পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

শিক্ষক দিবসের ‘অস্মিতা’

  • 01 January, 1970
  • 0 Comment(s)
  • 200 view(s)
  • লিখেছেন : অশোক অধিকারী
দেশ ও রাজ্যে দুর্নীতি এখন প্রাতিষ্ঠানিকতার মেডেল গলায় ঝুলিয়েছে। কিন্তু যে ছেলে বা মেয়েটি নিজের মেধাকে পুঁজি করে দিনরাত এক করে পরিশ্রম করে গেছে শিক্ষক হয়ে স্টাফরুম আলো করার, তাদের জন্যে ‘এক হাজার ভাগের এক ভাগ গাফিলতি’র সুপ্রিম নিদান কি পারবে রবীন্দ্রনাথের কবিতা গলায় মালা করে পরে জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে বলতে, “অন্যায় যে করে,আর অন্যায় যে সহে/ তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে।”

বর্তমানে ‘অস্মিতা’ শব্দটি বাস্তবিক জীবনে বহুল চর্চিত। বাঙালি ও বাঙালিয়ানার অস্মিতা, বাংলাভাষা ব্যবহারের অস্মিতা, আত্মআবিষ্কার ও আত্মশ্লাঘার অস্মিতা সর্বোপরি মনীষীদের ভাবনা ও দর্শন চর্চা নিয়ে আত্মগর্ব করার অস্মিতা বর্তমানে যেন বড্ড বেশি আমাদের পেয়ে বসেছে। এত কিছুর মধ্যে আবার একটি শিক্ষক দিবসের অস্মিতা নিয়ে যখন ভাবতে বসি তখন মনে আসে ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন শিক্ষকের যে চারটি শ্রেণির কথা বলেছেন, মধ্যমেধা, উচ্চমেধা,উচ্চতর মেধা ও অতি উচ্চ মেধাসম্পন্ন শিক্ষক। তার শেষেরটির উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিতেন তিনি। তাঁর কথায়,একজন অতি উচ্চমেধা সম্পন্ন শিক্ষক এমন অনুপ্রেরণা সঞ্চার করেন যার সাহায্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়ে তাদের উত্তরণ ঘটাতে সাহায্য করেন। আজ আমাদের সমাজে মেধার যেমন অবনমন ঘটছে, ক্ষয় ও লয় প্রাপ্তির সঙ্গে অপচয় ঘটছে মানব সম্পদের তখন রাধাকৃষ্ণনের বলে যাওয়া কথা আজ বড়ো প্রাসঙ্গিক হয়ে বাজছে। তিনি বলেছিলেন, ‘শিক্ষককে নিজের প্রচেষ্টায় তাঁর সম্মান অর্জন করতে হয়।’ চলমান জীবনে ধারাবাহিক মূল্যবোধের চর্চায় আমাদের শিক্ষিত হতে হয়। প্রতি মুহূর্তে ‘হয়ে উঠতে’হয়। একটি ব্যবস্থার মৌলিকত্ব রক্ষায় নিজের ভাবনার কৃচ্ছসাধন সাধন করতে হয়। তবেই রাধাকৃষ্ণনের জীবনবোধ অনুসরণ করার সাহস জন্মায়। অমর্ত্য সেন ভারতবর্ষকে‘ফার্স্ট বয়দের দেশ’ শিরোনামে ভূষিত করেছিলেন। তাঁর কথায়,সমাজে যে এত অর্থনৈতিক সামাজিক ও রাজনৈতিক কুফল জন্ম নিচ্ছে তা ভারতীয় জনসাধারণের এক বিপুল অংশের শিক্ষা প্রাপ্তির প্রতি অবহেলার কুফল। আলোকপ্রাপ্ত মানুষের সান্নিধ্যেই ছাত্রসমাজের মধ্যে মূল্যবোধের জন্ম হতে পারে। তাই শিক্ষক হিসাবে সে দায় আমাদের ওপরই বর্তায়।তাই শুধু কথার কথা নয়। ‘Friend,philosopher and guide’-র যে মনস্কতা থেকে আগামী প্রজন্ম গড়ে উঠতে পারে শ্রেণিকক্ষে তাকে শুধু বক্তৃতায় না রেখে চর্চার মধ্যে আনার শপথে একমাত্র সার্থক হতে পারে রাধাকৃষ্ণনের গলায় মালা চড়ানো, তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো।

 ড.সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের কথাটি যেন বড়ো সত্য হয়ে বাজে, “যদি আমরা প্রশাসনের উচ্চস্তরে দুর্নীতি নির্মূল করতে না পারি, সকল প্রকার স্বজনপোষন নিশ্চিহ্ন করতে না পারি, ক্ষমতার মোহ, মুনাফা লিপ্সা, কালোবাজারি সমূলে উৎপাটন করতে না পারি, সেই সাথে জনজীবনের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর উৎপাদন বৃদ্ধি ও তার সুষম বন্টনের ব্যবস্থা করতে না পারি তাহলে আমরা স্বাধীন ভারতের মূল লক্ষ্যে কখনোই পৌঁছাতে পারব না।” আমরা পারিনি। দেশ ও রাজ্যে দুর্নীতি এখন প্রাতিষ্ঠানিকতার মেডেল গলায় ঝুলিয়েছে। কিন্তু যে ছেলে বা মেয়েটি নিজের মেধাকে পুঁজি করে দিনরাত এক করে পরিশ্রম করে গেছে শিক্ষক হয়ে স্টাফরুম আলো করার, তাদের জন্যে ‘এক হাজার ভাগের এক ভাগ গাফিলতি’র সুপ্রিম নিদান কি পারবে রবীন্দ্রনাথের কবিতা গলায় মালা করে পরে জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে বলতে, “অন্যায় যে করে,আর অন্যায় যে সহে/ তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে।” লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর মেধার যে অপমান; মানব সম্পদের অসম্মান তার অবসান না হলে আগামীতে আমাদের ভরসার জায়গা গুলি ক্রমশ হারিয়ে যাবে। যাচ্ছেও। আমরা এক অন্ধকারের দিকে এগিয়ে চলেছি; যেখানে ১ পাওয়াদের মেধাতালিকা ওয়েবসাইটে জ্বলজ্বল করছে, ৫২ বা ৫৩ শূন্যের চেয়ে ছোট সংখ্যা হয়ে শ্রেণিকক্ষে ভুল ইংরেজি বা অংক কষাচ্ছে। সেদিন অমলকান্তিদের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন এভাবেই হেলায় হারাবে! আজ যখন সুপ্রিম নিদানে হাজার হাজার ছেলেমেয়ে পথে, ‘দাগি’ শব্দ অভিধান থেকে বেরিয়ে এসে মেধাকে কলঙ্কিত করছে, কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হয়ে যায় চাকরি-পরিবার গুলিতে হাহাকার অপেক্ষা লজ্জা ও সামাজিক পরিচয় নিয়ে বেঁচে থাকা সঙ্গীন হয়ে উঠেছে ও এক শ্রেণির শিক্ষিত জনের ঠাঁই হয়েছে জেলখানার অভ্যন্তরে; সময় সীমা পেরনোর পর চাকরি যাওয়ার চাপ সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুর পথে পাড়ি দিয়েছে-তখন এবারের শিক্ষক দিবস কোন ভাষায় কথা বলবে! একটি গোলাপ আর চন্দনের ফোঁটার যে বিশুদ্ধতা তা কী কোরাসে গাইতে পারবে, “মোরা শিক্ষক, মোরা শিক্ষক, মোরা শিক্ষক/সকলের মোরা পরমাত্মীয় ধরণীর মোরা দীক্ষক।”

  রাধাকৃষ্ণনের ভাবনাটি ছিল বড়ো বেশি প্রাসঙ্গিক। ১৯৬২ সালের ১৩ই মে রাধাকৃষ্ণন ভারতের ২য় রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নিলেন। তাঁর প্রিয় ছাত্র ছাত্রীরা তাঁর জন্মদিন ৫ই সেপ্টেম্বর দিনটিকে ঘটা করে পালন করার দাবি নিয়ে স্যারের কাছে হাজির হলেন। সব শুনে রাধাকৃষ্ণন তাদের বললেন, “আমার প্রথম ও প্রধান পরিচয় আমি একজন শিক্ষক, সেজন্য আমার জন্মদিন সমগ্র শিক্ষক সমাজকে উপলক্ষ্য করে পালিত হলে সেটাই হবে আমার প্রতি সর্বোৎকৃষ্ট শ্রদ্ধাজ্ঞাপন।” এখানেই আমাদের রাধাকৃষ্ণন পড়া হয়ে যায়। মূল্যবোধের যে সর্বোচ্চ অবস্থানে তিনি আসীন ছিলেন সেখানে, ‘পেশা’ও ‘ব্রত’-র যে তুল্যমূল্য বিচার তার থেকে আমাদের শিক্ষনীয় তাঁর জীবন ও সাধনা। শিক্ষক দিবস শুরুর ইতিহাস কিন্তু বেশ পুরনো। খ্রিস্ট জন্মের ৫৫১বছর আগে চিনদেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিশিষ্ট দার্শনিক ও আচার্য কনফুসিয়াস। তাঁর জন্মদিন ২৮সেপ্টেম্বর তারিখটিকে ধরে সর্বপ্রথম চিনদেশে শিক্ষক দিবস পালন শুরু হয়। ‘শিক্ষক’সম্পর্কে নানা ভাবনার কথা ইতিহাসে আছে। অন‍্যদিকে প্রকৃত শিক্ষকের সংজ্ঞা নির্ধারনে ইউনেস্কো বিশ্বজুড়ে যে সমীক্ষা চালিয়েছিল তাতে মেক্সিকোর পাঠানো সংজ্ঞাটি সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, “ঊষর মরুভূমিতে যিনি বারি বর্ষণ করতে পারেন তিনিই প্রকৃত শিক্ষক”। শিক্ষক তাঁর‘আপন মনের মাধুরী দিয়ে’ শিক্ষার্থীকে রচনা করবেন এটাই কাম্য। গ্রিক বীর আলেকজান্ডার যিশুখ্রিষ্টের জন্মের তিনশ আশি বছর আগে লিখে গিয়েছিলেন, “My parents give birth to me and my teachers give life to me.” যার নির্যাসটুকু নিয়ে রচিত হয়েছে সেই অমোঘ বার্তা, “Students are the soil and teachers are the seeds.” নীতি ও মূল্যবোধের পরাকাষ্ঠা হয়ে আজও ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যকার সম্পর্ক অমলিন রয়েছে। প্রকৃত শিক্ষকের সংজ্ঞা নির্ধারনে ইউনেস্কো যে সমীক্ষা চালিয়েছিল সারা বিশ্বজুড়ে তাতে মেক্সিকোর পাঠানো সংজ্ঞাটি সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল,“ঊষর মরুভূমিতে যিনি বারিবর্ষণ করতে পারেন তিনিই প্রকৃত শিক্ষক”। শিক্ষক তাঁর ‘আপন মনের মাধুরী দিয়ে’ শিক্ষার্থীকে রচনা করবেন এটাই কাম্য। নীতি ও মূল্যবোধের পরাকাষ্ঠায় ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যকার সম্পর্কে বর্তমানে কিছুটা চিড় ধরলেও আজও শিক্ষক দিবসের ফুটবল খেলায় ছাত্রেরা শিক্ষকদের জিতিয়ে হেডস্যরের কাছে একদিনের ছুটি প্রার্থনা করে। আজও ডিরোজিওরা আছেন। ১৮২৬ সালের ১লা মে তারিখে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি হিন্দু কলেজে শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন।কমবয়েসী শিক্ষক। ছাত্রদের সঙ্গে বয়সের ফারাক মাত্র পাঁচ অথবা ছয় বছরের। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যুক্তি প্রবণতা,তর্কপ্রবন মানসিকতা,বিজ্ঞানবোধ,আদর্শবোধ ও তাদের মননে অনুপ্রেরণার বীজ কীভাবে বপন করতে হয়, ছাত্রকূলকে সেই শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলছেন দেখে হিন্দু কলেজের পরিচালকমন্ডলী শঙ্কিত ও ভাবিত হয়ে উঠলেন। ১৮৩১ সালে পরিচালকমন্ডলীর সিদ্ধান্তে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন। মাত্র পাঁচ বছরের শিক্ষকতা কালে ডিরোজিও যে সব খ্যাতকৃতী ছাত্রদের তৈরী করে গেলেন তাঁদের মধ্যে রামতনু লাহিড়ী, দক্ষিণারঞ্জন বসু, প্যারীচাঁদ মিত্র, রাধানাথ শিকদার প্রমুখদের নাম করা যায়। ডিরোজিওর অনুপ্রেরণায় যাঁরা সংগঠিত করেছিলেন ‘ইয়ং বেঙ্গল মুভমেন্ট’। ‘My search for Truth’ গ্রন্থে ছাত্রদের উদ্দেশে যথার্থতার সঙ্গে তিনি বলেছেন,“নীতি, আদর্শ ও আধ্যাত্মিকতার বিশেষ শিক্ষায় ছাত্রসমাজকে শিক্ষিত হয়ে চরিত্রবান হয়ে উঠতে হবে। সত্য, সেবাধর্ম ও অন্তর্দৃষ্টির জাগরণে তাদের মধ্যে নতুন তেজ, নতুন শক্তিও নতুন কর্মপ্রেরণা জাগ্রত হয়ে উদ্দীপনা লাভ করবে।” স্বাধীন ভারতে ১৯৪৮ সালে তাঁর সভাপতিত্বে গঠিত রাধাকৃষ্ণন কমিশন-এ তিনি পরিবর্তনশীল জগৎবীক্ষায় কর্মযোগ ও তার সঙ্গে জড়িত যে নীতিবোধ ও মূল্যবোধ তাকে হৃদয়ে লালিত  করার কথা বলেছেন। শিক্ষার লক্ষ্য সম্পর্কে তাঁর স্পষ্ট কথন, “A quest for democracy of justice, liberty, equality and fraternity।” গণতন্ত্র, সুবিচার,সমতা ও বাক স্বাধীনতার অধিকার রক্ষা নিয়ে তিনি যা বলেছিলেন তা আজ প্রশ্নচিহ্নের মুখে।

    আজকের শিক্ষক দিবস অনেকটাই ম্লান ও কৃশ হয়ে গেছে;যখন দেখি রাজস্থানের দলিত ছাত্র ইন্দ্রকুমার উচ্চবর্গের জন্যে রাখা জলের কলসিতে হাত দিয়ে দেওয়ায় প্রধান শিক্ষক চৈল সিংয়ের অকথ্য অত্যাচারে মৃত্যুবরণ করে,বন্ধুত্বের প্রস্তাবে সায় না দেওয়ায় ঝাড়খন্ডে স্কুল ছাত্রীকে পুড়িয়ে মারে তার বন্ধুত্বের প্রস্তাবক কিংবা শ্রেণিকক্ষে ছাত্র ছাত্রীরা গানের তালে উদ্দাম নৃত্যে মত্ত হয় অথবা শিক্ষক ছাত্র ছাত্রীরা শিক্ষা বিষয়ক ট্যুরে গিয়ে একত্রে নাচতে থাকেন অথবা শিক্ষক ও ছাত্রীর আপত্তিকর দৃশ্যে ভরে ওঠে সামাজিক মাধ্যম। পড়া না পারায় দিদিমণি উপুর্যুপরি লাথি চড় ঘুষি চালিয়ে আহত করেন শিশুকে। স্যারের কাছে টিউশন না পড়ায় নাম্বার কম দেবার অভিযোগ ওঠে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। মনটা অবসাদে দীর্ণ হয়!অবক্ষয় বাসা বাঁধে স্কুল জীবনে। মূল্যবোধকে দাঁড়াতে হয় কাঠগড়ায়। স্কুলে ড্রপ আউট বাড়ছে।ফলপ্রকাশে বিলম্ব হেতু ছাত্র ছাত্রীরা পাড়ি দিচ্ছে অন্য রাজ্যে। শিক্ষায় দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিকতা পেয়েছে। যোগ্য শিক্ষকরা রাস্তায়। দাগি শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করতে হচ্ছে সরকারকে। চাকরির অনিশ্চয়তায় মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে। তবুও এতকিছু ‘না’-র মধ্যে আমাদের আনন্দের খবরও থাকে যখন দেখি এবারের শিক্ষক দিবসে (২০২৫) জাতীয় পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হন আমাদের রাজ্যেরই দিদিমণি তনুশ্রী দাস, যিনি বাল্যবিবাহ রোধ,গার্হস্থ্য হিংসা রোধে মায়েদের সচেতন করার সাথে সাথে মায়েদের যুক্ত করে ‘নারীশক্তি’ গোষ্ঠী বানিয়ে তাঁদের মধ্যে ‘মাদার অফ দ্য ইয়ার’ পুরস্কারের ব্যবস্থা করে অভিভাবকদের সম্মানিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। যখন চোখের সামনে ভেসে ওঠে পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী শিক্ষার্থী গ্রেটা থুনবার্গ জীবনকে বাজি রেখে যুদ্ধ উপকূল প্যালেস্তাইনের ক্ষুধার্থ মানুষদের জন্য ত্রাণ দিতে যায়। সোয়াট উপত্যকার মেয়ে মালালা মেয়েদের শিক্ষা প্রসারের কাজে নেমে নোবেল পায়।বিশ্বজুড়ে এমন অনেক ‘সময়ের শিক্ষক’নিভৃতে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কাজ করে চলেছেন।

  আমাদের  শ্রেণিকক্ষে অনেক কিছু নেই এর মাঝে অনুমোদিত হয়েছে জাতীয়  শিক্ষানীতি। সেখানেও পরিকাঠামো বৃদ্ধির লক্ষ্যে অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি অনুচ্চারিত। স্বাধীন ভারতে এখনো পর্যন্ত ১২৪টি শিক্ষাকমিশন বা কমিটি গঠিত হয়েছে যার মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ড.ডি এস কোঠারির সভাপতিত্বে গঠিত কোঠারি কমিশন। যেখানে স্পষ্টত সুপারিশ ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের বার্ষিক ব্যয় বরাদ্দের অন্তত ১০%এবং রাজ্যসরকার গুলির ব্যয়বরাদ্দের অন্তত ২০% শিক্ষাখাতে বরাদ্দ  করা উচিত। শিক্ষায় জিডিপির ৬% বরাদ্দের কথা সেখানে বলা আছে। দুঃখের বিষয় শিক্ষায় কেন্দ্রীয় সরকার জিডিপির ৪ শতাংশের কম ব্যয় করে। বরাদ্দ কমছে মিড-ডে-মিলে। বেদের যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিজ্ঞানকে। শিক্ষক দিবস আমাদের মনে সাহস জোগাক, যেন আমরা সাহসের ওপর ভর দিয়ে উচ্চারণ করতে পারি,“মোরা শিক্ষক, মোরা শিক্ষক, মোরা শিক্ষক / সকলের মোরা পরমাত্মীয় ধরণীর মোরা দীক্ষক।”

0 Comments

Post Comment