বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্ট বলছে বিশ্বে এখনই প্রায় ৪০০ কোটি মানুষ বছরে অন্তত এক মাস জল কষ্টে ভোগেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগামী দিনে এই সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। যা আর্থ-সামাজিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করবে ।
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকারি প্যানেলের ষষ্ঠ মূল্যায়ন রিপোর্টেও দেখা যাচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা জলচক্র বা ওয়াটার সাইকেল কে এলোমেলো করে দিচ্ছে। যার ফলে খরা, বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ বাড়ছে। কৃষি বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন গড় তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ার ফলে ভুট্টা, গম, ধান এবং সয়াবিনের ফলন ৩-৭ শতাংশ কমে গেছে। স্বাভাবিক ভাবেই খাদ্যের যোগানে চাপ পড়ছে। জল সংক্রান্ত সমস্যাগুলি বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষকে প্রভাবিত করছে। আগামী দিনে এই সংখ্যাটি নাটকীয়ভাবে বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
জল সংকট ও বর্তমান ভারত
ভারতে জল সংকটের চেহারা কপালে ভাঁজ ফেলার মত। মহারাষ্ট্রের প্রায় ১৫১ টি গ্রাম জল সংকটের মুখে। জলাধার এবং বাঁধগুলিতে জলের স্তর কমে যাওয়ায় ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলনের পরিমান এতো বেশি ‘ভূগর্ভস্থ জলের স্তর’ অনেকটাই নিচে নেমে গেছে। গুজরাটের ১৪টি জেলার প্রায় ৫০০ টিরও বেশি গ্রাম জলের জন্য ট্যাঙ্কারের উপর নির্ভরশীল। সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ এবং উত্তর গুজরাটে পরিস্থিতি খুব খারাপ। নর্মদা বাঁধ এবং সর্দার সরোবর খাল ব্যতীত, অন্যান্য জলাধারগুলি নিঃশেষ হয়ে গেছে ৷ রাজধানী রাঁচি সহ ঝাড়খণ্ডের অর্ধেকই খরা কবলিত। কোডারমা, খুন্তি এবং গাড়োয়া জেলার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। হাতপাম্প ও পুকুরে জল নেই। রাজস্থানে ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ ৬২.৭০ শতাংশ কমেছে। কোভিড-১৯ এর পর এই রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় জলের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। গ্রামবাসীরা নিজেদের জন্য বা গৃহপালিত পশুদের জন্য পানিয় জলের ব্যবস্থা করতে পারছেন না। অন্ধ্রপ্রদেশে, উত্তরপ্রদেশের অবস্থাও খুব খারাপ। চেন্নাই তো একসময় জল সংকটের জন্য খবরের শিরোনামে ছিল। শহরের মূল চারটি জলাধার শুকিয়ে যাওয়ার ফলে চেন্নাই শহর দারুন ভাবে জল সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল। রেস্তোরাঁ, ব্যবসা এবং স্কুলগুলি কিছুদিনের জন্য সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়েছিল। বাসিন্দাদের পৌর বা ব্যক্তিগত ট্যাঙ্কার থেকে চড়া দামে জল কিনতে হয়েছে। জলের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এতে গরিব লোকের যন্ত্রণা সবচেয়ে বেশি। কর্ণাটকে জল সঙ্কটের ফলে মারাত্মক কৃষি সঙ্কট তৈরী হয়েছে। ৩১২২ টি অঞ্চলে পানীয় জলের সংকট আছে বলে কর্ণাটক সরকার নিজেই ঘোষণা করেছেন। এবছর মার্চ মাসের গোড়াতেই বেঙ্গালুরু শহরে জলসঙ্কটে বিপর্যস্ত জনজীবন । ফলে গোটা কর্নাটকবাসী যারপরনাই শঙ্কিত।
ভারতের যে তিন রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে এখনও ঘরে ঘরে পানীয় জলের কল পৌঁছায়নি- তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ অন্যতম। গ্রামের প্রতি ১০০টি বাড়ির মধ্যে ৯১টিতেই পানীয় জলের কল নেই। কেন্দ্রের ‘ড্রিঙ্কিং ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন’ বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় স্তরে গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জলের জোগান যেখানে ৩৭.২৮ শতাংশ, সেখানে বাংলায় এই পরিসংখ্যান মাত্র ৮.৬৩ শতাংশ।
জল সংকট ও অর্থনীতি
কথায় বলে জলের দরে...., বাস্তবে জল কিন্তু সস্তা নয়, সহজ লভ্য তো নয়ই। জলকে বাদ দিয়ে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ভাবাই যায় না। আপাত দৃষ্টিতে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার বেশ ভালো। তবে এই বৃদ্ধি শুধুমাত্র স্থায়ী মূলধনের বিনিয়োগে হচ্ছে তেমনটা নয়। একে সাহায্য করছে প্রাকৃতিক সম্পদ। বিশেষ করে জল। জলের কাম্য ব্যবহার যেমন অর্থনীতির বৃদ্ধি কে ত্বরান্বিত করে তেমনই জলের দূষণ ও অপচয় অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ভারতের বর্তমান জল সংকট দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি কে অনেকটাই কমিয়ে দিচ্ছে। মিঠে জলের প্রায় ৫০ শতাংশ ব্যবহৃত হয় কৃষিতে। জলের টানাটানিতে কৃষি উৎপাদন কমছে, আয় কমছে চাষির। পশুপালন, মাছচাষও জল ছাড়া সম্ভব নয়। ফলে জলের অভাবে, এই সব কাজে যুক্ত মানুষদের কাজ ও রোজগার ব্যাহত হচ্ছে। তাদের অভাব অনটন দিন দিন বাড়ছে। দেশের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ কৃষি ও কৃষি সংযুক্ত ক্ষেত্রে যুক্ত । জলের অভাবে তাদের আয় কমার প্রভাব পড়ছে অর্থনীতির সর্বত্র। কার্যকরী চাহিদা কমছে ‘শিল্প ও সেবা’ ক্ষেত্রের ।
এছাড়া বস্ত্র, চর্ম, খাবার ও পানীয় শিল্পে জলের অভাবে উৎপাদন ব্যয় বাড়ে। একই সঙ্গে উৎপাদনের পরিমান কমে যায়। মানুষের ভোগের ফলে যে বর্জ্য সৃষ্টি হয় সেই বর্জ্য পদার্থ জলকে দূষিত করে। তা জল সম্পদের অবক্ষয় ঘটায়। এই অবক্ষয়কে আমরা জাতীয় উৎপাদনের হিসেবের মধ্যে ধরি না। অথচ অর্থনীতিতে এই অবক্ষয়ের বোঝা চেপেই যায়। জল দূষনের ফলে অর্থনীতিতে যে ঋণের বোঝা চাপে তা জি ডি পি তে যুক্ত করলে জি ডি পি বৃদ্ধির হার অনেকটাই কম বলে মনে হবে।
তাছাড়া, জল সংকট দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হারকে কমিয়ে দিতে পারে। জলের অভাবে জনস্বাস্থ্য ভাঙ্গে। সেই পরিস্থিতি অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রমের যোগানকে ব্যহত করে। স্বাভাবিক ভাবেই তা অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করে। দুর্বল জনস্বাস্থ্য সবার আগে অর্থনীতির খাদ্য সুরক্ষায় ব্যাঘাত ঘটায়। কৃষি ক্ষেত্রে চাহিদা-যোগানের ফাঁক কে বাড়িয়ে দিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। জলের অভাবে খরা হলে, খাদ্যের দাম হু হু করে বাড়ে। দীর্ঘ সময়ে ধরে এই অবস্থা চললে সার্বিক অর্থনীতিকে তা মন্দার মুখে ঠেলে দেয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, গরম ও শুষ্ক ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশগুলিতে জল সংরক্ষনে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। সেই বিনিয়োগে অপুষ্টি ও শিশু মৃত্যুর প্রকোপ কমেছে। এথেকে পরিষ্কার, যে কোনো দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং অর্থনীতিকে সজীব করতে জল সম্পদের দক্ষ ব্যবহার অপরিহার্য।
জল সংকট ও কূটনীতি
জাতিসংঘের অনুমান অনুযায়ী ২০৩০ সালে ভারতে জলের চাহিদা প্রায় ১.৫ ট্রিলিয়ন ঘনমিটারে গিয়ে ঠেকবে যা ২০১০ সালে ছিল ৭৪০ বিলিয়ন ঘনমিটার। জলের অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে ভারতে ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। যার পরিমাণ বিশ্বব্যাপী ভূগর্ভস্থ জলের ২৪ শতাংশ যা চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিলিত জলের চেয়ে বেশি। ভারতের জল সংকটের জন্য প্রতিবেশী দেশের সাথে ভারতের জল বিরোধ অনেকাংশে দায়ী।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে ‘জল’ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়। দেশগুলিতে জলের ঘাটতি এবং তার কারণে কৃষি উৎপাদনের সমস্যা, পাশাপাশি, দ্রুত শিল্পায়নের জন্য বিদ্যুৎ ও জলের চাহিদা প্রত্যেকেরই বাড়ছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে, জল স্তর স্থিতিশীল রাখতে দ্বিপাক্ষিক জল-বণ্টন চুক্তি জরুরী।
১৯৬০ সালে বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে ঠিক হয় পূর্ব দিকের তিনটি নদী – বিয়াস, রাভি ও শতদ্রুর জল পাবে ভারত এবং পশ্চিমের তিনটি নদী – চন্দ্রভাগা, সিন্ধু ও ঝিলমের জল পাবে পাকিস্তান। গত ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে এই চুক্তি নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের কিষেণগঙ্গা ও রাতলে প্রকল্প নিয়ে সাম্প্রতিককালে তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানের ধারণা প্রকল্প দুটি তাদের নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহকে বাধা দেবে। যেহেতু এই সব নদী থেকেই পাকিস্তানের কৃষিক্ষেত্রে শতকরা ৮০ ভাগ সেচের জল সরবরাহ করা হয়, তাই কিষেণগঙ্গা ও রাতলের মতো প্রকল্প নির্মাণের মাধ্যমে ভারত সিন্ধু চুক্তিকেই লঙ্ঘন করছে বলে পাকিস্তানের অভিযোগ।এই বিতর্কের মীমাংসা করতেই পাকিস্তান প্রথমে বিশ্ব ব্যাঙ্ককে একজন ‘নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ’ নিয়োগ করার দাবি জানায়, পরে ২০১৬ সালে বিষয়টি নিয়ে আরবিট্রেশন বা সালিশি আদালতের দ্বারস্থ হয়। এই টেনশন টুকু বাদ দিলে দু দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক যা তাতে এই জল সমস্যা খুবই তুচ্ছ।
অপরদিকে চিন ভারতের কাছে মাথা ব্যাথার কারণ। ব্রহ্মপুত্র, সিন্ধুর জলের উৎস তিব্বতে। চিন সেখানে বাঁধ বানিয়ে ‘দক্ষিণ থেকে উত্তরে জল স্থানান্তরের’ কাজ শুরু করেছে। তিব্বত থেকে সেই জল নিয়ে গিয়ে চিনের উত্তরের শুষ্ক অঞ্চলে কৃষি এবং শিল্পের কাজে ব্যবহার করবে। এর ফলে ভারতের নদীগুলিতে জলের পরিণাম কমবে। ব্রহ্মপুত্রের উৎসে চিন বাঁধ নির্মাণের ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং বাংলাদেশে তীব্র প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই প্রকল্পের কারণে নিম্ন অববাহিকার দেশ ভারতকে জল পাওয়ার জন্য বেজিংয়ের মর্জির উপর নির্ভর করতে হবে। যা জাতীয় স্বার্থ এবং নিরাপত্তার পক্ষে বড় আশঙ্কার কারণ। ভবিষ্যতে এর ফলে সঙ্ঘাতের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ৫৪ টি নদীর জল ভাগাভাগি হয়। এই জল মুলত নদীর দু ধারের অঞ্চলের চাষ আবাদ ও শিল্পের কাজে ব্যবহৃত হয়। নদীগুলি সবই ভারত হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। ভারত নদীবাঁধ দিয়ে যদি জল আটকায় তাতে বাংলাদেশের কৃষি ও শিল্প উভয়ই দারুন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে ভারত প্রতিবেশী দেশকে জল দিতে বাধ্য। নানা টানাপোড়েনের পর গঙ্গা নদীর জল নিয়ে ২ দেশের চুক্তি হয়েছে ১৯৯৬ সালে। তার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ এ। তা নিয়ে বর্তমানে কোনও সমস্যা নেই। এই মুহূর্তে ভারত বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তিস্তার জল ভাগাভাগি নিয়ে জটিল হয়ে আছে। এই নিয়ে খসড়া চুক্তির রূপরেখা তৈরি হয়ে আছে প্রায় এক দশকেরও বেশি আগে। যদিও ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, বিশেষ করে পশ্চিম বঙ্গের আপত্তির কারণে সেই চুক্তি আজও সই করা সম্ভব হয়নি। রাজ্যর দাবি শুষ্ক মরশুমে তিস্তা অববাহিকার জেলাগুলো যাতে পর্যাপ্ত জল পায়, সেটা আগে নিশ্চিত করতে হবে। এই টানাটানির অর্থ শুষ্ক মরশুমে ভারতের জল কিছুটা বাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা অববাহিকার জেলাগুলোকে বাড়তি সেচের জল পাইয়ে দেওয়া। কিন্তু এই প্রস্তাব বাংলাদেশের পক্ষে মেনে নেওয়া প্রায় অসম্ভব। ভারত যদি অর্ধেকের চেয়ে বেশি জল পায় এবং বাংলাদেশের ভাগের জল ৫০ শতাংশর নিচে নেমে যায়। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের চাষের মারত্মক ক্ষতি হবে । বিশেষ করে শুষ্ক মরশুমে অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মে পর্যন্ত। আর তিস্তা নদী মূলতঃ বাংলাদেশের ধান উৎপাদিত অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জলের অভাব ঘটলে বাংলাদেশের খাদ্যে টান পড়বে। এটা পরিষ্কার যে দু দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কও নির্ধারিত হচ্ছে অর্থনৈতিক কারন কে ঘিরে। অর্থাৎ জলকে ঘিরে অর্থনীতি যেমন আছে তেমনি আছে কূটনীতির মার প্যাঁচ।
'শান্তির জন্য জল' - স্লোগান কে সামনে রেখে গত ২২ শে মার্চ বিশ্ব জল দিবস পালিত হয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলি নিজেদের মধ্যে জল বণ্টনের ক্ষেত্রে পারস্পরিক লড়াই কমিয়ে সৌভ্রাতৃত্বের পরিচয় দিলে তবেই এই স্লোগান সার্থকতা পাবে নচেৎ নয়।