পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

পরিবেশ-প্রতিবেশ ধ্বংস ও দোসর-পুঁজি পর্ব: দুই

  • 27 March, 2021
  • 0 Comment(s)
  • 1222 view(s)
  • লিখেছেন : শুভাশীষ মুখার্জী
টাটা বা তার মতো যে সব দোসর-পুঁজিকে রাষ্ট্র অন্যায্য আর্থিক ও অন্যান্য বদান্যতা দেখিয়ে মুনাফার সুযোগ করে দিচ্ছে, তারা নির্বাচনে খোলাখুলি সরকারি দলের পেছনে টাকার থলি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারের আর্থিক দায় নিচ্ছে।

২০০৬ সালের কথা সবাই হয়তো এতোদিনে ভুলে গেছেন। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম, পস্কো-কলিঙ্গনগর, আমাদের নগর চেতনায় দূরতর দ্বীপে পর্যবসিত হয়েছে। ইতিমধ্যে নয় নয় করে কেটে গেল দেড় দশক, বরং বলা ভাল, বঞ্চনার দেড় দশক। গুলি চালনা, জমি জবরদখল, বেরোজগার— এই সব নিয়ে যাঁদের জীবনযাপন চলছে এই দীর্ঘ সময়কাল জুড়ে, একবার ফিরে থাকানো যাক সেই সব ম্লান মুখের স্বদেশবাসীর দিকে

২০০৬-এর জানুয়ারি মাসের শুরু। তখনও আমাদের রাজ্যে সীমিত ক্ষমতার অধিকারী কমিউনিস্টদের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে সিঙ্গুরে ছোটো মোটরগাড়ির মতো জনস্বার্থ-রক্ষাকারী প্রকল্পের মাধ্যমে পুঁজিবাদ প্রতিষ্ঠার ফলিত অনুশীলন ভবিষ্যতের গর্ভে। ওড়িশার জাজপুর জেলায় টাটা কোম্পানির একটি ইস্পাত কারখানার জন্য আদিবাসীদের জমি বেআইনিভাবে অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে স্থানীয় অধিবাসীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিক্ষোভের প্রচণ্ডতায় ভীত হয়ে টাটা কোম্পানি সরকারি পুলিশের স্মরাণাপন্ন হয়। ২ জানুয়ারি, ২০০৬, পুলিশ আক্ষরিক অর্থেই নির্বিচারে ঝর্ণাধারার মতো নিরবছিন্নভাবে নারী-শিশু-বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জমায়েতের ওপর গুলি চালায়। দিনের শেষে দেখা যায় জমায়েতের ১২ জন ঘটনাস্থলে মারা যান, পরে একজন সাধারণ পুলিশের মৃতদেহ এক রহস্যজনক অবস্থায় আবিস্কৃত হয়। গুলিতে আহত আরও দুজন গ্রামবাসী পরে মারা যান

পুলিশের এই গুলিচালনার ঘটনার তদন্ত করার জন্য একটি কমিশন গঠিত হয়। এই কমিশনের ভার পান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ন্যায়াধীশ প্রদ্যুম্ন কুমার মোহান্তি। ২০১৭ সালে অনেক টালবাহানার পর এই কমিশন তার রিপোর্ট পেশ করে। এই সব কমিশনের রিপোর্টের যা সাধারণ প্রবণতা, এই মোহান্তি কমিশনও তার ব্যতিক্রম নয়। এতো দিন পর রিপোর্ট জমা দিয়ে কমিশন গুলিচালনার ঘটনায় কাউকেই দায়ী করেনি, ফলে কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশের কোনও আধিকারিককেই সাজা দেওয়া যাবে না, আদিবাসীদের ক্ষতিপূরণ পাওয়া তো দূরস্ত।

যাঁদের পরিবারের মানুষরা এই অমানুষিক হত্যাকাণ্ডের শিকার, তাঁরা স্বভাবতই নানান প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন তুলছেন: এত জন আদিবাসীকে কার আদেশে কে বা কে কে হত্যা করলো? এখানে জানিয়ে রাখা যেতে পারে যে, পুলিশের গুলিতে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের চিহ্নিতকরণের যাতে অসুবিধা হয়, সেই কারণে মৃতদের ওপর পুলিশ বার বার ধালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাদের দেহ বিকৃত করে দিয়েছে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে তাদের যৌনাঙ্গ কেটে দিয়েছে। এইসব কাজ কারা করলো? গুলি চালনার সময়ে টাটা কোম্পানির গুন্ডারা আদিবাসীদের ঘিরে রেখেছিল।

স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, রিপোর্ট তৈরির সময়ে কমিশন কি এইসব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তাদের হিসেবে এনেছিল? এই রিপোর্টের মাধ্যমে কমিশন কাউকে দায়ী না করার যে পরম্পরা তৈরি করে দিল, এর ফলে ভবিষ্যতে বড়ো আকারে আদিবাসী হত্যার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় বাহিনী উৎসাহী হয়ে পড়বে। ব্যাপারটা যে সেই দিকেই চলেছে, তার ইঙ্গিত মেলে যদি এই সময়ের প্রায় ২৭০টি আদিবাসী হত্যার মধ্যে থেকে মাত্র কয়েকটা খবরকে বেছে নিই।

অক্টোবর ৪, ২০১২। ছত্তিশগড় রাজ্যের রাজধানী রায়পুরে খবর আসে, ‘কুখ্যাত’ ১৭ জন ‘মাওবাদী সন্ত্রাসী’কে রাষ্ট্রীয় পুলিশ এক ‘বীরত্বপূর্ণ’ সম্মুখযুদ্ধে ‘খতম’ করেছে, যাকে ভারত সরকার নাম দিয়েছে ‘এনকাউন্টার ডেথ’, যুদ্ধ করতে গিয়ে মৃত্যু! এই একই ‘অভিযোগ’-এ এই রাজ্যে ২০২০ সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত প্রায় ১০০০ আদিবাসীকে ‘মাওবাদী’ তকমা দিয়ে স্রেফ হত্যা করা হয়েছে। বেসরকারি তথ্যানুসন্ধানী দল এই সব হত্যাকান্ডে পুলিশের ভূমিকার বিষয়টি সামনে আনলেও, রাষ্ট্র সেই সব হত্যাকারী পুলিশদের আজও শাস্তি দেয়নি। একই ভাবে অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তনম অঞ্চলের দু জন ‘মাওবাদী’র পুলিশের হাতে ‘এনকাউন্টার ডেথ’-এর খবর প্রকাশিত হয়। মানবাধিকার সংগঠনের তথ্যানুসন্ধানী দল দলিল-দস্তাবেজসহ প্রমাণ করে দেয় যে এই ‘এনকাউন্টার’ আদতে ভুয়া সংঘর্ষ, পুলিশের বানানো গল্পকথা, এগুলো আসলে স্রেফ আদিবাসীদের হত্যার ছক। অক্টোবর ১৬, ২০২০-তে মহারাষ্ট্রের জলগাঁও গ্রামে ১৫ বা তার কম বয়েসের ৪ জন বালককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যার পেছনে পুলিশের হাত আছে বলে স্থানীয় মানুষদের ধারণা।

কলিঙ্গনগরে পুলিশের গুলি-চালনা সংক্রান্ত রিপোর্টটি যখন ওড়িশার বিধানসভায় পেশ করা হয়, তখন ওড়িশার তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী টাটা কোম্পানির হয়ে ওকালতি শুরু করে দেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, এই রিপোর্টে ন্যায়াধীশ মহান্তি পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে যে যে সুপারিশ করেছেন, টাটা কোম্পানি আগেই সেই সব বিষয় ‘চূড়ান্ত সততার সাথে’ ফয়সালা করে দিয়েছে। তাঁর মতে, ভারত সরকার ও ওড়িশা সরকারের যে পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ নীতি, টাটা কোম্পানির এই দুই বিষয়ে নীতি একেবারেই এক! এই সব তথ্য ২০১৭ সালের শেষের দিকের। এই সময়ে যে সব আন্তর্জাতিক সংস্থা টাটা কোম্পানি বর্ণিত আদর্শ পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ নীতির রূপায়ণ সরেজমিনে দেখতে যান, তাঁদের অভিজ্ঞতা কিন্তু মন্ত্রী মশাইয়ের থেকে আলাদা।

টাটা সংস্থার কারখানার প্রসারণের কারণে নতুন করে আরও বহু মানুষ গৃহহারা, জমিহারা হয়েছেন। এখন টাটার পেলোডারগুলি আচমকা এসে কয়েকটি করে বাড়ি মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে এবং যাদের এইভাবে বাস্তুহারা করা হচ্ছে, তারা ‘প্রকল্প-দ্বারা-প্রভাবিত ব্যক্তি’ বা প্রোজেক্ট-আফেক্টেড-পারসন, বা পরিভাষায় যাদের পিএপি বা প্যাপ বলা হয়, সেই বর্গ ভুক্ত হচ্ছেন না, ফলে জমির পরিবর্তে জমি এবং পরিবার পিছু একজনের টাটা কোম্পানিতে চাকরি, দুটোর কোনোটাই তাঁরা পাবেন না। এর ওপর ভারত সরকারের এই বিষয়ে গাইডলাইন উপেক্ষা করে অতিরিক্ত জেলাশাসক এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, পরিবারের বিবাহিত মেয়েকে অন্য পরিবারভুক্ত বলে ধরা হবে, ফলে বাড়ির বিবাহিত মেয়ে কোনও ধরণের পুনর্বাসন বা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী নয়। টাটা সংস্থা এখানেই থেমে থাকেনি। ওড়িশা সরকার তার নিজের খরচায় টাটা কোম্পানির ইস্পাত কারখানা থেকে প্রায় ৫ কিমি দূরে আদিবাসীদের জন্য একটি বিদ্যালয় ও আদিবাসী পড়ুয়াদের জন্য একটি ছাত্রাবাস নির্মাণ করেছিল, বিদ্যালয়ের নাম গোবরঘাটি হাই স্কুল। এই ছাত্রাবাসে ৩০০ জন আদিবাসী ছাত্র থেকে পড়াশুনা চালাতো। টাটা সংস্থা তার কারখানা প্রসারণের নামে এই বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দেয় এবং জমিটি পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দিয়ে টাটা কোম্পানির বোর্ড লাগিয়ে প্রহরী বসিয়ে দিয়েছে। আদিবাসীদের একটি স্থানীয় সংগঠন তথ্য জানার আইন প্রয়োগ করে জানতে পেরেছে যে টাটা সংস্থা যে একের পর এক বনাঞ্চল দখল করে নিচ্ছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি, কেন না এই জমি রাজ্য সরকার টাটা সংস্থাকে ব্যবহার বা ভোগদখলের ছাড়পত্র দেয়নি, ভারতের পরিবেশ ও বন দপ্তর টাটা সংস্থাকে এই অরণ্যের অধিকার মঞ্জুর করে নি।

সিঙ্গুর-এর ক্ষেত্রে আমরা যেমন শুনেছিলাম যে স্থানীয় যুবকদের নাকি “ টাটা সংস্থাতে কাজ করার মতো প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতা নেই”, সেই একই যুক্তির পুনরাবৃত্তি ঘটেছে কলিঙ্গনগরের ক্ষেত্রেও। পরিবারপিছু একটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষার সময় টাটা সংস্থা জানায় যে, এই নীতি তারা মানবে না, কারণ “জমিদাতা”-দের ( পড়ুন জমি ছিনিয়ে নেওয়া পরিবারের মানুষদের) পরিবারের লোকেদের চাকরি দিতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যে এই সংস্থায় চাকরি করার মতো তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। অতএব, এই প্রকল্পে পরিবার-পিছু একটি চাকরি-র বিষয়টি প্রথম দিন থেকেই অধরা! কিন্তু যাদের সত্যিই সেই শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে এবং যাদের জমি চলে গেছে, তাদের অবস্থাটা ঠিক্ কেমন? বিশ্বনাথ বানারা একজন আদিবাসী যুবক, যিনি একটি মান্য বিজনেস স্কুল থেকে ক্যাট পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করে, টাটা সংস্থায় ইন্টারভিউ দিয়ে, নির্বাচিত হয়ে এবং মেডিক্যাল পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে আজ তিন বছর হলো নিয়োগপত্রের অপেক্ষায় বসে আছেন। আর বোম্বাই থেকে একটি বেসরকারি এবং স্বীকৃত নয় এমন একটি বিজনেস স্কুলের ডিগ্রিধারী একজন, যিনি বহিরাগত, তিনি ওই একই ইন্টারভিউতে নির্বাচিত হয়ে ১৫ দিনের মাথায় নিয়োগপত্র পেয়ে আজও চাকরিরত! পরে টাটা সংস্থা বানারা-কে ডেকে বলে যে, তার নামে যে একখণ্ড বনাঞ্চল রয়েছে, সেটি যদি সে টাটা সংস্থার নামে লিখে দেয় তবে সে নিয়োগপত্র পাবে! স্থানীয় যুবকদের কোনও পাকাপাকি নিয়োগপত্র ছাড়াই মাসে ৩০০০ হাজার টাকা দিয়ে টাটা সংস্থা অনিয়মিত কাজে নিয়োগ করছে; আর ঠিকাদাররা এই যুবকদের মাসে ৮০০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে বলে শংসাপত্র দিচ্ছে! এই নিয়ে আন্দোলন হলে টাটা সংস্থা ঘোষণা করে যে তারা যুবকদের চাকরির পরিবর্তে এককালীন টাকা দিয়ে দেবে এবং যুবকরা লিখে দেবে যে তারা চাকরির দাবি স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিল। অনেকে বাধ্য হয়েই এই ব্যবস্থা মেনে নিয়েছে। জানুয়ারি ২, ২০২০-তে কলিঙ্গনগরে টাটা ইস্পাত কারখানা গড়ার বেদীমূলে ১৪ জন আদিবাসী সংহারের ১৪ বছর হয়ে গেছে। এই ১৪ বছর ধরে সরকার আদিবাসীদের জানায় নি, এই হত্যার জন্য কে বা কারা দায়ী।

এই কারখানা গড়ার জন্য ৫০০০ জন আদিবাসী বাস্তুহারা, জমিহারা হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে ঐ অঞ্চলটি ইস্পাত কারখানার “হাব” হয়ে উঠেছে, এখানে এখন নয় নয় করে ১৪ট ইস্পাত কারখানা তাদের উৎপাদন চালাচ্ছে। অঞ্চলটি ভারতের অন্যতম দূষণ-প্রবণ অঞ্চল। ইস্পাত কারখানার জন্য প্রয়োজনীয় লৌহ-আকরের যে বিপুল এবং সরেস ভাণ্ডার রয়েছে এই অঞ্চলে, ওড়িশা সরকার সাগ্রহে করপোরেট সংস্থাগুলিকে সেই আকরিক জলের দরে দিয়ে দিচ্ছে।

এতো সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে রাষ্ট্রের যেসব করপোরেট দোসর-পুঁজিপতিবৃন্দ তথাকথিত “ব্যবসা” করছে, সেই ব্যবসার হাল কেমন? টাটা কোম্পানি এই অতিমারি-র আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে তারা তাদের কারখানা প্রসারণের কাজ ধীর গতিতে করবে, যদিও আকরিক এবং জমি দখলের কাজ প্রসারণের নামে চালিয়ে যাবে। কারণ হিসেবে তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ইস্পাতের নিম্নমুখী চাহিদাকে অজুহাত খাড়া করেছে। ২০১৮ সালে, যখন আন্তর্জাতিক বাজারে ইস্পাতের চাহিদা তুঙ্গে, তখন এই টাটা কোম্পানি তাদের কারখানার বছরে ৩০ লক্ষ টন ইস্পাত উৎপাদনের লক্ষমাত্রা বাড়িয়ে বছরে ৮০ লক্ষ টন করার উদ্দেশ্যে কারখানার প্রসারণের কাজ শুরু করে। এই কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের মাঝামাঝি। এই পরিকল্পনায় ছিল কোল্ড রোলিং মিল, পেলেট প্ল্যান্ট। এই পেলেট প্ল্যান্ট-এর ফলে টাটা কোম্পানি নিজেই নিজের জন্য প্রয়োজনীয় পেলেট বানিয়ে নিতে পারবে এবং তৃতীয় সংস্থার কাছ থেকে বেশি দামে এই বস্তুটি তাকে কিনতে হবে না, অর্থাৎ কোম্পানির মুনাফা বাড়বে।

যেসব দোসর-পূঁজি রাষ্ট্রের বদান্যতায় তাদের মুনাফা বাড়িয়ে চলেছে, তারা সবাই তাদের উৎপাদনের লক্ষ ক্রমাগত কমিয়ে চলেছে। টাটা সংস্থার মতো জিন্ডাল স্টিল ওয়ার্কস আর একটি দোসর-পুঁজির উদাহরণ। এরাও তাদের কারখানার প্রসারণের জন্য সব সুযোগ-সুবিধা সরকারের কাছ থেকে আদায় করে শেষ পর্যন্ত তাদের কারখানা প্রসারণের পরিকল্পনা আপাতত স্থগিদ বলে ঘোষণা করেছে। টাটা বা তার মতো যে সব দোসর-পুঁজিকে আজকে রাষ্ট্র অন্যায্য আর্থিক ও অন্যান্য বদান্যতা দেখিয়ে মুনাফার সুযোগ করে দিচ্ছে, তারাও আসন্ন নির্বাচনে খোলাখুলি সরকারের পেছনে টাকার থলি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারের আর্থিক দায় নিচ্ছে। রাষ্ট্র ও দোসর-পুঁজির মিথোজীবী অস্তিত্ব আমাদের দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে সর্বনাশের বার্তা নিয়ে এসেছে

0 Comments

Post Comment