পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

আরএসএসের ঘৃণা ছড়ানোর কারণ ও পদ্ধতি

  • 30 May, 2025
  • 0 Comment(s)
  • 661 view(s)
  • লিখেছেন : সুজাত ভদ্র
বিজেপি আরএসএস বিশ্বাস করে এই নীতিতে: hate unites, hate divides"; অর্থাৎ যত ঘৃণা ছড়াবে, তত এক বৃহৎ সম্প্রদায়কে খুশি করতে পারবে, সমধিক ভাবে অল্প কয়েকজনকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে। Hate propaganda is not legitimate speech. It is a form of harassment and discrimination...Free speech cannot degraded to the extent that it becomes a license to harm.

সম্প্রতি প্রাক্তন প্রচারক, বর্তমানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর সাবেক সংগঠনের -- সংঘ পরিবারের --  নাগপুরস্থিত সদর দপ্তরের নতুন ভবন পরিদর্শন করেন। সেই সময়ে তিনি সংঘ পরিবারকে "অক্ষয় বট" হিসেবে বর্ণনা করেন এবং সেই বট নিঃশব্দে মানুষের সেবায় নিয়োজিত বলে দাবি করেন। এই  দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। সংঘ পরিবারের ১০০ বছরের ইতিহাস কী সেই কথা বলে? সে কী  সব মানুষের সেবায় বিশ্বাস করে? সেই বট কী নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে কোতলের, নিধনের নীতিতে বিশ্বাস করে না? গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকে মহাত্মা গান্ধী হত্যা থেকে  নানা প্রদেশে মুসলিম জনগোষ্ঠীর গণহত্যায় হাত রাঙায় নি?

আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা হল এই: সংঘ পরিবার, তাদের শাখা পার্টি বিজেপি বস্তুতঃ বিষ বৃক্ষ; ক্লান্তিহীনভাবে  ঘৃণা ও বিদ্বেষের উৎপাদন করে যাচ্ছে, কখনও প্রকাশ্য কখনও অ প্রকাশ্যে। কাদের বিরুদ্ধে? সবাই জানি, এদেশের প্রধান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, মুসলিম জনগোষ্ঠী তাদের মূল নিশানা। দ্বিতীয় নিশানা: সংখ্যালঘু খ্রিস্টান সম্প্রদায়। তৃতীয় নিশানা: যাবতীয় কমিউনিস্ট, সেকুলার, সর্বধর্মসমন্নয়পন্থী, নাগরিক স্বার্থে কাজ করা আন্দোলন কারী শক্তি, সংগঠন, ব্যক্তিবর্গ। শত্রু পক্ষ বা অপর পক্ষ ঠিক করে দিয়েছিলেন স্পষ্টভাবে ষাটের দশকে সংঘপরিবারের গুরুজী Golwalker তাঁর "Bunch of thought" গ্রন্থে। এই ভয়ঙ্কর এবং ধিকৃত, বিকৃত রুচির  ভাবনার হদিশ ইতিহাসে পাওয়া যায়।
ষোড়শ শতাব্দীর জার্মানীর বিদ্রোহী যাজক মার্টিন লুথার, ১৫৮৩ সালে তাঁর কুখ্যাত  "Jews and their lies"  ৬৫০০ শব্দ যুক্ত ইহুদী বিরোধী ( anti - semitic) গ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন। সমগ্র  ইহুদি জনগোষ্ঠীকে শয়তান/ evil রূপে বর্ণনা করা সেই বিস্মৃত প্রায় গ্রন্থটিকে হিটলার গত শতাব্দীর তিরিশের দশকে পুনর্মুদ্রণ করে ইহুদি নিধনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন। বস্তুত, নাৎসিবাদের মৌলিক বিশ্বাসের মূল ভিত্তি ছিল ইহুদি বিদ্বেষ; ১৯২৪ সালে লিখিত হিটলারের Mein Kampf (My Struggle) ছত্রে ছত্রে ইহুদি বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ ছিল; প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানীর পরাজয়ের জন্য ইহুদিরা দায়ী ছিল শুধু নয়, জার্মানির যাবতীয় দুর্দশার জন্যও ইহুদীরা দায়ী।
 
ছবি ১ঃ ইহুদীদের দোকান বন্ধ করে দেওয়া, দোকান ভেঙে দেওয়ার আগ্রাসী নাৎসি ছবি। 
 
বিশুদ্ধ আর্য জাতির উৎকৃষ্ট রূপ প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে জার্মানির উন্নতি হবে না। নাৎসি শাসনের সময়ে, বিদ্যালয়ে দুটো জিনিষ ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষিত করা হত: 
ক.  ইহুদীদের ঘৃণা করতে শেখানো । 
খ. আর্য জাতির  superiority / শ্রেষ্ঠত্ব  বোঝানো।
 
 
ছবি ২ ঃ ইহুদীদের ব্যবসা বন্ধের বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 
 
এই মতাদর্শকে  সাভারকার, মুঞ্জে, Hedgewar, গুরুজীরা গ্রহণ করেন ও ভারতীয়  প্রেক্ষাপটে প্রাগুক্ত জনগোষ্ঠী সহ মতাদর্শ গত ভাবে বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে হিন্দু মহাসভা, স্বয়ং সেবক সংঘ 
(পরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরঙ দল প্রভৃতি) গড়ে তোলা হয়। তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য দুভাবে প্রকাশিত হতে শুরু করে: 
১. হিন্দু জনগোষ্ঠী এক, অবিভাজ্য, কোনও বিভাজন, পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, হিংসা বলে কিছু নেই। প্রাচীন ভারতে ছিল এক নিখুঁত সামাজিক সাংস্কৃতিক কাঠামো। পৃথিবীতেও এর কোনো তুলনা নেই। এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না ইত্যাদি। এই অস্মিতাকে আরএসএস- রা মুসলিম ঘৃণায়, ভারতকে কসাইখানায় রূপান্তরিত করার চেষ্টায় রয়েছে। পারলে প্রতিটি হিন্দুকে কসাই বানাতে চায়।
২.  বিপরীতে রয়েছে মুসলিম জনগোষ্ঠী, যারা বর্বর, বিদেশী, এবং যারা মহান সনাতন সভ্যতার  সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। এদেশে  থেকে যাওয়া তাদের বংশধরদের নিধনেই দেশের মুক্তি। 
এই আখ্যানকে বিশ্বাসযোগ্য গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন কিছু পদক্ষেপ করার; যেমন: 
১। এমনভাবে ইতিহাস নির্মাণ  করতে হবে;  অর্ধ সত্য দিয়ে, মিথ্যা, কাল্পনিক ঘটনাবলী দিয়ে ডার্ক ন্যারেটিভ তৈরি করা ও বলা, বিদেশী মুসলিম সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আজও স্বাধীনতা সংগ্রাম চলছে। *ভারতমাতা" আজও শৃংখলিত। বালির উপর তৈরি এই মিথ্যা সৌধকে একমাত্র সত্য, নিরঙ্কুশ খাঁটি ইতিহাস বলে বলপূর্বক প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।  
২। বিরামহীনভাবে সংঘ পরিবার, নানা হিন্দুত্ববাদী সংগঠন  মুখে, মন্তব্যে, নানা লেখায় প্রাগুক্ত  জন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘৃণা, বিদ্বেষ,  আগ্রাসী, উস্কানিমূলক প্রচার করে যাচ্ছে।এক কথায় ইসলামফোবিয়া পরিবেশ গড়ে তোলার কাজে আরএসএস রা সক্রিয়। 
৩। প্রয়োজনে, ইজরায়েল রাষ্ট্রীয় নীতির আদলে ব্যক্তিহত্যার নীতির প্রয়োগ ঘটানো।
 

আমরা এই নিবন্ধে সংক্ষিপ্তভাবে এই প্রচারের নানা দিকের স্বরূপকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি, এই ঘৃণা বিষাক্ত প্রচার ও তার থেকে জাত অপরাধ  ( hate speech, hate crime) আমাদের দেশের আইনে, সুপ্রিম কোর্টের ব্যাখ্যায় অথবা/ এবং আন্তর্জাতিক আইনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ কি না তা নিয়েও সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে।

 

বিজেপি - আরএসএস এর প্রচারমূলক রত্নসম্ভার কে মোটামুটি চারটে বর্গে ভাগ করা যেতে পারে।

প্রথমত অতীতের জনসংঘ, বর্তমান বিজেপির পার্টি দলিল, নির্বাচনী ইশতেহার প্রভৃতি ইস্যু ভিত্তিক  লেখাপত্তর। সামনে স্লোগান দেওয়া হয়,"সবকা সাথ সবকা বিকাশ"। কিন্তু বাস্তবে নিজেদের দল থেকে শুরু করে সমাজের সর্ব স্তরে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে বিছিন্নতাকরণ করাটাই তাদের লক্ষ্য।  ফলে এক বিশেষ ধরনের সেই অস্পৃশ্যতা, বৈষম্যবাদ স্পষ্ট গড়ে তুলেছে তারাই। নিজেদের দলে নির্বাচিত প্রতিনিধির হওয়ার বাছাই তালিকার মধ্যে; দলীয় নানা স্তর থেকে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্তরে মুসলিমদের স্বতন্ত্র স্থান না দেওয়া। সামগ্রিক ভাবে এই দল সংবিধান স্বীকৃত সংখ্যালঘুদের বিশেষ অধিকারগুলোকে  স্বীকারই  করতে চায় না। নানা সরকারি প্রকল্পে অনুদান কমিয়ে দেওয়া বা বন্ধ করে দেওয়ার নীতি গ্রহণ করেছে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন রাজ্য সরকার। ফলি এস নরিমান  একটি অসাধারণ নিবন্ধে দেখিয়েছেন, কিভাবে সংখ্যালঘুর সাংবিধানিক অধিকারগুলো ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণে বিপন্ন। সর্বশেষ আক্রমণ ওয়াকফ সম্পত্তির উপর। এখানে অজুহাত:  দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এবং সেক্যুলার আদর্শকে তুলে  ধরার। এর তীব্র প্রতিবাদ করলেই জুটবে তীব্র বিদ্বেষমূলক আক্রমণ: ভণ্ড সেক্যুলার, তোষণবাদ ইত্যাদি। অন্যদিকে, মুসলিম সত্তার উপর আরেক ধরনের আক্রমণ ঘটায় সুগার কোটেড হয়ে, পরিত্রাতা সেজে। ২০১৪ সাল থেকে শাসক  দল হিসাবে  বিজেপি সেই সম্প্রদায়ের সামাজিক চিহ্ন, প্রতীককে সুকৌশলে আক্রমণ করে যাচ্ছে। নিজেরা তখন  ঔপনিবেশিক ব্রিটিশের মতো civilizing মিশনারীর ভূমিকায় অভিনয় করে!! তখন প্রতিপন্ন করতে চায়, তারা কত মঙ্গলাকাঙ্ক্ষী। অবদমিত মুসলিম নারীর দুঃখে কাতর হয়েই তো তিন তালাক বাতিল করেছে, ফৌজদারি অপরাধ বলে চিহ্নিত করেছে; নারীমুক্তির পথ প্রশস্ত করেছে। পশুর যন্ত্রণায় বিহ্বল হয়ে, অমানবিক আচরণে বিচলিত হয়েই তো হালাল প্রথাকে নিষিদ্ধ করতে চাইছে; নিন্দুকেরা, প্রগতি বিরোধী বিরোধী শক্তিরা বাধা দিচ্ছে।বিদ্যালয়ে পোশাক বিধির সমতা আনার জন্যই তো হিজাব পরা বারণ করছে। কোনও বিশেষ বিদ্বেষ মনোভাব থেকে নয়! যাঁরা জনসংঘের দলিল পড়েছেন তাঁরা জানেন, এদের মনোভাব কী রকম "অ - হিন্দুদের" প্রতি : এদের মধ্যে সঞ্চার করাতে হবে হিন্দু সনাতন সংস্কৃতি! কিভাবে? তার কোনো রূপরেখা বলে দেওয়া নেই। গত কয়েক বছরে, নতুন ভারতে অনুশীলনে স্পষ্ট হয়েছে: জয় শ্রীরাম না বললে পিটিয়ে হত্যা। ফ্রিজে গোমাংস আছে বলে বাড়িতে ঢুকে  বা রাস্তায় পিটিয়ে মারা। কি খাবে,  কি খাবে না তার হিন্দু ফতোয়া ঘোষণা করা। কোনও হিন্দু উৎসবের দিন আমিষ খাবার পাওয়া যাবে না বলে কোনো শহরের বা রাজ্য সরকারের নির্দেশ চালু করা ইত্যাদি। উত্তরাখণ্ড প্রদেশে প্রায়শই বলা হয়, মুসলমান ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারবে না। হিটলারের সময়ে নাৎসিরা একই আওয়াজ তুলেছিল। সর্বত্র। সেই সংক্রান্ত পোস্টারও জনসমাগম অঞ্চলে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল( দ্র পোস্টার)। হিটলারের সময়ে ১৯৩৩ সালে নুরেমবার্গ আইনের আদলে হিন্দু নারীদের "যবন পুত্র " মুসলমানকে বিবাহ করলেই লাভ জিহাদের আওয়াজ তুলে বিবাহ ভেঙ্গে  দেওয়ার চেষ্টা চালায়। পুলিশ প্রশাসন পূর্ণ মদত দেই। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাকে অমান্য করেই। যোগী সরকার উত্তরপ্রদেশের জন্য লাভ জিহাদ বিরোধী আইন প্রণয়ন করেছে। করেছে যাতে  প্রাপ্তবয়স্ক ভিন্ন ধর্মাবলম্বী নারী পুরুষ বিবাহ করতে না পারে উপযুক্ত সরকারি তদন্তের আগে। 

 
দ্বিতীয় ধরন মূলত বিজেপি দলের নানা স্তরের নেতা নেত্রীদের আগ্রাসী ভাষ্য, রাম নবমী  দিবসকে ঘিরে সশস্ত্র জঙ্গি মিছিল সংগঠিত করা, মহরমের পাল্টা হিসেবে। আরএসএস  মুখপত্র, অর্গানাইজার, পাঞ্চজন্য -এ নিয়মিতভাবে মুসলিম বিরোধী লেখাপত্তর ইসলামফোবিয়ার রসদ জোগায়। নানা ছোট ছোট প্রকাশনা সংস্থার মাধ্যমে বেনামে নতুন ইতিহাস রচনার নাম করে মুসলিম শাসনের বিরুদ্ধে , হিন্দুদের উপর অত্যাচারের কল্প কাহিনী প্রচার করে। নানা ভাষায়।
তৃতীয় ধরন কসমোপলিটন বা আরবান, ইংরেজি জানা কিছু বিদগ্ধ ব্যক্তি। যাঁরা নিয়মিতভাবে নানা দৈনিক সংবাদপত্রে,  বা বই লিখে গেরুয়া রাজনীতির সপক্ষে এবং বিশেষ করে সেক্যুলার ভাবনা ও অনুশীলনকে আক্রমণ করেন। এনাদের লেখার ভাষা  মার্জিত, যেহেতু পাঠককুল সমাজের শিক্ষিত  অংশের লোকজন। এদের লেখার মূল লক্ষ্য, হিন্দুত্ববাদের আসল স্বরূপকে আড়াল করে পরিশীলিত ভাষায় হিন্দুত্ববাদকে উজ্জ্বল করে দেখানো।
 
চতুর্থ ধরন একবারে কুৎসিত, আক্রমণাত্মক এবং নির্লিপ্তভাবে হত্যার আওয়াজ তোলে। এগুলো স্বল্প পাতার পুস্তিকা। কোনও কোনও লেখা স্বনামে। কোনটা বেনামে। প্রকাশক ছোট ছোট সংস্থা: যেমন তুহিনা প্রকাশনী, বিবেকানন্দ স্টাডি সেন্টার, দলিত জাগরণ সংগঠন প্রভৃতি। এছাড়া আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের  নিজস্ব প্রকাশনা তো রয়েইছে।  এই লেখাগুলোর কিছু পাতা পড়ার পর বমন আসবে। তবুও ঘৃণা উৎপাদনে এই raw materials সমাজের নানা স্তরে জনপ্রিয় এবং এখানে পরিবেশিত  তথ্যগুলোই বেশি শুনতে পাওয়া যায়। রচনাগুলো মুসলিম সম্প্রদায় সম্পর্কে কয়েকটি ধরাবাঁধা ছক গড়ে তোলে:
১. এরা বিদেশী, বর্বর, ম্লেচ্ছ ।
২. আমাদের ভারত মাতাকে ধর্ষণ করেছে।
৩. আজও এদেশ আছে শুধু নয়, এঁরা উগ্র, এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ সংস্কৃতির প্রতি অনুগত নয়। সহবৎ শেখাতে হবে।
৪. আমাদের মাতা হিসেবে পূজনীয় গো মাংস ভক্ষণ করে,; স্বভাব ধর্ষক, হিন্দু নারী লোলুপ, স্বভাব উগ্র, স্বভাব হত্যাকারী, জিহাদের নাম করে যাবতীয় কুকর্মের অধিকারী। দেবদেবী , উপাসনালয় ধ্বংস কারী। 
৫.  প্যান ইসলামিক ভাবনার শরিক; বেইমান, পাকিস্তানের চর, জঙ্গি;বস্তুতঃ  ধর্মতাই জঙ্গি। নোংরা। খালি বাচ্চা পয়দা করে। চারটে করে বউ রাখে। 
৬. এদেশে নিয়মিত অনুপ্রবেশ করে। হিন্দুদের  সংখ্যালঘু করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে। নিজদেশে পরদেশী হয়ে যাবে হিন্দুরা একদিন। এদের তাড়ানো উচিত। নিদেনপক্ষে  আসামের মতো  বে- নাগরিক করে, রাষ্ট্রবিহীন  করে দিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্প এ রেখে দেওয়া উচিত। (পরে হিটলারের কায়দায় এদের ফাইনাল সলিউশন হিসাবে গ্যাস চেম্বারে পাঠান হবে কিনা তা এখনও জানা নি। 
৭. এরা সব বাবর, আওরঙ্গজেব , টিপু সুলতান, সিরাজের সন্তান। এদেশ থেকে এদের উচ্ছেদই একমাত্র পথ।
৮. হত্যার পটভূমি তৈরি করার জন্য এদের sub- humam বলে তকমা মারা, উইপোকা, ইঁদুর , শুয়োর বা কাটুয়া সম্প্রদায় বলে অবমাননাকর ইত্যাদি গণহত্যার ভাষা প্রয়োগ করা। অপবিত্র শক্তি বলে চিহ্নিত করা।
এই স্টিরিওটাইপকে সমাজের প্রতিটি স্তরে নানা কায়দায়  সংগঠিত পদ্ধতিতে ছড়িয়ে দেয় আরএসএস। শক্তিশালী সমাজ মাধ্যমকে দারুণভাবে ব্যবহার করে এই ঘৃণা উৎপাদনকারী শক্তি। ঘৃণা - বিদ্বেষের সামাজিক ভিত্তি গড়ে তোলে। ২০২৩ সালে  ২৩ জুন দ্য হিন্দু পত্রিকায় পুষ্পরাজ দেশপান্ডে একটি নিবন্ধে এই সংগঠিত পদ্ধতির তিনটে রূপের কথা আলোচনা করেছেন-- সংগঠিত (অর্গানাইজড), চলে আসা (ইনহেরিটেড), এবং আত্মস্থকরণ (absorbed)। "অপর" সম্প্রদায় সম্পর্কে চলে  আসা ধারণা, যা আমরা আমাদের সংস্কৃতির, সাহিত্যে, ছায়াছবিতে দেখতে, পড়তে অভ্যস্ত। তাই অপর পক্ষের উপর অত্যাচারের ঘটনার প্রতি এক  উদাসীনতা কাজ করে। অপর্ণা বৈদিক তাঁর "My son's inheritance" গ্রন্থে সঠিকভাবে বলেছেন, পিটিয়ে গণহত্যা (মব লিঞ্চিংস) ইত্যাদি ঘৃণা মিশ্রিত  অপরাধ যেন অধিকাংশ ভারতীয় (এমনকি বহু উদারনৈতিক মানুষ) এর কাছে অদৃশ্য  হয়ে উঠেছিল, বা বড়জোর ছোটখাট ঘটনা বলে এক অদ্ভুত নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেছিলেন তাঁরা । কিন্তু কেন? তিনি লিখেছেন, "...what keeps us from seeing the  violence, especially caste violence and the abuse of minorities is our privilege." প্রতিবাদ তকমা পাবে তুষ্টিবাদ বলে; তাই কিছু বিকৃতমনার কাণ্ড বলে এড়িয়ে যাও ; আওড়াও সেই বুলি, হিন্দুরা ঐতিহাসিকভাবে সম্প্রদায়গত ভাবে সহনশীল! আরএসএস এই মানসিকতাকেই তাদের অনুকূলে ব্যবহার করে। তৃতীয় পদ্ধতিটা স্বল্পকালীন। অসুখের মতো; আক্রান্ত হয় নিঃশব্দে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষ। ঘৃণার ন্যারেটিভে আচ্ছন্ন হয়ে তারা ভোটে প্রতিফলন ঘটায়, অর্থ সংগ্রহে সাহায্য করে, অথবা বিতর্কিত বিষয়গুলিতে হিন্দুত্ববাদীদের বিপুল সমর্থন করে। এক কথায়, তিনটে পদ্ধতির উদ্দেশ্য একই : গণহত্যার নীরব সামাজিক ভিত্তি পাকাপোক্ত করা, যাতে নিধনের বিরুদ্ধে, সংগঠিত হত্যার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে না ওঠে। 
ঘৃণা উৎপাদনের কারখানা কিভাবে ক্রিয়া করে তা আপ পার্টি থেকে বহিষ্কৃত, বর্তমানে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল মিশ্র হাতে কলমে করে দেখিয়ে দিয়েছে ভারতবাসীকে। একটা অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে; নাম দেওয়া হয়েছে "হিন্দু ইকো সিস্টেম"। তাতে যোগদানের জন্য সরাসরি একটা ফর্ম পূরণ করতে হবে ; ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার পর ঘোষণা করতে হবে স্পষ্টভাবে ব্যক্তি সদস্যের তাঁর আগ্রহের  অঞ্চল বা বিষয়বস্তু কি; বিষয়গুলোর উল্লেখ রয়েছে ফর্মে । খালি টিক মারতে হবে। বিষয়বস্তু গুলোই ঘৃণা -  বিদ্বেষের মর্মবস্তু কে তুলে ধরেছে:  গোরক্ষা; লাভ জিহাদকে প্রতিরোধ করা; ঘর ওয়াপসি; হিন্দু একতা; মন্দির নির্মাণ; অন্যান্য।
 
যারা যে বিষয়বস্তু বেছে নেবে, তাদের আলাদা কোড দিয়ে প্রচার মসলা যোগান দেয়া হবে। তারা সর্বত্র সংগঠিত ভাবে whatsapp, telegram, সহ  ট্যুইট ইত্যাদির মধ্য দিয়ে ভুয়া সংবাদ থেকে খেউড়, খিস্তি, বিষ বাষ্প ছড়িয়ে যাবে। কুণাল পুরোহিত তিন বছর ধরে সমীক্ষা, সাক্ষাৎকার ইত্যাদির ভিত্তিতে "H- Pop"  শীর্ষক গ্রন্থে বিস্তারিতভাবে দেখিয়েছেন হিন্দুত্ব পপ গায়কেরা  কিভাবে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণার বীজ বপন করে যাচ্ছে। বইটি পড়লে আতঙ্কিত হতে হয়। অপারেশন সিঁদুরকে কেন্দ্র করে সোফিয়া কুরেইশির বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশ রাজ্য সরকারের এক মন্ত্রীর মন্তব্য কত নোংরা, কত হীন  হতে পারে তা সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছেন। তাঁর ক্ষমা চাওয়াটাও যে দায়সারা তাও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছেন। তারপরেও মন্ত্রী বহাল তবিয়তে। 
আসলে বিজেপি আরএসএস বিশ্বাস করে এই নীতিতে: hate unites, hate divides";  অর্থাৎ যত ঘৃণা ছড়াবে, তত এক বৃহৎ সম্প্রদায়কে খুশি করতে পারবে, সমধিক ভাবে অল্প কয়েকজনকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে। 
এটাও স্বীকার করতেই হবে, এই সংগঠিত ঘৃণা উৎপাদনকারী শক্তির বিরুদ্ধে সংগঠিত কার্যকর সামাজিক শক্তি আমরা গড়ে তুলতে পারি নি। ম্যাকলে রচিত ভারতীয় ফৌজদারি আইনে ঘৃণা, বিদ্বেষ, প্ররোচনা ইত্যাদি বিষয়ে ধারা, উপধারা ছিল,  (১৫৩ক, ২৯৫ক); নতুন দণ্ড সংহিতায় একই কথা রয়েছে। তবে নির্দিষ্ট ভাবে "ঘৃণা ভাষণ" নিয়ে "প্রবাসী ভালাই সংগঠন" - এর দায়ের করা জনস্বার্থ মামলায় সুপ্রীম কোর্টের  রায় স্বাধীন ভারতে প্রথম রায় ( দ্র ঃ Pravasi  Bhalai Sangathan v. Union of India, 2014 3 SCALE 552)। নানা আইনের ধারা উপধারায়গুলোতে ঘৃণা বিদ্বেষ সংক্রান্ত অপরাধে সাজার কথা থাকলেও আজ পর্যন্তও ঘৃণা সংক্রান্ত কোনো বিশেষ আইন সংসদ রচনা করে নি। ২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা আছে রাজ্য সরকারগুলোর কাছে, ঘৃণা ভাষণ বা অপরাধের ঘটনা ঘটলেই যেন রাজ্য পুলিশ প্রশাসন  নিজে থেকেই (suo motto)  মামলা দায়ের করে। কিন্তু নির্দেশিকা মোটেই কার্যকর হয় নি। হবেও বা কি করে? বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকারগুলোর মধ্যে তো প্রতিযোগিতা চলে কে কতখানি ইসলামফোবিয়া পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, মদত দিতে পারে।অপরাধীদের আইনের উর্ধ্বে স্থাপন করতে পারে, পুরস্কৃত করতে পারে।
         
ঘৃণা ভাষণ বাক স্বাধীনতার অংশ কিনা তা নিয়ে দেশে বিদেশে তর্ক আছে। তার উপর নিষিদ্ধকরণ  গণতন্ত্রের উপর আঘাত কিনা তা নিয়েও দ্বন্দ্ব আছে। সংজ্ঞার্থ নিয়ে সমস্যা আছে। এসব সত্ত্বেও মানবাধিকারের দৃষ্টিতে ঘৃণা ভাষণ, ঘৃণা মিশ্রিত অপরাধ বাক স্বাধীনতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে না। ১৯৪৮ সালের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের ৩০ অনুচ্ছেদে বলা আছে, সনদে গৃহীত কোনও অধিকারকে ব্যবহার করা যাবে না পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবে অন্যের অধিকারের উপর আঘাত বা ক্ষতিসাধন করার। ঘৃণা ভাষণ কিন্তু এটাই করে। ফলে তার অধিকার  ভোগের যোগ্যতা নেই। আমেরিকান এক বিচারপতি একটি রায়ে ( ১৯১৯ সালে) বলেছিলেন, সমাজ হলো "মার্কেটপ্লেস অফ আইডিয়াস"। কিন্তু সেই বিচারপতির এই অংশটুকু কেবল বলা হয়। বলা হয় না, সেই বিচারপতি Holmes কিন্তু "result oriented" দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করতেও বলেছিলেন (দ্রঃ Abrams v United States, 250 US 616,630(1919 )। আমেরিকায় পরর্বতী কালে কৃষ্ণাঙ্গ বিদ্বেষী এবং  শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী  ক্লু ক্লাক্স ক্লান-  এর কার্যকলাপের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
ইউরোপের The  Office for Democratic Institutions and Human Rights (ODIHR) ২০১৮ সালে  ঘৃণা ভাষণ ও অপরাধকে ব্যাখ্যা করেছিলেন এইভাবে: "a criminal act committed with bias motives , that is, on offense motivated by intolerance towards  a certain socially defined group, in that the  perpetrator intentionally chose the target  of the crime because of some protected characteristics:race, religion, ethnicity, language or sexual orientation."
আন্তর্জাতিক স্তরে বহু আইনজ্ঞ ঘৃণা ভাষণকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ পর্যায় ভুক্ত  করার পক্ষপাতী। মূলত তিনটি কারণে: ১.সাধারণ সহজসিদ্ধ ভঙ্গিমায়, পদ্ধতিতে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নিরন্তর ঘৃণা ভাষণ সেই আক্রান্ত সম্প্রদায়ের প্রতি dehumanize / অমানবিক আচরণের সামাজিক পথ সৃষ্টি করে। ২.  ক্রমাগত হেনস্থা করা জনসমক্ষে, বা ব্যক্তিগত  স্তরে, ছোট গ্রুপ স্তরে। ৩. নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে উস্কানি, প্ররোচনা দেওয়া যাতে উৎসাহিত হয়ে অন্যেরা এই বিদ্বেষ পূর্ণ আক্রমণকে আরো শক্তিশালী করে। ফলে আক্রান্তরা আরো ভীত হয়ে ওঠে।
এই সার্বিক প্রেক্ষিতে আমরা জুডিথ বাটলার এবং ক্যাথলিন ই মোহানীর মতকেই সঠিক বলে তুলে ধরছি: "The harm of hate speech matters. It  matters to individual, it matters to the groups they belong to,  it matters to society in general, and it matters to democracy... Hate propaganda is not legitimate speech. It is a form of harassment and discrimination...Free speech cannot degraded to the extent that it becomes a license to harm..."
আমার মনে হয়, ঘৃণা - বিদ্বেষ ছড়ানোর নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের সঙ্গে  বাকস্বাধীনতার মহৎ উদ্দেশ্য সাযুজ্য পূর্ণ নয়। এই প্রসঙ্গে কানাডার সুপ্রীম কোর্টের একটি রায় প্রণিধানযোগ্য। মামলাটির বিষয়বস্তু ছিল এই: কানাডার একটি হাই স্কুলের একজন শিক্ষক জেমস কীগস্ট্রা তাঁর ছাত্রছাত্রীদের কাছে ইহুদি জনগোষ্ঠী সর্ম্পকে নানা ধরনের অবমাননাকর --- বেইমান, অন্তর্ঘাতে অভ্যস্ত, যৌন বিকৃত মানসিকতা, শিশুঘাতী  ইত্যাদি ---- মন্তব্য করতেন। এই মামলাটি যখন সুপ্রীম কোর্টে বিচারের জন্য গেলো, তখন শুনানির পর কোর্ট রায় দিলেন যে, কীগস্ট্রার এইসব মন্তব্য সংবিধানের বাকস্বাধীনতার সুরক্ষা পেতে পারে না। দুটো কারণে: ১। এই সব মন্তব্য ঘৃণা বিদ্বেষ জাত এবং ঘৃণা প্রচারের মধ্যে সত্যতা প্রায় থাকে না বললেই চলে। ২। তদুপরি, বাকস্বাধীনতার নামে, সমতার নামে এই ঘৃণা বক্তৃতা সমাজে ক্ষতি করে বেশি। কোর্টের ভাষায়: "It did more to undermine mutual respect among diverse racial, religious and cultural groups ...than to promote any genuine expression of needs or values."
অন্যত্র বলছেন, "Hate speech [is] not merely  offensive, but as a serious attack on psychological and emotional health " [ of the victim/ targeted group(s)]
[ R V Keegstra ( 1990) S SCR 697, 744-749] ।
 
 

তথ্য বলছে
(একটি গবেষণা সংস্থা তাদের ২০২৩ সালের বাৎসরিক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে:) • মুসলিম জনগোষ্ঠীকে নিশানা করে ভারতে ঘৃণা ভাষণের ৬৬৮ টি ঘটনা নথিভুক্ত করা গেছে। • ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে ঘটেছে ২৫৫টি ঘৃণা ভাষণের ঘটনা • দ্বিতীয় ছয় মাসে  ৪১৩ টি; যা প্রায় ৬২% বৃদ্ধি  •উক্ত ৬৬৮ টির মধ্যে ৪৯৮ টি( ৭৫%) ঘটেছে বিজেপি পরিচালিত রাজ্যে বা কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে (দিল্লি সহ)। মোট আট টি রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ; তার মধ্যে ৬ রাজ্য বিজেপি পরিচালিত। •মহারাষ্ট্র(১১৮টি ঘটনা); উত্তরপ্রদেশ (১০৮); মধ্য প্রদেশ (৬৫)। তিনটে রাজ্যের ঘটনার যোগফল ৪৫%। • ঘৃণা ভাষণের বিষয়বস্তু নানা ধরনের: লাভ জিহাদ, ল্যান্ড জিহাদ, জনসংখ্যা জিহাদ, উপাসনালয়; আর,  ইজরায়েল - গাজা আক্রমণের সপক্ষে ভারতের মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ভাষণের ঘটনা ৪১ টি ছিল (২১%)।রোহিঙ্গা বিদ্বেষ ঘৃণার ঘটনা ৩৮ ( ৪%)। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরঙ্গ দল, আরএসএস এই সব ঘৃণা ভাষণের ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত  ২১৬ টি ঘটনায়( ৩২%);আরএসএস দ্বারা সংগঠিত ঘটনার সংখ্যা ৩০৭(৪৬%)। বিজেপি সরাসরিভাবে যুক্ত ১০০ টি ঘটনায়(১৫%)। • ২৩৯ টি ঘৃণা ভাষণ ( ৩৬%)  সরাসরি মুসলিমদের  উপর আক্রমণের আহ্বান করেছে।  তার ৭৭% ঘটেছে বিজেপি পরিচালিত রাজ্য গুলোতে, কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে। [ সূত্র: India Hate Lab( IHL), Washington, কর্তৃক প্রকাশিত  " Hate Speech Events in India : report 2023".  47 pages, 2024]

 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
0 Comments

Post Comment