পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

বিশ্বকাপের শেষ আটে মুখোমুখি নেদারল্যান্ডস-আর্জেন্টিনা

  • 04 December, 2022
  • 0 Comment(s)
  • 698 view(s)
  • লিখেছেন : দেবাশিস মজুমদার
আবারও শেষ আটে মুখোমুখি নেদারল্যান্ডস-আর্জেন্টিনা। তাদের দ্বৈরথ দেখা যাবে ৯ ডিসেম্বর তারিখে। ১৯৯৮ সালে কিন্তু প্যাট্রিক ক্লুইভার্ট আর বার্গক্যাম্পের গোলের ওপর ভর করে আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে নেদারল্যান্ডস উঠেছিল সেমিফাইনালে। এবারে এই দুই দলের শেষ আটের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

১৯৭৮ সালের আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ ফাইনালের কুড়ি বছর বাদে ১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা গিয়েছিল কমলা জার্সির সাথে নীল-সাদা জার্সির উপভোগ্য লড়াই। আবার চব্বিশ বছর বাদে আবার সেই শেষ আটেই মুখোমুখি নেদারল্যান্ডস-আর্জেন্টিনা। কাতারের আল-রায়ান শহরের দুই আলাদা স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর রাউন্ডের দুটি অসাধারণ ম্যাচের পর নেদারল্যান্ডস আর আর্জেন্টিনা শেষ আটের লড়াইয়ে একে অন্যেকে প্রতিপক্ষ স্থির করল।

আল-রায়ানের শহরের খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল নেদারল্যান্ডস এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বকাপ যতই এগোচ্ছে ততই যেন উজ্জ্বলতর হচ্ছে মাঠে কমলা জার্সির প্রভাব। কোচ ফ্যান গলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ২০২১ থেকে এখনও পর্যন্ত নেদারল্যান্ডস অপরাজিত রয়েছে। এদিন আগুন ছটার মত প্রতিভাত হল নেদারল্যান্ডসের কমলা জার্সি। তবে গাকপো আজ গোল পেলেন না। কিন্তু কমলা জার্সিতে অসাধারণ খেললেন মেমফিস। তাকে সামলাতেই হিমশিম খেল মার্কিন রক্ষণভাগ। যদিও প্রতি-আক্রমণে সুযোগও তৈরি করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু দিনটা ছিল কমলা জার্সির। খেলার প্রথমার্ধের ১০ মিনিটের মধ্যেই মেমফিস ডিপে অসাধারণ গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। সারাটা ম্যাচ জুড়ে কমলা জার্সির প্রাণকেন্দ্র ছিলেন মেমফিস। একদম প্রথমার্ধের শেষ লগ্নে ডালে ব্লাইন্ডের গোলের পেছনেও বড় ভূমিকা রয়েছে মেমফিসের। দ্বিতীয়ার্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণের ধার বাড়ালেও কমলা জার্সি সবসময়েই ম্যাচে তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিল। কিছুটা খেলার গতির বিরুদ্ধেই পুলিসিচের কর্নার থেকে তৈরি মুভেই রাইটের ব্যবধান কমিয়ে আনা। যখন মনে হচ্ছে মার্কিনরাও সহজে লড়াই থেকে হঠবে না তখনই আমেরিকার বক্সে ওঠা একটা বলকে প্রায় অলক্ষ্যে দাঁড়িয়ে থাকা ডেনজেল ডামফ্রিস জোরালো শটে জালে জড়িয়ে দেন। খেলার বয়স তখন ৮১ মিনিট। তখনই নির্ধারিত হয়ে যায় কাতার বিশ্বকাপের প্রথম শেষ আটে পৌছানো দল হতে চলেছে নেদারল্যান্ডস।

এদিন দ্বিতীয় ম্যাচে আল-রায়ানের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে অসাধারণ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হল আর্জেন্টিনা ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে। তুল্যমূল্য লড়াইয়ে দারুণ জমে উঠল খেলা যদিও ম্যাচের সিংহভাগ রাশ ছিল কোপা বিজয়ীদের পায়েই আর তার জন্য সিংহভাগ দায়ী এলবিসেলেস্তে অধিনায়ক লায়োনেল মেসি। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের আগে তৎকালীন আর্জেন্টিনার কোচ কার্লোস বিলার্দো বলেছিলেন তার দল মানে মারাদোনা এবং তার সঙ্গে অন্য দশ জন। এদিন যেন মেসিও বোঝাতে চাইলেন লায়োনেল স্কালোনির আর্জেন্টিনা মানে লায়োনেল মেসি এবং দলের বাকিরা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মেসি আবারও বোঝালেন তিনি কোন স্তরের ফুটবলার। একাই তিনজন দীর্ঘাদেহী অজি ডিফেন্ডারকে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলা অবস্থায় নিয়ে ঘুরলেন কিন্তু তাকে লায়োনেল মেসিকে বেঁধে রাখা গেল না। নিজে গোল করে মেসি ম্যাজিক তো দেখালেনই গটা ম্যাচে দলকে নিউক্লিয়াসের মত খেলালেন, মেসির পা থেকে উপচে পড়ল স্কিলের জাদু আর সেইসঙ্গে গতির বৈচিত্র। তবে অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রাও বেশ কিছু ভালো প্রতি-আক্রমণ তৈরি করলেন যাতে গোল করার মত পরিস্থিতিও তৈরি হল, তবু এদিন এই ম্যাচ ছিল মেসিময়। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে আবারও একটা অনবদ্য মাটি ঘেঁষা বাঁপায়ের জোরালো শটে বল অজি সকারুদের জালে জড়িয়ে দিয়ে দলকে এগিয়ে দিলেন। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ৫৭ মিনিটে আলভারেজের গোলটা অজি গোলরক্ষকের আর্জেন্টিনাকে উপহার। নিরীহ ব্যাকপাসকে অকারণে অতি ক্যাজুয়ালি নিতে গিয়ে বলকে তাড়া করে আসা দুজন আর্জেন্টিনীয় ফড়োয়ার্ডের চাপে বলটা তিনি একরকম তুলে দিলেন আলভারেজের পায়ে। গোল করতে ভুল করেননি হুয়ান আলভারেজ। প্রতি-আক্রমণে অজিরাও পরে পাওয়া চোদ্দ আনার মত তাদের ব্যবধান কমানোর গোলটা পেয়ে গেল যখন গুডউইনের শট এনজো ফার্নান্ডেজের পায়ে লেগে আত্মঘাতী গোল হিসাবে বল এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে দাঁড় করিয়ে রেখে বল জালে জড়িয়ে যায়। এরপর আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন মেসি। তবে তার সতীর্থরা একের পর এক তার সাজানো বলকে গোলে পাঠাতে ব্যর্থ হয়ে গোল নষ্টের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হন। তার খেসারত হিসাবে ম্যাচের একেবারে অন্তিম লগ্নে একটা সোনালি সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল সোনালি জার্সির সকারুরা। কিন্তু গোলরক্ষক মার্টিনেজ অসাধারণ দক্ষতায় বাঁচিয়ে দেন মেসি বাহিনীকে। তবে নিজের শেষ বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রাখতে নিজের শ্রেষ্ঠ প্রতিভাকেই উজাড় করে দিচ্ছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক।

আবারও শেষ আটে মুখোমুখি নেদারল্যান্ডস-আর্জেন্টিনা। তাদের দ্বৈরথ দেখা যাবে ৯ ডিসেম্বর তারিখে। ১৯৯৮ সালে কিন্তু প্যাট্রিক ক্লুইভার্ট আর বার্গক্যাম্পের গোলের ওপর ভর করে আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে নেদারল্যান্ডস উঠেছিল সেমিফাইনালে। এবারে এই দুই দলের শেষ আটের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে আক্রমণে মেসির পাশাপাশি আর্জেন্টিনাকে তেকাঠির তলায় ভরসা যোগাচ্ছেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।

অন্যদিকে আরেক মার্টিনেজ অর্থাৎ বেলজিয়ামের কোচ রবার্তো মার্টিনেজ এই কাতার বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের হতাশাজনক পারফরম্যান্স এবং গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের দায় নিজের মাথায় নিয়ে জাতীয় দলের কোচের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ষোষণা করেছেন। এখনও পর্যন্ত কাতার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়া দলগুলির মধ্যে বেলজিয়ামের কোচ রবার্তো মার্টিনেজই প্রথম প্রশিক্ষক হিসাবে পদত্যাগ করলেন। 

0 Comments

Post Comment