মতো লাঠি ছিল না। তিন ফসলি জমি। ধান-পাট-সরিষা-ছোলা-মসুর কোন না কোন ফসল জমি আলো করে থাকত সবসময়। সাত বিঘার মধ্যে রহমতের তিন বিঘা, তরণির দু বিঘার কিছু বেশি, বাকি সনাতনের। আবদুল্লা তখন পার্টির নেতা। মেম্বার। লাঙল যার জমি তার। এই বাক্য সে মরে গেলেও ভুলতে পারে না। রক্তের বন্যা বইয়ে দিতে পারে সে, কিন্তু জমির অধিকার ছাড়তে পারবে না। মামলার পর জমির দখল নিয়ে মারামারি যে হয়নি তা নয়, কিন্তু জমির অধিকার ছাড়েনি আবদুল্লা হারাধন পঞ্চানন। তারা তিনজনেই এখন কেউ নেই। মামলা এসে পড়েছে রহমত, তরণি আর সনাতনের ঘাড়ে। এখন মামলা বোঝা হয়ে চেপে আছে।
তরণি আর রহমত কোর্টের বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল। আজ কোর্টে সবাই ব্যস্ত। তাদের মামলা কি উঠবে! না আজ ও ফিরে যেতে হবে। উকিল বাবুরাও নিজেদের মধ্যে কি একটা ব্যাপার নিয়ে উত্তেজিত আলোচনা করে যাচ্ছে। তরণি রহমত কষ্ট করে জানতে পেরেছিল, রামমন্দিরের জমি মামলার ফাইনাল রায় দেবার দিন আজ। ভগবান রাম জমি পাবে কি পাবে না, তাই নিয়ে উৎসুক সবাই। তাদের উকিলটি নতুন, বাদীপক্ষের উকিল ও নতুন। বেশ কয়েকবার উকিল পরিবর্তন করেছে বাদী-বিবাদী দুই পক্ষই। টাকা গচ্ছা গেছে শুধু কাজের কাজ কিছু হয়নি। রায়দের টাকা আছে। দেবোত্তর সম্পত্তি হিসাবে অনুদান আসে মামলা লড়ার জন্য। এখন আবার 'বটতলা-ভোলানাথ বাঁচাও কমিটি ' তৈরি হয়েছে। ভগবানকে জমি পাইয়ে দিতে কমিটি তৈরি হয়েছে। সে কমিটি এসেছিল তরণি আর সনাতনের কাছে। বলেছিল, ভগবানের জমি চাষ না করতে। ছেড়ে দিতে। তরণি আর সনাতনের ছেলেরা কমিটির সাথে জুড়েছে। তারা বাপকে বুঝিয়েছিল, চাষ করে টাকা নাই। টাকা বিদেশে লেবার খাটতে গেলে বা পার্টি করলে। কমিটির ছেলেরা এখন খুব সক্রিয়। তারা জমি চাষ করতে দেয় না। লাঠির জোর বেড়েছে তাদের। রহমতকে বলে গেছে, এ জমি দেবতার। রহমত বলতে চেয়েছিল, আমরা তাহলে খাব কী? বলতে পারেনি। একটা ভয় চেপে ধরেছিল তাকে। বড় ছেলেটা বাইরে থাকে সম্বৎসর। বৌমার বয়স কম। ঘরে একা থাকে! ছোট ছেলেটা মনিহারি জিনিস ফেরি করে। কখন কি হয়, কে বলতে পারে! এখন কত কিছু শোনা যায়, খুন ধর্ষণ। চোখের সামনে ন্যাংটো ছেলেগুলোকে হঠাৎ মাতাব্বর হয়ে যেতে দেখে খুব অচেনা লাগে তাদের। অচেনা নিজের ছেলেকেও লাগে। টাকার নেশায় বাইরের লেবার খাটতে চলে গেছে। অথচ বাপের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নাই।
পুলিশ এসে নোটিশ টাঙিয়ে গেছে, মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জমি চাষ করা যাবে না। রহমত তবু গিয়েছিল চাষ করতে। পাটের জমিতে নিড়ানি দিচ্ছিল তখনই হাজির হয়েছিল তারা, বটতলা-ভোলানাথ বাঁচাও কমিটির ছেলেরা। ন্যাংটোবেলা থেকে দেখা ছেলেগুলো রোয়াব দেখাচ্ছিল। বেপাড়ার ছেলেও ছিল। রহমত চেনে না তাদের। রহমত হাত জোড় করেছিল, হাঁটুর বয়সী ছেলেগুলোর কাছে। এখন হাতজোড় করার সময়, তবু রক্তারক্তি কান্ড হতে সময় নিল না। বেপাড়ার ছেলে গায়ে হাত তুলল, দেবতার জমিতে চাষ চলবে না। রহমত বোঝাতে চেয়েছিল, সব জমিই তো ভগবানের। অশ্রাব্য গালি এসেছিল তার দিকে। 'মন্দির ভেঙে মসজিদ করিস তখন মনে থাকেনা কুত্তার বাচ্চা'। রহমতে দিকে আসা ঘুঁষির টাল সামলাতে সামলাতে সে বলেছিল, আল্লার কিরা আমি কুন মন্দিরের একখান ইটও নড়িয়ে দিখিনি। আমি মন্দির ভাঙবো কোন দুঃখে। আমি শুধু পেটের ভাতের কথা বুলেছি।
তার কথা শুনতে পাচ্ছিল না কেউ । থানা-পুলিশ গড়ালো। ছেলে থাকলে বুকে বল পাওয়া যায়। কিন্তু সে হয়নি। ছেলেটার জমির দিকে মন, চাষের দিকে নেই। তরণি সনাতন এগিয়ে এলো না কেউ। আসবে কি করে তাদের ছেলেরাই রক্ষা সমিতির মেম্বার। সনাতনের ছেলে দোকান দিয়েছে মোড়ের কাছে দোকান দিয়েছে। মোবাইলের রিচার্জ, পানবিড়ি, কোল্ডড্রিংক, চিপস। রাতের দিকে গোপনে চোলাই মদ। সমিতির ছেলেরা কাস্টমার। সনাতন কি করতে পারে! পিছিয়ে গেল। চাষ তুলে দিয়ে বটতলার জমি এখন বিরান জমি। জমি এখন মরা মাছের চোখের মতো। ঘাস জমেছে, শ্যামা ঘাস, দুর্বা ঘাস। কাশফুলের দুলুনি শুরু হয় আশ্বিনে। রহমত গিয়ে হা হুতাশ করে। চাষ করতে না পেরে জান ধড়ফড় করে। ছেলে ফোনে বলে, জমি চাষ করতে পারো বা না পারো জমির দাবী ছাড়বা না। ও জমি আমাদের লায্য হক। জমির দাম দিতে হবে, জমি লিতে হল্যে। জমির দাম এখুন হু হু করে বাড়ছে। পানি দামে দিলেও তিন বিঘা জমির দাম দশ লাখের কম না।
বটতলার চেহেরা পরিবর্তন হয়েছে অনেক। বটের ঝুড়িতে লাল সুতো বাঁধা। বৈশাখ মাসে ভোলানাথের থানে ভীড় জমছে। পুজোর থালা নিয়ে মেয়ে-বৌদের ভীড়। মুখে মুখে মাহাত্ম্য ছড়াচ্ছে। ভোলানাথের কাছে মানত করে কালো মেয়ের বিয়ে হয়েছে বিনা পণে, বারো বছর পরে কোলে ছেলে সন্তান এসেছে, পঙ্গু পা এর জোর এসেছে, মামলা জিতে বাড়ির ভিটে ফেরত পেয়েছে। যারা এসেছে, তারা সবাই গল্পটুকু শুনে আশায় বুক বেঁধেছে। ভোলানাথের জমি এখন কোর্টের রায় এর অপেক্ষায়। জমিতে শিলমোহর লাগলে মন্দির হবে বড়। বড় মন্দিরের জন্য চাঁদা এককাট্টা করা হচ্ছে জোর কদমে। ভগবান অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে অনেকদিন ধরে, সে অধিকার ফিরিয়ে দিতে সোচ্চার সবাই। রহমত তরণি সনাতন এর অধিকারের দাবী সে ক্ষেত্রে নগন্য। তারা সামান্য চাষা, ভগবানের অধিকার সব প্রথমে।
একথা একদিন জিজ্ঞেস করেছিল রহমত জিজ্ঞেস করেছিল তরণিকে।
- জমি গেলে চাষ করবো কোথায়? আমরা তো চাষা, চাষ না করলে বাঁচব কি করে! মাটি আমাদের মা, আমাদের জান। মাটির গন্ধ না পরাণে শেধোলে ঘুম আসে না।
তরণি বলেছিল, আমাদের কথা শুনে কে ভাই!
রহমত বলেছিল - তাহলে কি আমরা হেরে যাবো মামলায় ? কোর্ট কি বুঝবে না আমাদের কথা?
- ভগবানের কাছে আমরা তুচ্ছ! দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেছিল তরণি।
রহমত ও কথা খুঁজে পায়নি।
ভগবানের কাছে মানুষ তুচ্ছ! বিশ্ব সংসার যার তৈরি তার কাছে সামান্য মানুষ!
রহমত বলল - কিছু মনে করবা না ভাই, একটা কথা বুলি, তুমার কি মনে খুশি হবে যদি মন্দির হয়?
তরণি কিছুক্ষণ চুপ থাকে, তারপর বলে, যদি ভাই মোহজিদের কথা হতোক তাহলে তুমি কি বলতা?
রহমত চুপ করে থাকে, তরণিও। ধর্ম তাদের খাবার জোগায় না, কিন্তু ধর্মকে বাদ দিয়ে জীবন তারা ভাবতেও পারে না। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে। দুজনের দড়ির মতো পাকানো শরীর। নখ মাটিতে খাওয়া। দুজনের মুখে আধা খোঁচা দাড়ি। চুলে পাক ধরেছে। রহমতের ভয় লাগে... কি জানি কি তরণি যদি মামলা থেকে নাম তুলে নেয়, রক্ষা কমিটিতে তার ছেলে সক্রিয় এখন। ভোলানাথের মন্দির হলে মন্দির চত্ত্বরে দোকান করার জায়গা পাবে। জমি চাষ হবে না। ধান হবে না, পাট হবে না, সরিষা হবে না। জমি অনাবাদী হতে হতে বন্ধ্যা হয়ে যাবে। সে বন্ধ্যা জমির জন্য প্রাণ কাঁদে রহমতের, প্রাণ কাঁদে ভোলানাথের জন্য।
ভোলানাথ তো তার পর কেউ নয়। গাজনের মেলায় কত গেছে সে। চরক ঘোরা দেখেছে। খিচুড়ি প্রসাদ খেয়েছে হাত চেটে। কখন ভাবেনি ভোলানাথের সাথে জমি নিয়ে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়বে সে। এখন বাদী পক্ষ ছেড়ে দিয়েছে রায় রা, ভোলানাথ বাঁচাও রক্ষা কমিটি এখন ভোলানাথের হয়ে মামলা লড়ে।
রহমতের মনে খারাপ কথা আসে। মাঝে মাঝে মনে হয়, ভোলানাথ তার মতোই অসহায়। সে তো মুখ্য-সুখ্য মানুষ, মাটি মেখে থাকা মানুষ কিন্তু ভোলানাথ দুনিয়ায় মালিক। তাকেও লড়তে হচ্ছে এক টুকরো জমির জন্য। রহমত তরণির মতো মুখ্যু মানুষের সাথে লড়তে হচ্ছে, তাও আবার মানুষের সাহায্যে। ইচ্ছা করলে সে তামাম জমিতেই লীলা খেলা দেখাতে পারে!
রহমত জিব কাটে। আসতাগফেরুল্লা পড়ে মনে মনে। দেব - দেবী সম্পর্কে বাজে কথা ভাবছে সে। তার বাপ বলতো, তোর যেমন আল্লা, তেমনি ওদের শিব-পার্বতী।
রহমতে এই বিবাদ আর ভালো লাগে না। রহমতের ছেলে তড়পাচ্ছে জমির জন্য। সে মুখিয়ে আছে মোটা টাকার আশায়। বিক্রির জন্য খরিদ্দার দেখে রেখেছে। মামমার রায় তার দিকে গেলেই বিক্রি করে দেবে। খাটনির চাষে মন নেই তার। কাঁচা পয়সার দিক টান।
জমিতে চাষ নেই। রহমতের বুক খাঁ খাঁ করে।
জমি মামলায় কেবল নয় জীবনের মামলায় ক্রমাগত হেরে যেতে থাকে সে।