মুন্নি গা করেনি। বিছানায় শুয়ে বালিশ কোলে নিয়ে বলেছিল, তুই যা। আমি ঘুমাবো। বাসে তো ঘুমাতে পারব না। তাছাড়া চারপাঁচ ঘন্টা পেট্রোপোল আর বেনাপোল কাস্টমসে কেটে যাবে। ক্লান্ত লাগছে। চাবিটা নিয়ে যা--
ঘুম না ছাই ! সত্যি সত্যি ঘুমাবে বলে শুয়েছিল মুন্নি। ঘুম কিছুটা এসেওছিল। কিন্তু জমে ওঠার আগেই কেটে গেল। এখানে মসজিদ কোথায় কে জানে, কিন্তু মিহি সুরে মাগরিবের আজান ভেসে আসছে। মনে হচ্ছে ওর রুমের বদ্ধ জানালা ছুঁয়ে আজানের সুর আকাশপথের স্তরে স্তরে মিশে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ শুয়ে থেকে হোটেলের বারান্দায় এসে দাঁড়ায় মুন্নি। নাহ্, সেভাবে শঙ্খসুর আর উলুধ্বনি শোনা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে এ সময়টিতে প্রকৃতির এক অদ্ভুত উদযাপন শুরু হয়। আজানের সুস্বর আর শঙ্খধ্বনির অব্যক্ত সুর সাঁঝসন্ধ্যাকে ঘিরে এক মোহনীয় মায়াজালের সঙ্গত সৃষ্টি করে। যদিও ঢাকা শহরে এটা বুঝা যায় না। কিন্তু ওদের পোষ্টিং খুলনাতে হওয়ায় সন্ধ্যা উদ্যাপনের এই আমেজটুকু খুব ভালো লাগে ওর।
একটু আগে স্প্রে করে যাওয়া মশার ওষুধের গন্ধকে ছাপিয়ে আগরের গন্ধ ভাসছে রুমে। ধপধপে বিছানায় গা এলিয়ে দেয় মুন্নি। ঘুম দরকার। প্রচন্ড ঘুম। নার্ভগুলো সজারু কাঁটার মতো তীক্ষ্ণ হয়ে গেছে। ঘুমহীন শুষ্ক শরীর কেবলই ভেসে যাচ্ছে বাস্তবতার নানাবিধ ঘটনাগুলোতে। বিশেষ করে ওর জীবনে ঘটে যাওয়া ধর্ম ধর্ম গন্ধের ঘটনাগুলো খুবই ঝাঁঝালো। গল্প উপন্যাসেও এর রেহাই নেই। এইতো চৌদ্দশ সালের প্রথমার্ধে ধর্ম ধর্ম নিয়ে ঘটে যাওয়া রাজা গণেশ আর তার ছেলে রাজকুমার যদুসেনের কাহিনী ওর মনে চুম্বকের মতো গেঁথে রয়েছে।
রাজা গণেশের রাজসভা। রাজকুমার যদুসেনের প্রায়শ্চিত্ত প্রক্রিয়া রেডি। ষোলটি সুবর্ণধেনু প্রস্তুত হয়ে গেছে। সদাচারী ব্রম্মণগণ রাজসভায় আসন গ্রহন করে অপেক্ষা করছে। হোম জ্বলছে। যদুসেনও প্রস্তুত। রাজা গণেশদেব দূর থেকে ক্ষণে ক্ষণে শ্যেন দৃষ্টিতে ছেলেকে দেখছেন। প্রায় পঁচিশতম বয়েস হয়েছে যদুর। শারিরীক এবং মানসিক উৎকর্ষের চরম স্ফুরণ ঘটেছে যদুসেনের চেহারা, আচরণ ও ভাবগাম্ভীর্যে। তবে কেমন যেন দূরত্বের একটি ছায়া রচিত হয়ে গেছে তার এবং তার জ্যৈষ্ঠ পুত্র যদুসেন ওরফে জালালুদ্দীন মুহাম্মাদ শাহ্এর মধ্যে।
রাজা গণেশ চরম কূটনৈতিক কৌশলে মুসলিম আধিপত্যের আগ্রাসন থেকে নিজের রাজ্য ধরে রেখেছেন। সেক্ষেত্রে তিনি ধর্মকে ব্যবহার করেছে পোশাকের মত। পত্নীর প্রবল আপত্তিতে নিজে ধর্ম ত্যাগ না করে বাইশ বছরের পুত্র যদুকে ইসলাম গ্রহন করিয়ে প্রাণ এবং রাজ্য রক্ষার সাথে সাথে নিজের ধর্মকেও তিনি রক্ষা করেছেন।
কিন্তু পুত্র যদু ! নয়নের মণি আদরের ধন পিতৃভক্ত যদুসেন যেন বদলে গেছে। মাত্র ত দুটি বছর। এর মধ্যে কি এমন ঘটল যে যদুর মুখে অপ্রসন্নতার প্রবল ছাপ অকথিত মার্গে ধিকিধিকি জ্বলছে ! সে কি অভিমান ? ক্ষমতা লোভী পিতার আদেশে ইসলাম গ্রহন করায় যদুর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী তাকে ত্যাগ করে চলে গেছে পিতৃভবনে। শোনা যায়, একটি কন্যাসন্তান জন্মেছে। কিন্তু সে বাড়িতে মুসলিমের ছায়া দেখাও পাপ। তবে কি সেই বেদনায় যদুর এই নিভৃত জ্বলন ? নাকি পুনরায় হিন্দু ধর্মে ফিরে এলে মিশর দেশিয় মুসলিম প্রেমিকা মারি মাগদালিনাকে হারানোর ভয়ে যদুসেন এমন বিষণ্ণ অতুষ্ট ও অখুশি ?
গণেশের মন কু ডাকে। মাত্র কয়েকশ বছরে বাংলায় মুসলিমদের সংখ্যা বেড়ে গেছে অভূতপর্যায়ে। তিনি জানেন কেবল তলোয়ারের জোরে এতটা হতে পারে না। সাথে রয়েছে জাতপাতের ঘৃণা অত্যাচার, নীচ বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য, আক্রোশ আর ব্রাম্মণ্যবাদের নির্লজ্জ নিষ্ঠুর উল্লম্ফন। তার জ্যৈষ্ঠ পুত্র যদু/যদুসেন কি এসবে বিরক্ত হয়ে ইসলামের জাতপাতহীন আপাত সাম্যতায় মুগ্ধ হয়ে গেছে ? এই যে রাজসভায় শুদ্ধবস্ত্র পরিধান করে সমবেত মন্ত্র উচ্চারণের সাথে যার প্রায়শ্চিত্ত পর্ব সমাধা হতে চলেছে সে কি রাজকুমার যদুসেন নাকি রাজা জালালুদ্দিন মুহাম্মাদ শাহ !
গণেশ চোখ ফিরিয়ে নেন। তিনি বীর, দনুজমর্দনদেব। চতুর কুশলী। কুটনীতিতে উচ্চমানের প্রাজ্ঞ, আত্মপর ও কূটস্বভাবী। বিধর্মী হত্যায় নিঃশঙ্কচিত্ত। সাথে পেয়েছেন সব সময়ের মন্ত্রণাদাতা তীক্ষ্ণবুদ্ধির অধিকারী নরসিংহ নাড়িয়েলকে। সনাতন হিন্দু ধর্মরক্ষার পাশাপাশি বৌদ্ধদের অবস্থান রক্ষা যার ধ্যান জ্ঞান মন। অথচ প্রয়োজনে মুসলিম ইলিয়াসশাহী রাজা সিকান্দারের পুত্র গিয়াসুদ্দিনকেও তিনি মন্ত্রণা দিয়েছিলেন বৈমাত্রেয় ভাইদের বিরুদ্ধে গিয়ে পিতার রাজ্য দখল করার। অর্থাৎ ধর্মকে ক্ষমতার জন্যে আবার ক্ষমতার জন্যে ধর্মকে একটি অতি উত্তম লাগসই উপকরণ হিসেবে সর্বদা ব্যবহারে পারঙ্গম নরসিংহ নাড়িয়েল!
জ্যৈষ্ঠ পুত্র যদুর অবস্থাদৃষ্টে রাজা গণেশ দেব মূহূর্তমাত্র প্রমাদ গুণলেও বুদ্ধি হারালেন না। ক্ষমতার জন্যে তিনি ধর্মকে অস্ত্র করেছেন। প্রয়োজনে জ্যৈষ্ঠকে তিনি বিসর্জন করবেন। তার আরেকটি পুত্রসন্তান রয়েছে। ধর্ম সে ত ছলনা মাত্র। ক্ষমতাই ধ্রুব বাস্তব।
ভাবনাগুলো এ পর্যন্ত এসে পড়লে মুন্নির মনে পড়ে যায় একটি প্রতিবাদী গ্রীবার অসহিষ্ণু উচ্চারণ, সুধাদের আবার ক্ষমতা কি ? দিন আনে দিন খায়। তুমি যাই বলো না কেন, অই ধর্ম ধর্ম করেই ওরা সুধাকে ফেলে গেছে। শুনলে না, ওর মা কি বলে গেল! মোছলমানের ঘরে এতদিন থেকেছে, বড়মাংস না খেয়ে কি পেরেছে ! তুমিই বল, আমরা কি কখনো কোনদিন সুধাকে গরুর মাংস খেতে দিয়েছি না ওর সামনে খেয়েছি ? তাছাড়া ত্রিভুবনের লোক জানে পারতপক্ষে আমরা গরু খাইনা !
যাকে নিয়ে এই পারিবারিক চাপানউতোর সেই সুধা নির্লিপ্ত মুখে উঠান ঝেড়ে কতগুলো পেঁয়াজ কুচোতে বসে গেছে। রাবেয়া বেগম বহুবার বারণ করেছেন। বুঝিয়েছেন। পড়াশুনা করতে উৎসাহ দিয়েছেন। সুধা কানে তুলেছে বলে মনে হয় না। অন্যের সন্তান। তাছাড়া পনেরো বছরের একটি মেয়েকে স্বেচ্ছায় পরিত্যক্ত করে চলে গেছে নিজের বাবামা, এ তিনি ভাবতেও পারেন না। সন্তানের চেয়ে কি ধর্ম আগে ! তিনি একটি মা কলাগাছ হয়ে বাৎসল্যের কাঁদি ঝুলিয়ে রেখেছেন। তার সন্তানদের সাথে সুধাও সেখানে আশ্রয় পেয়েছে। মাত্র কয়েকটা মাস ওদের সাথে আছে। মনে হয় যেন কতকালের সন্তান তাদের।
একাত্তরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ। সুধার বাবামা স্থানীয় রাজাকারদের উৎপাতে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এর আগেও কয়েকবার চেষ্টা করেছে। শেষবার বাগেরহাট পর্যন্ত যাওয়ার পর আবার ফিরে এসেছে। পথে জেনেছে খুলনার ডুমুরিয়ার সীমান্তবর্তী চুকনগর গ্রামে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে জমিন আর নদী লাল করে দিয়েছে পাকিস্তানী বাহিনী। নিহত মানুষরা দক্ষিণ পূর্ববাংলার নানা জায়গা থেকে প্রাণভয়ে ইন্ডিয়া পালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছায় জড়ো হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় রাজাকারদের ইন্ধনে যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে আসা পাকিস্তানী বাহিনী রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছিল। সকালে যে গ্রামটি ছিল ভাতগন্ধে মথিত। বিকেলে সে গ্রাম হয়ে ওঠে রক্তাক্ত এক প্রান্তর। হিন্দু মুসলিম নারী পুরুষ শিশুর রক্তে চুকনগরের আটিয়ারি গ্রাম আর ভদ্রা নদী যেন কারাবালা। রক্তের রঙ যদি এক হতে পারে তবে ধর্ম কেন এত রঙিন !
সুধার বাবামা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে স্থানীয় এক মুসলিম ডাক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। তাতে লাভের লাভ হয়েছে কিছুটা। বাড়িটা রাজাকাররা দখল করে নেওয়ায় আপাতত কিছুটা স্বস্তি হয়েছে। কিছুদিন পর বরিশালে একদল শরনার্থীদের সাথে সুযোগ বুঝে ওরা পালিয়ে যায়। কিন্তু পথ দুর্ভোগের কথা ভেবে সুধাকে রেখে যায় ডাক্তার সাহেবের বাড়ি। অন্তত সুধা ত নিরাপদ থাকুক। কথা হয়, যদি কখনও দেশ স্বাধীন হয়, তবে ফিরে এসে সুধাকে নিয়ে যাবে।
কিন্তু কি হলো বাস্তবচিত্র ! স্বাধীন দেশে সুধার বাবামা আর ছোট দুভাই ফিরে এলেও এদেশে আর থাকবে না বলে মনস্থির করেছে ওরা। বড়ছেলেটি ওখানকার এক কারখানায় কাজ পেয়েছে। সুধার ছোট দুবোনকে কোন আশ্রমে দিয়ে ওরা এসেছে বাড়িঘর বিক্রি করে দিতে। মধ্যমগ্রামে একমুঠো জায়গা পেয়েছে। সেটুকু কিনে সেখানেই স্থায়ী হবে।
কেন যাবি ? স্বাধীন দেশ। আর ত কোন অসুবিধে নেই রে গোপাল।
ডাক্তার সাহেবের কথায় সুধার বাবা ঘোরলাগা আবেশে বলেছিল, দাদারে মাটিতে যে মা থাকে, সে মা আর নাই। সেই যে সাতচল্লিশে ভাগাভগি হল, মা জননীও তার মায়া তুলে চলে গেল এদেশ ছেড়ে। কোন দেশে গেল কে জানে। এখন কেবল প্রাণ আছে আর আছে ভয়। তাই বাঁচাই আগে।
বাড়িঘর বিক্রি করে চলে যাওয়ার আগের রাত্রে কাউকে জানিয়ে গেল না গোপাল। জানত কেবল সুধা। সারারাত বারান্দায় বসে থেকেছে অইটুকু মেয়ে। তখন সবে যুদ্ধ শেষ হয়েছে। শিয়াল কুকুরগুলো লাশ খেয়ে বাঘের মত ঘুরে বেড়াত। খেতে না পেয়ে গৃহস্থ বাড়িতে হামলা চালাতে শুরু করেছিল। লাঠিসোটা নিয়ে তাড়াতে গেলে শ্বদন্ত বের করে ক্ষেপে আসত মানুষের দিকে। সেই ভয়াল অবস্থায় কেবল মাত্র ধর্ম সুরক্ষার কারণে মুসলিম বাড়িতে রেখে যাওয়া মেয়ে গরুর মাংস খেয়েছে এ সন্দেহে তাকে ফেলে চলে গেল তার নিজের বাবামা।
সকালে খবর পেয়ে ডাক্তারগিন্নী পাখির মত উড়ে এসে সুধাকে নিয়ে গেছিল। ভয় আতঙ্ক আর নিজের ভেতর চেপে রাখা অপমানের যন্ত্রণায় সুধা তখন জ্বরের ঘোরে বেহুঁশ। প্রচুর গালাগাল শাপঅভিশাপ দেওয়ার পর স্বামীর সাথে তর্কে নেমেছিল ডাক্তারগিন্নী, কি গো তুমি যে বলেছিলে বেঁচে থাকতে হলে ধর্ম কোন ব্যাপার না ? এখন কি হল ?
গোত্তা খাওয়া ঘুড্ডির মত ডাক্তার থুবড়ে বসেছিল পুরনো সোফায়, কি যে হল ! গোপাল ত নিজেই রেখে গেছিল সুধাকে। তাছাড়া ধর্ম নিয়ে ওকে ত কোনদিন বাড়াবাড়ি করতে দেখিনি।
মায়া করে এক কাপ চা দিয়ে ডাক্তারগিন্নী বলেছিল, আচ্ছা সুধাকে ত প্রায়শ্চিত্ত করিয়ে নিতে পারত তাই নাগো ! অই ত পঞ্চগব্য। এভাবে কেউ ফেলে যায়। মেয়েটা কত কষ্ট পাচ্ছে ভাব একবার !
আমলকিরঙ হালকা সবুজ চোখ। তাতে টলমল করছে পানি। ডাক্তার সস্নেহে স্ত্রীকে পাশে বসিয়ে বলেছিল, হয়ত ভারতের মাটিতে গিয়ে ওর মন বদলে গেছে। হয়ত সুধাকে নিজেদের ঘরে রাখতে কোন অসুবিধে আছে। তবু ত রাস্তাঘাটে ফেলে যায়নি। আমাদের দিয়ে গেছে। হয়ত কেবল তোমাকেই দিয়ে গেছে। তোমার আঁচলে যে ধরিত্রীর ছায়া আছে গো বড়বউ।
বড় হয়ে সুধা বিয়ে করেছিল ওর সহকর্মী মামুন মাষ্টারকে। সুধা মারা যাওয়ার আগে একজোড়া সাগরিকা দুল একমাত্র সন্তান মুন্নিকে দিয়ে বলেছিল, ওদের ফেরত দিয়ে আসিস কিম্বা ফেলে দিস নদীতে---
মুন্নি ফেলে দেয়নি বা ওদেরও দিয়ে আসেনি। তবে খুঁজে বের করেছিল মধ্যমগ্রামের সেই বাড়ি। সে বাড়ির এক মেয়ে যাবদপুর ইউনিভার্সিটির প্রতিবাদী মুখ ছিল। শাহবাগ যখন জ্বলছিল, সেই আগুনে ওরাও শিখা হয়ে এপারের বন্ধুদের আলো ছড়াচ্ছিল। পরিচয় দেয়নি মুন্নি। এবার ওর ডাক্তার স্বামীকে নিয়ে সাতদিনের এক ট্রেনিংএ কোলকাতা এসেছে। যাওয়ার আগে মধ্যমগ্রামে এসে দেখে পথে পথেও জ্জ্যয় শ্রীরাম পোষ্টার। গেরুয়া পতাকা উড়ছে। বেশিক্ষণ থাকার সাহসে কুলোয়নি ওদের। ইনফরমেশ ছিল, সুধার ছোটভাই মতুয়াদের একাংশের সমর্থক, ছোটখাটো নেতা। মুন্নি তাকে নমস্কার করতেই থমকে তাকিয়েছিল। ওর ইচ্ছে করছিল জানাতে, মামু আমি---
কিন্তু দ্রুত হাত নামিয়ে নিয়েছিল। ও নমস্কার দিয়েছে সালামের ভঙ্গিতে।
হোটেলে ফিরে গভীর বিষাদে নিঃশ্বাস ছেড়ে তানভির বলেছিল, দেখেছিস দেশে দেশে ধর্মান্ধদের কেমন মিলমহব্বত ?
মুন্নির মুখ অতুষ্ট, জিঘাংসামগ্ন। যেন দৈব গলায় মুন্নি ফিসফিস করে বলে ওঠে, আমার কি মনে হয় জানিস—আমাদের মানে বাংলাদেশের মানুষদের স্ট্রিক্ট কোন ছ্যাচা খাওয়ার দরকার আছে। অন্তত লাগাতার কয়েক বছর।
প্রেসক্রিপশন দিচ্ছিস ?
হুম—
তাই হবে মনে হচ্ছে। বুঝতে পারছিস কিছু !
ঘুমের ভেতর কেঁপে ওঠে মুন্নি। ওর স্বপ্নে ভাসছে বাংলাদেশ।
গল্পটি পূর্বে একটি ছোট পত্রিকায় প্রকাশিত