ফাকুঃ দেব না? আমাদের ছেলেরা বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে প্রাক-চূড়ান্ত ম্যাচটা জিতে এল, আমার তাতে কিছু বলার দায় নেই?
টাকুঃ তা ঠিক, তা ঠিক। কিন্তু তাই বলে তুই যে নিজের বচন বদলে ফেললি সে খেয়াল আছে?
ফাকুঃ কোথায়? খবরের কাগজে? টিভিতে? কী বেরিয়েছে? রোজ এত এত বচন ঝাড়ছি, সব কি খেয়াল থাকে? তুই একবার মনে করিয়ে দে।
টাকুঃ দেসদ্রোহীরা ইন্ডিয়া জোট বানানোর পর থেকে তুই কি আর ইন্ডিয়া বলছিস কোথাও?
ফাকুঃ না, কেন বলব? আমি তো চাইছি আভি দেসের তামাম লোগ ইন্ডিয়া নাম ভুলে যাক। শুধু ভারত ভারত করুক। ওদের জোটের নাম বেকার বনে যাবে।
টাকুঃ মুশকিল হচ্ছে, তুই এত বাজে বকিস যে কিছু খেয়াল রাখতে পারিস না। আমি দেখ রোজ রোজ এত বাত বাতেলা ঝাড়ি না। তাই আমার এই সব গোলমাল হয় না।
ফাকুঃ বকওয়াস মত কর। আসল বাত কী আছে বল।
টাকুঃ তুই লিখে দিলি, টিম ইন্ডিয়াকে তুই অভিনন্দিত করছিস। তুই আশা করছিস – টি---
ফাকুঃ আরে ইয়ার, উস মেঁ গলদ ক্যায়া হ্যায়? আমার দেসের টিমকে আমি অভিনন্দন জানাব না? ওরা তো ম্যাচটা জিতেছে? আজকে ওরা জিতেছে, সামনের চুনাবি লড়াইতে আমরা জিতব। এহি তো বার্তা!
টাকুঃ হ্যাঁ, সমঝলাম। তাই বলে টিম ইন্ডিয়া বলবি? এখন?
ফাকুঃ ইন্ডিয়ান টিমকে জরা সা উলটে নিয়ে টিম ইন্ডিয়া বললে দোষ হয়ে গেল? আমি তো টিম পাকি বলিনি।
টাকুঃ তার মানে তুই ভুলে গেছিস যে আমাদের বিরোধীরা ইন্ডিয়া নামের জোট করার পর থেকে আমরা এখন আর ইন্ডিয়াকে ইন্ডিয়া বলছি না। শুধু ভারত বলছি। এদিকে তুই লিখে দিলি: Congratulations to Team India! India puts up a superlative performance and enters the finals in a remarkable style. এ তুই যা করলি, কালই ওরা সকলে মিলে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে।
Like our Facebook Page
ফাকুঃ এ হে হে হে! ঠিক বলেছিস তো। আমিই তো এই ক্যাম্পেইন শুরু করেছিলাম। বহোত বঢ়ি মিস্টেক হয়ে গেল তো! অব ---
টাকুঃ যাক, তবু ভালো যে তুই এতক্ষণে সমঝেছিস। আসলে সারা দিন এত ফালতু বকম বকম করিস যে কখন কী বলতে হবে, আর কোথায় জুবান বন্ধ রাখতে হবে সব ভুলে যাস।
ফাকুঃ হাঁ হাঁ, অব আমি বুঝে গেছি। সত্যিই গলত হয়ে গেছে। আমি আভি একটা নয়ি টুইট করে দিচ্ছি। টিম ভারতকে বাধাই দিয়ে।
টাকুঃ উয়হ ভি বিরোধীদের হাতে একটা তামাসা করনেওয়ালি বাত বনে যাবে। তোর নতুন টুইট আর পুরানি টুইটের স্ক্রিন শট পাশাপাশি লাগিয়ে বলবে, এই দেখ, আমাদের পিএম-এর ভারত কাণ্ড্! কখন কী বলে ঠিক নেই। তু অওর কুছ মত কর মিত্র।
ফাকুঃ তাহলে ড্যামেজ কন্ট্রোল ক্যায়সে করব? কিরকেট তো আজ কালের মধ্যেই খতম হয়ে যাবে। লোগ ভি অন্য মুদ্দে মেঁ ভিড়ে যাবে। লেকিন বিরোধীরা কি আমাকে ভুলে যাবে?
টাকুঃ তু এক দম পহলে তোর সচিবকে পাল্টে দে। যে তোর এই টুইটের বয়ান বানিয়ে দিয়েছিল। নাগমোহনজির থেকে একটা ভালো কাজের লোক মেঙ্গে নে। যে এখন আমাদের দরকারটা বুঝে টুইট কে বয়ান বানিয়ে দেবে।
ফাকুঃ লেকিন এই লোকটাকেও তো নাগমোহনজিই সিফারিশ করেছিল। বলেছিল, এ বহোত কাম করনেওয়ালে লোগ আছে। এ ভারতকে কভি ইন্ডিয়া নহি বলে।
টাকুঃ তবে এবার কী করে লিখে দিল? জিগ্যেস করে দেখ।
ফাকুঃ হাঁ, উয়হ বাত তো জরুর পুছতে হবে।
টাকুঃ মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। যদি দেখা যায়, হোঁস মেঁ কিয়া হ্যায়, ছাঁটাই করে দিতে হবে।
ফাকুঃ উস কো ছাঁট নে মেঁ নাগমোহনজি নাখোশ হয়ে যাবেন। বড় পেয়ারের লোগ এ ---
টাকুঃ বুঝেছি। কিন্তু কিছু একটা করতে হবে। সাবধান ভি হতে হবে।
ফাকুঃ দর আসল, আমার তো উসব আসে না। সচিব কে উপর নির্ভর করনা হি পড়তা হ্যায়। টুইট পর ডালনে সে পহলে যে একবার দেখে নেব সেটাও খুসি কে আমেজ মেঁ করিনি। ওখানেই গলত হয়ে গেছে।
টাকুঃ তা তো হয়েছেই। যদি আবার এরম করে ফেলিস তাহলে কিন্তু ভারত ভারত করে যা কিছু ফায়দা তোলা হচ্ছিল, সব ধুয়ে মুছে যাবে। বিরোধীওয়ালাদের যা এখন মুড, একটা মওকা পেলেই হইচই লাগিয়ে দেবে। পুরো গেম মাঠে মারা যাবে। সেই সব ছবি চার দিকে ভাইরাল হয়ে গেলে তোর এই ৫৬ ইঞ্চিকে ৫৬ সেন্টিমিটার সাইজ বানিয়ে দেবে।
ফাকুঃ একটা কাজ করলে হয় না?
টাকুঃ কী কাজ?
ফাকুঃ ইন্ডিয়া বনাম ভারত মুদ্দাটা ছেড়ে দিলে হয় না?
টাকুঃ পাগল নাকি? তুই এই কদিন যা করেছিস, সেটা করার উপায় আর নেই।
ফাকুঃ আমি একাই সব করেছি? তুই কি সাধন ভজন করছিলি?
টাকুঃ আরে ইয়ার, এখন গুস্সা করছিস কেন? তুই ওদের জোটের নাম দেখে একাই এই সব পাগলামি শুরু করে দিলি। আমাদের সঙ্গে এক বার কথাও বললি না। আমাকে জিগ্যেস করলে আমি মানা কর দিয়া হোতা। চার দিকে এত জায়গায় ইন্ডিয়া লেখা আছে, সব কিছু মোছা যায়?
ফাকুঃ আবার কোথায় ইন্ডিয়া আছে?
টাকুঃ দেখিসনি? সারের বস্তাগুলো যেগুলো চিন থেকে আমদানি করা হয়েছে, তাতে কী লেখা?
ফাকুঃ কী লেখা আছে? চায়নার নাম?
টাকুঃ ও তো আছেই। আবার ইন্ডিয়া ভি আছে।
ফাকুঃ আর কোথায় ইন্ডিয়া লেখা আছে?
টাকুঃ সি বি আই-কে নিয়ে কী করবি? ওতেও ইন্ডিয়া।
ফাকুঃ ব্যস। ফির অওর?
টাকুঃ আর বি আই-কে নিয়ে কী করবি? ওর গায়েও ইন্ডিয়া।
ফাকুঃ আর গুরুত্বপূর্ণ কোথায় ইন্ডিয়া রয়েছে?
টাকুঃ তুই যে প্রথম বার কুর্সি পে ব্যায়ঠতেই প্ল্যানিং কমিশন ভেঙে দিয়ে নিটি আয়োগ বানিয়েছিলি, সেটা কী? ন্যাশন্যাল ইন্সটিটিউশন ফর ট্রান্সফর্মিং ইন্ডিয়া। মনে আছে সে কথা?
ফাকুঃ হাঁ, আভি মনে পড়ছে। কেস বহোত খারাব হয়ে গেছে।
টাকুঃ তুই যাতেই হাত দিস, সেটাতেই গোল পাকাস। ফালতু ফালতু আফ্রিকা থেকে অতগুলো চিতা আনাতে গেলি, বিজ্ঞানের দপ্তর বারণ করল, শুনলি না। এখন একে একে সব কটা মরে যাচ্ছে আর প্রমাণ করে দিচ্ছে উ বিজ্ঞানওয়ালারা সহি বাতই বলেছিল। ময়ূরকে বাদাম খাওয়ানো ছাড়া তুই আর কিচ্ছু পারিস না।
ফাকুঃ তু ভি মুঝে গাল দে রহে হো?
টাকুঃ তাই না হয় দিই। আর কেউ না চিনুক, আমি তোকে পুরি তরহ সে হাড্ডি হাড্ডি মেঁ চিনি। রাজনীতির বচপন থেকে।
ফাকুঃ হায় হায়! তুই আমার জান কি জিগরি বন্ধু হয়ে এই সব বলছিস? তবে রাহুল পাপ্পু কা ক্যায়া দোষ?
টাকুঃ বলব না? এখন আমাদের যেভাবে হোক গা বাঁচাতে হবে, আর তুই সেখানে দামি দামি খাবার খাচ্ছিস আর উল্টাপাল্টি বোলচাল দিয়ে যাচ্ছিস।
ফাকুঃ হ্যাঁ, আমাদের রত্নপুরম প্ল্যানটা কেচে যাওয়ার পর থেকেই আমি দেখছি তুই একটু খচে আছিস। মেজোরামে আমি সভা ক্যান্সেল করলাম বলে তুইও গেলি না। এই ভাবে চললে আমরা এক সঙ্গে দেস প্রেম দেখাব কী করে?
টাকুঃ যা বলেছিস। আমাদের এখন থেকে দেস প্রেম একটু কমাতে হবে।
ফাকুঃ আমাকেও আরও ভেবে চিনতে কাজ করতে হবে। ---
টাকুঃ কাজ তোর কিছু নেই। বিশ্ব ঘুরে বেড়ানো ছাড়া। কিন্তু বাতচিত ভেবে চিনতে করিস। তাহলেই হবে। যাক, ছেড়ে দে ওসব। তুই এমাসের মনের ক্যাচালে কী বলবি কিছু ভেবেছিস?
ফাকুঃ ভাবিনি এখনও। তবে তুই বলায় ভাবছি, তুলসী দাসজিকে নিয়ে কিছু বলব। একটু কেঁদে কেঁদে। সামনে মন্দির খোলার মসলাটা আসছে কিনা।
টাকুঃ বেশ বেশ, দারুণ হবে। স্ক্রিপ্ট কাকে দিয়ে লেখাবি?
ফাকুঃ সব কুছ তুঝে কিউঁ কহুঁ ম্যায়? প্রতীক্ষা কর!
0 Comments
Post Comment