ভারতের মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে বিধর্মীদের মূলত হিন্দুদের ধর্মীয়স্থান অপবিত্র বা ধবংসের জন্য প্রচার আমরা দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি। আজকে আমরা এই প্রবন্ধে সেই মুসলিম শাসকদের হিন্দু মন্দির সংস্কার ও প্রতিষ্ঠার কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরার সাথে সাথে প্রাচীন ভারতে হিন্দু শাসকদের বিধর্মীদের মূলত বৌদ্ধধর্মের ও ধর্মীয়স্থান ধবংসের কিছু দৃষ্টান্ত এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করবো ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গিকে সামনে রেখে। সেই উদাহরণ গুলো নিম্নরূপ।
একজন মুসলিম শাসক সুলতানি আমলের মহম্মদ-বিন-তুঘলকের নাম আমরা জানি যিনি পশ্চিম অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়ারাঙ্গলে স্বয়ম্ভু শিব মন্দির নির্মাণ করেন। ১৩২৬ সালে তিনি একজন মুসলিম অফিসার নিয়োগ করেছিলেন দক্ষিণ ভারতের বিদর জেলার কল্যাণ নামক স্থানে শিব মন্দির নির্মাণ করার জন্য। ১৩২৭ সালে মহম্মদ-বিন-তুঘলক যখন দৌলতাবাদে রাজধানী নিয়ে গেলেন তখন তিনি নিজেকে ভারতীয় শাসক প্রমাণ করার জন্য, রাজকীয় এক প্রথার মাধ্যমে দীর্ঘ ৪০ দিন ধরে বহন করে নিয়ে গিয়েছিলেন গঙ্গাজল। একই ভাবে বাংলার মুসলিম শাসকরাও তাদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গঙ্গাসাগর থেকে গঙ্গাজল নিয়ে যেতেন সেই শপথকে শুদ্ধ করার জন্য। ১১
আরও একজন মুসলিম শাসক মহম্মদ-বিন-কাশেমের নাম আমরা জানি যিনি ৭১২ খৃষ্টাব্দে ভারতের উত্তর-পশিম সীমান্ত প্রদেশ আক্রমণ করেছিলেন। সেই আক্রমণের সময় আলোরের বাসিন্দারা যখন প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন, তখন দুটি চুক্তি হয়েছিল। সেখানকার বাসিন্দাদের কোনোভাবে হত্যা করা যাবে না, এবং তাদের ধর্মীয় স্থানের ব্যাপারে কোন রকম কোন হস্তক্ষেপ করা যাবেনা। কাশেম সেই দুটি শর্তে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন , “ The temple of Hindustan are like the churches of Christianity. He directed the nobles, the principle inhabitants and Brahmins to built their temple”১২ হিন্দুদের দশেরা, দেওয়ালী, শিবরাত্রি ও রাখিবন্ধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন মহম্মদ-বিন-কাশেম এবং হিন্দুরা সেই অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে রাখি বেঁধে দিতেন।
ভারতের আর একজন মুসলিম রাজা টিপু সুলতানের নাম আমরা জানি, যিনি স্বাধীনতার প্রতীক হিসাবে ভারতে স্বাধীনতার বৃক্ষ রোপণ করেছিলেন। বৃটিশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য মারাঠা, নিজাম সহ প্রায় প্রত্যেকেই টিপুর পক্ষ ত্যাগ করে সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশের পক্ষ গ্রহণ করেছিলেন। টিপু সুলতান তখন কোনও উপায় না পেয়ে ফ্রান্সের সাথে যোগাযোগ করে নিজে তৎকালীন ফরাসী বিপ্লবের সাফল্য অর্জনকারী জ্যাকোবিনের দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি ফ্রান্সের সেই বিপ্লবী জ্যাকোবিন দলের সদস্যও হয়েছিলেন যাতে বৃটিশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের থেকে সাহায্য পাওয়া যায় সেই জন্য চুক্তিও করেছিলেন। কিন্তু সেই সাহায্য আসার আগেই সুচতুর বৃটিশ শাসক তাদের ভারতীয় বন্ধু মারাঠা ও নিজামকে নিয়ে টিপুর রাজ্য আক্রমণ করলেন। সেই আক্রমণ প্রতিহত করতে গিয়ে প্রায় একাকী বীরের মতন লড়াই করতে করতে যুদ্ধ ক্ষেত্রে তিনি নিজেই প্রাণ বিসর্জন দেন। সেই দেশপ্রেমিক স্বাধীনতা প্রিয় মুসলিম শাসক টিপুসুলতান তাঁর শাসন কালে ১৫৬ টি মন্দিরকে প্রতি বছর আর্থিক সাহায্য করতেন। তাঁর প্রধান মন্ত্রী পূর্ণা রাও এবং কমান্ডার-ইন চিফ কৃষ্ণা রাও দুজনেই ছিলেন হিন্দু ব্রাহ্মণ। এছাড়াও শৃঙ্গেরী মঠের জগত গুরু শঙ্করাচার্যের সাথে টিপুর খুব হৃদ্যতার সম্পর্ক ছিল। টিপু সুলতান প্রতিদিন সকালে প্রাতরাশের আগে শ্রীরঙ্গপত্তনম মন্দিরে উপস্থিত হতেন। ১৩
কিন্তু মুসলিম শাসকদের হিন্দুদের মন্দির নির্মাণ বা রক্ষনাবেক্ষনের সাথে সাথে মন্দির ধ্বংস বা অপবিত্র করার ঘটনাও আছে। সাম্রাজ্যবাদী শাসকরা যখন অন্যের রাজ্য দখল করেছেন, তখন সব শাসকই ধর্মীয় স্থান দখল বা অপবিত্র করেছেন ইতিহাসে এই উদাহরণ অনেক আছে এবং এই মুসলিম শাসকরাও যে তাঁদের শাসনকালে প্রায় ৮০ টির মতো হিন্দু মন্দির ধ্বংস করেছেন এবং ঔরঙ্গজেবের আমলে সেই সংখ্যা প্রায় ১২ টি তা ঐতিহাসিক সূত্র উল্লেখ করে আগেই দেখানো হয়েছে, এখানে সেই সমস্ত কিছুর কয়েকটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে। ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে কাশি বিশ্বনাথ মন্দির ভেঙ্গে ফেলার যে অভিযোগ করা হয় সেই অভিযোগ সম্পর্কে ঐতিহাসিক বি. এন. পান্ডে তিনি তাঁর ‘ Islam and Indian Culture’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে ঔরঙ্গজেব যখন তাঁর সেনা বাহিনী নিয়ে বাংলা অভিযানে যান সেই সময় বারাণসির কাছে স্থানীয় হিন্দু রাজা অনুরোধ করেন যে ঔরঙ্গজেব যদি তাঁর সেনা বাহিনী নিয়ে একদিন অপেক্ষা করেন তাহলে তাঁদের রানীরা গঙ্গায় স্নান করে কাশি বিশ্বনাথ শিবমন্দিরে পুজো দিতে পারবেন। সেই অনুরোধ শুনেই তিনি তাঁর সেনা বাহিনীকে একদিন অপেক্ষা করার নির্দেশ দেন। কিন্তু স্নান করে পুজো দিয়ে সবাই ফিরলেও কচ্ছের রানীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এই খবর যখন ঔরঙ্গজেবের কানে যায় তিনি তখন তাঁর সহযোগীদের নির্দেশ দেন রানিকে খুঁজে আনার জন্য। অনেক অনুসন্ধানের পর মন্দিরের গনেশের মুর্তির দেওয়ালের পিছনেই এক সিঁড়ি নীচে নেমে গিয়ে বিশ্বনাথ শিব মুর্তির নীচে অত্যাচারিত ক্রন্দনরত অবস্থায় রানীকে পাওয়া যায়। সেই খবর শুনেই ঔরঙ্গজেব ক্রোধে হিন্দু মন্দিরের সেবকদের গেপ্তার ও স্থানীয় রাজার পরামর্শে সেই মন্দিরের অপবিত্র অংশকে ভেঙে ফেলার আদেশ দিতে বাধ্য হন। ১৬৭০ সালে জাঠ বিদ্রোহের সময় বিদ্রোহীরা মসজিদ ধ্বংস করেছিলেন। তার প্রতিবাদে ঔরঙ্গজেব মথুরার কেশবদেব মন্দিরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। ১৪ ১৬৮০ সালে ঔরঙ্গজব রাজস্থান অভিযানের সময় বহু মন্দির ধ্বংস করেন। একই ভাবে গুজরাট অভিযানের সময় ১৬৫৯ সালে সোমনাথ মন্দির এবং ১৬৭০ সালে শিবাজীকে সাহায্য করার জন্য ও জাঠ বিদ্রোহের কারণে মথুরার কেশবদেব মন্দির ধ্বংস করেন।১৫
এই লেখকের আগের লেখা - https://sahomon.com/welcome/singlepost/did-the-muslim-rulers-really-destroy-the-hindu-temples-part-1
একই ভাবে হিন্দু শাসকরাও বহু ধর্মীয় স্থান ধ্বংস বা অপবিত্র করেছেন। বিখ্যাত ঐতিহাসিক D.N. Jha তাঁর ‘Against the grain – Notes on the Identity, Intolerance and History’ গ্রন্থে দেখিয়েছেন প্রাচীন ভারতের হিন্দু শাসকরা বিধর্মী বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের ধর্মীয় স্থানকে অপবিত্র গেছেন। পতঞ্জলি তিনি তাঁর মহাভাষ্য গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, “Shraman and Brahmanas are eternal enemies like snake and mongoose’’.১৬ বৌদ্ধ গ্রন্থ দিব্যদানে বর্ণনা করা হয়েছে পুষ্যমিত্রশৃঙ্গ নামে এক বড় বৌদ্ধ নির্যাতনকারী ঘোষণা করেছিলেন একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুকে হত্যা করতে পারলে ১০০ দিনার পুরষ্কার দেওয়া হবে। চিনা পর্যটক হিউয়েন সাং যিনি শশাঙ্কের আমলে ভারতে ছিলেন তিনি তাঁর গ্রন্থ ‘সি ইউ কি’তে বর্ণনা করেছেন যে বৌদ্ধগয়াতে যে বোধীগাছটি ছিল শশাঙ্ক তা কেটে ফেলেছিলেন এবং বুদ্ধের মুর্তিটিকেও সেখান থেকে সরিয়ে ফেলেছিলেন। আর এক শাসক মিহির কুলের নাম আমরা সবাই জানি, যিনি শিবের উপাসক হিসাবে পরিচিত। তিনি তাঁর শাসন কালে কয়েক হাজার বৌদ্ধ সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনীকে হত্যা করেছিলেন এবং প্রায় ১৬০০ বৌদ্ধ স্তুপকে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছিলেন। কাশ্মীরের রাজা ক্ষেমাগুপ্ত যিনি শ্রীনগরের জয়েন্দ্র বৌদ্ধ বিহার ভেঙ্গে দিয়েছিলেন এবং সেই জিনিস দিয়েই কাছেই একটা মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। মগধের কলচুরী রাজা কর্ণ ( ১১ শতক) তিনি ও বহু বৌদ্ধ মন্দির ও বিহার ধ্বংস করেছিলেন। পুষ্যমিত্রশুঙ্গ পাটলিপুত্রের অশোকস্তম্ভ ধ্বংস করে দিয়েছিলেন এবং এই শুঙ্গদের রাজত্ব কালে বিখ্যাত সাঁচীর বৌদ্ধ স্তুপ ধ্বংস করা হয়েছিল। মধ্যপ্রদেশের বিদিশার কাছে খাজুরাহো যা বর্তমানে বিখ্যাত মন্দির শহরে পরিণত হয়েছে। খৃষ্টিয় দশম শতকে চান্দেলদের রাজত্বের সময় থেকেই এই জায়গা বৌদ্ধ তীর্থস্থানের জন্য বিখ্যাত ছিল। একই ভাবে উত্তর প্রদেশের মথুরা বর্তমানে মন্দির শহরের জন্য বিখ্যাত। এর আগে এখানের ভূতেশ্বর ও গোকরনেশ্বর প্রকৃত পক্ষে ছিল বৌদ্ধ কেন্দ্র। সারনাথ বিখ্যাত বৌদ্ধকেন্দ্র যেখানে গৌতম বুদ্ধ তাঁর শিষ্যদের প্রথম ধর্মীয় দীক্ষা দিয়েছিলেন সেই জায়গা ও ব্রাহ্মণদের দ্বারা ধ্বংস হয়েছিল। উত্তর প্রদেশের সুলতানপুর জেলায় প্রায় ৪৯ টি বৌদ্ধ কেন্দ্র ধ্বংস করেছে ব্রাহ্মণদের রাজত্ব কালে। আমাদের রাজ্যে বাঁকুড়া জেলার সিদ্ধেশ্বর মন্দির তৈরী হয়েছিল একটি বৌদ্ধ স্তুপ ভেঙে। একই ভাবে বর্তমানে উড়িষ্যার পুরীর জগন্নাথের মন্দির ও তৈরী হয়েছিল এক বৌদ্ধ কেন্দ্রের উপর। পৃথিবী বিখ্যাত ইলোরার গুহাচিত্র রাষ্ট্রকুটদের সময়ে বৌদ্ধদের কেন্দ্রের উপরেই নির্মাণ হয়েছিল। এই রকম ভাবে যদি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা যায় অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কেন্দ্রকে অপবিত্র বা ধ্বংস করা সেই সময়কার শাসক শ্রেণির কাছে এটাই ছিল এক সাধারণ ব্যাপার। মুসলিম শাসকরা হিন্দুদের বা হিন্দুরা বৌদ্ধদের ও জৈনদের ধর্মীয় স্থানের উপর আক্রমণ করেছিল ইতিহাসে তার বহু প্রমান আছে। কিন্তু মুসলিম শাসকরা সাম্রাজ্য বিস্তারের প্রয়োজনে যেমন কিছু হিন্দুদের ধর্মীয়স্থান অপবিত্র বা ধ্বংস করেছিল সেই সঙ্গে বহু মন্দির নির্মান, সংস্কার করেছিল তার বহু দৃষ্টান্ত আছে যা ইতিহাসের এক উল্লেখযোগ্য দিক। মুসলিমদের হিন্দুদের মন্দির সংস্কার ও তৈরীর বহু প্রত্নতাত্ত্বিক ও সাহিত্যিক উপাদানের প্রমাণ থাকলেও হিন্দুদের কিন্তু এই রকম বৌদ্ধ ধর্মীয়স্থান সংস্কার বা তৈরীর উধাহরণ আমরা সেই ভাবে দেখতে পাইনা। অথচ ভারতের হিন্দু ধর্মের যারা মাহাত্ম প্রচার করেছেন সেই বিবেকানন্দ বলেছেন, ‘ India alone to be ..... the land of toleratio.” বালগঙ্গাধর তিলক তিনিও একই ভাবে বিবেকানন্দের উক্তিকেই সমর্থন করেছেন, পরবর্তীকালে তাদের উত্তরসূরি এম এস গোলওয়ালকার যার আদর্শকে পাথেয় করে বর্তমান হিন্দু মৌলবাদীরা মাথা চাড়া দিচ্ছে তার বক্তব্য হল ‘ Muslim, Christan and Communist are internal threats to the country”.১৭ সেই জন্যই আজ আসল সত্যকে চাপা দিয়ে এক মিথ্যার প্রচার শুরু হয়েছে। মিথ্যা প্রচার শাসকের এক গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। আবার ধর্মকে কেন্দ্র করে যদি সেই প্রচার হয়, তাহলে তা আরো অনেক বেশি গুরুত্ব পায়। কারণ ধর্মের সাথে মানুষের এক বিশেষ আবেগ জড়িয়ে থাকে। বর্তমানে আমাদের সমাজে ধর্মীয় ব্যাপারে এক অসহিষ্ণুতার পরিবেশ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তা দেশের প্রকৃত ইতিহাসকে চাপা দিয়ে বা মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমেই হচ্ছে। তাই ধর্মীয় কোন অন্ধ বিশ্বাস নয় যুক্তিভিত্তিক চিন্তা ও মানসিকতাই পারে আমাদের সামনে প্রকৃত সত্যকে উদ্ঘাটন করতে।
তথ্যসূত্রঃ-
১। Richard M Eaton- Temple desecration and muslim state in mediaval India
২। ঐ
৩। Bharat Dogra’s article – senior journalist- the new lea- 15/01/2019
৪। ঐ
৫। ঐ
৬। মন্দির মসজিদ বিসম্বাদ- অশোক মুখোপাধ্যায়।
৭ । Dogra’s Article
৮। The Milli Gazette- 14th aug
৯। ঐ
১০। Aurangazeb the man and myth by Audrey Truschke.
১১। richard M eaton – p- 39-42
১২। Islam and Indian culture by B. N. Pandey p-12
১৩। ঐ
১৪। Demolishing myth on Mosque and temple – Reading on history and Temple desecration in mediaval India – Sunil Kumar-(p-61)
১৫। Andrey Truschke-p- 87-88
১৬. D.N.jha – p-২৫-৩০
১৭. Demolishing myth on Mosque and temple – Reading on history and Temple desecration in mediaval India – Sunil Kumar(পৃ-২৩-২৮)