-সেটাতো অবশ্যই। কিন্তু কার হাত? কোনো পুরুষ নয় নিশ্চয়?
-পুরুষ হলেই বা ক্ষতি কি! হতেও তো পারে!
-তুমি কি সমকামী ?
-হাত ধরা মানে কি সেক্স করা!
-নয় বলছো?
-কখনোই নয়।
-এই যে সব হাত ধরা, চুলের স্পর্শ, কটাক্ষ এসবটাই যৌন রস ক্ষরণের প্রাথমিক প্রক্রিয়া। ক্ষরণের পরিমানগত তারতম্য শুধু।
-সেটাতো বিজ্ঞানের কথা। বিজ্ঞান তো পিতাপুত্রীর সম্পর্ককেও লোগ্রেডেড সেক্স বলে। কিন্তু আমরা বিজ্ঞানের দ্বারাই শুধুমাত্র চালিত হইনা। দর্শন বড়সড় ভূমিকা নেয় মানব জীবনে।
-সে যাক,তুমি কার হাত ধরে হাঁটতে ভালবাসো?
-ধরে নাও তুমিই।
-হা হা হা! আমি আলজেব্রার এক্স ফ্যাক্টর! ধরে নিয়ে বাকিটা বলবে!
-না না, তা কেন! সত্যিও তো হতে পারে।
-বিশ্বাস হচ্ছেনা! হঠাৎ কি মাথায় চাপলো তোমার!
-আসলে কি জানো, আমরা মানুষটার কথা বলি শুধু। কিন্তু আমার কাছে সেই মানুষটার থেকে এক্ষেত্রে হাতটাই বেশি জরুরি। আমি শুধু একটা হাতের ছবি দেখছি, যা শুরু হয়েছে কাঁধ থেকে। আর শেষ হয়েছে আঙ্গুলে। বাকী সব ইমমেটিরিয়াল।
-বলো, শুনতে ভালো লাগছে।
-এই যে তোমার ভাল লাগছে বলছো এটাই আসল। তার আগে পিছে কি বিজ্ঞান আছে কি নেই সেটা ফালতু আমার কাছে। আমার কাছে শুধু নয়, সকলের কাছেই। কিন্তু আমরা সেটা নোটিশ করতে পারিনা। এই যে ভাবনাগুলো, ভাল লাগাগুলো নোটিশ করতে পারিনা, এগুলোই অতৃপ্ত আত্মার মতো গভীর রাতে আমাদের স্বপ্নে ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়।
-আমার মাথা ব্যথা করছে।
-করবেই। কারণ অতৃপ্তি আমাদের যন্ত্রণা দেয় – এটাই বিজ্ঞান।
-তুমি আবার হাতেই ফিরে আসো প্লিজ।
…
-জানো, আমি একটা নগ্ন হাতের কামনা করছি শুধু। যেই হাতটা বৃষ্টি ভেজা আর সরু সর্পিল। যে হাতটা নিজের হাতে নিলে মনে হয় একটা ঠাণ্ডা সাপ আমার হাতে জড়িয়ে আছে – এরকম একটা হাত। এই হাতটা খুব নিশ্চয়তা দেয়, ভরসা দেয়, স্থায়িত্ব দেয়। যা তোমার কোনো ফিক্সড ডিপোজিট, ব্যাংক ব্যালেন্স, পলিটিক্যাল কানেকশন দিতে পারে না।
-আমার হাত আমার হাত কি সেরকম মনে হল তোমার!
-মনে হচ্ছে মনে হয়। তোমার হাতটাও খুব শীতল। বরফের মতো নয়, সাপের মতো।
-সাপ কি শীতল হয়?
-জানিনা। তবে শীতলতার সাথে সাপের যেন একটা কোনো কানেকশান আছে! যেমন অন্ধকারের সাথে মৃত্যুর একটা কানেকশান আছে।
-কিন্তু তোমার হাত এত গরম কেন!
-সেই জন্যই তো তোমার হাতের আশ্রয় চাইছি।
-হুমম। শুধুই হাত তো? তারপর কিছু না তো?
-না, একদম নয়। তোমার কাঁধ ছুঁয়ে আমি আমি এগোবো তোমার আঙ্গুলের কাছে। তারপর তো সব শূন্য! অসীম! যারা আঙ্গুল থেকে শুরু করে কাঁধের দিকে যায়, তারা ক্রমশ কাঁধ ছাড়িয়ে শরীরের অন্যান্য জায়গায় ঢুকে পড়ে…
এমন সময় আকাশ দাপিয়ে বৃষ্টি নামল অঝোরে… পৃথিবীর দুই শেষ মানব মানবী হাতে হাত ধরে ভিজে চলল যতক্ষণ না তাদের শেষ নিশ্বাস বেরিয়ে যাচ্ছে…