পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

স্কুল খোলা বিতর্কঃ সুবিধাভোগী অভিভাবকের চোখে

  • 01 October, 2021
  • 0 Comment(s)
  • 1912 view(s)
  • লিখেছেন : শুভ্রদীপ ঘোষ
প্রায় দেড় বছর স্কুল বন্ধ, ডিজিটাল ডিভাইড কি করে, ছোট ছোট বাচ্চাদের পড়াশুনা বন্ধ করেছে, তা নিয়ে প্রচুর লেখা হয়েছে, এবার একজন সুবিধাভোগী অভিভাবক কি ভাবছেন, তাঁদের সন্তানদের পড়াশুনা নিয়ে, কেন তাঁদের সন্তানদের শিক্ষার জন্যেও স্কুল খোলা জরুরী, এই নিয়ে আলোচনা করাও জরুরী এবং তা অতি দ্রুত, তা মিয়েই কিছু কথা লিখলেন শুভ্রদীপ ঘোষ

"জানেন, গত ৮ মাসে মেয়েকে সন্ধ্যেবেলায় পড়াতে বসাতে পারতাম না। রেগে যেত, খিটখিটে হয়ে যেত। গতকাল প্রথমবার নিজে থেকে বইখাতা নিয়ে বসল" দীর্ঘকাল পরে দৃষ্টির বাবার সঙ্গে দেখা হবার পর ওনার প্রথম অভিব্যক্তি। দৃষ্টি আমার ছেলের সহপাঠী। সময়টা এই বছরের শুরুতে। অসম সরকার ২০২০ এর নভেম্বর মাস থেকেই ধাপে ধাপে স্কুল প্রাঙ্গণে পঠনপাঠনের অনুমতি দেয়। করোনার প্রথম ঢেউয়ের শেষের সময় সেটা। আমার ছেলের স্কুলে জানুয়ারি মাস থেকে শ্রেণীকক্ষে প্রাথমিক বিভাগের ক্লাস শুরু হয়। সেই পর্ব চলে দুই মাস যাবত। সেই দিনগুলিতে আমার পরিচিত অভিভাবকদের, বিশেষত যারা তাদের ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠাতেন (ঐচ্ছিক হওয়া সত্ত্বেও ), তাদের অভিজ্ঞতা দৃষ্টির বাবার মতোই ছিল। কেবল অভিভাবক নন, ছাত্র ছাত্রীদের শরীরী ভাষায় উচ্ছ্বাস বলে দিচ্ছিল তারা তাদের নিজস্ব জীবন ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনায় কতটা আনন্দিত।

এখানে বলে রাখা ভাল আমি আদতে বাংলার বাসিন্দা হলেও প্রায় দুই দশক কর্মসূত্রে অসমবাসী। যে জায়গায় বসবাস করি তা গৌহাটি শহর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে- প্রায় শহুরে অঞ্চলই বলা চলে। আমি সুবিধাভোগী অভিভাবকদের দলে পড়ি। আমার ছেলে পড়ে বেসরকারি স্কুলে। ঐ দুই মাস ব্যতিরেকে বিগত দেড় বছর আমার ছেলের স্কুলশিক্ষা অনলাইন মাধ্যমেই হচ্ছে। আমার বাড়ীতে একাধিক ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, স্মার্ট ফোন, প্রিন্টার এবং মোটের উপর স্থিতিশীল ইন্টারনেট সংযোগের সুবিধা রয়েছে। এটাও বলে রাখা ভাল যে ছেলের সহপাঠীরা, এবং আমার সহকর্মীদের সন্তানরাও একই সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। এতদ সত্ত্বেও পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের একটা বড় অংশ কায়মনোবাক্যে চাইছেন স্কুল খুলুক, পঠনপাঠন হোক শ্রেণীকক্ষে, শিক্ষক শিক্ষিকাদের মুখোমুখি। ভেবে দেখার বিষয় হল এত সুযোগসুবিধা থাকা সত্ত্বেও, করোনার প্রকোপ যথেষ্ট থাকা সত্ত্বেও এমন ভাবনা কেন?

কেউ প্রশ্ন তুলতেই পারেন এখানে আলোচনা বাংলার স্কুল খোলা নিয়ে। সেখানে অসম বাসীর অভিজ্ঞতা কীভাবে প্রাসঙ্গিক হতে পারে। এ প্রশ্নের উত্তরে এটাই বলা চলে যে করোনার প্রকোপের পরিমাণগত তারতম্য থাকলেও, দুই রাজ্যে তার গুণগত ফারাক বিশেষ নেই। বিশেষত যে অঞ্চলগুলি এই আলোচনার পরিধির মধ্যে আছে, অর্থাৎ মূলত বড় শহর ও শহরতলী অঞ্চল, সেখানে এই সাদৃশ্য প্রকট। ডিজিটাল বৈষম্যের শিকার যে ছাত্র ছাত্রীরা, অভিভাবকরা তাঁদের এই আলোচনায় আনছিই না কারণ তাঁদের অবস্থা নিয়ে দিস্তা দিস্তা কাগজ খরচ হয়েছে, দৃষ্টি আকর্ষণকারী সমীক্ষা হয়েছে যেখানে স্পষ্টভাবেই দেখা গিয়েছে যে তাঁদের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ স্কুল খোলার পক্ষে রায় দিয়েছেন (অবশ্য বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ফলাও করে ঘোষণা করেছেন যে সরকারী উদ্যোগে হওয়া একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে সংখ্যাগরিষ্ঠ অভিভাবক ও শিক্ষক সমাজ না কি স্কুল খোলার বিপক্ষে। কাদের মধ্যে, কী পদ্ধতিতে সেই সমীক্ষা হয়েছে তার কোন উল্লেখ অবশ্য সরকারী ঘোষণায় নেই )।

সমস্ত পরিকাঠামোগত সুবিধা থাকা, ডিজিটাল ডিভাইডের সুবিধাজনক প্রান্তে অবস্থান এবং করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও আমার মত অভিভাবকরা কেন চাইছেন স্কুলের পঠনপাঠন স্কুলেই হোক? কারণ বহুবিধ। নিজ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রধান কয়েকটি দিক তুলে ধরছি। প্রথমত, বহু ক্লিশে হয়ে গেলেও দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা বলছে, বিশেষত প্রাথমিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে স্কুল বহু কিছু শেখার জায়গা। এমনকি পাঠ্যক্রমের কোন বিষয় শিখতে গেলেও একলা ঘরে বসে অবয়বহীন একটি ক্লাসরুমের অংশগ্রহণ স্কুলের ক্লাসরুমের যৌথতায়, শিক্ষক শিক্ষিকার সক্রিয় অংশগ্রহণে শেখার দূরতম বিকল্পও হতে পারে না। সহপাঠীদের সঙ্গে খুনসুটি, ভাগ করে খাওয়া টিফিন, খেলার মাঠের বন্ধনহীন উল্লাস এগুলিও স্কুল জীবনের অঙ্গ, ব্যক্তিত্ব বিকাশের সহায়ক। স্কুলজীবন থেকে দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতি এমনকি সুবিধাভোগী বাচ্চাদের স্বাভাবিক বিকাশকেও যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত করছে। পারস্পরিক সম্পর্কের বেড়া ভাঙ্গা স্বতঃস্ফূর্ততা, যা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক, তার বিপন্নতা প্রতি মুহূর্তে টের পাচ্ছি। যে বাচ্চা দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগেও অনায়াসে এ বাড়ী ও বাড়ী করে খেলার সাথীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত, তাকে দেখছি অন্য বাড়ির চৌকাঠ ডিঙোতে অনীহা প্রকাশ করতে। পুরনো জীবনের স্বাভাবিকতা থেকে যত দূরে যাবে, তত বাড়তে থাকবে এই ধরণের মানসিক স্থবিরতা। দ্বিতীয়ত, তাত্ত্বিকভাবে যতই বলা হোক না কেন, এইটাই সুযোগ বাচ্চার বিকল্প অনুসন্ধানের, পাঠ্যক্রমের বাইরে তাদের পছন্দের জিনিসের বৌদ্ধিক চর্চার, বাস্তবে কি তা সম্ভব হচ্ছে? সিংহভাগের ক্ষেত্রে? সেই চর্চার যে পরিমণ্ডল তা কি আদপেই সহজলভ্য? যে ভয়ের বাতাবরণ স্কুল খুলতে সায় দেওয়া থেকে অভিভাবকদের বিরত করছে, সেই বাতাবরণে একটি অপরিণত মনের শিশুর পক্ষে খোলা মনে, দিনের পর দিন বৌদ্ধিক চর্চা সম্ভব? যে কোন বৌদ্ধিক চর্চায় যে অ্যাকাডেমিক ডিসিপ্লিন লাগে সেটার কথা না হয় বাদই দিলাম। উদাহরণ দিয়েই বলি। সহকর্মীর সাত বছর বয়েসের মেয়ে, স্কুলে যেতে ভীষণ ভালবাসে, এ বছরের শুরুতে স্কুল খোলার দিন থেকেই জেদ ধরে, বাড়ীর মানুষের আশঙ্কার সঙ্গে যুদ্ধ করে, স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করেছিল। আজ সে দিনের পর দিন ক্লাসের সময়টুকু বাদ দিলে কেবলই খেলে বেড়াচ্ছে। এতটাই যে কখনও কখনও তার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হবার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। বাইরে থাকার যতটা সময় সে আদায় করে নিতে পারছে ততটা সে নিজেকে নিংড়ে দিচ্ছে খেলায়, এমনকি বাড়ীতে থাকলেও নিজের মনে একা একা খেলে যাচ্ছে রোলার স্কেট বা ব্যাডমিন্টন র‍্যাকেট নিয়ে। শুনলে মনে হবে - বাঃ! চমৎকার। সে তো তার নিজের ইচ্ছেমত সময় ব্যয় করতে পারছে। কিন্তু আসলে কি তাই? সে চমৎকার আঁকতে পারে। মাঝের কিছুদিন সে এঁকে সময় কাটাচ্ছিল। কিন্তু সেই উৎসাহ কয়েকদিন পরেই থিতিয়ে যায়। সে সিনেমা দেখতে ভালবাসে, কিন্তু এখন আর তেমন মন নেই। ঘরের চার দেওয়াল আর কিছু সময় বাইরের খেলার জায়গা এই বৃত্তে ঘুরে ঘুরে যে একঘেয়েমি তার থেকে মুক্তি পাবার প্রাণপণ চেষ্টাতাকে নাওয়া খাওয়া ভুলে খেলায় মত্ত করে তুলেছে। খুব কাছ থেকে দেখলে বোঝা যায় এই প্রচেষ্টাটা। চাপা স্বভাব সত্ত্বেও জায়গামত মুখ খুলে সে বুঝিয়ে দিচ্ছে স্কুল যেতে পারাটা তার কাছে কত জরুরী। স্কুলে যেতে পারাটা যে পড়াশুনো বা অন্যান্য বিষয়ের চর্চা করার ইচ্ছার অনুঘটক সেটা সে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে। একই অবস্থা আমার ৯ বছরের ছেলেরও। যে বৌদ্ধিক চর্চাগুলো করোনা পূর্ববর্তী সময়ে সে ভালবেসে করত, সেই ভালবাসাটা অনলাইন পদ্ধতির পাল্লায় পড়ে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। কোন বিষয়েই সে মনঃসংযোগ করে উঠতে পারছে না। তার ছাপ কতক পড়ছে জীবনচর্যায়। তৃতীয়ত, কেউ বলতেই পারেন এই অতিমারীর সময়ে বাচ্চাদের বিকল্পের সন্ধান দেওয়ার দায়িত্ব তার অভিভাবকদের। তাঁরা তো পরিণতমনস্ক। আমার মত সুবিধাভোগী অভিভাবকদের পক্ষে রিসোর্সের প্রাচুর্যের ফলে বিকল্প খোঁজাও খুব কঠিন নয়। কিন্তু আবারও বলতে হয় একই কথা - তত্ত্ব এবং বাস্তব অনুশীলন এক নয়। যে অভিভাবক নিজেই শিক্ষক, যাকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রান্তিক ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষাদানের জন্য বিশেষভাবে ভাবতে হচ্ছে, প্রযুক্তিকে শিখে নিয়ে তা প্রয়োগের জন্য উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে, যার বাড়ীর অপর রোজগেরে মানুষটিকে কাজে বেরোতে হচ্ছে তাঁর স্মার্ট ফোনটি নিয়ে, তাঁর দিনের বড় অংশ কেটে যাচ্ছে নিছক ক্লাস করা এবং করানোর জন্য তাঁর সন্তানের সঙ্গে একটি স্মার্ট ফোন কীভাবে ভাগাভাগি করে নেবেন সেই চিন্তায়। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে প্রিয়জনের মৃত্যুসংবাদ সংক্রান্ত অবসাদ, করোনা সংক্রমিত হবার আশঙ্কার অবসাদ। সেইসব অতিক্রম করে নিজের এবং শিশু সন্তানের মানসিক স্থিতিশীলতার জন্য বিকল্পের সন্ধান বড় সহজ কাজ নয়। এর সঙ্গে যোগ করতে হবে যে অনেক অভিভাবকেরই বাড়ী থেকে কাজ করার বিলাসিতা নেই, বরং করোনা কালে কর্মক্ষেত্রে বেড়েছে চাপ। এ ছাড়াও চোখের সামনে উদাহরণ দেখছি কীভাবে বাড়ী থেকে কাজ করার সুযোগ দিয়ে সংস্থাগুলি প্রকারান্তরে কর্মীদের ঘুমানোর সময়টুকু বাদে বাকি সময়টাই ব্যস্ত রাখার নানা উপায় আবিষ্কার করে ফেলেছেন। কাজের চাপে হাঁফ ছাড়ার সময় নেই যে অভিভাবকদের (লিঙ্গ নির্বিশেষে) তাঁরা চাইলেও বিকল্পের ভাবনা করে উঠতে পারছেন না।

তাহলে সমাধান কী? হৈ হৈ করে স্কুল খুলে দেওয়া? বিশেষত অতিমারীর প্রকোপ যখন এখনও বেশ কিছুদিন চলার আভাস দিয়ে রেখেছে? উত্তর খুব সহজ যেমন নয় তেমন হাত গুটিয়ে বসে থাকাও কোন সমাধান নয়। এটা খুব পরিষ্কার যে যে বিকল্প ব্যবস্থা সরকারের এবং শিক্ষা নিয়ামক সংস্থাগুলির করা উচিত ছিল তার কিছুই হয়নি এবং দেড় বছরের দীর্ঘসূত্রতায় আর কিছু হবার সম্ভাবনা নেই। কেউ কেউ দায়টা শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে দেন এই বলে যে তাঁরা যথেষ্ট সৃষ্টিশীলতা দেখান নি, বিশেষত এই পরিস্থিতিতে যা দরকার ছিল। অথচ এ অভিযোগ করার আগে ভাবা হয় না যে শিক্ষকরা লড়ছেন ঢাল তলোয়ারহীন এক অসম লড়াই। সরকার, বা শিক্ষা নিয়ামক সংস্থা কেউই বিকল্পের সন্ধানের জন্য যে রসদ লাগে তার যোগানের কোন চেষ্টাই করেননি, পুরোটাই ছেড়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের উপর এবং স্কুল ছেড়ে দিয়েছেন শিক্ষকদের উদ্যোগের উপর। নিচুতলার উপর চাপিয়ে দিয়ে উপরতলার এইভাবে দায় ঝেড়ে ফেলা শিক্ষার পন্যায়নের একটি দিক বটে, যা করোনা সংকটে পরিষ্কার দেখা গেল। বাংলার ক্ষেত্রে এই অবস্থায় যা দরকার ছিল তা হল শিক্ষক এবং অভিভাবক সংগঠনগুলির তরফ থেকে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা। এটা পরিষ্কার যে বাংলার সরকার বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করাকে তার আশু উদ্যোগের তালিকায় রাখে নি। কারো আবেদনে কর্ণপাত না করে লোকাল ট্রেন বন্ধ রেখে সরকার তার ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু করেছে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী কিছু অঞ্চলকে। শিক্ষক এবং অভিভাবক সংগঠনগুলির নিষ্ক্রিয়তা স্কুল খোলার ক্ষেত্রে সরকারের পরিকল্পনাহীন এবং নিশ্চেষ্ট থাকার এই বিলাসিতাকে একপ্রকার মান্যতাই দিয়েছে।

অভিভাবক এবং শিক্ষক সমাজের মধ্যে যে অংশটি অন্যান্য নাগরিক দাবিতে যথেষ্ট সক্রিয়তা দেখান ( পথে ঘাটে, সামাজিক মাধ্যমে) এবং এই বিশেষ বিষয়ে চোখে পড়ার মত নীরব, তাঁরা অসমে ধাপে ধাপে স্কুল খোলার প্রক্রিয়া থেকে ভাবনা চিন্তা শুরু করতে পারেন। মূলত শহুরে এবং আমার মতোই সুবিধাভোগী এই অংশটি অসমের শহরাঞ্চলের বেসরকারি স্কুলগুলোর ধাপে ধাপে স্কুল খোলার পরিকল্পনা এবং গত শিক্ষাবর্ষে তার সাফল্য নিয়ে একটু নাড়া ঘাঁটা করলে এবং বৃহত্তর সমাজের স্বার্থে, ডিজিটাল বৈষম্যে ভবিষ্যৎ ছিন্নভিন্ন হতে চলা শিশুদের স্বার্থে জোরদার আওয়াজ তুললে, আওয়াজ তুলে রাষ্ট্রের নিপীড়নের শিকার হওয়া সিংহ হৃদয় ছাত্রদের পাশে সক্রিয়ভাবে দাঁড়িয়ে সরকারের কাছে স্কুল খোলার জোরদার দাবি জানালেআজকের দমবন্ধ করা স্থবিরতা থেকে মুক্তির পথে এক ধাপ হলেও এগুনো যাবে। আমাদের শিশু কিশোরদের মানসিক বিকাশের স্বার্থে এটুকু কি করা যায় না? করোনার ভয়ে অনির্দিষ্টকাল স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিয়ে আসলে আমরা সুবিধাভোগীরা নিজেদের সুবিধাভোগী অবস্থানকেই প্রকট করে তুলছি না তো? এই আত্মসুখী প্রবণতা দীর্ঘমেয়াদে আমাদের নিজেদের সন্তানের মধ্যেই অসুখ হয়ে চারিয়ে যাচ্ছে না তো? সময় এসেছে ভেবে দেখার। দেরি হয়ে গেলে ফেরার রাস্তা থাকবে না কিন্তু।

0 Comments

Post Comment