সংরক্ষণ হওয়া উচিত কি অর্থনৈতিক অবস্থানের ভিত্তিতে?
সবর্ণদের অনেকে বলেন, সংরক্ষণ হওয়া উচিত অর্থনৈতিক ভাবে অনগ্রসরদের জন্য। তাঁদের ধারণা, যারা সংরক্ষণ পেয়ে স্বচ্ছল হচ্ছে, তাদের পরবর্তী প্রজন্মও দিব্যি সংরক্ষণের সুবিধে ভোগ করছে। এটা কেন হবে! SC/ST দের শিক্ষিত কর, তৈরি কর, কিন্তু সংরক্ষণ কেন থাকবে। এঁদের সমস্যা হল, এঁরা ভাবেন সংরক্ষণ দারিদ্র দূরীকরণ প্রকল্প, সেটা যে নয়, আগেই বললাম। যদিও সরকার বাহাদুর এই দাবিতে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া সবর্ণদের সংরক্ষণ দিয়েছেন এবং তাতে অসংরক্ষিত আসন সংখ্যাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং ওটা নিয়ে কীরকম দুর্নীতি হয় আমরা কম বেশী শুনে থাকি। সম্প্রতি ANI তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন IAS ও বর্তমানে দৃষ্টি UPSC কোচিং সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা বিকাশ দিব্যকীর্তি কিভাবে ইউপিএসসিতে EWS কোটায় দূর্নীতি হচ্ছে, তার বেশ চমকপ্রদ উদাহরণ দিলেন। যেমন, EWS কোটার জন্য, ৫ একর বা তার বেশী কৃষিজমি থাকতে পারবেনা, সেক্ষেত্রে ৪.৯ একর রেখে লোকে জমি বিক্রি করে দিচ্ছে। ১০০০ স্কোয়ার ফিটের ফ্ল্যাট থাকলে হবেনা, তাই ৯৯০ স্কোয়ার ফিট দেখাচ্ছে রেজিস্ট্রেশানে। কেউ পারিবারিক রোজগার আট লাখের কম দেখাচ্ছে, মেডিক্যাল লিভ নিয়ে উইদাউট পে হয়ে, যাতে ইনকাম ট্যাক্সে ৮ লাখের জায়গায় ৭.৯ লাখ দেখায়। এমন লোকও আছে, যে অন্য সরকারি চাকরি করে ছুটি নিয়ে উইদাউট পে হয়ে, দেখাচ্ছে তার রোজগার ৮ লাখের কম; UPSC-তে EWS বিভাগে থাকার জন্য। তবে খালি EWS নয়, OBC ননক্রিমি লেয়ার নিয়েও দূর্নীতি হতে পারে, সম্প্রতি UPSC-তে পূজা খেদকারের ঘটনা তার প্রমাণ। কিন্তু এর বাইরে যে প্রসঙ্গ আসে, অর্থনৈতিক সংরক্ষণ দিলেও তো সেই মেধার অবনমনের ব্যাপার আসে। খালি অর্থনৈতিক নয়, যেকোন সংরক্ষণ অর্থাৎ মহিলা সংরক্ষণ, রাজ্যোয়ারি চাকরির সংরক্ষণ সবই তাহলে সে হিসেবে মেধার সঙ্গে আপোষ, বা টাকা দিয়ে বেসরকারি কলেজ থেকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়াও তো মেধার সঙ্গে আপোষ, নাকি মেধার অবনমন ব্যাপারটা খালি SC/ST/OBC-র ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, অন্য সব সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সব ‘চাঙ্গা সি’? যদি সেটা হয়, তবে আবার ওই কর্তার ভূত, যাকে তাড়ানো অসম্ভব।
এবার জাত ও দারিদ্র্যের সম্পর্কের দিকে তাকালে আমার কী দেখতে পাব? উত্তরপ্রদেশের সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, গ্রামে সবর্ণদের মধ্যে দরিদ্র যেখানে মাত্র ১৪%, সেখানে ৪২% OBC, ৫২% দলিত দরিদ্র। শহরে সংখ্যাটা ৪%, ৩৩%, ৪২%, যথাক্রমে। এছাড়া, ২২% সবর্ণের হাতে দেশের ৪১% সম্পদ(২০১৯)। UN রিপোর্ট ,২০২১ অনুযায়ী দেশের ছ’ জন দরিদ্রের পাঁচজনই SC/ST/OBC শ্রেণীভুক্ত। দলিতদের হাতে জমিও সবচেয়ে কম। জাতিগত সংরক্ষণ তুলে অর্থনৈতিক সংরক্ষণকে সমর্থন করলে, তাহলে কিন্তু সেই হিসেবেও সংরক্ষিত আসনের ৮০% ওপরে আসনও SC/ST/OBC দের জন্যই থাকবে। তার মানে SC/ST/OBC/EWS নিয়ে যে ৬০% সংরক্ষণ তাতে ৫০% SC/ST/OBC দের। আর হিসেবেও সেটাই আছে, সুতরাং পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে অর্থনৈতিক সংরক্ষণের দাবীদারদের বিলাপের কোন কারণ নেই। তাঁরা যা চান তাই আছে সংখ্যার ভিত্তিতে। আর গরীব বলেই, তাদের চাকরির পরীক্ষায়, ভর্তির পরীক্ষায় টাকা কম থাকে। আমার বন্ধু অঙ্কুর মাণ্ডীর সাত মহলা বাড়ি থাকা সত্বেও কেন আমার চেয়ে পাঁচশো টাকা কম দিল ফিজ, সেটা এক্ষেত্রে বিবেচ্য নয়। উত্তরপ্রদেশের দিকে তাকালে দেখছি, সমষ্টিগত ভাবে ৫০% SC/ST/OBC ফিজ দেবার মত জায়গাতেই নেই, তাই। আর এই ৫০% ফিজের জন্য পরীক্ষা দিতে না পারলে, কলেজে ভর্তি হতে না পারলে, আবার ওদের পড়াশুনোর সুযোগ দাও, সাহায্য দাও, কিন্তু চাকরি না, সেই দাবীটিরও গোড়ায় আঘাত করা হয়। আবার আর কত যুগ ধরে চলবে সংরক্ষণ, তার জবাবেও বলা যায়, মাত্র ৪.৫% সংগঠিত চাকরির ভরসায়, দেশের কয়েক হাজার বছর ধরে ভূমিহীন, অনগ্রসর জাতিরা অর্থে, সামাজিক প্রতিপত্তিতে সবর্ণদের সমকক্ষ হয়ে যাবে, সেটা অবাস্তব আশাবাদী কল্পনা।
সংরক্ষণের সুবিধা কেন বংশানুক্রমে পাবে?
অনেকে সব সংরক্ষণ মেনে নিয়েও বলেন, একজন পেল। সে স্বচ্ছল হল, তার সন্তান কেন সে সুযোগ পাবে? পাবে, কারণ বিহারে যে চামার হিসেবে জন্মেছে, তার বাবা সরকারি চাকরি করলেও, সমাজে চামারই থাকবে, ব্রাহ্মণ হবেনা। তার প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ কিছু কম হবেনা, সংরক্ষণ থাকা সত্ত্বেও তাদের আটকে রাখা হচ্ছে, যথেষ্ট প্রতিনিধিত্ব পাওয়া যাচ্ছেনা, সেখানে সংরক্ষণ না থাকলে কী হবে সহজেই অনুমেয়। আবার তাকে চর্মকারই হতে বাধ্য করে ছাড়বে সবর্ণ নিয়ন্ত্রিত ব্যাবস্থা। OBC র ব্যাপারটা একটু গণ্ডগোলের, সেটা অস্বীকারের জায়গা নেই। কারণ অনেক জাতিই, নতুন করে OBC হয়েছে, হতে চাইছে, এদের ক্ষেত্রে এরা সত্যিই কত অবদমিত ছিল, সেটা ভাল করে অবশ্যই পরীক্ষা করা দরকার। যদিও OBC-দের ক্ষেত্রে তাই ক্রিমি লেয়ার-নন ক্রিমি লেয়ারের ভাগ আছে। যেখানে বংশানুক্রমিক সুবিধা পাবার সম্ভাবনা কমে। তবে কথা হল, সংরক্ষণের শতাংশে যদি পরিবর্তন না হয়, তাতে দলিতদের কে তিন প্রজন্ম ধরে পাচ্ছে, কে পাচ্ছেনা, সবর্ণদের সে নিয়ে ভাবনা চিন্তা অনর্থক। কারণ সেটা দলিত-আদিবাসীদের স্বার্থ। সবর্ণদের সেখানে স্বার্থহানি হচ্ছেনা। দলিতদের একজন বলতে পারে, যে আমার প্রতিবেশী দলিতেরা তিন পুরুষ ধরে সরকারি চাকরি পাচ্ছে, আর কেন? এবার ওদের বাদ দেওয়া হোক, তাহলে অন্য দলিতরা সুযোগ পাক। তারা যখন বলছে না, সবর্ণদের অতিসক্রিয়তা এই নিয়ে মানে বোঝাই যায়, ঘুরিয়ে সংরক্ষণকে লঘু করে তা বিলোপ করার ছুতো! কিন্তু আবার দলিত স্বচ্ছল হয়ে, ভাল পুষ্টি, বিশ্রাম, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পেয়ে যদি ভালো স্কোর করে অসংরক্ষিত সিট পেয়ে যায়, সেক্ষেত্রে তো মেধার বলেই জেনারেল ক্যাটাগরিভুক্ত হয়ে গেল, ও একজন অন্য দলিতের জন্যে একটা সংরক্ষিত জায়গা খালি করে দিল, পরোক্ষে অন্য একজন দলিতকে এগোতে সাহায্য করল। এক্ষেত্রে মেধার আপোষও হলনা, দলিত প্রতিনিধিত্বও বাড়ল, আবার আরেকজন দলিতের উঠে আসার সম্ভাবনাও বাড়ল। এতেও যদি সবর্ণদের সমস্যা হয়, তাহলে ওই কর্তার ভূতের কাণ্ড, আর কি! আরেকটা কথা সবর্ণরা বলে, ওরা নিজেরা চাকরি পেলেও, নিজেদের সমাজের জন্য কিছু করেনা। এমন ভাবে বলে, যেন সবর্ণরা চাকরি পেয়ে বিরাট দানী গৌরী সেন হয়ে গেছে, অন্য গরীব সবর্ণদের জন্য লঙ্গর খুলে দিয়েছে! একজন দলিত বা আদিবাসী চাকরি পেয়ে তার পরিবারকে আর্থসামাজিক অবস্থানে টেনে তুলছে, সন্তানদের সচ্ছল জীবন দিচ্ছে, পাঁচজন গরীবের একজন হতে দিচ্ছেনা, এটা কি কম নাকি! যদিও সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি মত দিয়েছেন, SC/ST কোটার মধ্যে আবার সাব-কোটা করা যেতে পারে, কারণ দলিত সমাজ একমাত্রিক, তাতেও অনেক ভাগ আছে। দলিতদেরও একদল বারবার বংশানুক্রমে সুযোগ পাচ্ছে, অন্যরা পাচ্ছেনা, তাই সেখানে যারা কোনদিন সুযোগ পায়নি SC কোটায় তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হোক। অর্থাৎ, আমরা SC/ST শ্রেণির নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতাটাকে ইকুয়ালিটির মত ভাবছি, সুপ্রীম কোর্ট বলছে, সেখানেও ইকুয়িটি প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আদপে কী হবে জানা নেই, তবে সবর্ণদের যাঁরা বলতেন, তিন পুরুষ ধরে কেন পাবে, তাঁরা খুশি হবেন। তবে খুশির আসলে কোন কারণ নেই, কারণ চাকরিতে এর ফলে অসংরক্ষিত পদে তাদের শতাংশ বা সংখ্যা কোনটারই পরিবর্তন হচ্ছেনা।
পরিশেষ
তাহলে, যদি ধারণার বাইরে সংখ্যা নিয়ে কথা বলি, তাহলে দেখা যাচ্ছে, ১) সংরক্ষণ সবর্ণদের চাকরি পাবার ক্ষেত্রে বাধা নয়। বাধা হল পর্যাপ্ত চাকরি না থাকা। ২) কোটা সব চাকরি খেয়ে নিচ্ছে, সেটাও ধারণা মাত্র। কারণ, সবর্ণদের সংখ্যা SC/ST/OBC-র চেয়ে অনেক কম হলেও স্বাধীনতার ৭৭ বছর পরেও সবর্ণদের প্রতিনিধিত্ব চাকরি বিশেষে ৬০-৯৮% আমরা দেখলাম। ৩) সংরক্ষণ মেধার পক্ষে চরম ক্ষতিকর, ভারতের দুর্গতির কারণও, সবর্ণদের প্রতিনিধিত্বের বহর দেখে সেটরও আর গুরুত্ব থাকেনা। ‘মেধা’-র উচ্চপদের চাকরিতে মুখ্য অংশ সবর্ণ। জাতির দুর্গতির দায় তাঁদের ঘাড়েই চাপে বেশি। আর কোটার চাকরিতে প্রাধ্যান্য মূলত গ্রুপ ডি আর সাফাইকর্মী হিসেবে। এখন গ্রুপ ডি আর সাফাইকর্মীদের ওপর কেউ যদি দেশের মেধার অবনমনের মান ঠেলতে চান, তাহলে আমি নাচার। তামিলনাড়ুর কোটার চিকিৎসক, অন্ধ্র-তেলেঙ্গানার কোটার ইঞ্জিনিয়াররা দেখাচ্ছেন, কর্মদক্ষতার সাথে কোটার সবিশেষ কোন সম্পর্ক নেই। আর ৪) অর্থনৈতিক সংরক্ষণ হলেও, ৮০%-র বেশি ক্ষেত্রে SC/ST/OBC-রাই আসবে।
যেটা করণীয়, সময়ের দাবী, সেটা হল জাতিভিত্তিক জনগণনা। এটা যে কোন সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জিং, কারণ তাহলেই যত সংখ্যা তত প্রতিনিধিত্বের দাবী উঠবে। সেটা সবর্ণ আর SC/ST/OBC-র মধ্যে তীব্র সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে। ফলে সরকারের দুদিকেই হাত পুড়বে। কিন্তু তাও এটা করতেই হবে, কারণ কমপক্ষে দেশের ৭০% মানুষ যেখানে নিম্নবর্গের। তাই বেশীদিন হয়তো এটা না করে থাকা যাবেনা। তারপর কী কী হতে পারে, সেটা সব দিক ভেবে রাখতে হবে অবশ্যই।
কোটা নিয়ে দুর্নীতি হলে অবশ্যই সবপক্ষেরই বলা উচিৎ, সবর্ণদের থেকে বরং SC/ST/OBC-দের বেশী বলা উচিৎ। কারণ এখানে স্বার্থহানি বেশি হবে অংকের নিয়মে SC/ST/OBC-দের। যতবেশি ভুয়ো দিয়ে SC/ST/OBC সার্টিফিকেট যোগাড় হবে, তাতে সবর্ণদের নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা কমতে থাকবে, কিন্তু সংরক্ষিত আসনে প্রতিযোগিতা বাড়তে থাকবে।
দলিতদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট ক্রিমি লেয়ার-নন ক্রিমি লেয়ারের ভাগ করতে বলেছেন, যেটা আবার নাকি ক্রিমি লেয়ার-ননক্রিমি লেয়ার থেকে আলাদা। সেটা কি, তার প্রয়োগ কি, সেটা এখনও অজানা, কিন্তু আইনের জটিলতায় ভয়ঙ্কর অবাস্তব অবস্থার সৃষ্টি না করে, সেটা দেখতে হবে।
কেন সংরক্ষণের পরেও প্রতিনিধিত্ব বাড়ছেনা সেই অনুপাতে, সরকারকে এই নিয়ে সৎ ভাবে কাজ করতে হবে। যোগ্যতা, মেধা ইত্যাদি অজুহাতের মোড়কে SC/ST/OBC-দের দূরে সরিয়ে রাখতে, কারা বদ্ধপরিকর; এবং চাকরির ক্ষেত্রে কর্তার ভূত এসে বাগড়া দিচ্ছে কিনা, সেটা তদন্ত করা সততার সঙ্গে ও প্রয়োজনে কঠোর হওয়া। জাতিগত জনগণনা হলে, এই দাবী আরও জোরালো হয়ে উঠে আসবে।
শেষ কথা হিসেবে, কেউ বলতে পারেন, SC/ST/OBC-দের এগিয়ে আনা আর প্রতিনিধিত্বের জন্য সংরক্ষণই কি একমাত্র উপায়? না, একমাত্র উপায় হয়তো নয়। বা সর্বশ্রেষ্ঠ উপায়ও হয়তো নয়, কিন্তু ইকুয়িটির জন্য Affirmative Action বহু দেশেই বিভিন্ন ভাবে আছে, আর এই Affirmative Action-র মাধ্যমেই ইকোয়ালিটির লক্ষ্যে যাত্রা হয়। এবার দলিত-আদিবাসীদের কী করে দ্রুত মূল ধারায় দ্রুত আনা যায়, সেটাই সরকার ও রাষ্ট্রের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ; এবং তার জন্য যা যা করার, সব কিছু করা উচিৎ।
তথ্যঃ সমস্ত তথ্যই সরকারের সাইট থেকে বা বড় জার্ণাল, বা সংবাদপত্র থেকে আহরিত। যে কেউ ইচ্ছে করলেই যাচাই করতে পারেন। মেধা আর গুগল দুটোই যখন আছে, খুঁজে পেতে অসুবিধে হবেনা। আমি ইচ্ছে করে দিলাম না। যত খুঁজবেন, আরও নতুন নতুন দিক খুঁজে পাবেন, সংরক্ষণের আর কর্তার ভূতের।
আগের দুই পর্বের লেখা পড়ুন নীচের সূত্রে।
সংরক্ষণ বনাম কর্তার ভূত ২
সংরক্ষণ বনাম কর্তার ভূত ১