ধর্মীয় চিন্তা ও আদর্শের মধ্যে একটা টাইমলেস এসেন্স খুঁজে পাওয়া যায়। সেই ভাবনা চিন্তা খুশি মতো, যেকোনো সময়ে জাগিয়ে তোলা যায়। কারণ চিন্তাগুলি বিমুর্ত, ভাব সম্বল। তাতে মরচে ধরে না, ধুলো জমে না। একবার যদি সেই বিমুর্ত ভাবটাকে মূর্ত করা যায়, চাক্ষুষ রূপ দেওয়া যায়, তখন আর বিমুর্ত থাকে না। তার টাইমলেস এসেন্স স্বত্তাটি ভেঙে পড়ে। একটি নির্দিষ্ট টাইমে আটকে যায়।
ঝেড়ে কাশা যাক। আরএসএস এবং আরএসএস পুষ্ঠ নানা সংগঠনগুলি একটি কাল্পনিক হিন্দু রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখাতো। গো রক্ষা, গোমাতা কে অবলম্বন করে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাতো। আর কে না জানে গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে গোমাতার ভূমিকা অনস্বীকার্য। গো বলয়ে এই ছবি বিপুল জনপ্রিয়। এমনকি লক্ষ্য করুন গান্ধীজিও তার কথাবার্তায় রাম রাজ্যের উল্লেখ করেছেন বারে বারে। তিনি নিজে রামধুন গাইতেন। এরই পাশাপাশি বিষ্ণুর মীন (মৎস্য) অবতার, ফলতঃ মীন সংরক্ষণ সমিতি গড়ে ওঠা। মনুবাদী এক ঐতিহ্যবাহী সনাতনী সমাজের কথা বলা। লক্ষ্য করবেন এগুলো কোনটাই কারো কাছে মূর্ত নয়, সবটাই বিমূর্ত। এমনকি অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা, সেখানে রামের জন্মভূমি বিধর্মীর হাত থেকে উদ্ধার করা, মসজিদ ধ্বংস করা, এটাও বিমূর্ত। কারণ আদতে এটা প্রমাণ করা অসম্ভব যে অযোধ্যা রামের জন্মভূমি এবং এই অযোধ্যাই হল মহাকাব্যে বর্ণিত সেই অযোধ্যা। মহাকাব্য তো ইতিহাস নয়, ফলে তার কোন পাথুরে প্রমাণ হাজির করা সম্ভব নয়।
কাশ্মীরের ৩৭০ ধারার কথাই যদি বলেন, সেটা কি কম বিমুর্ত নয়। আমরা তো কম বেশি সকলেই জানি, বিশ্বাস করি যে কাশ্মীর ৩৭০ ধারার বলে প্রচুর অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা পায়। একেবারে ভূস্বর্গের জনজীবন যেন স্বর্গীয় জীবনযাত্রা। সেখানের মানুষের পড়াশুনায় খরচ লাগে না, কাশ্মীরে অন্য কেউ বহিরাগতরা জমি জমা কিনতে পারে না, সেখানে যে কেউ স্বাধীনভাবে বাইরে থেকে গিয়ে ব্যবসা করতে পারে না, তাদের কিছু নির্দিষ্ট সংরক্ষণ আছে। এসব কথা আমরা ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। এটাকেও বিমুর্ত বলছি, কারন এই ধারণাটার কোনো ভিত্তি ছিল না। কাশ্মীর প্রসঙ্গে নুরানীর লেখায় জানতে পারি কমপক্ষে ৫৬ বার ৩৭০ ধারার সংশোধন ও সংযোজন হয়েছে, পরিমার্জন হয়েছে। একটু একটু করে কাশ্মীরের সুযোগ সুবিধা সংরক্ষণ গুলি ক্ষয় হয়েছে। মনে রাখতে হবে সেই কারণেই তো আশির দশকে মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষার আন্দোলনে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিলেন। সারা দেশের নটি অ কংগ্রেসি সরকারের মুখ্যমন্ত্রীরা জোট বদ্ধ হয়েছিলেন। কাশ্মীর যদি কেন্দ্রীয় সরকারের কোলের ছেলে হিসেবে প্রচুর সংরক্ষণ ও সুবিধার অধিকারী হয়, তাহলে কাশ্মীরের মানুষের এত ক্ষোভ অসন্তোষ আসে কোথা থেকে? আসলে ভারত স্বাধীন হওয়ার সময় মূল ভারতের অংশ ছাড়াও যে অসংখ্য ছোট ছোট স্বাধীন রাজা ও জাতিগোষ্ঠীর অস্তিত্ব ছিল তাদের মূল ভারতে অঙ্গীভূত করার সময়ে ভারত সরকার তাদের বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে – কালো গরুর দুধ দেবো, দুধ খাবার বাটি দেবো, গরুর দুধে সোনা দেবো, বিন্নি ধানের খই দেবো, উড়কি ধানের মুড়কি দেবো, মোটা মোটা শবরী কলা, কাগমারীর দই। এসব অনেক প্রতিশ্রুতি। শুধু তো কাশ্মীর নয় উত্তর পূর্বের সমস্ত রাজ্যগুলি এই অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা লাভ করার অধিকারী। অথচ বাস্তবতা হলো এই রাজ্য গুলির অর্থনীতি রুগ্ন, কার্যত ভেঙে পড়েছে। এই সমস্ত রাজ্যগুলি দেশের দরিদ্র রাজ্যগুলির মধ্যে স্থান পায়।
কিন্তু তাতে কি। একটা ভ্রান্ত বিমূর্ত চিন্তা যদি ঢুকিয়ে দেওয়া যায় যে কাশ্মীরের মুসলমানরা প্রচুর প্রচুর সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গেল আমাদের দেশ থেকে। তাহলে সেই কথার প্রতিধ্বনি রণিত হবে চতুর্দিকে। ঢাকের সঙ্গে কাঁসর ঘন্টার পোঁ ধরা তো আছেই, সংবাদমাধ্যম। এমনই এক বিমূর্ত ধারণার প্রচার – সীমান্ত দিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশকারী লাগাতার দেশে প্রবেশ করছে। তাদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠাতে হবে। এই বক্তব্যের কোন ভিত্তি নেই, তথ্য নেই। বেআইনি, অতএব হিসেব নেই। আর বেহিসাবের সংখ্যা লক্ষ কোটি ছাড়ায় অতি সহজেই। কিন্তু এই বক্তব্যটা মানুষকে গ্রহণ করানো সহজ। কারণ মাঝেমধ্যে দুই একটি জঙ্গি কার্যকলাপ ঘটাতে পারলেই অনুপ্রবেশকারী তত্ত্বটিকে স্থায়ী ভাবে গেঁথে দেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু মানুষের মনে সন্দেহ জাগে, যখন এই ছদ্মবেশধারী জঙ্গি অনুপ্রবেশকারীরা নাকি সঙ্গে আইএসআইয়ের পরিচয় পত্র, পাকিস্তানের নাগরিকত্বের পরিচয় পত্র, এসব নিয়ে আসে “পরিচয় গোপন করতে”। ভাবা যায় হুগলির শ্রীরামপুরে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে অমিত শাহজী বললেন, শ্রীরামপুরে বিজেপি প্রার্থী কবীরশঙ্কর জিতলে সীমান্ত দিয়ে একটাও পরিন্দা অনুপ্রবেশ ঘটতে পারবে না। যেন শ্রীরামপুর সীমান্তবর্তী অঞ্চল। এই বিমুর্ত ভাবনাগুলির উপরে দাঁড়িয়ে আছে বিজেপির, তথা আরএসএসের রাজনীতির অস্তিত্ব। কোন অকাট্য প্রমাণ নয়, তথ্য নয়, একটা বিশ্বাসের ওপর কথাবার্তা ভাসিয়ে দেওয়া।
কোটি কোটি রোহিঙ্গা নাকি এদেশে ঢুকছে। ভাবুন যাদের মোট সংখ্যা ২২ লক্ষের মতো, তারা নাকি কোটি কোটি ঢুকে পড়ছে। কেউ জানে না তাদের দেখতে কেমন, কেউ জানে না তারা কোন ভাষায় কথা বলে, একজনও কেউ বলতে পারবেনা আমি একজন রোহিঙ্গাকে দেখেছি। তো তাতে কি? কথাটা ভাসিয়ে দিলেই হবে। মায়ানমারের রোহিঙ্গারা বাংলা ভাষায় কথা বলে না, বর্মা মূলক এর ভাষা। দেখতেও তাদের সেই রকম। বাংলায় এসে তারা জন সমষ্টির সঙ্গে মিশে যেতে পারবে না কিছুতেই। কারণ তাদের সাথে বাঙালির সাদৃশ্য কম। তবুও বলে চলছে এক কথা, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কোটি কোটি।
আমি একটি কথা প্রায়শই বলে থাকি যে, একটা না ফাটা বোমা পথের ধারে পড়ে থাকলে বা রেখে দিলে ওই রাস্তা দিয়ে কেউ যাতায়াত করবে না, ভয় পাবে। কখন হঠাৎ যদি ফেটে ওঠে। কিন্তু যদি কোন পথে একটা বোমা ফেটে থাকে, তারপর জনজীবন স্তব্ধ হয়ে যায় না, ওই পথে ফের মানুষজন চলতে থাকে। না ফাটা বোমা, ফেটে যাওয়া বোমার চেয়ে ভয়ংকর। আর না ফাটা বোমাকে যে বোমাই হতে হবে এমন তো নয়, সেটা সুতলি দড়ির পাকানো একটা বল হলেও চলবে। সেই সুতলি অনেক বেশি আতঙ্ক ও শঙ্কা ছড়াতে পারে। নরেন্দ্র মোদির সমস্যাটা হল আরএসএস রাজনীতির এই দর্শনটাকে না বুঝেই এটাকে তিনি একটি এপ্লায়েড ফিলোজফি হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ঘোষিত বিমুর্ত নীতিগুলোকে তিনি একে একে মূর্ত করতে শুরু করেছেন। এ হলো এন্টায়ার পলিটিক্যাল সায়েন্সের সমস্যা।
তিনি অযোধ্যায় রাম জন্মভূমি পুনরুদ্ধার করে, সেখানে মসজিদের ধ্বংস সাধন করে, মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন। মনে রাখবেন এর ফলে মোদিজি তার রাজনৈতিক প্রচারে একটি অস্ত্র হারালেন “মন্দির ওঁহি বানায়েঙ্গে”। এই শ্লোগানের মধ্যে যে স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা ছিল, বলিষ্ঠতা ছিল ও বাবরি মসজিদের প্রতি ঘৃনা ছিল, মন্দির বানানোর পর সেই বলিষ্ঠতা ও বিধর্মীর প্রতি ঘৃণা শেষ হয়ে গেল। ভাবা যায় রাম মন্দির নির্মাণের পর অযোধ্যায় বিজেপির বিপুল পরাজয় কিভাবে সম্ভব হল! একটু বুঝিয়ে বলি, সকাল থেকে পেটটা সাফ হয়নি। একটু ভয় ভয় ভাব। কখন বুঝি প্রকৃতির ডাক আসে আপনি সুযোগ খুঁজতে থাকেন কখন আপনি নির্ভার হবেন। তখন কোন ভালো কথা, কোন ভালো খাবার, কোন সুন্দরীর উপস্থিতি, কিছুই আপনাকে আনন্দ দেবে না। কিন্তু যদি একটা হিল্লে হয়ে যায়, পেট সাফ হয়ে যায়, তারপরে কিন্তু আপনি ওই চিন্তা থেকে সরে যাবেন।
লক্ষ্য করবেন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়ে, একবার দাঙ্গা শুরু হয়ে গেলে, দুদিন থেকে পাঁচ দিন গড়ানোর পর মানুষের মধ্যে ঘৃণা উত্তেজনা কমে আসে। বরং কত দিনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে, এটাই তার কাছে কাম্য হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত বিধর্মীর প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ প্রচার, আলোচনা ও উত্তেজনার মধ্যে থাকে, ততদিনই সেটা মানুষ চর্চা করে। মোদ্দা কথা হলো, বোমাটা ফাটানো চলবে না। ওটা না ফাটিয়ে অক্ষত রাখতে হবে। ৩৭০ যতদিন ছিল, ততদিন অবশিষ্ট ভারতের মানুষ কাশ্মীরে নিশ্চিন্তে অবাধে ঘোরাফেরা করতো, পর্যটনে যেত, ওখানকার মানুষও তাদের হস্তশিল্পের সামগ্রী, আখরোট, এসব নিয়ে দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়তো। এক কথায় পারস্পরিক একটা সখ্যতা ছিল। সকল পর্যটকের মুখেই শুনেছি কাশ্মীরীদের আতিথেয়তার গল্প। বিরোধের ক্ষেত্রও ছিল, ওরা বিশেষ সুবিধাভোগী। একই দেশে থেকে কেন এত বেশি সুবিধা পাবে? কিন্তু ৩৭০ বিলোপের পর সেই ক্ষেত্রটা থাকলো না। কাশ্মীরে ১০ মিটার অন্তর একজন করে জওয়ানের উপস্থিতি। নানা চেকপোষ্টে নানান বাধা-বিপত্তি এবং সর্বোপরি এসব সত্ত্বেও সম্বৎসর সেখানে লেগে থাকা জঙ্গি কার্যকলাপ, পুলওয়ামা থেকে পহেলগাঁও এবং তারপর প্রধানমন্ত্রীর আস্ফালন “ঘরমে ঘুষকে মারেঙ্গে” “সার্জিক্যাল স্ট্রাইক” “অপারেশন সিন্দুর“ – এই গল্পগুলো এখন একঘেয়ে মনোটনি তৈরি করেছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে এবং উঠছে, ৩৭০ বিলোপের পর কেন এখনো এসব চলছে। যতদিন ৩৭০ ছিল, ওটাকে দেখিয়েই কাশ্মীর সমস্যার উৎস বলে চিহ্নিত করা হতো। হাতের এই কার্ডটি কিন্তু মোদীজি খেলে ফেলেছেন, আর দ্বিতীয়বার খেলা যাবে না।
ঠিক একইভাবে দেশপ্রেম আর পাকিস্তান বিরোধিতা সমার্থক করে তুলে একটা তীব্র পাকিস্তান বিরোধী মনোভাব গড়া হলো। খেলাধুলা, সিনেমা, নাটক, গান, সর্বত্র পাকিস্তানকে বর্জন করার হিড়িক তোলা হয়েছিল। সাম্প্রতিক এশিয়া কাপে সেই উত্তাপ বজায় রাখা গেল কি? যাবেনা বলেই দু'দেশের খেলোয়াড়দের করমর্দন টুকু বাদ রেখে বিরোধিতার অবশেষ জিইয়ে রাখা হলো। ভাবতে আশ্চর্য লাগে, ক্রিকেট এখন বাণিজ্যিক বিষয় এবং এই বাণিজ্যের শীর্ষে বসেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়া (গুজরাটি) কোম্পানির বানিয়া জয় শাহ বকলমে অমিত শাহ। অর্থাৎ পাকিস্তানকে কোনভাবেই এশিয়া কাপে বর্জন করা সম্ভব ছিল না। তথাপি একটা ছেলেমানুষি বিরোধিতার প্রয়াস। অপারেশন সিন্দুরে যেভাবে লাহোর, করাচি, রাওয়াল পিন্ডি, একের পর এক অঞ্চল ভারতের দখলে চলে এলো, অন্তত গদি মিডিয়ার তেমনি প্রচার ছিল। এর পর পাকিস্তান বিরোধীতা ক্ষেত্রটি হাস্যকর হয়ে দাঁড়ায়। ফলে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, পুলওয়ামা কান্ডের পর যদিবা প্রভাব ফেলে থাকে, পহেলগাঁও ও অপারেশন সিন্দুর সেটুকুও ফেলতে পারেনি। পরবর্তী উপনির্বাচন গুলি সে কথাই প্রমাণ করেছে।
অর্থনীতিতে একটি তত্ত্ব চালু আছে Law of Diminishing Marginal Utility, এই তত্ত্বে বলা হয় যে Utility gained from consuming more units of the same good or service decreases with each successive unit. অর্থাৎ প্রতিটি পণ্যের একটি উপযোগিতা থাকে। যা ভোক্তাকে কোন না কোন ভাবে তৃপ্ত করে। ভোক্তা এই পণ্যটি যে মাত্রায় ভোগ করবে, সেই মাত্রায় পণ্যটির উপযোগিতা কমতে থাকবে। উদাহরণ হিসেবে বলা হয় একজন ক্ষুধার্ত ভোক্তাকে প্রথম এক টুকরো পিজ্জা যে তৃপ্তি প্রদান করে, এরপর যত বেশি টুকরো তাকে প্রদান করা হবে, তার তৃপ্তির হার ততোই কমতে থাকবে। একসময় তৃপ্তির মাত্রা হবে শূন্য। For example, the first slice of pizza provides a high level of satisfaction, but each additional slice offers progressively less enjoyment until the point where consuming more no longer provides additional satisfaction. ঠিক এই নিয়মেই আরএসএস তার জন্মলগ্ন থেকে। যে সমস্ত প্রচার ও দাবিগুলো করে এসেছে, সেগুলো অনেকাংশেই বিমূর্ত ও অবাস্তব, কিন্তু মানুষের কাছে আকর্ষণীয়।
এক কথায় যেসব ইস্যু কে অবলম্বন করে বিজেপি মানুষের মধ্যে জনভিত্তি গড়তে চেয়েছিল, সেগুলো দ্রুত কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এ অবস্থায় বিজেপিকে অনেক বেশি হঠকারী ভূমিকায় নামতে হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনটাকেই নিজের পায়ের তলায় নিয়ে এসো। ভোটার তালিকাটাকে নিজের ইচ্ছাভিত্তিক মর্জি মাফিক বানিয়ে ফেলো। কেন্দ্রীয় সামরিক বাহিনীর বন্দুকের ডগায় নির্বাচন সম্পন্ন করো। ভোট শেষ হওয়ার পর ৩ ঘন্টা পরে প্রদত্ত ভোট ১০ শতাংশ বাড়িয়ে দাও, এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমা হলে বিচার ব্যবস্থাকেই সরকারের পদানত কর। এটা হল আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সর্বশেষ উপায়। অর্থাৎ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যদি ক্ষমতায় আসীন না হওয়া যায়, তাহলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিটাকে ভেঙে গুঁড়িয়ে উড়িয়ে দাও – না রহেগি বাঁশ, না বাজেগি বাঁশরী।