'মিডনাইট নক'। জরুরি অবস্হা চলাকালীন মধ্যরাতে দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ ছিল। রাজনৈতিক দলের সদস্য, শিক্ষাক্ষেত্রের লোকজনের মতই সাংবাদিকের দরজায় পুলিশের টোকা বা লাথি ছিল নিয়মিত ঘটনা। বাইরে, ৭৫-এর জরুরি অবস্হায় নিষিদ্ধ থাকা আরএসএস বা, জেলে যাওয়া বাজপেয়ী - আদবাণীদের পরের প্রজন্ম, - জরুরি অবস্হার বিরোধিতা করে বটে, ঘুরিয়ে ত্রাসও নামিয়ে আনে। বদলে যায় গণতন্ত্রের রীতিনীতি।
গত ৩রা অক্টোবর মঙ্গলবার নিউজক্লিক ওয়েবসাইটের সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ সহ অমিত চক্রবর্তীকে ভোর থেকে জেরার পর গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। অফিস সিল করা হয়। আগে, ২০২২ সালে ১৯৪ জন সাংবাদিক টার্গেট হন। দেশদ্রোহিতা বা মানহানি আইন অপব্যবহারের চূড়ান্ত নিদর্শন দেখেছি আমরা। স্বাধীন সংবাদ-সংস্হার সাংবাদিক, সম্পাদক, সমাজকর্মী, ইতিহাসবিদ, বিজ্ঞানী, রাজনৈতিক কর্মীদের বাড়িতে চলল তল্লাশি। পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা, অভিসার শর্মা, অনিন্দ্য চক্রবর্তী, ভাষা সিং, সঞ্জয় রাজৌরাদের মোবাইল, ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়।
-------
সুমিত : পরঞ্জয়দা, গণতন্ত্রের ধারণা ও বিকাশে যা যা ঘটলো, - সাধারণের ভোটে নির্বাচিত সরকার, তার চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদ মাধ্যম, যা সরকারের খুঁটিনাটি নাগরিকের কাছে পৌঁছে দেবে। নাগরিকের সুখদুঃখের খবরাখবর সরকারের কাছে পৌঁছে দেবে, একই সঙ্গে সময়টার ডকুমেন্টেশন করবে, এসবই তো সংবাদমাধ্যমের কাজ। এখন, ভারতও যেন ফের অন্যরকম জরুরি অবস্হা দেখেছে। যেখানে সরকার মিডিয়ার কাজ অফ করে দিল। পৃথিবীর নানা দেশে এমন ঘটনা ঘটেছে। আমাদের এখানে ২০১৪ থেকে যা চলছে, - তাতে জরুরি অবস্হার সঙ্গে কোনও মূলগত ফারাক দেখতে পাচ্ছেন?
পরঞ্জয় : অনেক ফারাক। জরুরি অবস্হা চলে ১৯ মাস। ২১ মাস পরে যখন সাধারণ নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধী পরাজিত হয়। তফাৎ তো অনেক! হেরে গিয়ে ইন্দিরা নিজে ক্ষমা চাইলেন। একটি সার্বজনিক মঞ্চ থেকে সে সময়কার তথ্যমন্ত্রী বিদ্যাচরণ শুক্লাও ক্ষমা চান। কিন্তু, গত ৩ তারিখ যা ঘটে গেল, - আমরা কোনও দিন তা দেখিনি। কয়েকশো পুলিশকর্মী সকাল সাড়ে ছটায় ৫০ জন সংবাদকর্মীর বাড়িতে ঢুকে গেল! বেশিরভাগ রাষ্ট্রীয় রাজধানী দিল্লিতে, একই সঙ্গে মুম্বই ও কেরালায় তল্লাশি চলল। কেন? কারণ, তাদের সম্পর্ক নিউজক্লিকের সঙ্গে। যেমন আমি। আমি নিউজক্লিকে চাকরি করিনি। কর্মী নই, আমি উপদেষ্টা। এইরকম অনেকে আমার মত আছে। অভিসার শর্মা, নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায় আছে। অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে, যারা সবে সাংবাদিকতা শিখছে, তাঁরাও আছে। কপি ডেস্ক, গ্রাফিক ডিজাইনার - সবার বাড়িতে ভোর সাড়ে ছটায় পৌঁছে গেল পুলিশ! তাদের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, এমনকি পাসপোর্ট নিয়ে গেছে। সেগুলো এখনও আছে দিল্লি পুলিশের কাছে। কয়েকজনের সিমকার্ড ফেরত দিয়েছে। কিন্তু, অনেকের মোবাইল, কম্পিউটার, হার্ডডিস্ক পুলিশের কাছে আছে।
প্রবীর পুরকায়স্থকে পুলিশ অক্টোবরের ৩ তারিখ গ্রেফতার করেছে। এফআইআর কপি হাতে পাবার জন্য তাঁর উকিলকে হাইকোর্টে যেতে হল। দেড়মাস আগে লেখা এফআইআর। হঠাৎ কী হল দেড়মাস পর, যে, মাঝরাতে কয়েকশো পুলিশের জমায়েত করতে হল? কনস্টেবল, হেড কনস্টেবল, সাব ইন্সপেক্টর, আরো বড়বড় পদাধিকারী, - সবাই হাজির। এই ধরণের অ্যাকশন কোর্ডিনেটেড এফোর্ট, - আগে দেখিনি।
সুমিত : একটা অত্যন্ত ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি। 'ভিক্টিম' মনে হচ্ছে?
পরঞ্জয় : না। আমি আমার কাজ করছি। ভিক্টিম কেন হবো? যদি আমাকে এভাবে সাজা দিতে চায়, যে ১২ ঘন্টা আমার টেলিফোন রেখে দেবে ওদের কাছে! আমার তো ভাগ্য ভাল, ১২ ঘন্টা পর টেলিফোন ফেরত দিল। সিম ফেরত দিল। অবশ্য, টেলিফোনে যা যা তথ্য ছিল, তোমার ফোন নম্বরও আছে তাতে সুমিত, সবই পুলিশের কাছে আছে। ৮ জন পুলিশ আমায় প্রশ্ন করেছে।
একজন প্রশ্ন করলো, - আপনি সিগনাল ব্যবহার করেন? বললাম - করি। হংকংয়ের একজনকে টেলিফোনে করেছিলেন, কেন?' বললাম, - হ্যাঁ। উনি একটি বই লিখেছেন, আমি সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তারপর জিজ্ঞাসা করলো, - 'একজন অস্ট্রেলিয়ানকে ফোন করেছিলেন, কেন?'
সুমিত : একজন সাংবাদিকের কাছে অনেকের ফোন নম্বর থাকাটাই তো স্বাভাবিক। সাংবাদিক সারা দুনিয়ার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন।
পরঞ্জয় : আরে শোনো! এই যে অস্ট্রেলিয়ান ভদ্রলোক, আমি তাকে ফোন করেছি। কেন? কারণ, উনি একটা ওয়েবসাইট চালান, তার নাম আদানি ওয়াচ৷ তাদের জন্য আমি লিখি। ওরা আমায় পয়সা দেয়। তা আমার ব্যাঙ্কের খাতায় আছে। কোথাও এ তথ্য লুকাইনি। আয়কর বিভাগের কাছে সব আছে। নিউজক্লিক আমায় যে পয়সা দিয়েছে, তার সব ইনভয়েস আছে। তার ট্যাক্স কাটা হয়েছে। এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরের কাছে সব আছে। দিল্লি পুলিশের কাছে সব থাকা উচিত।
একটা মজার গল্প শোনো। আমার ফোনটা ১২ ঘন্টা ওদের কাছে ছিল। ১২ ঘন্টা পুলিশের সঙ্গে থাকতে হয়েছে। আমায় জিজ্ঞাসা করেছে, - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন, - এস ভাটনাগর, তাঁকে আপনি ফোন করেছিলেন? বললাম, সে আমার শালা, আমার স্ত্রীর ভাই। পুরো নাম সঞ্জয় ভাটনাগর।
আমায় জিজ্ঞেস করলো, 'দিল্লির যে দাঙ্গা হয়েছিল, তার কভারেজ করেছি কি না?' বললাম- না। তারপর - 'কৃষক আন্দোলন?' বললাম হ্যাঁ, সবকটার ভিডিও আছে। লুকিয়ে কিছু করিনি। এবং করার ইচ্ছাও নেই। আমার ব্যক্তিগত মতামত সবাই জানে। প্রবীর পুরকায়স্থ'র মতামতও সবাই জানে।
এফআইআর-এ যে অদ্ভুত অভিযোগ, - 'নেভিল রয় সিঙ্ঘম ও ওঁর সঙ্গে যে কটা সংস্হা আছে, ওঁর পরিচিত লোকজন, অ্যাসোসিয়েটস, - তারা চিনা কমিউনিষ্ট পার্টির মতামত, বিচারধারা বিশ্বে প্রচার করছে।'বেআইনি কাজ কেউ করছে বলে তো নিউইয়র্ক টাইমসের লেখেনি! নেভিল রয় সিঙ্ঘমকে তুমি পছন্দ করো না, ধরে নিলাম সে চিনা কমিউনিস্ট পার্টিকে সমর্থন করে, বলা হচ্ছে, - অনেক সংস্হাকে সে আর্থিক সাহায্য দিয়েছে। তার মধ্যে নিউজক্লিক আছে। আর নিউজক্লিকের বিরুদ্ধে ইউএপিএ, আন-ল'ফুল প্রিভেনশন অ্যাক্ট। এই রকম কালো একটা ফাইল, ভারতের ইতিহাসে আমরা দেখিনি।
তোমরা যা খুশী করতে পারো!
নিউজক্লিকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, ইডি এসেছিল। সেটা ২০২১-এর ফেব্রুয়ারি। তারপর আয়কর বিভাগ এলো, দিল্লি পুলিশের ইকোনমিক অফেন্সিভ উইং, ইওডব্লিউ এলো। তারপর, প্রবীন পুরকায়স্থ ও অন্যান্যরা আদালতে গেল। আদলত বলল, - 'কিছু হবে না।' তারপর ইউএপিএ৷ এখন সামনের সপ্তাহে দেখার, আদালত কী বলে!
সুমিত: আমি টাইমস অফ ইন্ডিয়া কোট করছি। ২০২১-২২, ভারতের সঙ্গে চিনের ব্যবসা হয়েছে ১৩৪ বিলিয়ন ডলার। এ বছর ২৬ অগাস্ট, টাইমস অফ ইন্ডিয়া বলছে, চলতি বছর ১৩০ বিলিয়ন ডলার ব্যবসা করেছে ভারত ও চিন। 'ইন্ডিয়া চায়না ট্রেড অন ফাস্ট ট্র্যাক।'
পরঞ্জয় : শোনো, এফআইআরে ৪-৫টা চিনা-কোম্পানির নাম আছে। এদের মধ্যে জিওমি, তারা প্রধানমন্ত্রীর পিএম-কেয়ারে টাকা দিয়েছে। আরেকটা কোম্পানি ভিভো, তারা ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ক্রিকেট-টিমকে স্পনসর করেছে।
দেখো, চিনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য, চিনা কোম্পানির নিবেশ, - এগুলো নতুন কী? নতুন অভিযোগ, - চিনের টাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘুরে নিউজক্লিকে চলে এসছে। এবং, 'নিউজক্লিকের কিছু বামপন্হী কর্মী, যারা ভারতের একতা ও অখণ্ডতায় বিশ্বাস করে না, যারা ভারতের মানচিত্র নতুন করে আঁকতে চায়, যেখানে জম্মু-কাশ্মীর থাকবে না, অরুণাচল প্রদেশ থাকবে না!'- এই ধরণের অভিযোগ! অভিযোগ করছে, এই ৪-৫ জন ২০১৯-এর নির্বাচন করতে দেয়নি! এ তো হাস্যকর! এবার আদালত বলবে, - এটা কতটা সত্যি, কতটা মিথ্যে। বিচারপতি আছেন, ন্যায়ালয় আছে, - আশা করি আদালত বলবে, - এসব আইন অনুযায়ী হয়নি।
সুমিত : দেখা যাক। আমরা আশা করতে পারি, গণতন্ত্রের এই স্তম্ভটি অন্তত গোটা পরিস্হিতি দেখছে। আমরা আদালতে ভরসাই রাখতে পারি। শেষ প্রসঙ্গ, যা আপনার মত সিনিয়রের কাছে জানতে চাই, - যে, প্রশ্ন করা জার্নালিস্টের কর্তব্য। এবার প্রশ্ন করলে দেশদ্রোহী তকমা আসে। এপ্রিল ২০১৪, করণ থাপার প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদিকে গুজরাত দাঙ্গা বিষয়ক প্রশ্ন করলেন৷ এরপর করণ থাপার চ্যানেল থেকে সরে যান। এই শুরু। এরপর অজস্র নাম।
পরঞ্জয় : এরপর নরেন্দ্র মোদি, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করণের সঙ্গে ৮-১০ মিনিট কথা বলেন। 'নমস্কার, আমি একটু জল খাচ্ছি' - বলে, সেখানে সাক্ষাৎকার বন্ধ হয়।
সুমিত : এরপর করণ থাপারের ওপর কোপ এল।
পরঞ্জয় : সেটা নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে। তবে যেটা বলবো, - ভারতে অনেক প্রধানমন্ত্রী এলেন। নরেন্দ্র মোদি, কেবল এই একজনই প্রধানমন্ত্রী, যিনি ৯ বছরে একবারও প্রেস কনফারেন্স করলেন না। যেখানে যে কোনও সাংবাদিক ওনাকে প্রশ্ন করবেন। জবার দেবেন কিনা ওনার বিষয়। কিন্তু প্রশ্ন হবার কথা। ২০১৯-এ ভোটে জেতার পর বিজেপির অফিসে সাংবাদিকরা অনেক প্রশ্ন করলেন। উনি একটারও জবাব দেননি, অমিত শাহ জবাব দিলেন। উনি ৬-৭ জন বাছা সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। রজত শর্মা, অঞ্জনা ওম কাশ্যপ, নভিকা কুমার, সুধীর চৌধুরি, অর্ণব গোস্বামী, দীপক চৌরাশিয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।
সুমিত : রভিশ কুমার যাদের গোদি মিডিয়া বলছেন।
পরঞ্জয় : নরেন্দ্র মোদিজি আমাদের অত্যন্ত নাম করা অভিনেতাকে সাক্ষাৎকার দিলেন। অক্ষয় কুমার, যিনি ওই সময় কানাডার নাগরিক ছিলেন। অনেক প্রশ্ন ছিল, যেমন, - আপনি আম কীভাবে খান? কেটে না চুষে? এই রকম প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রধানমন্ত্রী রাজি। কিন্তু, রভিশ কুমার, প্রবীর পুরকায়স্থ বা করণ থাপার প্রশ্ন করলে উনি উত্তর দিতে রাজি নন।
সুমিত : এই যে আমেরিকার শেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দেখলাম, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক প্রশ্ন করছেন। ট্রাম্পের বক্তব্যের মধ্যেই সাংবাদিক ধরছেন 'মিথ্যা বয়ান'। মার্কিন মুলুকের এই সাংবাদিকতা দেখেছি।
পরঞ্জয় : এমনকি, নরেন্দ্র মোদি যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যান, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে তাঁকে নির্ধারিত একটিই প্রশ্ন করা হয়। উনি জবাব দেন। ৯ বছরে একটিই প্রশ্নের উত্তর? উনি কখন ঘুমোতে যান, কতক্ষণ কাজ করেন,- নির্দিষ্ট সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করছেন।
সুমিত : গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না। মহিমা নির্মাণ হচ্ছে। ভগবান বা ঈশ্বরের মত করে দেখানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। শেষ প্রসঙ্গটায় আবার ফিরে আসি। এই যে এত সাংবাদিক পেশা বা হাউস ছাড়লেন৷ কর্পোরেট চ্যানেলের মালিকানা, পলিসি বদলালো। মিডিয়া -প্র্যাকটিস বদলালো। পরের প্রজন্ম জানলো, - মিডিয়া বা সাংবাদিকতা এরকমই! এবার আপনার মত অনেকে চলে এলেন বিকল্প মিডিয়ায়। মূলধারা সরকারের প্রোপাগান্ডা করছে। তাদের প্রশ্ন নেই।
পরঞ্জয় : আজকে দেখো, মেইনস্ট্রিম সরকারি বিজ্ঞাপনের ওপর এখনও নির্ভর করে। তারা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে চায় না। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলছি, এই ৪৬ বছরের কর্মজীবনে প্রথম দেখছি, - ভারতের সাংবাদিকতার বড় অংশ প্রশ্ন করতে ভুলে গেছে। প্রশ্ন না করলে গণতন্ত্র দুর্বল হবেই। তাই হয়েছে। গণতন্ত্রের সঙ্গে গণমাধ্যমও দুর্বল হয়েছে। প্রশ্ন করলেই আজকে সরকারের নানা এজেন্সি, ইডি, আয়কর দফতর, দিল্লি পুলিশকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে ভোরে তোমার বাড়িতে পুলিশ পৌঁছে যাবে। জরুরি অবস্হার সময় আমরা বলেছিলাম - 'মিডনাইট নক'। রাত ১২ টায় দরজায় কড়া নাড়া। আর এটা হল, - 'আরলি মর্নিং এলার্ম।' পুলিশ কর্মীরাও জানালো, সকালে স্পেশাল ডিউটির জন্য তারাও সারারাত ঘুমোয়নি।
সুমিত : প্রশ্ন আক্রান্ত হবে। প্রশ্নকর্তাকে আন্ডারলাইন করা হবে। প্রশ্নই দেশদ্রোহী। নিউজক্লিক আমরা দেখলাম। এরপর কী? কোন পথে যাচ্ছে?
পরঞ্জয় : জানি না। এই প্রশ্নের জবাব আমার কাছে নেই। জ্যোতিষি নই। ভবিষ্যত জানি না। ৮ মাস পরে ভোট। ভোটের ফল ৮ মাস পর জানা যাবে।
সুমিত : আমাদের দেশের সাংবাদিকতার একটা ইতিহাস আছে। দেশের আধুনিক ইতিহাস অনেকটাই সাংবাদিকদের।
পরঞ্জয় : আমাদের দেশের মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, জওহরলাল, এমনকি অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আাদবাণী সাংবাদিক ছিলেন।
সুমিত: বলতে চাইছি, সাংবাদিকতার ইতিহাস আছে। বারবার আক্রান্ত সাংবাদিকতা। তাদেরও তো ইতিহাস তৈরির দায় আছে! সবটাই কর্পোরেট ফরম্যাটে চলছে, তা নয়। অন্তত প্রকৃত সাংবাদিকরা লড়বেন! এই বিশ্বাস থেকেই প্রসঙ্গ টানলাম।
পরঞ্জয় : এখনও বহু মানুষ আছেন। পুরো অন্ধকার দেখছি না। ভোর হবে। এই অন্ধকার চিরকাল থাকবে না।
সুমিত : আশা করি সামনের নির্বাচনে আপনার, আপনাদের অনেক লেখা ও ভিডিও পাবো। একজন সিনিয়ার সাংবাদিকের কাছে এই সমাজের অনেক চাওয়ার আছে।
পরঞ্জয় : নিশ্চিত।