কিছু দিন আগে গেল 'ঈদ উল ফিতর', সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের খুশির ঈদ। তার আগে, আগের রাতেই রাস্তার দুপাশ জুড়ে লাগানো হয়েছে তির ধনুক হাতে হিংস্র রামের গেরুয়া পতাকা। পতপত করে উড়ছে, মসজিদের দু-পা আগে। আর মাত্র কয়েকদিন বাকি, আসছে ৬ই এপ্রিল রামনবমীর 'শোভাযাত্রা'। উদ্বিগ্ন গ্রামের কৃষক, মফস্বল, শহরের শ্রমিক মহল্লা, ক্ষুদ্র ব্যবসাদার, অধিকাংশ মেয়েরা। দাঙ্গাপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে এই সময়ে বড় অংশের সংখ্যালঘু, দলিত শ্রমিকেরা থাকবার জায়গাগুলোর পরির্বতন করেছেন। 'স্পর্শকাতর' অঞ্চলগুলোতে কাজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। অনেক সংখ্যালঘু শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, যখন তখন 'দাঙ্গা' লেগে যাওয়ার ভয়ে সেই দিনটিতে তাঁরা কেউ পরিবার ছেড়ে ঘর থেকে বেরোবেন না। এ বিষয়ে গভীর ভাবে চিন্তিত বুদ্ধিজীবী মহল, প্রগতিশীল নানা গণসংগঠনগুলো। রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনও বিবৃতি দিয়েছে, অঞ্চলের ধর্মীয় 'গুরু', মন্ত্রীদের সাথে নিয়ে 'শান্তি মিটিং' করেছে। অন্যান্য যে কোন ধর্মীয় 'উৎসবে' সাধারণ জনগণের এমন ভয়ঙ্কর সংকটজনক অবস্থা ও পুলিশ-প্রশাসনের অভূতপূর্ব তৎপরতা সাধারণত দেখা যায় না। অর্থাৎ, প্রমাণিত হয় সিংহ ভাগ অংশের কাছে রামনবমী দিনটি যে মোটেই 'উৎসবের' দিন নয়। এটি আসলে আতঙ্কের দিন শ্রমজীবী মানুষ ও সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়, দলিতদের কাছে। এখন প্রায় সকল রাজনীতিবিদ, সমাজবিদদের কাছে স্পষ্ট যে, হিংস্র রাম, হনুমানের চিত্রায়ন ও মসজিদের সামনে সশস্ত্র গর্জনের রহস্যে রয়েছে, প্রধানত, রাজনীতির ব্রাহ্মণ্যবাদীকরণের প্রস্তুতি ও ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ব রাজনীতি দ্রুততার সাথে প্রসারিত হওয়ার স্বার্থে সশস্ত্র যাত্রায় সমাজের সামরিকীকরণের পদ্ধতি।
কেন্দ্রে আরএসএসের আশীর্বাদপ্রাপ্ত মোদির বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসবার পরে বিগত কয়েক বছরের রামনবমীর 'শোভাযাত্রা' থেকে এ বারের শোভাযাত্রা হতে চলছে আরও বেশি অস্ত্রধারীর ভয়ংকর ও হিংসাত্মক কর্মসূচি, পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে। আরএসএসের মিটিং, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষদের বক্তব্যগুলো সেই আভাস দিয়েছে খানিকটা। আর খানিকটা আভাস দেয়, গোটা দেশের ভয়াবহ পরিস্থিতি, এই বছরে বাঙালির ঘরোয়া পুজো সরস্বতী, কার্তিক ইত্যাদির মাঝ রাস্তা দখল ও তার হিংসাত্মক ব্রাহ্মণ্যবাদীকরণের চরিত্র, সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ, প্রকাশ্যে নিম্নবর্ণের মানুষকে মন্দিরে না ঢুকতে দেওয়া। বাকিটার আভাস দেয় আগের বছরের অস্ত্র যাত্রাগুলোতে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ব গোষ্ঠীগুলোর মসজিদের সামনে গিয়ে সশস্ত্র যাত্রার ধ্বংসাত্মক ইতিহাসগুলো। এই স্বশস্ত্র যাত্রা তাদের ঘোষিত ব্রাহ্মণ্যবাদী রাজনীতির ফ্যাসিবাদী সাংগঠনিক পদ্ধতির অংশ। এ ধরনের যাত্রা, নানা কার্যকলাপের মাধ্যমে গত এক বছরে আরএসএসের সাংগঠনিক শাখার সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৬০০টি। এক দশকে বেড়েছে প্রায় ৩০০০ হাজার। শাখা, সাপ্তাহিক মিলন, মাসিক মণ্ডলী মিলিয়ে মধ্যবঙ্গে তাদের সংগঠন এখন ১৮২৩টি। উত্তরবঙ্গে ১১৫৩টি। কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগণা, দুই মেদিনীপুরের মতো জেলা নিয়ে দক্ষিণবঙ্গের সংগঠন ১৫৬৪টি। এমনটা আরএসএসের প্রকাশ্য দাবি। অপ্রকাশ্যে(গোপন) আরও অনেক রয়েছে, সেই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
সংঘের পিতা আরএসএস আদি কাল থেকে 'আর্য শ্রেষ্ঠত্বে' বিশ্বাসী। ক্ষত্রিয় রামের মধ্যে পেয়েছে সেই শ্রেষ্ঠত্বের বীরত্বপূর্ণ ঐতিহ্যের ইতিহাস। যিনি একমাত্র ব্রাহ্মণ্যবাদের প্রতীক। আরএসএসের রাজনৈতিক কর্মপদ্ধতি হল --- নিরাকারকে আকার দেওয়া, সেই আকারের মাধ্যমে অন্য ধর্ম, জাতি, বর্ণের প্রতি আর্য শ্রেষ্ঠত্বের(বর্ণপ্রথা) হিংস্রতার চিত্র ও চরিত্রকে সমাজের সম্মুখে তুলে ধরা, সেটিকে ধরে অঞ্চল মেপে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজকর্ম চালানো, যার মাধ্যমে সমাজে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ব রাজনীতির প্রসার ঘটানো, সর্বোপরি নানা ধরনের ধর্মীয় উৎসবের 'শোভাযাত্রা' নামে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্বের সশস্ত্র সমাজ বানানোর উত্তরণ ঘটানো যায়। এই ধরনের কাজকর্মে তাদের প্রথম লক্ষ্য সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চল। প্রাথমিক কাজ হল, অঞ্চল ভিত্তিক মন্দির স্থাপনের উদ্যোগ, সেই অঞ্চলের যে জাতি, বর্ণের মানুষের বসবাস বেশি সেই জাতি, বর্ণের কোন না কোন দেবতার মূর্তি স্থাপন। সেই মূর্তির তলায় সকলকে সমবেত করে সেখানে প্রতিদিন রুটিনমাফিক ধর্মীয় চর্চা করা ও তার মাধ্যমে সংখ্যাগুরুর ধর্মীয় আবেগের তীব্রতাকে হিংস্রতায় পরিণত করা, তাদের নানা শাখার সঙ্গে যুক্ত করানো। এর পর তাদের কাজ আর্য শ্রেষ্ঠত্বের(এক ঈশ্বরবাদী) আদর্শ পালনে বহুত্ববাদী আচার আচরণের হিন্দু ধর্মকে হত্যা করা, দলিত, আদিবাসীদের ন্যূনতম ধর্মীয় সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অধিকারগুলো কেড়ে নেওয়া, অধিকারের বোধ টুকু নষ্ট করে দেওয়া। পাশাপাশি নানাভাবে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের দিকে বিদ্বেষপূর্ণ আক্রমণ শানানো। প্রত্যেক নিপীড়িত ধর্ম, জাতি ও বর্ণের মানুষকে ব্রাহ্মণ্যবাদের(আর্য শ্রেষ্ঠত্ব) আনুগত্য করা, দাস বানানো। ঐতিহাসিকভাবে লুণ্ঠনকারী বিদেশী ব্রিটিশের আমলে আজকের ভারতের শাসক শ্রেণির উত্থানের পেছনেও এই একই(আর্য শ্রেষ্ঠত্ব) মতাদর্শ(ব্রাহ্মণ্যবাদী) কাজ করেছিল। তাই সংসদীয় ব্যবস্থার প্রতিটি রাজনৈতিক দলই ইতিহাস থেকে আজও কম-বেশি ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ব রাজনীতির অংশ, সেই রাজনীতির ধারক, বাহক বলা বাহুল্য। এর নানা উদাহরণ দিয়েছে ইতিহাস ও বর্তমান। কংগ্রেস আমলে বাবরি মসজিদ ভাঙবার ইতিহাস ও বর্তমানের 'বিজেপি বিরোধী' রাজনৈতিক দলগুলো ও রাজনৈতিক সরকারগুলো, এ রাজ্যের রাজনৈতিক সরকারেরও সংখ্যাগুরুর ধর্মীয় আবেগ নিয়ে রাজনীতি করবার নিকৃষ্টমানের অংকের সূত্রের ঘেরাটোপে বন্দি। গত বছর রাম নবমীতে ছুটিও ঘোষণা করেছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। ক্ষমতার স্বার্থে তথাকথিত বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ধর্মকে রাজনীতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বানিয়েছে, বিজেপির সঙ্গে ধর্ম চর্চার প্রতিযোগিতায় নেমে। বিগত বছরগুলোতে যে যে অঞ্চলে 'দাঙ্গা' সৃষ্টি হয়েছে, সেই অঞ্চলের দাঙ্গা সৃষ্টির পেছনের প্রধান ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্বের নেতা ও পান্ডারা ছাড় পেয়েছে, অধিক সংখ্যায় ধরা পড়েছে খেটেখাওয়া নিম্নবর্ণ ও সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের নিরপরাধ সাধারণ মানুষেরা। এমনটাই জানিয়েছে, সেখানকার সাধারণ মানুষ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্যানুসন্ধানের রিপোর্ট। এ নিয়ে রাজ্যের তথাকথিত বিরোধী 'ধর্মনিরপেক্ষ' বাম দলগুলো বক্তব্যহীন। 'বিজেপি বিরোধী' রাজনৈতিক দলগুলো ইতিহাস থেকে আজ পর্যন্ত মুষ্টিমেয় উচ্চবর্ণের স্বার্থে যে যে জনবিরোধী কাজগুলো করেছে বা করে আসছে সেগুলো আড়াল করতে এবং আমলাতান্ত্রিক শাসক শ্রেণিগুলোকে খুশি রাখতে আরএসএস ও বিজেপিকে 'সাম্প্রদায়িক' বলে চিহ্নিত করেছে। কিন্তু দেশের প্রকৃত ইতিহাস দেখিয়েছে যে, আরএসএস ও বিজেপির ঘোষিত রাজনৈতিক এজেন্ডা সাম্প্রদায়িকতার এক ধাপ উপরে, তাদের লক্ষ্য সমাজের সর্বত্র সশস্ত্র ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্বের মতাদর্শগত জাগরণ ও ক্ষমতায়ন। প্রকৃতপক্ষে 'সাম্প্রদায়িক' আসলেই বিজেপি বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো। যাদের দুর্নীতিগ্রস্ত কঙ্কালসার চরিত্রের উপরে দাঁড়িয়ে ক্রমশ বিকশিত আরএসএসের আশীর্বাদপ্রাপ্ত মোদির বিজেপি সরকারের ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ব ফ্যাসিবাদের 'আচ্ছে দিন'। ফলে সংসদীয় রাজনীতির সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বারা আরএসএস বা বিজেপির ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ব ফ্যাসিবাদী রাজনীতির মতাদর্শগত পতনের ভাবনা আদপে গেঁজেলদের দিনের আলোয় তাঁরা গোনবার স্বপ্ন।
ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্বের প্রচারক, রাজনীতিবিদেরা ঘোষিতভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থার ঊর্ধ্বে। আরএসএসের আশীর্বাদপ্রাপ্ত মোদির বিজেপির কাছে নির্বাচন হল শাসক শ্রেণির মধ্যে নিজেদের জোরশক্তি ঠিক কতটা তা মাপবার ও শাসক শ্রেণিকে নিজেদের জোরশক্তি দেখবার একটি মাধ্যম। আরএসএসের কাছে এটি আবার চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছানোর অর্থাৎ সমাজের সশস্ত্র ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্বের রাজনীতিকরণের একটি মহান উপলক্ষ(ইভেন্ট)। নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে বা নির্বাচনের উপর নির্ভর করে এরা কেউই ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ব ফ্যাসিবাদী রাজনীতির উপর জোর বাড়ায় বা কমায় না, তা লেখার উপরের অংশে গত এক বছরে(নির্বাচন ছিল না) আরএসএসের কার্যাবলী ও পশ্চিমবঙ্গে শাখার সংখ্যা বৃদ্ধির পরিমাণই প্রমাণ করে। এই ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্বের রাম রাজনীতির জন্ম লুণ্ঠনকারী বিদেশী শক্তি ব্রিটিশের আমলে। ১৮১৩ সালে ব্রিটিশ পন্ডিত লিডেন বাবরের আত্মজীবনী অনুবাদ করার সময় অনুমান করেন, 'সম্ভবত বাবর অযোধ্যায় গিয়ে থাকবেন'। সিপাহী বিদ্রোহের পর ব্রিটিশের হাতে প্রত্যক্ষ ক্ষমতা যায়। সামন্তপ্রভু, জমিদার শ্রেণির হিন্দু পুনরুত্থানবাদী আন্দোলনের উত্থান ঘটতে থাকে, সে সময় ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ লেখক কার্নেগী, ঐতিহাসিক লিডেনের অনুমানটিকে ধরে বাবরের মসজিদ বানানোর কথা বলেন। সেই বছরেই লেডি বিভারেজ 'বাবরনামা'র ইংরেজি অনুবাদে এটিকে 'তত্ত্ব' হিসেবে খাঁড়া করেন। যদিও তাতে মন্দির ধ্বংসের উল্লেখ ছিল নেই। সর্বোপরি ১৯০৫ সাল থেকে ব্রিটিশ ঐতিহাসিকরা সরাসরি প্রচার করতে থাকেন, 'বাবর মন্দির ভেঙে মসজিদ বানিয়েছিল'। অবশেষে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও আরএসএস জোরের সাথে এই দাবি তুলতে থাকে গান্ধী হত্যার পর, ১৯৪৯ সালে। ধীরে ধীরে পোক্ত হয় তাদের সংগঠন, জোরালো হয় দাবি, বৃদ্ধিবিকাশ ঘটতে থাকে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ব রাজনীতির সেবক দেবতা রামের। ১৯৯২ সালে ২৬শে ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসে কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ব গোষ্ঠীগুলোকে সহযোগিতা করেছিল। পশ্চিমবঙ্গে সেই একই কাজ করেছিল 'শ্রমিকের নেতা' জ্যোতি বসুর 'ধর্মনিরপেক্ষ' সিপিআইএম। রামশিলা পুজো সময় তারাই রাজ্য সরকার, তারাই পুলিশি নিরাপত্তায় এটিকে পাহারা দিয়ে রাজ্য পার করায়, আদবানির রামরথকে থামানোর বিন্দুমাত্র উদ্যোগ না নিয়ে সমাজে রাম রাজনীতিবিদদের অস্ত্র যাত্রার সূচনা ও মুসলিম, দলিত, মেয়েদের গণহত্যার ভিত্তি গেঁথে দিতে সাহায্য করে। অথচ যদি ধরেও নেওয়া হয় রাম জন্মেছিলেন, তবে নানা পন্ডিতের সমীক্ষা বলে দেয়, অযোধ্যায় রামের জন্ম হয়নি। সিংহ ভাগ পুরাণবিদ ও ঐতিহাসিকের দাবি অনুযায়ী রামচন্দ্রের 'জন্মভুমি'র অযোধ্যা আজকের আফগানিস্তানে অবস্থিত। গবেষক ও লেখক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, অন্তত দেড় ডজন মোহন্ত ও সাধকেরা নিজদের সাধনাক্ষেত্রটিকে 'রামজন্মভূমি' বলে দাবি করে।
ভারতের মত বহু সম্প্রদায়ভুক্ত শ্রেণি সমাজে এই ধরনের রাজনীতির শ্রেণি ভিত্তি লুণ্ঠনকারি বিদেশী শক্তি ও আমলাতান্ত্রিক শাসক শ্রেণিগুলো। যে কারণে মূলধারা সংসদ সর্বস্ব রাজনীতিতে প্রতিটি রাজনৈতিক দল কম-বেশি ধর্মীয় সংখ্যাগুরুর আবেগ ঘনিষ্ঠ ধর্মীয় দর্শনের সঙ্গী। তাই এখন কেউ প্রমাণ করতে চায় সে-ই বড় রামভক্ত, আবার কেউ দেখাতে ব্যস্ত রামপুজো নয় বাঙালির উৎসব সংখ্যাগুরুর ধর্মের অন্যান্য দেবদেবী(দুর্গা, কালী ইত্যাদি)। অবশ্য এই সমস্ত কিছুকে রাজনৈতিক পুঁজি বানিয়ে, ধর্ম, জাতি, বর্ণভেদে অঞ্চল ভিত্তিক ভাবে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ব ফ্যাসিবাদী সমাজ গঠনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে, রামনবমীর স্বশস্ত্র রাজনীতি। যার অন্তিম ফলাফল - সমাজ থেকে শোষিত কৃষক, শ্রমিক, মধ্যবিত্ত এবং নিপীড়িত সংখ্যালঘু ধর্ম, জাতি, নিম্নবর্ণ ও মেয়েদের রাজনৈতিক অধিকারের হরণ, শ্রমিক শ্রেণির রাজনৈতিক অধঃপতন।