রচনা মিত্র শব্দবন্ধ উচ্চারণ করতেই, প্রায়-স্বগতোক্তির মতো অস্ফুট উচ্চারণ বেরিয়ে এসেছিল মোনালিসার মুখ দিয়ে যেন প্রতিধ্বনি। মোনালিসা বিহ্বল চেয়ে থাকে রচনা মিত্রের চোখের দিকে। শব্দদ্বয়ের অভিঘাত তৈরি হয়েছে, বুঝতে পারেন রচনা। শব্দযুগল কথায়-কথায় উচ্চারিত হতেই মোনালিসা হতভম্ব, উত্তরে কী বলবে ঠাহর করতে পারে না, হাতড়ায় শব্দ।
‘যিনি চুরি করেছেন তিনি আমেরিকায় বেশ পপুলার লেখিকা, রোমান্স লিটারেচারের রানি বলা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগে এই দুটো শব্দই ব্যবহার হয়েছিল! মাইন্ড রেপ! যিনি অভিযোগ করছেন, তাঁরও নামডাক আছে। তিনিও লেখিকা। বাক্য তুলে-তুলে দেখিয়েছিলেন কীভাবে তাঁর উপন্যাস থেকে লিফট করে নিজের উপন্যাসে ঢুকিয়েছেন বিখ্যাত লেখিকা। আদালত অবধি গড়ায় সেই কেস। বিখ্যাত লেখিকা মেনে নেন, নিতে বাধ্য হন। অকাট্য প্রমাণ হিসেবে পাতার পর পাতা মিল ধরিয়ে দিলে, স্বীকার না-করে উপায়ও নেই। প্রচুর ক্ষতিপূরণ, পাবলিশারের বই তুলে নেওয়া, ব্যাপক হাল্লাবালু হয়েছিল একসময়।’
থামেন রচনা। মোনালিসার চোখ টেবিলের দিকে। উৎকর্ণ। রচনা-উচ্চারিত প্রতিটি শব্দ কানের ভিতর দিয়ে আঘাত করছে অন্দরে। লুব্ধকের সমস্যার একটা সমাধানের আশায় সে এসেছে শহরের নামি ও দামি চিত্তবিদ রচনা মিত্রের কাছে। কিন্তু তাকে ক্রমশ খাদের ধারে নিয়ে যাচ্ছেন রচনা মিত্র। অথচ লুব্ধক কত অচঞ্চল! সামান্য তফাতে মস্ত সেই সর্বনাশা গহ্বরের অস্তিত্ব সে স্বীকার করছে না বা স্বীকার করতে চাইছে না।
‘পোস্টে পোস্টে ছেয়ে গেছে, তার এস-এস পৌঁছে যাচ্ছে আমার মোবাইলে! তোমার পরিচিত লেখক বন্ধুদের মধ্যে যেন শিকার ধরার আদিম উল্লাস! আমাদের টিচার্স রুমে পর্যন্ত গুজগুজ-ফুসফুস! গত দু'দিন ধরে আমার জীবন দুর্বিষহ, তুমি কি বুঝতে পারছ না!’
‘এইরকম খাপ আগেও বসেছে আর তোমাকে আগেও যা বলেছি, আজও তাই বলছি মোনালিসা, একদম পাত্তা দেবে না এইসব! তোমার বরের অপরাধ সে একজন জনপ্রিয় সাহিত্যিক! পপুলারিটি একা আসে না, সঙ্গে করে শত্রুও নিয়ে আসে! ঈর্ষা একটা ভয়ঙ্কর ভাইরাস যার কোনও ভ্যাক্সিন হয় না!’
‘মিলগুলো দগদগে করে দাগিয়ে পোস্ট করছে, তুমি এখনও অস্বীকার করছ কেন লুব্ধক!’ বিস্ময়-প্রশ্ন মোনালিসার।
‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি - এখন একটা স্বাধীন দেশের জাতীয় সঙ্গীত, কবি কোথাও স্বীকার করেছেন গানটা তিনি গগন হরকরা'র গান 'আমি কোথায় পাবো তারে আমার মনের মানুষ যে রে’ থেকে কপি করেছেন? আরও আছে, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে, কাঙাল হরিনাথের ‘হরিনাম দিয়ে মাতালে আমার একলা নিতাই রে' থেকে কপি, স্বীকার করেছেন?’ নির্লিপ্ত স্বর লুব্ধকের।
‘তাহলে অভিযোগ সত্যি লুব্ধক!’ আরও বিস্ময় মোনালিসার।
‘যে মিলগুলো ওরা দেখাচ্ছে, সেগুলো খুব বড় ব্যাপার নয় মোনালিসা, হুবহু মিল আছে - এমনটা কি ওরা বলতে পারবে?’
‘হুবহু কেউ টোকে না! তুমি এইসব কী বলছো লুব্ধক!’
‘মাই ডিয়ার, অত ইমোশনাল হোয়ো না! এগুলো সাকসেসের বাইপ্রোডাক্ট, এনজয় করো, ডোন্ট বি আ মিডলক্লাস!’
চায়ের কাপ হাতে ব্যালকনিতে যায় মোনালিসা। বহুতলের উচ্চতা থেকে আলোকিত শহরের দিকে তাকায়। লুব্ধকের সাফল্যের অংশভাগ সে পেয়েছে, রচনা মিত্র ভুল কিছু বলেননি, এই উঁচুতে বাঁচা সেই ভাগ। রচনা মিত্র কোনও আড়াল রাখতে দেবেন না, টেনে ছিঁড়ে দেবেন।
‘দেখুন ম্যাডাম, শুরুতে কেউ-ই স্বীকার করে না, আমেরিকান লেখিকাও করেননি। কিন্তু মিলের পর মিল হাতেনাতে ধরিয়ে দিতেই, স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলেন। মেনে নিয়ে বলেছিলেন, একটা নয়, তিন-তিনটে বই তিনি টুকেছেন অভিযোগকারীর বই থেকে! লাখ লাখ কপি বিকোচ্ছে তাঁর বই, প্রচুর খ্যাতি, প্রতিপত্তি, তিনি অন্যের বই থেকে টুকেছেন, স্বীকার করা খুব কঠিন। আফটার অল তো চুরি! স্বীকার করা মানেই এনটায়ার ওয়র্ক প্রশ্নের মুখে, পাঠক ওঁর যেকোনও লেখাই পড়তে পড়তে ভাববে, এটাও উনি ঝেড়ে লেখেননি তো!’
হাসেন রচনা মিত্র। মোনালিসা চোখ নামিয়ে আবার টেবিলের দিকে। নিশ্চুপ। ডানহাত টেবিলের ওপর। আঙুলের ডগা দিয়ে নীরব আঁচড় বুলিয়ে যাচ্ছে সে টেবিলের কাচের উপর। মোনালিসা বোঝে, বিরতি নিয়েছেন রচনা। আবার শুরু করবেন। হাসিটা তারই প্রস্তুতি।
প্রস্তুতির হাসি লুব্ধকেরও। টানাপোড়েনের মাঝে মোনালিসা কেবল বলতে পেরেছিল, গতকাল রাতে, না, গতকাল রাত নয়, একটু আগে, কলেজ হয়ে রচনা মিত্রের চেম্বার ঘুরে বাড়ি ফিরে, চা-করার আগে। লুব্ধকের মাপা ও উদাসীন হাসি উপেক্ষা করেই বলেছিল,
‘একটা অরিজিনাল লেখা লেখ লুব্ধক!’
‘অরিজিনাল বলে কিছু হয় না মোনালিসা! আমার লেখার মধ্যে হাজার বছরের বাংলা সাহিত্যকে আমি বহন করছি! উত্তরাধিকার! উত্তরাধিকার!’
‘কেন হয় না! তোমার সৃষ্টি - তরাইয়ের মতো - তোমার সন্তান! অরিজিনাল!’
‘তুমি যদি ভেবে থাকো তরাইয়ের মধ্যে কেবল তোমার-আমার রক্ত আছে, ভুল! তোমার বা আমার পূর্বপুরুষের আছে, কেবল তাই নয়, পেছোতে পেছোতে একসময় দেখতে পাবে, বিশ্বের প্রথম মানব-মানবীর জিনও তরাইয়ের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে খেলা করছে! তরাই কেবল তোমার আমার সন্তান নয় মোনালিসা - মানব সন্তান!’
‘এগুলো কি তোমার টোকার পক্ষে যুক্তি?’
উত্তর দেয় না লুব্ধক। আলো নিভিয়ে দলা-দলা অন্ধকার গোল্লা পাকিয়ে ছোঁড়াছুঁড়ি খেলে। তরাই আলো জ্বালিয়ে দিতেই হাসে লুব্ধক। মজা পেয়ে তরাই স্যুইচ টিপে একবার আলো জ্বালায়। নেভায়। অন্ধকারের দলাগুলো গোল্লা হয়, নিবিড়। আবার আলোর আঘাতে ভেঙে যায়, চপল।
‘স্বীকার করা মানেই বিশাল উচ্চতা থেকে একটা পতন! খুব কঠিন মেনে নেওয়া! লেখিকাও নির্জলা স্বীকার করেননি, পাঠকের সহানুভুতি আদায়ের চেষ্টায় জুড়ে দিয়েছিলেন নিজের সাইকিক প্রবলেম! পারিবারিক মৃত্যু, বরের অসুখ ইত্যাদি বলে একটা ঢাল তাঁকে নিতেই হয়েছিল। কিন্তু কুম্ভীলকবৃত্তির সঙ্গে মানসিক সমস্যার সাধারণত কোনও যোগ নেই। পরিষ্কার চুরি! জেনে-বুঝে চুরি! না-জানিয়ে, কোনও অ্যাকনলেজমেন্ট না-করে, সাইটেশন না-দিয়ে, আমার লেখা বাক্যের পর বাক্য বা এক্সপ্রেশন এমনকী থট, আপনি লিফট করছেন মানেই –’
বাক্য শেষ না-করে রচনা টেবিল থেকে জলের গ্লাস তুলে একটা চুমুক দেন। গ্লাসটা নামিয়ে রাখতে রাখতে, অসম্পূর্ণ বাক্যকে একলা রেখেই চলে যান অন্য বাক্যে। যেন ওই বাক্য শেষ করার দায় তাঁর নেই, অসম্পূর্ণ বাক্যকে সম্পূর্ণ করার দায়ভার মোনালিসার কাঁধে।
‘গোপনে আপনার পার্স তুলে নেওয়াকে যেমন পকেটমারী বলে, এ-ও তেমনই এক পকেটমারী। পাতি চুরি! সাইকলজিক্যাল সমস্যা-টমস্যা বলে ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে লাভ নেই!’
‘লুব্ধক যদিও এমন কিছু বলছে না!’ মিনমিন করে বলে মোনালিসা।
‘কিন্তু আপনি তো বলছেন ম্যাডাম! লুব্ধক আপনার স্বামী, এই অবস্থায় আপনার আর কী-ই বা করার আছে! আপনি খুব ভালো করে জানেন আপনার স্বামী টুকেছেন, কেবল আজ নয়, ওঁর বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযোগ আছে! সিরিয়াল প্ল্যাজিয়ারিস্ট হিসেবে বদনাম! আপনি সত্যিটা জানেন বলেই আমার কাছে এসেছেন, না-হলে উকিলের কাছে যেতেন, ডিফেমেশন স্যুট করতেন! লুব্ধক ব্যানার্জির সাকসেসের ভাগীদার আপনি। যে-বিশাল সম্মানহানীর মুখে পড়েছেন, এই লজ্জা থেকে আপনাকেও তো বাঁচতে হবে! আমার থেকে আপনি যদি শোনেন বা যদি প্রমাণিত হয় এই দুষ্কর্ম লুব্ধক ব্যানার্জির একটা মানসিক বিকার বা রোগ, তাহলে আপনি শান্তি পাবেন। রোগীকে চিকিৎসা করিয়ে ভালো করা যায়। সম্মানহানী কিছুই কম হবে না এতে, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আপনি একটা সান্ত্বনা পাবেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন এমন কোনও স্তোক বাক্য আমি আপনাকে দেব না। দিতে পারব না। ফেস দ্য ট্রুথ। কড়েয়া সাচ!’
খাদের একদম ধারে তাকে এনে ফেলেছেন রচনা। জিভে শব্দ জোগায় না মোনালিসার। গভীর অতলান্ত এক গাড্ডা তাকে ডাকছে। অনন্ত সেই গহ্বরের কিনারায় দাঁড়িয়ে, পরিত্রাণহীন মোনালিসা, শ্বাস নিতেও ভুলে যায়। রচনা মিত্র'র সামনে বসে থাকাও এখন কত কঠিন! চিত্তবিদ চুপ। সম্ভবত মোনালিসার জবাবের প্রতীক্ষায়। কথা-বিরতি সাহায্য করে তাকে, কিছুটা ধাতস্থ হয় মোনালিসা। নিজেকে সংহত করে বলে,
‘আমার এখন কী করণীয়?’
‘স্বামীকে বলুন সব স্বীকার করে নিতে – সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা লাইভ করে ক্ষমা চেয়ে নিন পাঠকদের কাছে, তারপর লম্বা একটা গ্যাপ নিন লেখালেখি থেকে! চিত্তশুদ্ধি হবে। উনি নিজেও মুক্তি পাবেন, আপনিও! সবথেকে বড় কথা লম্বা বিরতির পর আবার স্বমহিমায় ফিরে আসারও একটা লড়াই, এই সুযোগে উনি পেয়ে যাবেন! পাশে আপনাকেও পাবেন। পাঠকেরাও থাকবেন।’
ফের বিহ্বল দৃষ্টি মোনালিসার।
‘কিন্তু স্বীকার না-করলে, ওঁর কেরিয়ার এখানেই শেষ, আমি লিখে দিতে পারি! মিনিমাম এথিক্স না-থাকলে, কোনও লড়াই উনি লড়তে পারবেন না, নিজেই জ্বলতে জ্বলতে দ্রুত ফুরিয়ে যাবেন!’
কিন্তু লড়াই কি আদৌ করতে চায় লুব্ধক! বাংলা সাহিত্যাকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র লুব্ধক বন্দ্যোপাধ্যায়, এই বিষয়ে আদৌ সিরিয়াস? চেয়ারে বসেই একটা অ্যাপ ক্যাব বুক করে মোনালিসা। দক্ষিণা মেটায় রচনা মিত্র'র। তারপর ধীরে বেরিয়ে যায় চেম্বার থেকে। বেরোতেই বৃষ্টি। একটুও ব্যস্ত না-হয়ে, নিজেকে একটুও আড়াল না-করে, ভিজতে ভিজতেই ক্যাব ধরে।
বন্যার মতো স্ক্রিন শট। একটার পর একটা জমা হয় ফোনে। কত নতুন নতুন শব্দ পোস্টে, কমেন্টে। যেমন লিটারারি পাইরেট, এটাও নতুন শব্দ। যারা পাঠাচ্ছে প্রত্যেকেই কমবেশি তার শুভাকাঙ্ক্ষী। কিন্তু কেন যে তারা তাকেই টার্গেট করে নিয়েছে, কেন তাকেই পাঠাচ্ছে অনর্গল, সদুত্তর নেই। প্রত্যেকটা স্ক্রিন শট যে তাকে, বর্শার ফলার মতো বিঁধে ফেলছে, রক্তাক্ত করছে, শুভাকাঙ্ক্ষীরা বুঝতেই পারছে না।
সাধারণ পাঠক তো আছেই, প্রত্যেকটি এস-এসে, লুব্ধককে কাদায় পেয়ে, কবি-লেখকদের মত্ত উল্লাস। পাথর ছুঁড়ে অপরাধীকে মেরে ফেলতে, তাঁরা লাগাতার ছুঁড়ে চলেছেন পাথর। ফোনে বা কোনও অনুষ্ঠানে বা পানাহারে, সকাল-সন্ধে যাঁদের সঙ্গে লুব্ধকের খোশগল্প, ওঠাবসা, তাঁরা তীক্ষ্ণ শব্দ ও বাক্যে হার্পুনের মতো গেঁথে ফেলছে সহকর্মীকে। মোনালিসা ফোন স্যুইচড অফ করে।
ক্যাবের জানালা দিয়ে জলসিক্ত শহরের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে, নির্মম সহনাগরিক ও সহমর্মিতাহীন মনোবিদের উদ্দেশে লম্বা একটা শ্বাস ফেলে। আকাশ তখন মেঘমুলুক। চরাচর প্রতিহিংসাপরায়ণ ও ঝাপসা।
স্নানঘর থেকে বেরোতেই লুব্ধক এসে দাঁড়ায়। মৃদু হেসে বলে, ‘তুমি যখন বলছ, আমি তাই করব মোনালিসা!’ হাঁ করে লুব্ধকের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে মোনালিসা। ‘আমি লাইভ করব! আজই করব। চলো আগে ডিনারটা সেরে ফেলি।’ শোওয়ার ঘর থেকে বেরিয়ে খাবার টেবিলের দিকে যায় লুব্ধক। ‘এখন আমি চিকেন খাব না, সকালের আলুপোস্ত কিছুটা আছে না? গরম করি?’ লুব্ধকের প্রশ্ন গড়িয়ে আসে ঘরে।
নির্বিকার, নির্লিপ্ত লুব্ধক। মোনালিসা চেয়ে থাকে লুব্ধকের ছেড়ে-যাওয়া শূন্য পরিসরের দিকে।
‘অন্যের লেখা বাদ দিন, লুব্ধক এখন নিজের পুরনো লেখা থেকেই টোকে!’
মোনালিসার কথায় হাসেন রচনা মিত্র। কী তীক্ষ্ণ সেই হাসি।
‘এটাই হয়। আমাদের অস্তিত্বের একটা সেন্টার থাকে, প্রত্যেকের থাকে, লুব্ধকের নিজস্ব সেই কেন্দ্রটাই আজ ধ্বংসের মুখে। উনি স্থবির হয়ে গিয়েছেন। শিল্পী-টিল্পি বাদ দিচ্ছি, একজন মানুষ হিসাবেই আর কোনও বাড় নেই ওর।’
শাওয়ারের তলায় দাঁড়িয়ে, জলের তোড়ে, যে আসেনি, সে এল। চোখের জল। অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে, তরাইকে জড়িয়ে, নীরব কান্নায় ফুলে-ফুলে ওঠে মোনালিসা।
এক মৃত মানুষের জন্য সেই অশ্রুজলে কোনও শোকগাথা নেই।