পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

মিডিয়ার কন্ঠরোধ - বিজেপি আরএসএসের পুরোনো ঐতিহ্য

  • 06 October, 2023
  • 0 Comment(s)
  • 1075 view(s)
  • লিখেছেন : সুমিত দাস
ইন্দিরা গান্ধীর 'জরুরি অবস্হা' সমর্থন করে চিঠি দিলেন তৎকালীন সঙ্ঘপ্রধান দেওরাস। আজকের অঘোষিত জরুরি অবস্হায় ও সেদিনের রাজনীতিতে আরএসএসের 'গণতান্ত্রিক-বহুস্বর'-বিরোধী অবস্হান স্পষ্ট। যেখানে, মিডিয়া-নিয়ন্ত্রণ একটি পুরোনো ঐতিহ্য ছাড়া কিছু নয়। প্রতিবছর নিয়ম করে, জরুরি অবস্থার সমালোচনা করলেও, বিজেপি-আরএসএস আসলে ইন্দিরার গান্ধীর সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধের নীতিকেই সমর্থন করে।

কুৎসিত জরুরি অবস্হার চেয়েও ভয়ঙ্কর আজকের অঘোষিত জরুরি অবস্হা। মাঝেমাঝে মনে হয়, জরুরি অবস্হা একটা রাজনৈতিক অবস্হা ও সময়ের আরোপ। তার মারাত্মক ফল ভোগ করতে হয়েছিল কংগ্রেস ও ইন্দিরা গান্ধীকে। সার্বিক সংবাদপত্রের ওপর ইন্দিরা গান্ধীর ইমারজেন্সি আরোপ থেকে শিখে প্রয়োগ বদলেছে আজকের বিজেপি। সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বেনিফিসিয়ারি বিজেপি আপন মনের মাধুরিতে, যেন মিডিয়ার চেয়ে শক্তিশালি নিজস্ব পঞ্চম স্তম্ভ জন্ম দিতে পেরেছে! আদানি, আম্বানি, সুভাস চন্দ্রাদের চ্যানেলের প্যানেলে প্যানেলে পৌঁছে দিয়েছে বিজ্ঞাপনের টাকা। সেই টাকার বরাদ্দ প্রকল্পের চেয়ে বেশি! বিনিময়ে 'প্রশ্ন করার অধিকার ও অভ্যাস' কিনেছে। চতুর্থ স্তম্ভ প্রশ্ন করবে গণতন্ত্রের স্বার্থে। আর হাতির পাঁচ নম্বর পা, এই পঞ্চম স্তম্ভ গুলিয়ে দেবে প্রশ্ন ও প্রসঙ্গ। বিনিয়োগ কথা বলবেই। বাকি রইল চলতি পরিস্হিতির সঙ্গে জরুরি অবস্হার মিল আছে না নেই, তা খুঁজে বের করা। প্রয়োগে বহুলাংশেই মিল নেই। জরুরি অবস্হা থেকে শাসক বিজেপি শিখেছে অনেক বেশি। প্রশ্ন করার নৈতিকতা আর অভ্যাস  কিনে ফেলতে পারেনি সেদিনের কংগ্রেস। বিজেপি পেরেছে। নইলে ৮০% কর্পোরেট-মিডিয়া কর্মচারী মনে করবে কেন, - তারা বিজেপির চাকরি করে! সিংহভাগ সংবাদকর্মী হতাশায় ভুগবে কেন? বেচাকেনা ভাল হয়েছে বলেই তো ৯০% উচ্চবর্ণ নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া- স্বাধীনতার মাপকাঠিতে ১৮০ টি দেশের মধ্যে ১৬১-তে ভারত। কান কাটা রাস্তায় বেরিয়ে গেলে আর লজ্জা থাকে না। এবার ১৮০-তে ১৮০ হলে ক্ষতি কী? আর, নির্বাচনের দ্বারা নির্ধারিত গণতন্ত্রের মাপকাঠিতে (Electoral Democracy Index) ২০২ টি দেশের মধ্যে ২০২৩ সালে ভারতের স্হান ১০৮। গতবছরে যা ছিল ১০০। চলতি বছরে গণতান্ত্রিক উদারতার সূচকে (Liberal Democratic Index) ৯৭ তম স্হান ভারতের। গণতান্ত্রিক নির্বাচনের সূচকে ভারত যখন ১০৮, প্রতিবেশী পাকিস্তানের স্হান ১০৬। বহু এগিয়ে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা। আধুনিক পৃথিবীর যাবতীয় সূচকের নিরিখে ভারতে মৌলবাদী শক্তি ক্ষমতায় থাকার যাবতীয় ফলাফল ধরা পড়ছে।

এমন বহুবিধ ভারতের মিডিয়াকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে, বা মূলধারার মিডিয়া সর্বস্ব বিকিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করার অধিকার ও অভ্যাস না হারালে - নির্বাচিত গণতন্ত্রের নিরিখে বা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার মাপকাঠিতে এত পিছিয়ে থাকতে হতো না, স্বাভাবিক।  টিমটিম করে জ্বলা সংবাদ মাধ্যমের মূল কাজ, -'প্রশ্ন করা, প্রশ্ন তোলা',  যা মূলধারার হাতে গোনা সংবাদ-গোষ্ঠী বাদ দিলে, মূল কাজটি করছে বিকল্প সংবাদ মাধ্যম। প্রশ্ন করা যখন মূল কাজ, তখন এই বিকল্প মাধ্যমই 'চতুর্থ স্তম্ভ '। গণতন্ত্রের প্রহরী। গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণের একটি সূচকও পাওয়া যায়। ২০১৪ সালে সেই সূচক অনু্যায়ী ৭.৯২ পয়েন্ট পাওয়া ভারত, আরএসএস-বিজেপির হাত ধরে ২০২০ সালে পায় ৬.৬১। ২০২৩-এ তা আরো কমারই কথা।

সংবাদ মাধ্যম বা মিডিয়ার স্বাধীনতা প্রসঙ্গ এলেই চলে আসে বিখ্যাত জরুরি অবস্হার প্রসঙ্গ। সদ্য বিরোধী 'ইন্ডিয়া জোট' বিজেপি সরকার পোষিত অ্যাঙ্কারদের বয়কট করলে, পুনরায় আলোচনায় এসেছে জরুরি অবস্হার দিনগুলি। নিউজক্লিক-এর ওপর আরোপ দিয়ে বিকল্প সংবাদ মাধ্যমকে গিলে নেবার প্রয়াস শুরু। দেশের হয়ে প্রশ্ন করাই যেন দেশদ্রোহ!

ফি বছর ২৫ জুন, জরুরি অবস্হা বিরোধী দিবস পালন করা হয়। চলতি বছরেও প্রধানমন্ত্রী জরুরি অবস্হার কালো দিনগুলির উল্লেখ করেছেন। আরএসএস-ও দাবি করে,- 'তারা জরুরি অবস্হা বিরোধী অবস্হান নিয়েছিলেন!'

জরুরি অবস্হার বিরোধিতা করেও, কী করে এমন গণতন্ত্র-বিরোধী হওয়া যায়? হাজারো ঘটনা, মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ, টাকা দিয়ে নির্বাচিত সদস্য কেনা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা তো আছেই! এমন রাজনৈতিক দলের বা সামাজিক গোষ্ঠী কি সত্যি জরুরি অবস্হার বিরোধী ছিল? বৈচিত্রের ভারত শাসন করতে গেলে যে শাসন আরোপ করা জরুরি, তা আরএসএস ঢের বোঝে। ফলে, তাদের জরুরি অবস্হা অঘোষিত। আর হ্যাঁ, ১৯৭৫-এর জরুরি অবস্হায় সমর্থনই ছিল আরএসএসের।   ইন্দিরা গান্ধীর 'উন্নয়নের পথ'টির বাঁধা হয়ে দাঁড়ানো জয়প্রকাশ নারায়ণের রাজনৈতিক পথের বিরুদ্ধে অবস্হান নিয়েছিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ।

২১ মাসের জরুরি অবস্হা জুন, ১৯৭৫-এ শুরু হয়। আগস্টে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে চিঠি লিখলেন তৎকালীন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্গের সঙ্ঘচালক মধুকর দত্তাত্রেয় দেওরাস। কী লিখলেন? লিখলেন-'"I heard your address to the nation which you delivered on August 15, 1975 from Red Fort on radio in jail [Yervada jail] with attention. Your address was timely and balanced so I decided to write to you."। 'আমি আপনার স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য শুনেছি...।'  ওই স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্যে জরুরি অবস্হার সপক্ষে বক্তব্য রেখেছিলেন ইন্দিরা। যা, যথাযথ বলে মনে করলেন আরএসএস-প্রধান! অবশ্য, দৃষ্টি আকর্ষণের এ চিঠির কোনও উত্তর দেননি ইন্দিরা। এর তিন মাস পর, ১০ নভেম্বর আবার চিঠি লেখেন সঙ্ঘচালক। সেখানে এলাহাবাদ হাইকোর্টের আদেশের প্রেক্ষিতে ইন্দিরা গান্ধীর নির্বাচন বাতিলের মামলায়, - সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বোর্ড - নির্বাচন সাংবিধানিক বলে রায় দেয়। চিঠিতে মধুকর দত্তাত্রেয় দেওরাস প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখেন, -'"All the five Justices of the Supreme Court have declared your election constitutional, heartiest greetings for it."। বাইরে জরুরি অবস্হা-বিরোধী আন্দোলন তখন আরো তীব্র। সে আন্দোলনে - ভবিষ্যতে বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য অটলবিহারী বাজপেয়ী ও লালকৃষ্ণ আদবাণীরাও আছেন। এই চিঠিতে দেওরাস স্পষ্ট উল্লেখ করেন, 'জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনের সঙ্গে আরএসএসের নাম আনা অনুচিত।  গুজরাত, বিহারের আন্দোলনের মতই জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনের সঙ্গে আরএসএসের কোনও সম্পর্ক নেই।' এক্ষেত্রে, ভবিষ্যতের রাজনীতি নিয়ে অনুমানে ভুল করতে পারে না সঙ্ঘ। কারণ, জরুরি অবস্হার বিরোধিতায় আসলে বহুস্বরের ভারত নতুন করে উঠে এসছিল।

মধুকর দত্তাত্রেয় দেওরাস ১৯৭৩ থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত সঙ্ঘপ্রধান ছিলেন। অর্থাৎ, আজকের আরএসএস-বিজেপির সামনের সারির নেতৃত্ব তাঁর নেতৃত্ব পেয়েছে।  দেওরাসের আগে ১৯৪০ থেকে ১৯৭৩ পর্যন্ত আরএসএসের শীর্ষনেতা ছিলেন এমএস গোলওয়ালকর৷ যাঁর উক্তি, -'আরএসএস একটি পতাকা দ্বারা অনুপ্রাণিত। একজন নেতা ও একটিই আদর্শ, যা মহান দেশের প্রতিটি কোণ আলোকিত করবে হিন্দুত্বের শিখায়।' আর সেই আলোকশিখায় উজ্জীবিত সরসঙ্ঘচালক জরুরি অবস্হাকে সমর্থন করলেন, তা কি কাকতালীয়? নিশ্চই নয়। আবার ইন্দিরা গান্ধীর উত্তর না দেওয়ায়, - কংগ্রেসের সঙ্গে আরএসএসের দূরত্বও বেশ স্পষ্ট। জরুরি অবস্হার মত ঘটনায় সমর্থন জানিয়ে কি 'আগামীর শাসন' ও ঘুরিয়ে জয়প্রকাশবাদী ভবিষ্যতের বহুজন, অবিজেপি শক্তিকে দমনের পথ দেখতে পেয়েছিল সঙ্ঘ? উত্তর কঠিন হলেও, অবস্হান স্পষ্ট। কংগ্রেস রাস্তা বদলেছে। বাধ্য হয়েছে। উল্টে জরুরি অবস্হা আরো সুচতুর ভাবে কায়েম করেছে বিজেপি। যে জরুরি অবস্হার সমর্থক ছিল আরএসএস। প্রসঙ্গত, আরএসএস ১৯৪৮, ১৯৭৫ ও ১৯৯২, মোট তিনবার নিষিদ্ধ হয়। মধুকর দত্তাত্রেয় দেওরাসের জমানায় দু'বার  নিষিদ্ধ হয় আরএসএস।

ইন্দিরা গান্ধীর উত্তর না পেলেও ১৯৭৬-এর ১২ জানুয়ারি বিনোবা ভাবে'কে লেখেন সঙ্ঘপ্রধান। বিনোবা ভাবে আগেই জরুরি অবস্হার 'ধর্মত-সমর্থক'।লেখেন,- ' আচার্য বিনোবা ভাবে যেন আরএসএসের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরামর্শ দেন (প্রধানমন্ত্রীকে)।' বিনোবা ভাবে'ও সঙ্ঘচালককে উত্তর দেননি। পরে, পুনরায় আচার্যকে দেওরাস লেখেন, 'প্রেস রিপোর্ট অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী (ইন্দিরা গান্ধী) ২৪ জানুয়ারি পাভনার আশ্রমে আপনার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। সে সময় দেশের বর্তমান অবস্হা নিয়ে আলোচনা হবে। আমি আপনাকে, আরএসএস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর ভুল অনুমান অপসারণের চেষ্টা করার অনুরোধ করছি। যাতে, আরএসএসের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়। আরএসএস সদস্যদের জেলমুক্তি দেওয়া যায়। আমরা এমন সময়ের অপেক্ষায় রয়েছি, যখন আরএসএস ও সঙ্ঘের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমস্ত ক্ষেত্রে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।'

না, ইন্দিরা গান্ধী আরএসএস সম্পর্কে অবস্হান বদলাননি। জরুরি অবস্হা শেষ হয়েছে। সেদিনের কংগ্রেসের পতন হয়েছে। আবার ইন্দিরার নেতৃত্বে সরকারে ফিরেছে কংগ্রেস। আর ইতিহাসের কালো দাগ হয়ে আজো জেগে আছে জরুরি অবস্হা। অথচ, প্রচারে, অবস্হান বদলে, - জরুরি অবস্হার সমর্থক রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ আজো নানা রাজ্যের নিজস্ব ক্যাডারদের পেনশন দেয়। জরুরি অবস্হার সময়কালে জেলে যাওয়ার জন্য পেনশন! গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্হান, মহারাষ্ট্রের আরএসএস-কর্মী, যারা এক মাসেরও কম জেলে ছিলেন, তারাও পেনশনের অধীন। মজার বিষয় হল, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে পেনশন দাবি করা রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের কর্মী পাওয়া যায় না। কিন্তু, জরুরি অবস্হায় পাওয়া যায়৷ আর অন্যদিকে, জরুরি অবস্হা চলাকালীন শয়ে শয়ে প্রগতিশীল, বামপন্হী যুবক খুন হয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে অনন্য জীবন!

বিজেপি, আরএসএস পরিকল্পিত ভাবে কর্পোরেট মিডিয়া দখল করেছে। সেসব গোদি মিডিয়া পরের প্রজন্মের সাংবাদিকতার পাঠ গুলিয়ে দিয়েছে অনেকটাই। বিকল্প মিডিয়া গণতন্ত্রের স্তম্ভ হয়ে যুগের দায় পালন করছে। আক্রমণ তাদের ওপরে আসতে শুরু করেছে। ভবিষ্যতে  আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়বে। কেউকেউ বলছেন,- 'অঘোষিত জরুরি অবস্হা।' বিজেপি বলছে 'জরুরি অবস্হা ভয়ঙ্কর, অগণতান্ত্রিক।' এমন দাবি আর পাল্টা দাবির দৃশ্যপটে এটুকুই বলার, - 'জরুরি অবস্হার সমর্থক ছিল আরএসএস।' আর অঘোষিত জরুরি অবস্হা আসলে 'দীর্ঘ কালীন দমনমূলক শাসনের ছক।' ঝুলি থেকে বের করে জরুরি অবস্হাও দেখানো যাবে, আর গণতন্ত্র হটানোর পথে এগোনোর জন্য নামানো যাবে নানান কিসিমের আরোপ! এই জরুরি অবস্হা,  ৭৫ সালের কুৎসিত জরুরি অবস্হার চেয়েও ভয়ঙ্কর। ঘোষণা হোক, না হোক - নির্যাতন মানে, নির্যাতন। স্বাধীনতার পর এমন লুণ্ঠিত গণতন্ত্র দেখেছে ক'জন!


ঋণ: counterview.net ও "Hindu Sangathan aur Sattavaadi Rajneeti" -
Madhukar Dattatraya Deoras, Jagriti Prkashan, Noida

0 Comments

Post Comment