তোমার ভালোবাসার উপর আস্থা রেখেই বলছি, হ্যাঁ তোমাকেই বলছি অনিমেষ। এই যে তুমি আমায় বল 'তোমায় আমি মন্দ বাসিনা।' এর সত্যতা কেবল তুমিই জানো, আমি জানি যে আমি ভালোবাসি। কখনো তুমি এমন ভাবে কথা বল আমি ভীষণ রকম ভয় পাই। এই বুঝি হারিয়ে ফেললাম তোমায়। বা আমি হেরে গেলাম অন্য কারো কাছে। পুরুষ মানুষ তো সত্যিটাকে কিছুতেই যে সোজা করে বলনা। আর আমি একা একাই মনের দেওয়ালে আলপনা দিই নিজের মত করে। নিজেই একা স্বপ্নেই আকাশকে টেনে নামিয়ে ঘরের ছাদ বানাই, ঘরের দেওয়াল বানাই মাটি খড় আর পুটুসফুলের ঝোপঝাড় দিয়ে শীতলপাটির বিছানা আর মাটির কুঁজোয় ঠান্ডা জল রাখি। তুমি তেতেপুড়ে এলে মাটির গ্লাসের জল ঢকঢক করে খাবে সাথে দুটো লাল বাতাসা। আমি তালপাতার পাখা দিয়ে বাতাস করে দিতে দিতে চুলে তোমার বিলি কেটে দিতাম। তুমি বলতে 'বড্ড ক্ষিদে পেয়েছে যে।' আমি কাঁসার থালায় ভাত বেড়ে দিতাম সাথে দু তিন পদের তরকারি।
বিকেল হলে তুমি বলতে চল ঝিলের ধারে বসি। সেখানে অনেক রকম পাখি আসে বাসায় ফেরার আগে। হঠাৎই ঝুপ্পুস করে বৃষ্টি নেমে গেলে একটা বড় তেঁতুলগাছের তলায় দুজন দাঁড়াবো। তুমি যখন কোমর ধরে কাছে টেনে ঠোঁটে রাখবে ঠোঁট। ততক্ষণে দুজনেই বৃষ্টিতে ভিজে যাবো একেবারে। আমি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বলব ' সব সময় এত শয়তানি কেন কর?' তুমি আরো জোরে জড়িয়ে ধরবে। আমি আবারো জানতে চাইব সত্যি কি ভালোবাসো অনিমেষ? তুমি বলবে কই নাতো আমার কি প্রেমিকার অভাব? সেতো তুমি টানো আমায় মন থেকে তাই শুধু তোমার কাছেই আসি। তুমি দেখতে পাবেনা আমার গাল বেয়ে জলের ধারা নেমে গেলো ভাগ্যিস বৃষ্টি পড়ছিলো তাই বুঝতে পারোনি। আমি ঘরের দিকে পা বাড়াই। আমার ঘরের আকাশের ছাদ মেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরে গেছে, ঘরের দেওয়াল ধুয়ে মুছে সাফ। রয়ে গেছে পুটুসফুলের ঝোপ গুলো তাদের বুনো গন্ধ নিয়ে। আমি পিছন ফিরে দেখি তুমি ফিরে যাচ্ছ, ফিরে যাচ্ছ তোমার ঘরে।
আবার এসো অনিমেষ আমি ততদিনে আমি আমাদের ঘর বানিয়ে নেবো। আবারো চোখ বুজে শুনবো তুমি কানে কানে বলবে আমি তোমায় মন্দ বাসিনা, তোমার নিশ্বাসের উত্তাপে আমি জ্বলতে থাকব পুড়তে থাকব কিন্তু তোমায় বুঝতে দেবোনা।
- কি হল তোতা মুখ ভার কেন?
- এমনি
- এমনি কিছু হয়না তোতা,বল কি হয়েছে?
- কবে থেকে বলছি পাহাড়ে নিয়ে চল, এমন একটা হোমস্টেতে যেখানে একটুও ভিড় থাকবে না। শুধু তুমি আর আমি।
- এমন জায়গার খোঁজ তুমি জানো কি?