সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক হওয়ার পরে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন পাশ করে গৌহাটি হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন ও ধাপে ধাপে প্রধান বিচারপতি হন, কয়েক লক্ষ টাকার বেতন ও অন্যান্য সুবিধে ভোগ করতে থাকেন। এখন তিনি রাজ্যসভারর সদস্য হয়ে রাজনীতিতে এলেন। তিনি কস্মিন কালেও সম্ভবত বস্তারের আদিবাসী ঝুপড়ি, কাশ্মিরের গরিব মানুষের কুটির, বা হাজংএর দরিদ্র অধিবাসীর বস্তি দেখেন নি, রাত কাটানো তো দূরের কথা। তিনি জীবনের সমস্ত বিলাসী উপকরণ ভোগ করেন, কিন্তু তার উপরেই ন্যস্ত ছিল সেই সমস্ত মানুষের বিচার যারা তাদের শখ আহ্লাদ ত্যাগ করেছেন ওই সমস্ত গরিবদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই--এ সামিল হওয়ার জন্য।
সুধা ভরদ্বাজ প্রোথিতযশা আমেরিকা প্রবাসী শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ রঙ্গনাথ ভরদ্বাজ ও কৃষ্ণা ভরদ্বাজের আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারি কন্যা, যার জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিকত্ব পাকা ছিল। তিনি ১১ বছর বয়সে এদেশে এসে থেকে যান ও ১৮ বছর বয়সে ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন, আমেরিকার নাগরিকত্ব ত্যাগ করে। আইআইটি কানপুর থেকে অঙ্ক নিয়ে পাশ ও আইন পাশ করার পরে শিক্ষকতার নিশ্চিন্ত চাকুরি ছেড়ে ছত্তিশগড়ের দরিদ্র শ্রমিক ও আদিবাসীদের মধ্যে কাজ করতে থাকেন। ৩০ বছর তাদের মধ্যে কাজ করেন। মাওবাদি দমনের নামে আদিবাসীদের উপরে ভয়ঙ্কর পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে অধিকার আন্দোলন করেন, আদিবাসীদের আইনি সহায়তা প্রদান করেন।
একজন ইতিহাস ও আইন পাশ করার পরে সেই আইন কীভাবে ধনী ও অত্যাচারীদের স্বার্থে বেশী বেশী করে কাজে লাগানো যায় তার জন্য কাজ করেছেন, অর্থ ও প্রতিপত্তি পেয়েছেন, পুরস্কৃত হয়েছেন অত্যাচারীর দ্বারা। অপরজন অঙ্ক ও আইন পাশ করে কীভাবে সেই আইনের সাহায্যে গরিবদের উপর বড়লোকের অত্যাচারকে রোখা যায় তার জন্য চেষ্টা করেছেন, গরিবের কুটিরে, বস্তিতে, শ্রমিকের ঝুপড়িতে রুটি ভাগ করে খেয়েছেন। প্রথমোক্তরা বিচার করে তাঁকে জেলখানায় রাখতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক।
প্রশ্ন জাগে, আমরা কী করব?
Cry, my beloved Country! Cry!