পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

বিপজ্জনক ভাষায় সিনেমা : দ্বিতীয় পর্ব

  • 01 January, 1970
  • 0 Comment(s)
  • 205 view(s)
  • লিখেছেন : উত্তান বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঙালি সাহিত্যিক সাক্ষাৎকারেই হাসান আজিজুল হক দেশবিভাগের স্মৃতিকে তাঁর মনের স্থায়ী ‘ক্ষত’ বলেছিলেন, ‘এ ক্ষতটি বোধ হয় চিরকাল আমার মধ্যে রয়ে যাবে।’ এই ক্ষত থেকে যাঁদের ক্রমাগত রক্ত চুঁইয়ে পড়ে, একমাত্র তাঁদের পক্ষেই বাস্তুত্যাগীর যন্ত্রণা বোঝা সম্ভবপর। বিপজ্জনক ভাষায় সিনেমা, সাহিত্য, রাজনীতিতে দেশত্যাগী উদ্বাস্তুদের বয়ান ও কুর্দিশ সিনেমা নিয়ে আজ দ্বিতীয় পর্বের লেখা।

কুর্দিশ সিনেমার প্যাকেজে বেশ কয়েকটি ছবি নিয়ে আলোড়ন পড়ে যায় চলচ্চিত্র -রাজনৈতিক সংকেতে কিছু প্রতিবাদ দাগ কেটে যায়।

"দুঃখ রয়েই যায় /
জানিনা তো /
সুখের কথা কবে/"


ছবিঃ সোনি (অস্ট্রীয়া)/ পরিচালক : কুর্দউইন আয়ূব
(২০২২/কালার/৮৮মিনিট/সেন্ট্রাল কুর্দিশ)
কুর্দি অস্ট্রিয়ান ইয়েসমিন এবং তার দুই বন্ধু হিজাব এবং বোরখার ফলে ধর্ম আক্রান্তে যেন ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং কেউ YouTube-এ ছবিটি শেয়ার করে, শীঘ্রই তাদের বিখ্যাত করে তোলে, তারা কুর্দি প্রবাসী সম্প্রদায়ের ইভেন্টগুলিতে পারফর্ম করার আমন্ত্রণ পাচ্ছে,  একটি ঘটনা যা ইয়েসমিনকে অস্বস্তিকর করে তোলে।  সোশ্যাল মিডিয়া এবং আত্ম-আবিষ্কারের মধ্যে ধরা তরুণদের দ্যোতনা নিয়ে একটি ফিল্ম।  

                       
(পরিচালকের জীবনী: কুর্দি-অস্ট্রিয়ান পরিচালক কুর্দউইন আইয়ুব ১৯৯০ সালে ইরাকে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে, তিনি ভিয়েনায় একজন পরিচালক, চিত্রনাট্য লেখক এবং ভিডিও এবং পারফরম্যান্স শিল্পী হিসাবে কাজ করেন, তার ফিচার ডকুমেন্টারি 'প্যারাডাইস!  জান্নাত!'  অস্ট্রিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ডায়াগোনেলে সেরা ক্যামেরা র স্থান পেয়েছিল।  তার ফিচার ডেবিউ(debut) , "সোনি"র বিশ্ব প্রিমিয়ার ছিল ৭২ তম বার্লিনালে প্রতিযোগিতামূলক বিভাগে এনকাউন্টার্স এবং জিডব্লিউএফএফ সেরা ফিচার পুরস্কার পেয়েছে)।


তাই, প্রতিটি ইকো-ডিজাস্টার আখ্যান বা পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপটিক গল্পে কিছু ধরণের উদ্বাস্তু মোটিফ অন্তর্ভুক্ত থাকে, যেখানে লোকেরা ধ্বংস হওয়া শহরগুলি থেকে পালিয়ে যায় বা নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করে। দ্য ডে আফটার টুমরোর মতো , পোস্টম্যান, ওয়াটারওয়ার্ল্ড বা ম্যাড ম্যাক্স অথবা স্টিভেন গোল্ডের উপন্যাস 'ব্লাইন্ড ওয়েভস'। 'ওয়ার অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস'- এ মঙ্গলগ্রহের আক্রমণ  হত্যাকাণ্ড থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থী জাহাজ গুলোর একটি বিশাল বহর তৈরি করেছে। ২০০২ সালের তরুণ প্রাপ্তবয়স্ক উপন্যাস 'এক্সোডাস'- এ দ্বীপবাসীরা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য পালিয়ে যায়, শুধুমাত্র ভয়ঙ্কর উদ্বাস্তু বোট ক্যাম্পে ডুবে যেতে বা ঝাঁপিয়ে পড়ে । এক্সোডাস লিওন উরিসের লেখা ইহুদি প্রবাসী এবং ইসরায়েলের জন্য সশস্ত্র সংগ্রামের একটি উপন্যাসও এটি।

বাঙালি সাহিত্যিক সাক্ষাৎকারেই হাসান আজিজুল হক দেশবিভাগের স্মৃতিকে তাঁর মনের স্থায়ী ‘ক্ষত’ বলেছিলেন, ‘এ ক্ষতটি বোধ হয় চিরকাল আমার মধ্যে রয়ে যাবে।’ এই ক্ষত থেকে যাঁদের ক্রমাগত রক্ত চুঁইয়ে পড়ে, একমাত্র তাঁদের পক্ষেই বাস্তুত্যাগীর যন্ত্রণা বোঝা সম্ভবপর। এই ‘রক্ত চুঁইয়ে পড়া’ লেখা একেবারে নেই তা নয়। দেশবিভাগের সূচনা পূর্বের বাঙালির মানসিকতাকেও বোঝা দরকার। ভারত বিভাগের সম্ভাবনা দেখা দেবার পর থেকেই সমগ্র এবং পশ্চিম ভারত বিশেষ করে পাঞ্জাবে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও তিক্ততার মাত্রা বাড়তেই থাকে, রক্তপাত আগে থাকতেই শুরু হয়ে যায়।পরে তা এক ভয়াবহ রূপ নেয়। কিন্তু অবিভক্ত বাঙলার স্লোগান প্রাথমিক টেনশন থেকে বাঙালিকে কিছুটা মুক্ত রেখেছিল। যদিও নোয়াখালি বা ১৯৪৬-এর  সংগ্রামের কাল থেকেই অবিশ্বাসের মাত্রা বেড়ে চলেছিল, তবুও তা দেশজোড়া গৃহযুদ্ধের আকার নেয়নি। বরং প্রথম দিকে সাধারণ মানুষ দেশবিভাগ ব্যাপারটিকে তেমন গুরুত্ব দিয়ে উপলব্ধিও করেনি। অমিয়ভূষণ মজুমদারের ‘গড় শ্রীখণ্ড’ উপন্যাসের দু-একটি সংলাপে তা ধরা পড়ে—
‘শুনছেন মণ্ডল— দেশ ভাগ হতিছে।’
‘সে আবার কি?’
‘হাঁ, একভাগ হিঁদুর, আর একভাগ মোসলমানের।’
‘ভাগ কে করে? ইংরেজ? তার নিজের জন্য কি রাখবি?’
রামচন্দ্র হো হো করে হেসে উঠল
‘কী আবার রাখবি। মনে কয়, ঘাসের জমি পত্তনি দিতেছে।
মনে কয়, বিলেতে বসি খাজনা পাবি।’
রামচন্দ্র নিজে কিন্তু এক বড়ো চাষি। কেউ কেউ তারাশঙ্করের ‘হাঁসুলীবাঁকের উপকথা’-র করালীচরণের সঙ্গে তার তুলনা করেছেন। কিন্তু রামচন্দ্র নিজের জমিজমার পরিমাণ বৃদ্ধি নিয়ে যতটা আগ্রহী, সামাজিক জোট বেঁধে উচ্চবর্গের কাজ থেকে মর্যাদা আদায়ের লড়াইয়ে তাকে দেখা যায়নি।
কিন্তু দেশবিভাগ সম্পর্কে রামচন্দ্রের এই সংলাপের মধ্য দিয়েই অমিয়ভূষণ এদের সন্ত্রস্ত মানসিকতার কথা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে সবার অলক্ষ্যে উপন্যাসে দেশভাগের বৃহত্তর পটভূমিকাও রচিত হয়। গড় শ্রীখণ্ড ওরফে চিকন্দী গ্রামে সান্যাল মশাইকে কেন্দ্র করে হিন্দু-মুসলমানের মৈত্রীর যে প্রচেষ্টা হয় তা কলকাতার দাঙ্গার সংবাদে ব্যাহত হতে থাকে। শেষপর্যন্ত দেশত্যাগের ব্যাপারে উচ্চবর্গ ও নিম্নবর্গের মধ্যে কোনও পার্থক্য থাকে না। সকলেই দেশত্যাগের মহামিছিলে শামিল। অমিয়ভূষণ একে ‘শ্মশানযাত্রা’ আখ্যা দেন। খুব বড়ো মাপের ঔপন্যাসিকের ব্যাপ্তি নিয়ে তিনি পদ্মার ভাঙন ও দেশের ভাঙনকে এক সূত্রে মিলিয়ে দেন। অমিয়ভূষণ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, পদ্মাই তার কাছে একমাত্র নদী আর পদ্মা-বিধৌত জনপদই একমাত্র স্বদেশ। তাই তাঁর উপন্যাস শেষ হয় এইভাবে, ‘থেকে থেকে পদ্মার মুখ কালো হয়ে উঠছে, তখনো ফুলে ফুলে উঠছে তার বুক। উপরে ড ড ড করে মেঘ ডাকছে। পুরাণটা যদি জানা থাকে, হয়তো কারো মনে হতে পারে, কেউ যেন অন্য কাউকে বলছে, দয়া করো, দয়া করো।’ আসলে মানুষ যখন দয়া করে না, তখন পদ্মার কাছে দয়া প্রার্থনা করা ছাড়া উপায় কি? হয়তো এই প্রাকৃতিক এবং রাষ্ট্রনৈতিক দুর্যোগের মধ্য দিয়েই নতুন গড় শ্রীখণ্ড গড়ে উঠবে। এই পথেই দেশ বিভাগকে কেন্দ্রে রেখেও উপন্যাসটি বহুমাত্রিক হয়ে ওঠে।


আবার কুর্দিশ সিনেমার প্রসঙ্গে আসি যা প্রাচ্য দেশবিভাগ ও বা উদ্বাস্তুদের অনন্ত জার্নি -
ছবি :- 'জাগরস্' (বেলজিয়াম)/পরিচালক: শাহিম ওমর কালিফা
(২০১৭/কালার/১০২ মিনিট/সেন্ট্রাল কুর্দিশ)


জাগ্রোস তার স্ত্রী হ্যাভিন এবং তাদের মেয়ের সাথে তুরস্কের কুর্দিস্তান গ্রামে বসবাসকারী একজন মেষপালক।  তার পরিবার তার সম্পর্কে সন্দেহ করে, কিন্তু জাগ্রোস তার স্ত্রীর নির্দোষতায় বিশ্বাস করে।  গ্রাম ছেড়ে দেশ ছেড়ে বেলজিয়ামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছে। জাগ্রোস, তার পরিবারের সাথে বিরক্ত, তাকে অনুসরণ করে কিন্তু একবার বেলজিয়ামে, জিনিসগুলি পরিকল্পনা হিসাবে যায় না।

              
(পরিচালকের জীবনী: ১৯৮০ সালে ইরাকি কুর্দিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন, সাহিম ওমর কালিফা একজন বেলজিয়ান - কুর্দি চলচ্চিত্র নির্মাতা। খলিফা তার শর্ট ফিল্ম ল্যান্ড অফ দ্য হিরোস , বাগদাদ মেসি এবং ব্যাড হান্টারের জন্য ১০০ টিরও বেশি আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছেন।  বাগদাদ মেসিকে ৮৭ তম একাডেমি পুরস্কারের জন্য শর্টলিস্ট করা হয়েছে।  জাগ্রোস, তার প্রথম ফিচার ফিল্ম (debut) , অন্যান্য পুরষ্কারগুলির মধ্যে জিহেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের গ্র্যান্ড প্রিক্স পেয়েছে।)
গোটা পৃথিবীর সমস্ত মানব ইতিহাস যেন অমোঘ-অবিচ্ছেদ্য ভাবেই অভিবাসী স্মৃতির এক অনন্ত কথা।

 

বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর সবচেয়ে বিস্তৃত থিমটি আসলে উদ্বাস্তুদের গল্প ছিল। তারা গ্রহের ধ্বংস, যুদ্ধ, বা শুধু অতিরিক্ত ভিড় এবং পরিবেশগত ধ্বংস থেকে পালিয়ে যায়। সুপারম্যানকে নিরাপদে পাঠানো হয় যখন তার হোম গ্রহ ক্রিপ্টন ধ্বংস হয়ে যায়। এটা কোন কাকতালীয় ঘটনা নয় যে সুপারম্যানও আত্তীকরণের জন্য পোস্টার বয় - তার 'আসল' পরিবার কানসাসের কেন্টস, এবং সে নিজেকে একজন আমেরিকান বলে মনে করে। তিনি শরণার্থীর স্বপ্নে বেঁচে থাকতে পারেন, সম্পূর্ণরূপে একটি সমৃদ্ধ নতুন পৃথিবীতে গৃহীত হচ্ছেন - এছাড়াও তিনি শারীরিক এবং মানসিকভাবে তার চারপাশের সকলের চেয়ে উচ্চতর। তিনি গলে যাওয়া পাত্রের মূর্ত প্রতীক। তার স্রষ্টা সিগেল এবং শুস্টার ছিলেন পূর্ব ইউরোপ, প্রধানত লিথুয়ানিয়া এবং ইউক্রেন থেকে আসা দরিদ্র ইহুদি অভিবাসীদের সন্তান (আর্ট স্পিগেলম্যানের 'মাউস')।

এমন অনেক চরিত্র রয়েছে যারা ধ্বংসপ্রাপ্ত বা ধ্বংসপ্রাপ্ত পৃথিবী থেকে পালিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে 'হিচহাইকারস গাইড টু দ্য গ্যালাক্সি' সিরিজের আর্থার ডেন্ট। জন ভার্লির উপন্যাসগুলিও  প্রায়শই এমনই একটি মহাবিশ্বে সংঘটিত হয় যেখানে মানুষ 'এলিয়েন' নামক শব্দার্থর চরিত্র দ্বারা আক্রমণ করা পৃথিবী থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে এবং এর ফলে সৌরজগতের বাকি অংশে উপনিবেশ স্থাপন করেছে।

ছবিঃ সঙ অফ মাই মাদার (তুর্কী)/ পরিচালক: ইরল মিনতাস
(২০১৪/কালার/৯৯মিনিট/তুর্কী-কুর্দিশ)
তরুণ শিক্ষক আলি তার বৃদ্ধ মা নিগারের সাথে ইস্তাম্বুল শহরের সবচেয়ে দূরবর্তী প্রান্তে থাকেন।  তার মা একটি দীর্ঘ পুত্রের সন্ধান করেন যেটি তার স্বপ্নে দেখা যায় এবং প্রতিদিন কংক্রিটের জঙ্গলের মধ্যে তার গ্রামের সন্ধান করে।         
(পরিচালকের জীবনী: এরোল মিন্টাস ১৯৮৩ সালে তুরস্কের কার্সে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি ফিনল্যান্ড এর রাজধানী হেলসিঙ্কিতে থাকেন।  তার প্রথম শর্ট ফিল্ম  ২০০৮ সালে মুক্তি পায় এবং বেশ কয়েকটি পুরষ্কার পায়, যখন তার ফিচার, সঙ অফ মাই মাদার (২০১৪), উৎসব সার্কিটে পালিত হয়, সেরা চলচ্চিত্র এবং সেরা অভিনেতার জন্য 'হার্ট অফ সারাজেভো' পুরস্কার প্রাপক হন।

সেড এবং ওলাউসেন উদ্বাস্তুদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিনিধিত্বের একটি নতুন দৃষ্টান্ত প্রস্তাব করেন। মধ্যস্থতা বা সাহিত্যের মাধ্যমে প্রকাশ করা হোক না কেন, উদ্বাস্তু তার প্রতিনিধিত্ব করা থেকে অনেক দূরে; বরং, তাদের প্রতিনিধি করা হয়. শরণার্থীদের সুস্পষ্ট প্যাটার্নটি মিডিয়ার উপস্থাপনা থেকে আভাস পাওয়া যেতে পারে যা শরণার্থী সমস্যাটিকে একটি দর্শনে পরিণত করে যেখানে অভিবাসীরা ওভারলোড নৌকায় ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করে, প্রায়শই এই প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হন তারা।

ছবিঃ'দি লাইফ অফ এ স্নো ফ্লেক' (তুরস্ক)/ পরিচালক : কাজিম ওঝ
(২০২২/কালার/১০৯ মিনিট/তুর্কী -কুর্দিশ)
তুরস্কের শহর তেবজোনে প্রবল তুষারপাতের মধ্যে, দুই তরুণ উৎসাহী যুবক-যুবতী একটি বাস স্টপে প্রথমবারের মতো দেখা করে এবং তারপরে প্রতিদিন ক্লাস এড়িয়ে দেখা শুরু করে।  কিন্তু মিয়াস স্থানীয় তুর্কি পরিবারের মেয়ে, আর আডর ইরান সীমান্তের কাছের শহর হাক্কারি থেকে কুর্দি পরিবারের ছেলে।  তাদের প্রেমের গল্প এক মাস ধরে চলতে থাকে, আডর হঠাৎ অদৃশ্য হওয়ার আগে।  মিয়াস তাকে খুঁজে বের করার জন্য রাস্তায় নিজের পা দিয়ে আঘাত করে ; কে তার সমস্যার সমাধান করবে?
(পরিচালকের জীবনী: ১৯৭৩ সালে তুরস্কে জন্মগ্রহণ করেন, কাজিম ওজ খ্যাতনামা কুর্দি চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং পুরষ্কার বিজয়ী তার চলচ্চিত্র যেমন দ্য ফটোগ্রাফ (২০০৩), ওয়ান্স আপন এ টাইম (২০১৪), জের (২০১৭) এবং এলিফ আনা (২০২২) এর জন্য সেরা প্রযোজক।  তিনি ১৯৯২ সালে একজন অভিনেতা হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরবর্তীতে ডকুমেন্টারি এবং ফিচার দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন।)

এই বাংলাতেই তো ঘটেছে , যে ,বাবার শাসনে অতিষ্ট হয়ে একদিন পালিয়ে কলকাতা চলে আসে কাঞ্চন। প্রথমে উঁচু দালানকোটা, ব্রিজ, পাকা সড়ক,অনেক মানুষ সবাই অপরিচিত এদের ভীড়ে কিছুটা ভড়কে গিয়েও কিশোর কাঞ্চন নিজেকে সামলে নেয়।অপরিচিত ইট কাঠের শহরে তার পরিচয় হয়- বাদাম-চানাচুর-ডালমুট ভাজাওয়ালা হরিদাস, ম্যাজিশিয়ান, পরিচারিকা মা, কনক নামে এক বালিকা এবং তার পরিবার, বোবা সাজা ছেলে, চোর এবং আরো অনেক নিম্ন-আয়ের জীবন যুদ্ধে লিপ্ত থাকা মানুষদের। তাদের সাথে পরিচয়ের একপর্যায়ে কাঞ্চন জানতে পারে তাদের প্রায় সকলেই দেশভাগের ফলে ভিটেমাটি আর আত্নীয়স্বজন হারিয়ে পরিচয়হীন উদ্বাস্তু একএকটি মানুষ নামে প্রাণখন্ড। একদিকে গগনচুম্বী দালানকোটা, আর ব্রিজ অন্যদিকে উদ্বাস্তুদের মিছিল, একদিকে অনিয়ন্ত্রিত পান-ভোজন অন্যদিকে খাবার নিয়ে কুকুর মানুষে লড়াই। এসব শহুরে কটু(!) বাস্তবতা কিশোর কাঞ্চনের মনে দাগ কাটে অবিরত। কাঞ্চন বড় হয়, বিদ্ধস্ত বাস্তবতায় । এও কি জীবনের অভিজ্ঞতার প্রাপ্য একটা কিশোরের চোখে ? ...... (ছবিঃ 'বাড়ি থেকে পালিয়ে')
(ঋত্বিক ঘটক ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক আক্ষেপের নাম, যিনি কোন প্রাপ্তির জন্যে সিনেমা করেননি)


(শেষ)

0 Comments

Post Comment