পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

হোমরা চোমরার ফ্যাসাদ

  • 02 June, 2020
  • 0 Comment(s)
  • 1408 view(s)
  • লিখেছেন : হুতোম প্যাঁচা
এডিটর বা প্রেসিডেন্ট যা- ই- হোন, এ মরসুমে ফ্যাসাদে আপনি পড়বেনই। হুতোম প্যাঁচার নকশা।
অনেক কাল নকশা লিকচি না বলে সম্পাদক বেজায় গোঁসা করেচে। বল্লে টঙে বসে আছেন আর অন্ন ধ্বংস করছেন। দেশের হাল দেখেছেন?
হুতোম হেসে খুন হলেন। ভূতের আবার অন্ন ধ্বংস।
সম্পাদক থতমত খেয়ে বল্লে না মানে দেখছেন তো মানুষের দুঃখ কষ্ট? এসব লিখতে হবে তো?
তা বল্লেম তোমরা সব হোমরা চোমরা এডিটর থাকতে হুতোম লিকলেন কিনা তাতে কী? বলে এডিটরদের টিকি বাঁধা আচে। সেই যে ফেসবুকে বিদ্যাসাগর মশায়ের ছেলেবেলার ছবি বলে একটি ফোটো শেয়ার হচ্চিল? এক বামুন পড়তে বসেচে আর শিখাটি বাঁধা আচে দেয়ালের হুকে? তেম্নি।কোতায় বাঁধা আচে? না রাজধানীর সম্পাদকদের শিখা ঘোড়দৌড়ের ময়দানে আর কলকেতার সম্পাদকদের শিখা হুগলী নদীর অপর পারে ঢ্যাঙা বিল্ডিংটির টঙে। দুখখু কষ্টের কতা বেশি লিকলেই শিখায় টান পড়ে প্রাণ যাই যাই হয়ে থাকে।
শুনে আপনাদের হাল দেকে হুতোমের ভারী দুখখু হল। আপনারা সরল মনে সম্পাদকদের সে কালের মতন যাত্রার বিবেক জ্ঞান কচ্ছেন। দেশের সঙ্কটে তেনাদের মুখ হতে সত্য কতা শুনবেন বলে বসে আচেন। যেম্নি সেই রেল স্টেশনের ছেলেটি। মা মরে ভূত অথচ ছেলে মনে কচ্ছে মা ঘুমুচ্চেন। এই জেগে উঠে চাট্টি খেতে দেবেন।
সম্পাদকেরা একন ফর্দ তোয়ের কত্তে ব্যস্ত। আপিসে কটি বাতি জ্বেলে কটি নিবিয়ে রাখলে কোম্পানির প্রফিট কমবে না। দিনে পাঁচ বার টয়লেট না গিয়ে একবার গেলে লস কমে কিনা। কোরোনায় কোম্পানিগুলির নুন আনতে পান্তা ফুরোবার হাল হয়েচে। বড় মেজ সেজ বাবুদের এ সনে ইওরোপে মোচ্ছব গেল বলে। তাই কেবল বাতি নিবিয়ে আর টয়লেট পেপার খরচ কমিয়ে কুলোবে না, কিচু চাকুরে জবাই কত্তে হবে। সে ফর্দ তোয়ের কত্তে সম্পাদকদের বুক ধড়ফড়, পেট গুড়গুড়, রাতে সেরেফ বার্লি। সকল সম্পাদক আমারটির মতন বৈষ্ণব নন। কেউ কেউ বিলক্ষণ ঠ্যাঁটা। বলেচেন মাহিনাও কাটবে আবার মাতাও কাটবে সেটি হবে না। এ যাত্রায় পোঁদের মাংসটুক নে ছেড়ে দে বাপু। তা একশো, দেড়শো, পৌনে তিনশো চাকুরে জবাই করে কোম্পানিগুলি ঢেঁকুর তুলেচেন। আড়কাটিরা বলচে একন বাকিদের হাড়িকাঠে শুতে হচ্চে না।
বাবুরো এ খবর শুনে পাশবালিশ নে মিঠে স্বপন দেকতে দেকতে ঘুমিয়ে পড়বেন সেটি হবার যো নেই। খাঁড়া সকলের মাতায় ঝুলচে। কোরোনায় কে বাঁচে কে মরে ঠিক নেই ওদিকে গুপুস করে লক খোলার তোপ পড়ে গ্যাচে। প্রধান সেবকবাবু দুই মাস আগে বল্লেন একুনি ঘরে তালা দিলে কোরোনা ঢুকতে পাবে না। তাই দেশসুদ্ধ ঘরে ঢুকলেন। ব্যালকনিতে বাতি দিলেন। থালা বাজালেন। যাদের ঘর নেই তারা পথেই পচে মল্লেন। একন আবার সেবকবাবু বলচেন বেরিয়ে পল্লেই হল। তাই সকলে বেরুচ্চেন।
যম বাছাধন ফ্যাসাদে পড়েচে। ভূতেদের ওয়েবিনারে দাঁত খিঁচিয়ে বল্লে তার বাড়ির সামনে লাইন লেগেচে। গোড়ায় ভেবেচিল সকাল সকাল তালা ঝুলিয়ে ফেল্লেই গোল মিটল। বন্দ দেকে ফেরত যাবে অনেক লোক। কিন্তু যে ছোটলোকেরা হাজির হয়েচে তাদের চোকের চামড়া নেই। শোয়ার বসার জায়গা নেই যমদূতেরা ড্যাঙশ মারচে তবু ব্যাটারা ঠায় বসে আচে। বলে এসব তো মর্ত্যেই ভোগ করে এসেচি। এতে আর দুখখু কী? আর ফেরত যাচ্চি নে। চল্লিশ প্রহর রেলে চেপে এধার ওধার কত্তে আর পারব না। প্রাণটি ত্যাগ করে ক্ষিদে নেই তেষ্টা নেই এই ভাল আচি। তোরা যা পারিস কর। যম হুতোমকে নাহক ঠেস দিয়ে বল্লে মর্ত্যে কোন মধুতে বসে আচো হে? বলি মানুষ গার্লফ্রেন্ড জুটেচে নাকি? মানুষগুলোর চে আমাদের নরকের কীটগুলোরও যে মায়া দয়া বেশি দেকচি। এমন কতা শুনে কতকগুলি রাইট উইং ভূতে এম্নি ঝগড়া জুড়ে দিলে যে হুতোম আর কতা বলার সুবিধে পেলেন না। আঁটকুড়ের ব্যাটা বেটিরা যমকে বল্লে শালা লুটিয়েন্স এলিট লিবটার্ড। জানিস ভারতবর্ষ কত মহান দেশ? কত মুনি ঋষি একানে মানুষের জন্যে কত জ্ঞান রেকে গ্যাচেন? আমাদের এম্নি টলারেন্ট দেশ বলে এমন কতা বলতে পাল্লি। চীন হলে কী কত্তিস? যম বেজায় চটে সবকটার ঘেঁটি ধরে তার ফুটন্ত কড়াইয়ে ফেলতে গোল থামল।
সম্পাদক আপিসে বেরুবার আগে বল্লে যেখানেই যান মাস্ক পরে যাবেন কিন্তু। কোরোনাকে আন্ডার এস্টিমেট করবেন না, ভূত বলে আপনি বাঁচবেন এমন কথা নেই। পাত্র মিত্র অমানুষদের যখন হচ্ছে, না-মানুষদের হবার দেরী নেই।
সম্পাদক যা বলে বলুক, আপনাদের হুতোম ওসবে ডরান না। একন আমেরিকা যাবার সময়। সাদা বাড়ির গণ্ডমূর্খ বাবুটি বাঙ্কারে সেঁধিয়ে কেমন আস্ফালন কচ্ছেন সে রঙ্গ দেকতে হবে না? গ্লোবাল ভিলেজের ও পাড়ায় যা ঘটে এ পাড়ায় ঘটতে কতক্ষণ?
0 Comments

Post Comment