পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

লোকসভা ভোট ঘিরে সঙ্ঘ- বিজেপির কৌশল

  • 15 April, 2024
  • 0 Comment(s)
  • 915 view(s)
  • লিখেছেন : গৌতম রায়
কেন নির্বাচনী জনসভায় মানুষের খাওয়া, পরা নিয়ে কথা বলছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী? উত্তর হল বিভাজনের রাজনীতিকে তীব্র করে তুলে, সহনাগরিক মুসলমান সমাজের মধ্যে একটা ভয়ের ভূগোলকে প্রলম্বিত করা। এভাবেই রাজনৈতিক হিন্দুরাষ্ট্রের দিকে হিন্দুত্ববাদী শিবিরের যে ভারতকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র, সেই ষড়যন্ত্রকেই সমাজের আরো গভীরে ছড়িয়ে দেওয়া টাই হিন্দুত্ববাদীদের একমাত্র টার্গেট।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে (২০২৪) রাজনৈতিক অভিমুখ থেকে ঘুরিয়ে, সাম্প্রদায়িক বিভাজনমুখী অভিমুখে স্থাপন করাটাই হিন্দুত্ববাদীদের লক্ষ্য।এভাবেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়  আরএসএস এবং তাদের রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপি। এই লক্ষ্যে তারা গোবলয়ে বিভাজনের রাজনীতিকে এমনভাবে প্রতিস্থাপিত করছে, যার জের গোটা ভারতে খুব ভালোভাবে ছড়িয়ে যেতে পারে। বিজেপি বুঝে গেছে বিন্ধ্য পর্বত পেরিয়ে নিজেদের ভোটের রাজনীতির সাফল্য তারা খুব একটা ঝুলিতে ভরতে পারবেনা। সে কারণেই তারা তাদের অতীতের রাজনৈতিক কৌশলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিচরণ ক্ষেত্র উত্তর ভারতকে সব রকম ভাবে বিভাজনের রাজনীতির একটা নতুন ধাঁচের গবেষণাগার হিসেবে তুলে ধরবার লক্ষ্যে, সমস্ত ধরনের কর্মসূচিকে পরিচালিত করছে।
অজয় সিং বিশওয়াত ওরফে স্বঘোষিত 'যোগী' আদিত্যনাথকে হিন্দুত্ববাদী শিবিরের একটা অংশের মধ্যে থেকে মোদির বিকল্প হিসেবে এখন থেকে তুলে ধরার একটা চেষ্টা শুরু হয়েছে। আদিত্যনাথের নিজের রাজ্য উত্তরপ্রদেশ সেখানে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তুপের উপরে, অসমাপ্ত রাম মন্দিরের উদ্বোধন ঘটানো হয়েছে। ঘটনাটির যে পরিমাণ রাজনৈতিক ফায়দা তোলবার চেষ্টা গোটা হিন্দুত্ববাদী শিবির করেছিল, তা খুব একটা সফল হয়নি। আসলে হিন্দুত্ববাদী শিবির এটা খুব ভালোভাবেই জানতো যে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের হুজুগ, আর সেই ধ্বংসস্তূপের উপর তথাকথিত রাম মন্দির তৈরি করা--এই দুটি তাদের যতখানি নির্বাচনী সাফল্য দিতে পারবে, ঘটনাগুলো ঘটে যাওয়ার পর, অর্থাৎ ইস্যুগুলির হিন্দুত্ববাদী স্টাইলে সমাধান হয়ে যাওয়ার পর সেটা আর তেমন ভোটে সাফল্য দেবে না। বাস্তবে সেটাই হয়েছে। মসজিদ ভাঙবো বা ভাঙার রাজনীতি দিয়ে ভোট রাজনীতিতে সাফল্য বিজেপি ধরে রাখতে পেরেছিল। সেটাকে তারা আরো প্রসারিত করতে পেরেছিল ধ্বংসস্তূপের উপর মন্দির নির্মাণের কর্মসূচিকে সামনে রেখে। কিন্তু মন্দির অসমাপ্ত ভাবে হলেও উদ্বোধন করে দেওয়ার পর, এখন আর অযোধ্যা ইস্যুতে নতুন করে সামাজিক বিভাজনের রাজনীতির তৈরি করে, ভোট বৈতরণী পার হওয়ার মতো পুঁজি খুঁজে পাচ্ছেনা গোটা সংখ্যাগুরু সাম্প্রদায়িক শিবির। এখন তাই বিভাজনের রাজনীতির স্বার্থে তাদের চাই নতুন ইস্যু। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান করে মসজিদের জমি দখল করে, অসমাপ্ত মন্দির উদ্বোধনের ভেতর দিয়েও সংখ্যাগুরু সাম্প্রদায়িকতাকে রাষ্ট্রশক্তির মাধ্যমে আরএসএস -বিজেপি সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদে পরিণত করেছে। তা সত্ত্বেও সেই সংখ্যাগুরুর  আধিপত্যবাদের ভেতর দিয়ে ,হিংসার রাজনীতির বিকাশ ঘটিয়ে, ভোট রাজনীতিতে সব রকমের সাফল্য আসবে কিনা সেটা ঘিরে তারা অত্যন্ত চিন্তিত। 
তাই উত্তরপ্রদেশকে নতুন করে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হিন্দুত্বের গবেষণাগার হিসেবে মেলে ধরতে হিন্দুত্ববাদী শিবির এখন টার্গেট করেছে বেনারসের জ্ঞানবাপি মসজিদ। টার্গেট করেছে গোটা উত্তরপ্রদেশ জুড়ে মাদ্রাসা শিক্ষাকে নিষিদ্ধ করবার বিষয়টিকে। জ্ঞানবাপি মসজিদ, যার ইতিহাস ডঃ পট্টাভি সীতারামাইয়া তাঁর 'ফেদার্স এন্ড স্টোন' বইতে পরিষ্কারভাবে লিখে গেছেন।
 
স্বাধীন ভারতে, কংগ্রেসের ভিতরকার দক্ষিণপন্থী অংশ নেতৃত্ব দিয়েছিল বল্লভভাই প্যাটেল, গোবিন্দবল্লভ পন্থ, বসন্ত হরি শ্রীআনে, পুরুষোত্তম দাস ট্যান্ডন প্রমুখেরা। তাঁদের ইন্ধনেই  দেশ স্বাধীন হওয়ার অব্যবহিত পরে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের তালা ভেঙে, তার মধ্যে একটি ধাতু মূর্তি রেখে আসতে পেরেছিল আরএসএস সহ সমস্ত হিন্দুত্ববাদী শিবিরের প্রতিনিধিরা। তারাই জ্ঞানবাপি মসজিদের মধ্যে পুজোর্চনা ইত্যাদি করতে শুরু করে। 
বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং এর মত মানুষকে, পরবর্তীকালে ধর্মনিরপেক্ষতার অন্যতম আইকন হিসেবে মেলে ধরবার একটা অদ্ভুত প্রবণতা অনেকের মধ্যে আছে। তিনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ও মসজিদের মধ্যে হিন্দুদের পুজোর এই অদ্ভুত ব্যাপারটি বন্ধে কোনরকম প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেন নি। বহু বিতর্কিত রাজনৈতিক চরিত্র মুলায়ম সিং যাদব উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন একটা সময় জ্ঞানবাপি মসজিদের ভেতরে হিন্দুদের পুজো বন্ধ করে দেন ।
মুলায়ম অবশ্য তাঁর  ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র কে শেষ দিন পর্যন্ত বজায় রাখতে পারেননি ।তাঁর পুত্র অখিলেশ সিং যাদব, ইউ পি এ সরকারের  দ্বিতীয় দফার জামানার  সময়কালে, যখন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন দিল্লি সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশে যে ভয়াবহ দাঙ্গা হয়েছিল, সেই দাঙ্গা থামাতে আদৌ কোন ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেননি এমনকি হিন্দুত্ববাদীদের হাতে পরিকল্পিত ভাবি নিহত শেখ আখলাকের পরিবারের ভোটার কার্ডের নাম থাকা ঘিরেও আদৌ প্রশাসনিকভাবে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেননি। মুলায়ান সিং যাদবের সঙ্গে পরবর্তী সময়ে মোহন ভাগবতের সম্পর্ক গড়ে ওঠা নিয়ে বেশ কিছু রাজনৈতিক বিতর্ক আছে।
 
আদিত্যনাথ প্রশাসন কোর্টের রায় কে সম্মান করে তড়িঘড়ি প্রশাসনিক তাৎপরতা দেখিয়ে জ্ঞানব্যাপী মসজিদের ভেতরে পূজার্চনা আয়োজন করে সাম্প্রদায়িক পারদকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। দুর্ভাগ্যের, বিষয় সেই চেষ্টাকে থামানোর জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্ট আদৌ কোন ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেনি। এখানে স্বস্তির বিষয় দেশের সুপ্রিম কোর্ট জ্ঞানবাপি মসজিদের তেহখানার  মধ্যে পুজোকে সীমাবদ্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেছেন। যদিও এই তেহখানার মধ্যে কোনরকম হিন্দু ধর্মীয় আচার আচরণ যাতে না হয়, মসজিদ ঘিরে যাতে হিন্দু-মুসলমানের নতুন করে কোনো সংঘাতের পরিবেশ তৈরি না হয় , সেদিকে নজর ,এক কালে, অর্থাৎ ; বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বেশ কিছুটা পরবর্তী সময়ে মূল্যায়ন সিং নিয়েছিলেন। 
                     
সাম্প্রতিক কালে  এই যে উত্তরপ্রদেশের নিম্ন আদালত এবং এলাহাবাদ হাইকোর্ট, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে, জ্ঞানবাপি মসজিদের  ভিতরে ভোজশালার ( নামটি হিন্দুত্ববাদীদের দেওয়া)  ভিতরে হিন্দুদের পুজা করবার বিষয়টিতে সম্মতি জানিয়ে নতুন করে বিতর্ক এবং সংঘর্ষ -সংঘাতে জায়গা তৈরি করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট ভোজশালাতে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
জ্ঞানবাপি ঘিরে  আরএসএস, বিজেপির প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে নতুন করে দাঙ্গা বাঁধাবার যে ষড়যন্ত্র চলছিল এই মুহূর্তে তাকে আটকে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। হিন্দুত্ববাদী শিবির ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিল যে ,অযোধ্যার নাকি ছিল তাদের কাছে কেবলমাত্র ট্রেলার, এখনো তাদের কাশী- মথুরা বাকি আছে। 
                 
জ্ঞানবাপি মসজিদ ঘিরে ষড়যন্ত্র গোটা হিন্দুত্ববাদী শিবির করে চলেছে লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে। সেই ষড়যন্ত্র নিয়ে নতুন করে নাড়াচাড়ার ভেতর দিয়ে হিন্দু- মুসলমানের সামাজিক বিভাজনটিকে আরো ভয়ঙ্কর একটা জায়গায় এনে দাঁড় করিয়ে নিজেদের ভোট বাক্স ভর্তি করবার ষড়যন্ত্র গোটা হিন্দুত্ববাদী করেছিল । আপাতত বলতে পারা যায় যে, সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক অবস্থানের ফলে, হিন্দুত্ববাদী শিবিরের সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। তবে আদালতের নির্দেশে সাময়িক পিছিয়ে গেলেও এই বিষয়টি থেকে যে আরএসএস, বিজেপি বা তাদের সাঙ্গোপাঙ্গরা সরে যাবে, এমনটা ভাববার আদৌ কোনো কারণ নেই।
                  
কোনোদিনই  হিন্দুত্ববাদী শিবিরের কোনো রাজনৈতিক পুঁজি নেই। প্রশাসক হিসেবে তাদের সাফল্যের খাতা একেবারে শূন্য। তাই ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার ঘটিয়ে, মানুষের মধ্যে ধর্মের নামে, জাতপাতের নামে বিভাজন তৈরি করে, আবার কেন্দ্রে শাসন ক্ষমতায় ফিরে আসাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। বিশেষ করে, আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৫ সাল যেহেতু আরএসএসের শতবর্ষ, তাই এবার ক্ষমতায় ফিরে আসাটা হিন্দুত্ববাদী শিবিরের কাছে অত্যন্ত জরুরি। 
 
সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই হিন্দুত্ববাদীরা চাইবে মেরুকরণের রাজনীতিকে একমাত্র অবলম্বন করে ভোটে জিততে। কারণ, বেকারত্ব -স্বাস্থ্য- শিক্ষা- শিল্প ---সমস্ত ক্ষেত্রেই প্রশাসক হিসেবে বিজেপির কলসি একদম শূন্য। ইলেকট্ররাল বন্ড ঘিরে ভয়াবহ দুর্নীতির বিষয়টা সামনে আসবার পর বিজেপি সমর্থকদের ভেতরেও ওই দলটি ঘিরে নানা ধরনের সংশয় -সন্দেহ নতুন করে তৈরি হতে শুরু করেছে। ফলে মন্দির মসজিদ, হিন্দু-মুসলমান --এ ছাড়া হিন্দুত্ববাদীদের কাছে আর কোনো ইস্যু নেই। মাদ্রাসা শিক্ষা তুলে দেওয়ার পক্ষে তোড়জোড় শুরু করেছিল উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার যে উত্তরপ্রদেশ সরকারের এই রাজনৈতিক পদক্ষেপে ধুয়ো দিচ্ছিল না ,একথা ভাববার কোন কারণ নেই ।আদালতের একটা অংশ কিভাবে হিন্দুত্ববাদীদের রাজনৈতিক কর্মসূচিকে সফল করে তোলবার জন্য সচেষ্ট ,তা বুঝতে পারা যায়, উত্তরপ্রদেশ সরকারের রাজ্য  থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা তুলে দেওয়ার যে কার্যক্রম ,তাকে এলাহাবাদ হাইকোর্ট পরিপূর্ণ সম্মতি জানানোর মধ্যে দিয়ে। 
                 
মাদ্রাসা শিক্ষা, মুসলমান সম্প্রদায়কে কোনো দোয়ার দান নয়। ১৯৪৭ সালে, ব্রিটিশের সঙ্গে ক্ষমতা হস্তান্তরের যে চুক্তি ভারতের তৎকালীন নেতৃত্বের হয়েছিল, সেই চুক্তিতেই বৈচিত্র্যময় ভারতের সব কটি ধর্মীয় এবং নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের ভিন্নতার সম্প্রদায়ের  ব্যক্তিগত আচার-আচরণ পালন করবার পক্ষে পূর্ণ সম্মতি জ্ঞাপন করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে এই বিষয়টি ভারতীয় সংবিধানে মৌলিক অধিকারের বিষয় হিসেবে সংযোজিত হয়।
                 
সেই সাংবিধানিক অধিকার বলেই ভারতে বসবাসকারী সহ নাগরিক মুসলমানেরা যেমন তাঁদের ব্যক্তিগত আইন রাখতে পারেন ।ঠিক তেমনভাবেই মাদ্রাসা শিক্ষা ও বজায় রাখতে পারেন। মাদ্রাসা শিক্ষা তুলে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত উত্তরপ্রদেশের আদিত্যনাথের  সরকার নিয়েছিল ,সেই সিদ্ধান্তই ছিল অসাংবিধানিক।সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট, মাদ্রাসা শিক্ষা ঘিরে এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশেষ স্থগিতাদেশ জারি করেছেন। মাদ্রাসা ঘিরে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি  সরকারের  অবস্থান  অসংবিধানিক , সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের মধ্যেই তা পরিস্কার। 
                   
কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায় বা নৃতাত্ত্বিকগোষ্ঠীর ব্যক্তিগত আইন গুলি তুলে দিতে গেলে, ক্ষমতা হস্তান্তরের চুক্তিকেই অস্বীকার করা হয় ।অস্বীকার করা হয় ভারতীয় সংবিধানকেই। সে কারণেই হিন্দুত্ববাদী শিবির যতই অভিন্ন দেওয়ানি বিধির কথা বলুক না কেন, এ বিষয়ে আইন আনলে যে প্রবল ভাবে আদালতের দ্বারা তারা ভৎসিত  পারে ,সে বিষয়টি জানার কারণেই অনেক হম্বিতম্বি করেও, বিগত ১০ বছরে, তারা এ বিষয়ে কোনো আইন প্রণয়ন করেনি। 
যদিও আসামের  বিজেপি সরকার, উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার তাদের রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির কথা বলেছে। বিধানসভায় বিল পাস করিয়েছে। উত্তরাখন্ডের  সরকারের সেই বিলে আবার আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি ।কিন্তু মজার বিষয় হলো ,এই ধরনের আইন পাস করাবার  কোনো ক্ষমতা, ভারতের অঙ্গরাজ্যের কোনো সরকারের নেই ।কারণ ,আইনটি প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন ।ভারতের কোনো অঙ্গরাজ্যের সরকারের এতোটুকু ক্ষমতা নেই সংবিধান সংশোধন করবার।
তাহলে প্রশ্ন হল, তবে কেন এই ধরনের বিষয় তুলছে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার বা আসামের বিজেপি সরকার ? উত্তর হল একটাই, বিভাজনের রাজনীতিকে তীব্র করে তুলে, সহনাগরিক মুসলমান সমাজের মধ্যে একটা ভয়ের ভূগোলকে প্রলম্বিত করা।এভাবেই  রাজনৈতিক হিন্দুরাষ্ট্রের দিকে হিন্দুত্ববাদী শিবিরের  যে ভারতকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র, সেই ষড়যন্ত্রকেই সমাজের আরো গভীরে ছড়িয়ে দেওয়া টাই হিন্দুত্ববাদীদের একমাত্র টার্গেট।
 
 
 
 
0 Comments

Post Comment