বদনপুস্তকের বন্ধুদের অনেককে শারীরিকভাবেও চিনি। তেমনই এক বন্ধু সৌপর্ণ তাঁর দেওয়ালে সুশান্ত রাজপুতের আত্মহত্যার পর একটি ছবি সেঁটেছিলেন যেখানে পরিহিত টি শার্টে লেখা ছিল Don’t be a d3S/dt3। যাকে অঙ্ক থেকে ইংরেজিতে পরিবর্তিত করলে দাঁড়ায় Don’t be aJerk। জার্ক কথাটি ইংরেজিতে গালগাল দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। সেটিকে এত পরিশীলিতভাবে d3S/dt3 দ্বারা প্রকাশ করে যে তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু দু:খ দিয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহের ঘটনাক্রমে মনে হয়েছে কেন্দ্র ও বিহারের শাসকদল মৃত্যু পরবর্তীতে সুশান্তকে বাস্তবিকই জার্ক-এ পরিণত করেছে। তা নাহলে “সুশান্তের জন্য ন্যায়”এর প্রচার তাঁকেই ড্রাগ কেনাবেঁচার আর্থিক সংস্থানের জন্য ও ড্রাগ কেনার জন্য ড্রাগ সিণ্ডিকেটের সদস্য হিশেবে রিয়ার সহযোগী ও একজন ড্রাগ সেবনকারী নেশার্ত হিশেবে সাব্যস্ত করে! অপরদিকে যারা মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (এনসিবি)কে কাজে লাগিয়ে রিয়ার সঙ্গে সুশান্তকেও ড্রাগ সিণ্ডিকেটের সদস্য বলে চিহ্নিত করার বন্দোবস্ত করল, সেই বিজেপিই বিহার নির্বাচনে ‘সুশান্তকে ভুলব না’ পোস্টার নিয়ে ভোট চাইতে হাজির হয়েছে।এ সেই সুশান্ত রাজপুত, ‘কেদারনাথ’ সিনেমায় মুসলিম যুবকের ভূমিকায় অভিনয় করে হিন্দু ব্রাহ্মণের মেয়ের সঙ্গে প্রণয়ের জন্য বিজেপি সমর্থকেরা যাকে ‘লাভ জেহাদের, প্রচারের জন্য দায়ী করেছিল।সুশাসনবাবুর শাসনে কোভিড-বন্যা-ক্ষুধা-বেকারি-খুনখারাপিতে ধ্বস্ত সে রাজ্য। তাই সুশান্তের মৃত্যুজনিত আবেগকে ব্যবহার করতে উদগ্রীব বিজেপি।
রিয়া চক্রবর্তীর নাম সেপ্টেম্বর মাসের আগে আমি শুনিনি।মাসের গোড়ায় একটি ইউটিউব চ্যানেলের খবরে রিয়া চক্রবর্তীকে এনসিবি জেরা করছে বা করবে শুনেছিলাম। সেটি থেকে বুঝেছিলাম যে সুশান্ত-এর সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে থাকা একজন অভিনেত্রী হলেন রিয়া, ও সুশান্তের মৃত্যুর জন্য তাকে দায়ী করেছে বিজেপির তাঁবে থাকা সমস্ত প্রচার মাধ্যম। ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকালে ইউটিউবে অজিত আঞ্জুমের ভাষ্যে জানলাম যে রিয়াকে এনসিবি গতকাল ৩দিন ধরে জেরা করার পর গ্রেফতার করেছে, ‘ড্রাগ সিন্ডিকেট’এ যুক্ত থাকার অপরাধে, খবর মোতাবেক রিয়া এবং সুশান্ত দুজনেই ড্রাগের জন্য অর্থ সরবরাহ করত ও ড্রাগ কিনত। রিয়াকে ছাড়াও তাঁর ভাই, এবং আরো কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে এনসিবি। তাঁর কথার মাঝে একজন সংবেদনশীল সাংবাদিক হিশেবে অজিতের গলা জড়িয়ে আসছিল অনুশোচনায়, তিনি বলছিলেন কীভাবে চক্রব্যুহে বাঁধা হল একটি মহিলাকে কেবল বিহার নির্বাচনে দখলের জন্য নয়, মুম্বাইএর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কোটি কোটি টাকা নিয়ন্ত্রণের জন্য, মহারাষ্ট্রের রাজ্য সরকারকে দখলের জন্য, আর সেই কাজে কীভাবে সঙ্গত করেছে শাসক দলের অনুগত, নিবেদিতপ্রাণ টিভি চ্যানেলগুলি।
ইতিমধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে যতদূর সম্ভব ওযাকিবহাল হতে চেষ্টা করি। বোঝা যায় যে, একদল ভয়ঙ্কর মাফিয়া শয়তানের হাতে দেশের শাসন চলে গিয়েছে, যারা ক্ষমতার জন্য সমস্ত রকম অপরাধ করতে সক্ষম। গণতন্ত্রের যে আবরণটুকু ছিল তাকে ক্রমাগত খুলে ফেলা হচ্ছে। যে ফ্যাসিস্ট ক্ষমতা অর্জন করছে তাঁরা তা ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে কেবল অর্থনৈতিকভাবেই নয, সামাজিকভাবেও অস্তিত্বহীন ও নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। কোনোভাবেই সুশান্ত বা রিযা রাজনীতির আঙিনায় ছিলেন না, তাঁদের সম্পর্কেও ছিল না কোনো দলীয় রাজনীতি, কিন্তু সেই অরাজনৈতিক যুগলের সম্পর্ক ও একটি দু:খজনক অনভিপ্রেত মৃত্যুকেও কী অবলীলায়, কোনোরকম দ্বিধা ব্যতিরেকে বিহারে ক্ষমতা দখলের জন্য রাজনীতির ঘুঁটি বানিয়ে ফেলা হল। এতদিন অবধি যেসকল নাগরিক নিশ্চিন্তে ছিলেন যে শাসকের বিরোধিতা না করলে কোনো অত্যাচারের শিকার হবেন না, তাঁরা সচেতন হলে বুঝতে পারবেন কেউ নিরাপদ নয় এই ফ্যাসিস্ট জমানায়।
সুশান্তের আত্মহত্যাকে কীভাবে রাজনীতিতে ব্যবহার করা হবে তাঁর জন্য পরিকল্পনা করতে সময় নেয় শাসক দল। প্রথমে বিজেপির অভিনেত্রী মুখ কঙ্গনা ও বিজেপির স্বজন টিভি চ্যানেলগুলি সুশান্তের মৃত্যুর জন্য বলিউডের স্বজনপোষণ নিয়ে কামান দাগতে থাকে। সেবিষয়ে বেশিদূর এগোনো না গেলে আত্মহত্যার প্রায় ৬ সপ্তাহ পর সুশান্তর বাবা বিহারে রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে এফআইআর করেন (তাকে দিয়ে করানো হয়?)। কারণবিহার নির্বাচন সমাগত।রাজ্য সরকার অধিক বিলম্ব না করে তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইএর হাতে তুলে দেয়। সেই তুলে দেওয়া, মহারাষ্ট্র সরকারের বিরোধিতা সত্বেও, সাম্প্রতিক কালের রীতি অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক অনুমোদিত হয়।
সিবিআই তদন্তের বিষয ছিল, সুশান্ত খুন হয়েছে কিনা, বা সুশান্তকে আত্মহত্যায প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে কিনা; এবং তেমন কিছু ঘটলে রিয়া তার জন্য দায়ী কিনা। সে ব্যাপারে তেমন কোন ক্লু না পাওযায় সিবিআই রিয়াকে গ্রেফতার করতে পারে না। ওদিকে অর্থ আত্মসাতের জন্য এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তদন্ত চালু করে। কিন্তু তেমন কোন অসঙ্গতি না পেয়ে গ্রেফতার করতে অসমর্থ হয়। এদিকে সেই তদন্তের সময়ে ইডি হোয়াটসএ্যাপ মেসেজে বহুকাল আগে রিয়ার সঙ্গে একজন হোটেল ব্যবসায়ীর ড্রাগ সংক্রান্ত আলাপের সন্ধান পায়। তারা সেটি এনসিবির কাছে পাঠিয়ে দেয়। এনসিবি দুজন মাদক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে তাদের কাছে ৫৯ গ্রাম গাঁজা বা মারিজুয়ানা পায়। তাদের আদালত জামিনও দিয়ে দেয়। কিন্তু তাদের কাছ থেকে জানতে পারে রিয়া ও সুশান্তের মাদক সংযোগ। এরপরে ঘটনাক্রম চিত্রনাট্য অনুযায়ী এগোয়। দুদিন তিনদিন ধারাবাহিক জেরা করে গ্রেফতার করা হয় কয়েকজনকে। রিয়ার ভাইকেও গ্রেফতার করা হয়। সবশেষে (এখন অবধি) রিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কাহিনিটা যেন ঈশপের নেকড়ে বাঘ আর ভেড়ার গল্প। যে নেকড়ে জল ঘোলা করার জন্য কিছুতেই ভেড়াকে দায়ী করতে না পেরে, তাঁর বাবাকে, সেটিও না পেরে ঠাকুরদাকে দায়ী করে ভেড়াকে মেরে ফেলার যুক্তি খুঁজেছিল। এখানেও, রিয়া দোষী, সুশান্তকে খুনের জন্য, নাহোক আত্মহত্যায় প্ররোচনার জন্য, নাহলে অর্থ আত্মসাতের জন্য, তাতেও নাহলে ড্রাগের জন্য। দোষী তাঁকে হতেই হবে।
যতদিন অবধি না রিযার গ্রেফতারি হয়েছে ততদিন অবধি বিজেপির কাছে বিক্রি হওয়া প্রচার মাধ্যম, টিভি, খবরের কাগজ, সামাজিক মিডিয়া, ফেসবুক, হোয়াটসএ্যাপ ক্রমাগত জনমানসে চাপ তৈরিকরেছে যে তাঁকে গ্রেফতার করতেই হবে। কেউ এখন সুশান্তের হত্যার জন্য বা আত্মহত্যার জন্য রিয়া চক্রবর্তীকে দায়ী করছে না। বলিউডের বহুচর্চিত বংশবাদ বা স্বজনপোষণ এখন চর্চার বিষয় নয়, সুশান্তের অর্থ আত্মসাতের লোভনীয় কাহিনী উধাও। যারা সেই গল্প ফেঁদেছিল, টিভিতে, টুইটারে ফেসবুকে ঢালাও প্রচার করেছিল তাঁরা কিন্তু একবারও মিথ্যা রটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করেনি, বলেনি, আমরা ভুল বলেছিলাম। যুক্তিকে পাল্টে বলতে শুরু করেছে, কেউ অবসন্নতার রোগে রুগ্ন প্রেমিককে ড্রাগ (গাঁজা) যোগাড় করে দেয়? এইরকম পরিস্থিতিতে কী করা উচিৎ সে সম্পর্কে যেন সবাই ওয়াকিবহাল, সকলেই যেন এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সময় কাটিয়েছে। কোনো সংবাদ মাধ্যম, মায় এনসিবি উচ্চারণ করছে না, ড্রাগ বলতে কী বোঝানো হয়েছে। সাধারণত, এদেশে ড্রাগ বলতে গাঁজাকে বোঝানো হয় না, তাই এনসিবি গাঁজা কেনাবেচা বা সেবনের কথা বলছে না, মারিজুযানা উদ্ধার ও ড্রাগ এই কথাই প্রচারে আসছে। এনডিপিএস আইনে মারিজুয়ানা শব্দটিই নেই। অনেকেই জানেন না মারিজুয়ানা হচ্ছে গাঁজার অন্য নাম। ফলে ড্রাগ শব্দটি ভয়াবহতার আশঙ্কা তৈরি করে মনের মধ্যে (যা গাঁজা ততটা করেনা)। জনসাধারণের সেই মানসিকতাকেও কাজে লাগানো হচ্ছে রিযার বিরুদ্ধে মতামত গঠনের উদ্দেশ্যে। গাঁজার জন্য গ্রেফতার করতে হলে এদেশে বিজেপির অন্যতম বৃহৎ সমর্থকগোষ্ঠি সাধুদের সকলকেই প্রায় গ্রেফতার করতে হবে। বোঝাই যাচ্ছে কেন্দ্রের শাসক দলের এক রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হয়েছে একটি মধ্যবিত্ত পরিবার। চক্রান্ত কেন্দ্রীয় শাসক দলের সর্বোত্তম রাজনৈতিক অস্ত্র। দাঙ্গা বাঁধিয়ে, সেই দাঙ্গার জন্য দাঙ্গায় আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর একাংশকে এবং দাঙ্গার বিরোধী মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকারের আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের দায়ী করে ও সম্ভব হলে গ্রেফতার করে; প্রকৃত দাঙ্গাকারী ও দাঙ্গার উসকানিদাতা এবং পরিকল্পনাকারদের আড়াল করে; আধাসেনা বা সেনা বাহিনীর কনভয়ে বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে কয়েক ডজন সেনাকে হত্যা করে; বিশ্বদ্যালয়ের মধ্যে গুণ্ডা লেলিয়ে- সব রকম চক্রান্তই দলটির তূণীরে ছিল। সুশান্তের অস্বাভাবিক মৃত্যু দেখিয়ে দিল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের জন্য সম্পূর্ণ রাজনীতির বৃত্তের, আন্দোলনের বৃত্তের বাইরে থাকা সাধারণেরও নিস্তার নেই বিজেপির হাত থেকে। এই শাসকের জমানায় কেউই নিরাপদ নয়।
ফ্রেডরিক গুস্তাভ এমিল মার্টিন নিয়েমোলারের, যিনি জার্মানীতে সূচনায় হিটলারের সমর্থক ছিলেন, সেই বহুশ্রুত ফ্যাসিবাদবিরোধী কবিতাটি মনে পড়ছে, “যখন ওরা প্রথমে কমিউনিস্টদের জন্য এসেছিল, আমি কোনো কথা বলিনি কারণ আমি কমিউনিস্ট নই। .....................................শেষবার ওরা ফিরে এলো আমাকে ধরে নিয়ে যেতে, আমার পক্ষে কেউ কোনো কথা বলল না, কারণ বলার মত তখন কেউ আর বেঁচে ছিল না।“ ।সেনাবাহিনীর প্রাক্তনী হিশেবে রিয়ার বাবা ও তাঁর পরিবার নির্ঘাত শ্লাঘা অনুভব করতেন যে তাঁরাই দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ নাগরিক, এখনতো তেমনটাই দস্তুর। রিয়ার পক্ষ থেকেও মোদিজীর নোট বাতিলের পক্ষে টুইট বাজারে ঘুরছে। ওদিকে ভিমা কোরেগাঁও মামলায় একের পর এক মানবাধিকার কর্মী, সোমা সেন, রোনা উইলসন, গনজালভেজ, সুধা ভরদ্বাজ, গৌতম নাওয়ালখা, আনন্দ তেলতুম্বে, ভারভারা রাও, হানি বাবু প্রমুখ যখন এনআইএ দ্বারা গ্রেফতার হচ্ছেন;পশ্চিমবঙ্গের গণআন্দোলনের মানবাধিকার আন্দোলনের কর্মী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞদের অন্যতম, কলকাতার ইণ্ডিযান ইনস্টিটুট অফ সায়েন্স এডুকেশনএণ্ড রিসার্চের মলিকুলার বায়োলোজিস্ট অধ্যাপক পার্থসারথী রায়কে যখন গ্রেফতারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, একটি পরিপূর্ণ চক্রান্তের ভিত্তিতে, তখন নিশ্চিতভাবে চক্রবর্তী পরিবার ভারতের আরো কয়েক কোটি মধ্যবিত্ত পরিবারের মত নিশ্চিন্ত ছিলেন। যখন দিল্লি দাঙ্গার পরে দাঙ্গাবাজদের আড়াল করে দাঙ্গায় আক্রান্তদের পক্ষে যারা দাঁড়িয়েছেন, যারা সিএএ-এর বিরোধিতা করেছেন চক্রান্ত করে তাদের গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ, সম্পূর্ণ ভুয়ো অভিযোগে সম্প্রীতি ও ঐক্যের বার্তা বহনকারী বক্তৃতাকে বিদ্বেষের বক্তৃতার মোড়ক দিয়ে গ্রেফতার করছে ড: কাফিল খানকে, তখনো আশ্বস্ত থেকেছেন রিয়া ও তার আত্মজনেরা, হয়তো কিছুই ভাবেননি, বা ভাবলেও ভেবেছেন যে মুম্বাই পুলিশ, এনআইএ, দিল্লি পুলিশ বা উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আইন মোতাবেক সঠিক কাজই করছে। অবশ্য এমনটাইতো মধ্যবিত্তের যাপন ভাবনা। আজ ইন্দ্রজিৎবাবু বলছেন, কীভাবে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারকে ধ্বংস করে দিতে হয় তা জানিয়ে দিচ্ছে তাঁর দেশ। চোখ কান খুলে রাখলে তিনি দেখতে পেতেন প্রতিদিন প্রতিরাতে স্বদেশ স্বজনকে কীভাবে যন্ত্রণা দেয় তাঁর দেশ! রাজনীতির ছোঁয়া বাচানো একটি মধ্যবিত্ত পরিবারকেও রেয়াত করে না রাজনীতির প্রয়োজনে চক্রান্তের বেড়াজালে ফাঁসাতে এই ফ্যাসিস্ট সরকার। বহু মানুষ আহ্লাদিত, উল্লসিত একটি মেয়েকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে, সুশান্তকে খুনের দায়ে না হোক, গাঁজা সংগ্রহের দায়ে তো তিনি অভিযুক্ত হয়েছেন, এতেই বহুর মর্ষকামী (যে মর্ষকামীতাকে উশকে দেওয়াই ফ্যাসিস্টদের কাজ) আনন্দ, সমস্ত বিজেপি সমর্থকদেরতো বটেই। তাঁরা ভুলে যাচ্ছেন, আপনি বিজেপি সমর্থক হোন বা না হোন, এই ফ্যাসিস্টরা তাঁদের ক্ষমতার স্বার্থে যদি প্রয়োজন পরে কাউকে রেয়াত করবে না, দরকারে ফাঁসাবে যে কাউকে। হয়তো তখন কেউ থাকবে না বলার জন্য!
“যখন ওরা প্রথমে কমিউনিস্টদের জন্য এসেছিল, আমি কোনো কথা বলিনি কারণ আমি কমিউনিস্ট নই। .....................................শেষবার ওরা ফিরে এলো আমাকে ধরে নিয়ে যেতে, আমার পক্ষে কেউ কোনো কথা বলল না, কারণ বলার মত তখন কেউ আর বেঁচে ছিল না”।ভিমা কোরেগাঁও মামলায় একের পর এক মানবাধিকার কর্মী, সোমা সেন, রোনা উইলসন, গনজালভেজ, সুধা ভরদ্বাজ, গৌতম নাওয়ালখা, আনন্দ তেলতুম্বে, ভারভারা রাও, হানি বাবু প্রমুখ যখন এনআইএ দ্বারা গ্রেফতার হচ্ছেন; যখন দিল্লি দাঙ্গার পরে দাঙ্গাবাজদের আড়াল করে দাঙ্গায় আক্রান্তদের পক্ষে যারা দাঁড়িয়েছেন, যারা সিএএ-এর বিরোধিতা করেছেন চক্রান্ত করে তাদের গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশতখন নিশ্চিতভাবে চক্রবর্তী পরিবার ভারতের আরো কয়েক কোটি মধ্যবিত্ত পরিবারের মত নিশ্চিন্ত ছিলেন। এমনটাইতো মধ্যবিত্তের যাপন ভাবনা। আজ ইন্দ্রজিৎবাবু বলছেন, কীভাবে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারকে ধ্বংস করে দিতে হয় তা জানিয়ে দিচ্ছে তাঁর দেশ। চোখ কান খুলে রাখলে তিনি দেখতে পেতেন প্রতিদিন প্রতিরাতে স্বদেশ স্বজনকে কীভাবে যন্ত্রণা দেয় তাঁর দেশ!একটি মেয়েকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে বহুর মর্ষকামী (যে মর্ষকামীতাকে উশকে দেওয়াই ফ্যাসিস্টদের কাজ) আনন্দ। তাঁরা ভুলে যাচ্ছেন, আপনি বিজেপি সমর্থক হোন বা না হোন, এই ফ্যাসিস্টরা তাঁদের ক্ষমতার স্বার্থে যদি প্রয়োজন পরে কাউকে রেয়াত করবে না, দরকারে ফাঁসাবে যে কাউকে। হয়তো তখন কেউ থাকবে না বলার জন্য!