পশ্চিমবাংলার রাস্তা জুড়ে যে গণজাগরণ, যে ধিক্কার প্রতিধ্বনিত হচ্ছে প্রতিদিন, এত দ্রোহ আমাদের প্রজন্ম আগে দেখে নি। আর জি করের কলেজ হাসপাতালের পড়ুয়া ও চিকিৎসক মেয়েটির নিজের কর্মক্ষেত্রে নৃশংস খুন ধর্ষণের ঘটনায় যখন প্রথম প্রতিবাদে গর্জে ওঠে ডাক্তাররা, তখন আর জি কর কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের মন্তব্য ‘মেয়েটি অত রাতে ওখানে কী করছিলো’’? বাংলা জুড়ে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের গণবিস্ফোরণ ঘটালো। মেয়েরা ঠিক করলো রাতের রাস্তা দখল নেবে। ডাক দিলো ‘রাত দখলের’। শুধু কি একটি রাত দখল করে বিপ্লব করা তাদের উদ্দেশ্য ছিলো ? না। রাত দখলের লড়াই শুধু একটি ধর্ষণের বিচার চেয়ে নয়, এ লড়াই সেই ধর্ষণ সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যেখানে সমাজ মনে করে মেয়েদের রাতে বাইরে থাকা মানেই ধর্ষণের ছাড়পত্র দেওয়া। এ লড়াই শাসকের বিরুদ্ধে অপরাধীকে আড়াল করার সমস্ত রকম অপচেষ্টার বিরুদ্ধে। প্রথম ‘রাত দখল রাস্তা দখল’ উদ্যোগের ডাকে সাড়া দিয়ে একাডেমি, যাদবপুর, নাগেরবাজার একটার পর একটা হোয়াটঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি হলো, নিমেষের মধ্যে শহর থেকে বারাসাত, নৈহাটি, বিষ্ণুপুর, বহরমপুর হয়ে নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়লো উদ্যোগ। ১৪ আগস্ট মাঝরাতে গ্রাম-শহর-মফস্বল জুড়ে হাজার হাজার প্রতিবাদী মানুষের ঢেউ ইতিহাস তৈরি করলো। যে আন্দোলন শুরু হয়েছিলো ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’ স্লোগানে,তা আরও সংগঠিত হতে থাকলো, সেই আন্দোলন যেমন আর জি করের বিচার চায়, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সিন্ডিকেট রাজ উপড়ে ফেলতে চায়, তেমনি ঘরে-বাইরে-কর্মক্ষেত্রে, দিনে-রাতে মেয়েদের ট্রান্স, কুইয়ার মানুষদের নিরাপত্তা চায়, ধর্ষণ সংস্কৃতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চায়।
কিন্তু আগস্ট পেরিয়ে সেপ্টেম্বর, ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’ স্লোগানে উত্তাল বাংলায় এখনো বিচার পায়নি মেয়েটি। রাজ্য প্রশাসন থেকে সিবিআই তদন্ত করে কে বা কারা আসল অপরাধী আজও সনাক্ত করে আদালতে পেশ করতে পারলো না। কিন্তু আমরা কী দেখতে পাচ্ছি যে গণ আন্দোলন যখন ন্যায় বিচার চাইছে রাজ্য সরকারের কাছে, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও পথে নেমে পড়লেন বিচার চাইয়ের দাবিতে। অপরাধীর ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই করে চিৎকার করছেন। তিনি বলছেন, ‘যারা ধর্ষণ করবে সাত দিনে ফাঁসি করিয়ে দেবো, দুর্বত্তরা ঠান্ডা হয়ে যাবে।’ এবং তাই জন্য তিনি তার দলের ছাত্রদের রাস্তায় রাস্তায় পিকেটিং করতে বলছেন। তাঁর সঙ্গে সুর মেলাচ্ছেন, রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলও। শোনা যাচ্ছে, তারাও এই দাবীকে সমর্থন করতে চলেছে।
ফাঁসি কেন ধর্ষণের সুবিচার নয়, সে কথায় পরে আসছি, কিন্তু মমতা ব্যানার্জী ও তার দল যে সাত দিনের মধ্যে ফাঁসির কথা বলছে, কাকে ফাঁসি দেবার কথা বলছেন? ঘটনার তদন্ত তো এখনো সেই তিমিরেই। তার পক্ষ থেকে ধর্ষণের বিরুদ্ধে ফাঁসির আইন আনার জন্য যে তৎপরতা দেখানো হচ্ছে, সেই তৎপরতা ন্যায়বিচারের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য থাকলে রাজ্যবাসী বুঝতো দোষীদের শাস্তির ব্যাপারে তার সত্যিই কোনো সদিচ্ছা আছে। কারণ তিনিই স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রী । জবাব দেওয়ার দায় তাকেই নিতে হবে। কিন্তু তা তো হচ্ছে না। উপরন্তু কি দেখছি তদন্তের নামে প্রহসন চলছে। যে সরকারি ডাক্তার, আধিকারিক পুলিশ বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ আসছে প্রমাণ লোপাটের, তারা চিহ্নিত হবার পরেও সরকারি পদে তারা এখনো বহাল, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এর মধ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভিতর চলা যে দুর্নীতির কঙ্কাল চেহারাটা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে তাকে আড়াল করার চেষ্টা হিসেবে কি তাদের এই প্রতিবাদ নাটক? ফাঁসি সরকারের কাছে সহজ সমাধান। রাজনৈতিক ও সরকারি ক্ষমতাবান অপরাধীদের বাঁচাতে অপেক্ষাকৃত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকভাবে কম ক্ষমতাবান একজন অপরাধীকে বলির পাঁঠা চিহ্নিত করে ফাঁসির কাঠে ঝুলিয়ে দিলেই তো কেল্লা ফতে। বিচার হয়েছে বলে জনরোষও ঠান্ডা হয়ে আসবে। আর সমস্ত অপরাধীরা আবার প্রশাসনের ক্লিনচিট পেয়ে ঘুরে বেড়াবে।
আমরা চাই ন্যায়বিচার হোক। প্রত্যেকটা দোষীর নাম প্রকাশ্যে আসুক, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাক। যে মানসিকতা মেয়েদের ধর্ষণের জন্য দায়ী করে তার পরিবর্তন হোক। ঘর, পরিবার, কর্মক্ষেত্র, রাস্তার অলি-গলি, মেয়ে এবং প্রান্তিক লিঙ্গ-যৌনতার মানুষদের জন্য নিরাপদ হোক। কিন্তু ফাঁসি তো সেই ন্যায়বিচার, নিরাপত্তা দিতে পারে না। অনেকেই মনে করেন ধর্ষণের কঠিনতম শাস্তি মানে ফাঁসি। সুবিচারের সাথে ফাঁসিকে অনেকেই গুলিয়ে ফেলেন। ২০১২ সালে নির্ভয়ার ধর্ষণ ও হত্যার পরে ধর্ষণ বিরোধী আইন তৈরির জন্য যে ভার্মা কমিশন গঠিত হয়েছিল, সেই কমিশন বলেছিল ধর্ষণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দিলে সেটা হবে একটি পশ্চাৎমুখী পদক্ষেপ। তবুও নির্ভয়ার চার জন ধর্ষককে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল, তাতে কী ধর্ষণ কমানো গেছে?
আমাদের বুঝতে হবে আর জি কর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে ডাক্তারকে নির্মমভাবে ধর্ষণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বা কোনো ব্যতিক্রম নয়। এটি গভীরভাবে রাজনৈতিক যার সাথে জড়িয়ে আছে এক ক্ষমতার গল্প। এটি আমাদের সমাজের গভীরভাবে গেঁথে থাকা পিতৃতান্ত্রিক ক্ষমতা ও ধর্ষণ সংস্কৃতির একটি চূড়ান্ত পর্যায়। যে ধর্ষণ সংস্কৃতির মানসিকতা থেকে কলেজের অধ্যক্ষ মেয়েটির রাতে থাকাকে দায়ী করেছিলেন, যে মানসিকতা থেকে ধর্ষণের জন্য মেয়েদের স্কার্টের উচ্চতা বা মেয়েটির যাপনকে দায়ী করা হয়, যে মানসিকতা থেকে দলিত মেয়েকে ‘অচ্ছুত’ মনে করলেও তাকে ধর্ষণ করে, প্রমাণ লোপাটের জন্য তার দেহ জ্বালিয়ে দেওয়া যায়, বা ধর্ষকদের মালা দিয়ে বরণ করা থেকে তাদের সমর্থনে মিছিল বের করা যায়। ২০১৮ সালে কাঠুয়ার আট বছরের মুসলিম শিশুকে ধর্ষণ করে খুন করেছিল সাত জন হিন্দু পুরুষ, তাদের মধ্যে যিনি প্রধান অভিযুক্ত তিনি ছিলেন মন্দিরের পুরোহিত। নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলন লড়াইয়ের কর্মী রাধারানীর যৌনাঙ্গ লাঠি ঢুকিয়ে দেবার পর, ধর্ষকেরা বলেছিল, ‘শালি জমি বাঁচাতে এসেছিস?’ আদিবাসী বলেই মাওবাদী সন্দেহে সোনি সুরির যৌনাঙ্গে পাথর কুচি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। আমাদের দেশে অত্যন্ত নিয়মিত এবং নির্লজ্জভাবে নৃশংস যৌন নির্যাতন ঘটে, বিশেষ করে আদিবাসী এবং দলিত নারী, প্রান্তিক লিঙ্গ-যৌনতার মানুষদের উপর। সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলিতে যেমন জম্মু ও কাশ্মীর, মণিপুর এবং ছত্তিশগড়ে বহু সংখ্যক নারীর শরীর একইভাবে লক্ষ্যবস্তু হয়। এই ঘটনাগুলো উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হলো এইটাই যে ধর্ষণ শুধু নারীর বিরুদ্ধে শারীরিক ক্ষমতার প্রদর্শন নয়, এই ক্ষমতা পিতৃতন্ত্রের ক্ষমতা, উচ্চবর্ণ, ধর্ম, জাতি অথবা রাষ্ট্রের ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত থাকে। শ্রেণী, জাত, পাতের ‘উচ্চ’ অবস্থান ও রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের জন্য মেয়েদের শরীর যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠবে ততদিন যতদিন না আপনি, আমি সমাজ কাঠামোতে আঘাত হানবো।
মৃত্যুদণ্ড কেন সমাধান নয় তার আরো একটা জোরালো কারণ হচ্ছে এই সমাজে বেশিরভাগ যৌন অপরাধ পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী, বন্ধু, শিক্ষক, অভিভাবক এবং অন্যান্য পরিচিতদের দ্বারা সংঘটিত হয়। আর জি করের চিকিৎসক ধর্ষিতা হয়েছেন তার পরিচিত কর্মক্ষেত্রে, প্রিয়াঙ্কা হাঁসদাকে গলার নলি কেটে খুন করেছেন তারই এক পুরুষ বন্ধু। বেশিরভাগ মেয়েদের উপর অ্যাসিড আক্রমণ ঘটে পরিচিতদের দ্বারাই। আর বৈবাহিক ধর্ষণকে তো আমাদের দেশের আইন ধর্ষণ বলেই মানে না। তার শিকার যে কত মেয়ে প্রতিদিন হচ্ছে তার হিসাবও কেউ রাখে না। পরিচিতদের দ্বারা ধর্ষণের রিপোর্টের হার অত্যন্ত কম। সেই রিপোর্টের পথে পরিবারই বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফাঁসির আইন হলে খুব স্বাভাবিকভাবেই পরিচিতদের বাঁচানোর এই ঘটনার রিপোর্ট আরো কমে যাবে। এমনকি ধর্ষক যখন জানবে ধর্ষণ করলে ফাঁসি, খুন করলেও ফাঁসি তখন সে প্রমাণ লোপাটের জন্য নির্যাতিতাকে খুন করেই রেখে যাবে।
যৌন অপরাধ বন্ধ করার জন্য কোনো দ্রুত সমাধান নেই। কিন্তু সরকারগুলো যেটা করতে পারে, তা হলো একটি লিঙ্গ-ন্যায়বিচারমূলক তদন্ত প্রক্রিয়া এবং দ্রুত বিচার কার্য সম্পাদন করা, এবং প্রতিটি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে, তাদের সামাজিক অবস্থান, ক্ষমতার স্তর, শ্রেণী বা জাতি নির্বিশেষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। পুলিশ - প্রশাসন ব্যবস্থাকে লিঙ্গ সংবেদনশীল করে তোলা। বিভিন্ন সরকারি স্কুল, কলেজ, প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে লিঙ্গ সাম্যের পাঠ চালু করা, তার কাঠামো ও ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা এবং ধর্ষণ সংস্কৃতি দূর করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কিন্তু সরকারগুলো সেইটা করবে না, কারণ তারা তাদের সুবিধার জন্যেই রাষ্ট্রের পিতৃতান্ত্রিক ক্ষমতার কাঠামো ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে চায়।
আজকে যখন এই রাজ্যে ন্যায় বিচার ও লিঙ্গ সাম্যের আন্দোলনের এক পরিসর তৈরি হচ্ছে। ঘর থেকে বাহির সর্বস্তরের স্বাধীনতার দাবিতে মেয়েরা ও প্রান্তিক লিঙ্গের মানুষেরা রাস্তায় তাদের অধিকার বুঝে নিতে চাইছেন, তখন তার উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে মমতা ব্যানার্জীর মৃত্যুদণ্ডের দাবি তোলা যেমন একদিকে ন্যায়বিচারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে রাজ্যের মানুষেরা, বিশেষ করে মেয়েরা, ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে দিদিকেই বেছে নিয়েছিলেন, তারাও তৃণমূলের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। এই ভয়ংকর পরিস্থিতিতে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে বিজেপি। দেশজুড়ে যারা মেয়েদের প্রেম ভালোবাসা থেকে শিক্ষা সমস্ত অধিকারকে অস্বীকার করে এসেছে এবং নির্যাতিতা নয়, দলগতভাবে ধর্ষক বা যৌন হেনস্থাকারীদের সাথ দিয়েছে, তাদের আর জি করের ঘটনায় এরকম তৎপরতা যে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের বিচার চাওয়া নয়, আসল অভিসন্ধি হলো রাজ্যে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করে রাজনৈতিক ক্ষমতাদখল, সেটা আমরা জানি। গত ২৭ আগস্ট ছাত্র সমাজের নামের আড়ালে বিজেপি আর এস এস বাহিনী নবান্ন অভিযান ডেকেছিল, তাদের মধ্যে একজন নিজেই যৌন হেনস্থার অভিযোগে অভিযুক্ত। এই ধর্ষণ সংস্কৃতির ধারক বাহকেরা ন্যায়বিচারের আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়। এর অভিমুখ গদি দখলের দিকে ঘোরাতে চায়। তাই রাজ্যের এই সংকটেও আন্দোলনের কর্মীদের,বাংলার মানুষেদের এদের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে।
সমাজে ঘটে চলা যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইটা সহজ নয়। শাসক কখনও ফাঁসির দাবি তুলে, কখনও তদন্ত প্রক্রিয়াকে দীর্ঘ করে দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। কিন্তু যেটা আশার, সেটা হলো যারা আন্দোলন করছেন তাদের দাবি মৃত্যুদণ্ড নয়, ন্যায়বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। এবং এই আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাবার জন্য বিভিন্ন মহিলা, ছাত্র, ট্রান্স, কুইয়ার, সংগঠনের মধ্যেও এক যৌথতা গড়ে উঠছে, তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লিঙ্গ সাম্যের দাবিতে পিতৃতান্ত্রিক ও জাতি/সম্প্রদায় ভিত্তিক ক্ষমতার কাঠামো ভেঙে ফেলার আওয়াজ তুলছে। অন্যদিকে নার্স - ডাক্তার সহ বিভিন্ন বিভাগের শিল্পীরাও এগিয়ে আসছে। এই যৌথতা বজায় থাকুক। লিঙ্গ সাম্যের লড়াইয়ে আমাদের একসঙ্গে একটি দীর্ঘ এবং জটিল পথ অতিক্রম করতে হবে।