-- আর ডেট অফ বার্থ? কৌতুক মাখা দ্বিতীয় প্রশ্ন। চোখ দুটো বিস্ফোরিত করে, ভ্রুতে ভাঁজ ফেলে মোলায়েম কণ্ঠস্বরে সোফিয়া বলে-- তাও জানি। আকাশ উত্তেজিত-- কবে গো, কবে?
সোফিয়ার সংযত জবাব-- বলছি। ২০১৫ উনিশে জানুয়ারি। তারপর ঠোঁটে হাসির রেখা অটুট রেখে সোফিয়া নিচু স্বরে বলে-- আর কিছু? আকাশ বিস্মিত। এক আকাশ মুগ্ধতার সঙ্গে বলে-- তবে জন্মদাতা কে? তাও সম্ভবত জানা আছে? সোফিয়ার শান্তর স্বর-- জানি তো।
-- বল বল কে গো? উদগ্রীব আকাশ।
-- জন্মদাতা ডেভিড হ্যানসন। আকাশ হতবাক। থেমে থেমে পরের প্রশ্ন-- কোথায়? কোথায়? আকাশে যেন তর সয় না।
-- হংকং- এর হ্যানসন রোবটিক্স কর্মশালায়।
আকাশ মুহূর্তকাল অপেক্ষা করে না। বিক্রেতা ডলার যত চাই তার দ্বিগুণ দিয়ে সোফিয়াকে ঘরে আনে। আকাশ তৎক্ষণাৎ বোঝে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় সবকিছু বিশ্লেষণ করে সোফিয়া যে কোনো ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। ওর মুখমণ্ডল ব্রিটিশ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ণের আদলে গড়া। সোফিয়া আদতে মানবাকৃতি বা হিউম্যানয়েড রোবট। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভিত্তি করেই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকে। আকাশ সোফিয়াকে পেয়ে মহা খুশি। একাকীত্বে ঝুলিতে একা বইতে হবে না। দোসর পাওয়া গিয়েছে এতদিনে। ওর বিনিময় গচ্ছিত ডলার জানো সামান্য কাগজের বিনিময় মণিকাঞ্চন। ইদানীং আকাশ ওকে নিয়ে আকাশকুসুম পাবে আর স্বপ্নে জাল বোনে।
কিন্তু স্বর্গ আর নরক ব্যবধান, স্বপ্ন আর বাস্তবের। আকাশের বাড়ি কলকাতায়। বেহালার দিকে। তিন ভাই বোন। আকাশ ই বড়। বাবা অফিসের ছোট কর্মী। কেরানি মাত্র। তিন ভাইবোনের কষ্ট করে বড় হওয়া। ব্রেন চমৎকার। তাই স্কলারশিপ। এবং এই অর্থে উচ্চশিক্ষা। ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট। এম বি এ তেও নজরকাড়া নম্বর। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে এই জব। তবে দেশে নয় বিদেশে। একসময় বাবার প্রশ্ন-- অবশেষে তুই বিদেশ চললি?
-- হ্যাঁ বাবা। যেতে তো হবেই। চাকরিটা যখন বেশ ভালো। মোটা স্যালারি। তখন ইতস্তত করা বা না যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এখানে পেলে তো প্রশ্নই......!
-- একদম ঠিক। তবে মন মানে না। আমাদের কাছে বিদেশ মানে.....
কথা শেষ না হতেই আকাশ বলে-- বুঝেছি বাবা। অত ভেবোনা। বর্তমান সময়ে দেশ-বিদেশের তফাৎ তেমন কিছু না। অর্থাৎ ইন্টারনেট, ইমেল আইডি, সর্বোপরি ফোন হোয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়।
-- হয়তো তোর কথা ঠিক। কিন্তু তোর মা অসুস্থ। নার্ভের পেশেন্ট। তাছাড়া আমারও বয়স হয়েছে। শরীরটা মাঝেমাঝেই ঝামেলা করে। অবসর নিয়েছি তাও বেশ কিছু বছর হল। আসলে সংসার ই করেছি বেশি বয়সে। মন্দভাগ্য, কাকে আর বলে।
-- জানি তো বাবা। চিন্তা করোনা। আমাদের খারাপ সময় কেটে গেছে। আর দুঃখ নেই। আমি কাজে জয়েন করে প্রতিমাসে নিয়ম করে মাইনের বেশিরভাগটাই পাঠিয়ে দেবো।
-- তা জানি। তুই আমার তেমন ছেলে নস বাবা। তবে বাবা, এখন তোর বিদেশ যাওয়ার খরচ......?
-- একদম ভেবোনা। ওসব তাদের হেডেক। আমাদের নয়। তোমার দায়িত্ব শুধু মাকে বোঝানো। নিজের প্রতি অবহেলা করো না। ভালো থেকো আর সবাইকে ভালো রেখো। কেমন বাবা....?
-- কবে আসবি?
-- বছরে একবার চেষ্টা তো করবই। তবে এখনই কথা দেব না। আগে তো যাই পরে আসা।
-- তাও ঠিক। তবে চিন্তা হয়। বিদেশ বিভূঁইয়ে একা থাকবি! তোর মা তো শুনেই কান্নাকাটি শুরু করেছে।
-- তুমি মা কে বোঝাবে। তাছাড়া প্রতি রাতেই কথা হবে। সব ব্যবস্থা করে যাব। আমাকে দেখতেও পাবে। আর যদি কোন এমার্জেন্সি হয়, তাহলে আমাকে তক্ষুনি জানাবে। এজ এ্যারলি এজ পসিবল চলে আসব। একদম ভেবোনা।
সেই কলকাতা থেকে......! মনে মনে হিসেব, তা আজ বছর পাঁচেক। নাহ্, আর যাওয়া হয়নি। তবে প্রতিমাসে নিয়ম করে মানি অর্ডার এবং ফোনে রাতে কথা চলে। মা এখন ভালো আছেন। বাবাও ঠিকঠাক। ভাই-বোনেরাও ভালো রেজাল্ট করে উঁচু ক্লাসে। তবে মার সেই ভাঙ্গা রেকর্ড একনাগাড়ে বেজে চলে-- বড় খোকা, একা থাকিস! খুব চিন্তা হয়। এবার একটা বিয়ে কর বাবা।
-- অপেক্ষা করো। সময় হলে সব হবে।
-- সময়? আর কবে হবে বাবা? মেঘে মেঘে বেলা তো হল। এখন আর চিন্তা নেই। তোর এত টাকা পাঠাতে হবে না। মেজটা কলেজের চাকরিটা পেয়ে গেছে। এবার তোকে সংসারী দেখে যেতে চাই। এবার কটা দিনের জন্য এখানে আয়। ভালো মেয়ে দেখে.....! নইলে তোর যদি কোন পছন্দ থাকে......! আমাদের কোন আপত্তি নেই। লজ্জা করিস না। খুলে বল বাবা।
-- নাহ মা, আমার মতামত নেই। তোমার পছন্দই শেষ কথা। তবে অনেকক্ষণ কথা হল। এখন ছাড়ছি মা। ভালো থেকো, সবাইকে ভালো রেখো। ফোন রাখে আকাশ। সোফিয়ার দিকে তাকায়। ডিনার শেষ। ঘুমোবার ঘন্টা দুই এক বাকি। আগে এই সময় সিডি চালিয়ে গান শুনতো, টিভিতে নিউজ দেখতো, খেলা হলে শালা দেখতো, কিংবা বিদেশি সাহিত্য পড়তো। আর এখন....! সোফিয়াকে পেয়ে গল্প-গুজব করে কাটায়। আকাশ লক্ষ্য করেছে, সোফিয়ার সঙ্গে কথার মাঝে সময় যেন দুটো তিনটে সিঁড়ি টপকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে চলে। বেশ লাগে আকাশের, সোফিয়ার বুদ্ধিদীপ্ত কথা। হঠাৎ আকাশের প্রশ্ন-- আচ্ছা সোফিয়া, বিশ্ব আবহাওয়া আজ সত্যিই সমস্যার মুখে? রোবট কি একদিন রোবট বানাতে পারবে?
সেই আগের মত ঠোঁটে হাসির রেখা পেনের সোফিয়া বলে-- এখনই এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাইনা। তবে মনে হয়, একদিন কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা মানুষকে ছাপিয়ে যাবে। আকাশ চমকে উঠে বলে-- সেটা কখনো সম্ভব নয়।
-- সম্ভব নয় কেন? চিকিৎসা বিজ্ঞানে রোবট একদিন ডাক্তারের বন্ধু হয়ে উঠবে। জানেন.....?
-- হয়তো হবে। কিন্তু মানুষকে ছাপিয়ে যাবে না।
-- শুনুন তবে। রোবটের বিশ্বের সিলিকন মুখ, ত্বকে ৬২ রকমের অভিবাসী প্রকাশ করা সম্ভব। দেখবেন?
আকাশ উদগ্রীব হয়ে বলে ওঠে-- হ্যাঁ হ্যাঁ দেখাও তো। সোফিয়ার জবাব আচ্ছা দেখুন। একে একে সে সব দেখিয়ে দিল।
কথায় কথায় রাত হয়। এক সময় দুজন দুজনকে গুড নাইট জানিয়ে ঘুমোতে যায়। কিন্তু আকাশের ঘুম আসে না। ছটফট করে। মাঝেমধ্যে সামান্য ড্রিঙ্কস করে। তাতেও ঘুম নেই। পাশের ঘরে উঁকি দিয়ে সোফিয়াকে বলে-- দেখো কিছু তেই ঘুম আসছেনা। কি করা যায় বলতো?
এদিকে বাইরে তখন ইলশে গুড়ি থেকে ক্রমে ক্রমে মুষলধারা। আকাশের ইচ্ছে হয় ভেজার। ছুটে ব্যালকনিতে। কিন্তু তাতেও মন ভরেনা। অগত্যা ছাদে। আপাদমস্তক ভেজে। তবুও যেন উত্তপ্ত দেহ মন শীতল হয় না। একসময় সোফিয়া জোর করে ধরে আনতে চায়। কিন্তু পারে না। আকাশের রোমান্টিক কণ্ঠস্বর--সোফি, এসো না, দুজনে ভিজি। সোফিয়ার নিচু স্বর-- এক্ষেত্রেও মানুষের তুলনায় আমরা এগিয়ে। আকাশের কৌতুক মাখা স্বর-- কেন?
-- রোবটের ঠাণ্ডা লাগে না। ফলে সর্দি-জ্বরের বালাই নেই। ভেজা আকাশ ফেসফেসে স্বরে বলে-- অবশ্যই। তাহলে চিন্তা কি? এসো.....! হাত ধরে টান দেয়। সোফিয়া টাল সামলাতে না পেরে এক্কেবারে আকাশের বুকে। মুহূর্তে আকাশ দুই হাতে জড়িয়ে ধরে। আকাশ যন্ত্রের কাঠিন্যের মধ্যে কোমলতা খুঁজে বেড়ায়। এক লহমায় যেন তার বোধ বুদ্ধি লোপ পায়। কথা বলা পুতুল যেন রক্ত মাংসের নারী হয়ে ওঠে। একসময় হুশ ফেরে। একরাশ হতাশা মাখা স্বরে বলে-- এক্ষেত্রে....? মানুষ কতটা এগিয়ে। থ্যাংকস গড।
-- হবে না...। সোফিয়া ওর বুকে মাথা রেখে বলে-- একজন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সৃষ্টি। আর একজন মানুষের...। আকাশ ওকে চেপে ধরে। সোফিয়ার হাত আকাশের সর্বশরীরে নির্দ্বিধায় বিচরণ করে। আকাশ নিজেকে উজাড় করতে করতে গদগদ স্বরে বলে-- দুধের স্বাদ ঘোলে! মন্দ কি....? সেই থেকে শারীরিক সম্পর্ক। এখন আর দুজনে দুই ঘরে নয়। এক ঘরে। এক বিছানায়। কৃত্তিম উপায়ে আকাশকে খুশি করা।
এভাবেই কাটছিল স্বর্ণালী সন্ধ্যা। কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতন। মার শারীরিক অবনতি। তাই দিন দশেকের জন্য আকাশ কলকাতায়।
আকাশ এখন কলকাতায়। মা ক্রমশ ভালোর দিকে। আমার শেষ অনুরোধ-- খোকা আর কিছু কোনদিন চাইবো না। তবে এই কথাটা তোকে রাখতেই হবে। আমার পছন্দের মেয়ে সাগরিকা। তুই দেখলে তোর পছন্দ হবে। আমি এই কদিনের মধ্যেই তোদের চার হাত এক করে দিতে চাই। তুই কিন্তু অমত করিস না। আমি ওর মাকে কথা দিয়েছি।-- বাহ তাহলে আর আমতের জায়গা কোথায়....?
এক শুভদিনে চার হাত এক হয়। সত্যিই সাগরিকা রূপে-গুণে লক্ষ্মী সরস্বতী। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে কর্মরত। স্মাট্, ভদ্র, সভ্য, নম্র। এক কথায় পলিশড। যথা সময়ে দুজনে বিদেশ পাড়ি দেয়। তবে আরো কটা দিন থাকতে হয় ফ্লাইট এর টিকিট সংক্রান্ত কারণে। অবশেষে সব স্থানে।
ডোরবেল কানে যেতে ছুটে এসে গেট খোলে সোফিয়া। মুহূর্তে সাগরিকার চোখে বিস্ময়। প্রশ্ন ভরা চোখে আকাশের দিকে তাকায়। আকাশ যথাযথ উত্তর দেয়। তারপর সোফিয়াকে বলে-- কেমন সারপ্রাইজ? একা নই জোরে। লাল শাড়ি, লাল ব্লাউজ, ঠোটে লাল লিপস্টিক। সোফিয়া মিষ্টি করে হাসে। আকাশ বিস্ময়ভরা সাগরিকার দিকে তাকিয়ে বলে-- সাগর এই তোমার সহচরী। যেকোনো কাজে সাহায্য পাবে। সোফিয়া আলতো হেসে সম্মতি জানায়।
চিকেন স্যান্ডউইচ সহযোগে কফি খেতে খেতে আকাশ সাগরিকার সব কৌতুহলের অবসান ঘটায়। প্রথম প্রথম সবই চলছিল ঠিকঠাক। কিন্তু ধীরে ধীরে সোফিয়ার আধিপত্যে সাগরিকার শান্তি নষ্ট হয়। তারপর গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো আকাশের প্রশ্রয়। সাগরিকার সহ্য সীমা লঙ্ঘন করে।
বিশেষ করে একরাতে চমকপ্রদ ঘটনা। সাগরিকা অসুস্থ। বিছানার একপাশে শুয়ে আকাশ। আর এক পাশে সে। আকাশ বই পড়ছে। সে আজ আকাশের চাহিদা মেটাতে অক্ষম। আকাশ বারকয়েক তাকে নিজের দিকে টেনেছিল। কিন্তু লাভ হয়নি।
মাঝরাতে চাপা হাসি আর কথাবার্তায় ঘুম ভাঙ্গে সাগরিকার। দেখে পাশের ঘরে আলো জ্বলছে। পাশ ফিরে দেখে বিছানায় আকাশ নেই। সাগরিকা দ্রুত উঠে দাঁড়ায়। একপা দুপা করে পাশের ঘরে যায়। ভেজানো দরজার ফাঁক দিয়ে যা দেখে তাতে চক্ষু চড়কগাছ। অনড় অটল-ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে সে। পায়ের পাতা নড়ে না। অপলক দৃষ্টি। বসে আছে আকাশ। সোফিয়া তার হাঁটুতে মাথা রেখে কৃত্রিম উপায়ে সহবাসের আনন্দটুকু দিচ্ছে। দুজনের চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক।
সে কী! এতদূর! এত স্পর্ধা! সাগরিকার রক্ষণশীল মনটা ভেঙে চুরমার। মুহূর্তে সে যেন সমস্ত অনুভূতি বাইরে এক নির্বাক স্ট্যাচু। আকাশ বারংবার রিপিট করে-- দেখো সাগরিকা, তুমি বোকার মত রাগ করছো। ও তো মানুষ নয়। কথা বলা পুতুল মাত্র।
আপাতত শান্ত। তবে বুকে চাপা থাকে তুষের আগুন। রাতে আকাশকে নতুন অতিথি আসার সুখবরটা জানায়। আকাশ খুব খুশি।
একসময় ঘরে ছোট্ট সদস্য আসে। নাম মেঘ। সোফিয়া হয়ে ওঠে দ্বিতীয় মা। দায়িত্ব-কর্তব্যে ঠাসা। তার চোখে আছে ক্যামেরা। যার ফলে কম্পিউটার অ্যালগোরিদমের সাহায্যে দেখতে পায়। শনাক্ত করতে পারে মানুষজনকে।
সেই সোফিয়া, সাগরিকার বেবি খুব ছোট্ট, সেই অজুহাতে, আকাশের প্রায় সর্বক্ষণের সঙ্গী। শপিং-মলে শপিং করা, ভালো মুভি দেখা, ক্যান্ডল লাইট ডিনার, নাইট ক্লাবে ব্যালে ড্যান্স---- এককথায় সাগরিকার পরিপূরক। অসহ্য লাগে সাগরিকার। সর্বদা তক্কে তক্কে থাকে। একটু বারুদের অপেক্ষা। হঠাৎই সুযোগ আসে। একরাতে দুজনের শারীরিক ঘনিষ্ঠতা। কৃত্রিমভাবে সহবাসের আনন্দ! হোক কৃত্রিম। তবুও-তো শারীরিক!
চিৎকার করে ওঠে সাগরিকা। হাতের কাছে যা পায় ছুড়ে মারে। আকাশ নিরুপায়। কোন যুক্তি ধোপে টেকে না। ছোট্ট মেঘ কে ছুঁড়ে ফেলতে যায়। সোফিয়াকে ভেঙেচুরে খান খান করতে চায়। চোখ দুটো লাল, খোলা চুলে সম্পূর্ণ পাগল হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি যখন তুঙ্গে, ছুটে যায় আকাশ। দুহাতে তাকে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে ধমকে ওঠে-- এতদূর! বোঝার চেষ্টা করো, তাকাও নিচের দিকে। ছোট্ট তিন মাসের বেবিটার দিকে। ছোট্ট বেবিটা সোফিয়ার যান্ত্রিক বুকে কপাল ঠুকে একটু দুধের জন্য রক্ত ঝরাচ্ছে। আবার নিজের দিকে চোখ রাখে, স্তন থেকে দুধ পড়ে পোশাক ভিজছে! সাগরিকা ধাতস্থ হয়। ছুটে গিয়ে বেবিকে কোলে নেয়। সাগরিকার অবচেতন মনে কখন যেন দুজন একাত্ম হয়ে উঠেছিল। সাগরিকার হুশ ফেরে। লজ্জিত-ভাবে ফিসফিস করে সোফিয়া কে বলে-- সরি।