দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, এনডিএ সরকারের প্রথম বাজেট পেশ করলেন ২৩ শে জুলাই। বাজেট সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর মত - এটি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণের বাজেট । বাস্তবিকই তাই হলে ভারতবাসী হিসেবে আনন্দের শেষ থাকত না। পি এম যা বলছেন তা রাজনৈতিক বক্তব্য হলে ঠিক আছে কিন্তু দেশের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে এই বক্তব্যের কোনও সারবত্তা নেই। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে কেন? গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়ক, দেশের সবচেয়ে বড় সামাজিক প্রকল্প মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট বা মনরেগা, যাকে চলতি কথায় আমরা ১০০ দিনের কাজ বলে থাকি – প্রকল্পটিকে এই বাজেটে অনেকটাই গুরুত্বহীন হয়ে করে দেওয়া হয়েছে। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের জন্য এই খাতে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ ৮৬,০০০ কোটি টাকা। গত বাজেটেও এটাই ছিল। অর্থাৎ বরাদ্দের পরিমাণ অপরিবর্তিত রইল। গ্রামীণ জনগণের কর্মসংস্থান তৈরির ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পে পর পর দু’বছর একই পরিমান অর্থ বরাদ্দের মানে সরকার প্রকল্পটিতে কম অর্থ বরাদ্দ করেছেন। একটা তথ্য উল্লেখ করলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। এবারে মনরেগাতে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ মোট বাজেটের ১.৭৮% । শতাংশের হিসেবে, গত ন’ বছরে এটাই সর্বনিম্ন। সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থের ৪৪% ইতিমধ্যেই খরচ হয়ে গেছে। যদি ব্যয়ের এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে অক্টোবরের মধ্যেই টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। এর ফলে অর্থবছরের শেষ কোয়ার্টারে টাকার অভাবে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। কমবে কর্মসংস্থান। মজার বিষয় অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় একবারের জন্যও প্রকল্পটির নাম মুখে আনেন নি – এ ঘটনাও প্রথম ঘটল। ২০২৪ এর নির্বাচনে কংগ্রেস যখন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তারা ক্ষমতায় এলে ১০০ দিনের কাজে মজুরি বাড়িয়ে ৪০০ টাকা করবে তখন বিজেপি এ বিষয়ে একেবারে চুপ ছিল। তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে মনরেগার মত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটির জায়গা হয় নি। ফলে প্রকল্পটিকে নিয়ে তাদের ভবিষ্যত ভাবনার কোনও আগাম ইঙ্গিত পাওয়া যায় নি। অথচ গ্রামীণ ভারতে বেকারত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে মনরেগার ভূমিকা অনস্বীকার্য। পাশাপাশি গ্রামীন অর্থনীতির সুস্থায়ী উন্নয়ন ঘটাতে এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে এর জুড়ি মেলা ভার।
দারিদ্র্য ও বেকারত্ব হ্রাসে মনরেগা
এখন দেখা যাক দারিদ্র্য দূরীকরণে মনরেগার ভুমিকা কী? এই প্রকল্প গ্রামীণ অদক্ষ কর্মীদের, প্রতি বছর ন্যূনতম ১০০ দিনের কাজ নিশ্চিত করে । কাজের বিনিময়ে মজুরির কারণে প্রকল্পটি আয় বাড়াতে এবং দারিদ্র্যের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। ১০০ দিনের কাজে রাস্তা তৈরি, খাল কাটা এবং পুকুর খননের মত স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টিতে বেশি জোর দেওয়া হয়। তাই এই প্রকল্প সম্পদ সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে গ্রামের মানুষকে উপরের দিকে উঠে আসতে সাহায্য করে। উপরন্তু মনরেগা মহিলা, বৃদ্ধ এবং তপসিলি জাতি ও উপজাতি ভুক্তদের অর্থাৎ সামজের দূর্বল ও পিছিয়ে পড়া মানুষদের দারিদ্র্য এবং অনাহার থেকে বাঁচায়। তাঁদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
এই মুহুর্তে বেকারত্ব কমাতেও মনরেগার বিকল্প নেই। প্রকল্পটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ক’রে, একদিকে গ্রামীণ মানুষের বেকারত্ব ও অর্ধ-বেকারত্বের হার যেমন কমায় তেমন – ই কর্মদক্ষতা বাড়িয়ে কাজ পাওয়ার সুযোগকে বাড়ায়। বছরের যে সময় চাষের কাজ থাকে না তখন মনরেগা গ্রামের মানুষের কাজের ব্যবস্থা ক’রে শ্রমের বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। বাড়ির কাছাকাছি কাজ পাওয়া যায় বলে এর দরুন শ্রমিকদের কাজের খোঁজে শহরে যাওয়ার প্রবণতা কমে। ফলে বেকারত্ব এবং দারিদ্র্য দু’ ই হ্রাস পায়।
যে কথাটা আলাদা করে বলার, তা হল মনরেগা, গ্রামীন কর্মশক্তিতে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে তাঁদের ক্ষমতায়ন ঘটাতে এবং স্বাধীনতা বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে । একই সঙ্গে নতুন পরিকাঠামো সৃষ্টি, কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য গ্রামীণ সুযোগ-সুবিধার সম্প্রসারণের মাধ্যমে গ্রামীণ উন্নয়নকে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে।
মনরেগার ভাঁড়ারে টান
চলতি আর্থিক বছরে মনরেগার জন্য বরাদ্দের পরিমান প্রয়োজনের তুলনায় কম। বরাদ্দে টান পড়ার ফলে দারিদ্র্য, বেকারত্বসহ অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অর্থের অভাবে দুর্বল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান এবং রোজগার – দু’ ই বাধা পাবে। কাজের জন্য যারা শুধুই মনরেগার দিকে তাকিয়ে থাকেন এর ফলে তাঁরা জোর ধাক্কা খাবেন। অনেক গ্রামীণ পরিবারের কাছে প্রকল্পটি জীবনধারণের একমাত্র অবলম্বন তাই তহবিলের সঙ্কোচন গ্রামীণ দুর্দশাকে আরও বাড়াবে সন্দেহ নেই। বরাদ্দের পরিমান প্রয়োজনের তুলনায় কম হলে প্রকল্পে স্বজন পোষন এবং দুর্নীতি আগের চেয়ে বাড়তে বাধ্য। পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে মনরেগায়, গ্রামীন সম্পদ সৃষ্টি বাধা পাবে যা গ্রামীন জনগণের সামাজিক নিরাপত্তা কে বিঘ্নিত করবে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য, অনাহার এবং বেকারত্ব বাড়বে। থমকে যাবে তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন। মার খাবে গ্রামীন উন্নয়ন এবং পরিকাঠামোর উন্নতি । অর্থাৎ মনরেগাতে বরাদ্দের এই স্থবিরতা অর্থনীতির গতিকে পিছনের দিকে টেনে ধরবে একথা হলফ করে বলা যায়।
মনরেগায় সরকারি সাফল্য
মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি প্রকল্প সংক্রান্ত সরকারি তথ্যভান্ডার থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছেন, ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে তামিলনাড়ু মনরেগায় খরচ করেছে তাদের রাজ্য বাজেটের ১৫ % অথচ ওই রাজ্যে দেশের দরিদ্র জনসংখ্যার ১% এরও কম মানুষের বাস। কেরালায় বসবাস করেন দেশের মোট দরিদ্র মানুষের ০.১% অথচ সেখানকার সরকার মনরেগাতে খরচ করেছেন রাজ্যের মোট ব্যয়ের ৪% । উল্টো দিকে, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ ৪৫% দরিদ্র জনগণের জন্য মনরেগায় মোট বাজেটের মাত্র ১১% খরচ করেছে। রাজ্যভিত্তিক ‘বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক এবং মনরেগায় মোট কাজের দিনের’ তথ্য নিয়ে তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করতে গিয়ে দেখা গেছে (কোরিলেশান-কোএফিসিয়েন্টের মান ০.৩) তহবিল ব্যবহার করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য হ্রাসের পরিমাণ সমানুপাতিক নয়। এ থেকে পরিষ্কার সরকার মনরেগায় অর্থের যোগান বাড়িয়ে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের দারিদ্র্য কমাতে ব্যর্থ।
মনরেগায় সরকারি রসিকতা
হরিয়ানা, গোয়া, কর্ণাটক, কেরালাতে ১০০ দিনের কাজের মজুরি ৩৫o টাকার আশপাশ আবার পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উড়িষ্যাসহ বেশির ভাগ রাজ্যে এই মজুরির পরিমাণ কমবেশি ২৫০ টাকার মতন। বাজেটে অনেকেই আশা করেছিলেন ১০০দিনের কাজে সারাদেশে একই মজুরি চালু হবে । তা হয়নি। তবে সব রাজ্যে মনরেগা-র জন্য একটি অভিন্ন মজুরি হার তাত্ত্বিকভাবে সম্ভব হলেও বাস্তবে কিছু অসুবিধা রয়েছে। সব রাজ্যে জীবনধারণের ব্যয় সমান নয়, উন্নয়ণও সর্বত্র এক নয়। এ কথা এখন থাক। অনেকেই ভেবেছিলেন বাজেটে ১০০ দিনের কাজের মজুরি কেন্দ্রীয়ভাবে কিছুটা বাড়বে। তাও বাড়েনি। তবে রাজ্যগুলি চাইলে তা বাড়াতে পারে সেই ব্যবস্থা রয়েছে। গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রক একটি জাতীয় মজুরি সূচক চালু করেছে তাতে মনরেগার মজুরি কম বেশি(মুদ্রাস্ফীতির উপর ভিত্তি করে)করার ক্ষমতা রাজ্যগুলিকে দেওয়া হয়েছে। মজার বিষয় হল, একদিকে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজ্যগুলিকে মজুরি বাড়ানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে অপরদিকে বাজেটে বরাদ্দ কমিয়ে কেড়ে নেওয়া হয়েছে মজুরি বাড়ানোর সামর্থ্য । এর চেয়ে বড় রসিকতা আর কী হতে পারে! মজুরি বৃদ্ধি এখন তোলা থাক। এ পর্য্যন্ত প্রকল্পের বরাদ্দ যা হয়েছে তাতে বছরে ১০০ দিনের পরিবর্তে হয়ত ২৫-৩০ দিনের কাজ জুটবে। স্বাভাবিকভাবেই তা প্রকল্পের অধীনে কাজের ন্যুনতম চাহিদার চেয়ে অনেক কম। মনরেগা খাতে বরাদ্দের নিরিখে বাজেটকে দেখলে বোঝা যায় এই বাজেটে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও দারিদ্র্য দূরীকরণের সুযোগ নেই ।
দারিদ্র্য ও বেকারত্ব কমাতে রেল ও কৃষি
দেশের বৃহত্তম নিয়োগকর্তা রেল । অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় ভারতীয় রেলের কোন উল্লেখ ছিল না। রেল বাজেট বন্ধ হওয়ার পর সাধারণের কাছে রেল ভ্রমণ ব্যয়বহুল হয়েছে । রেলের অপারেটিং রেশিও এতটাই বেড়েছে উদ্বৃত্ত সৃষ্টির সুযোগ নেই। বেশি অপারেটিং রেশিও রেলকে অদূর ভবিষ্যতে ঋণের ফাঁদে ফেলতে পারে। এখনই রেলের উপর ঋণের বোঝা চেপে আছে ৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। বিষয়টি বিগত বাজেটে গুরুত্ব পায়নি, এবারের বাজেটেও পেল না। রেলে উদ্বৃত্ত তৈরি করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ভাবনা এই মুহুর্তে সরকারের নেই - বাজেট দেখে সেরকমই মনে হয়েছে।
বাজেটে সার, খাদ্যদ্রব্য এবং পেট্রোলিয়ামের ভর্তুকি কমানো হয়েছে। এই ভর্তুকি হ্রাস পরিবারিক বাজেটে চাপ ফেলবে বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় । এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খাদ্য দ্রব্যের মূল্যস্ফীতি, গত জুনে তা ৯. ৪% এ পৌঁছেছে। বাজেটে খাদ্যদ্রব্যের দাম কমানোরও কোনো দিশা নেই। ভারতে প্রতিটি পরিবার তাদের আয়ের ৫০ শতাংশ খাদ্যের জন্য ব্যয় করে। দরিদ্র জনগণের ক্ষেত্রে তা ৬০ শতাংশ। খাদ্যদ্রব্যের এই বাড়া দামে সংসার চালাতে নিম্ন আয়ের মানুষরা হিমসিম খাচ্ছেন। আয়ের বেশি অংশ খাদ্যদ্রব্য কিনতেই ব্যয় হয়ে যাচ্ছে । খাদ্যের ভর্তুকি কমানো ও তার মূল্যবৃদ্ধি এই জোড়া চাপে তাঁদের অভাব বাড়বে। কৃষির উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ৪৩ শতাংশ মানুষ। বাজেট বক্তৃতার শুরুতেই অর্থমন্ত্রী কৃষির গুরুত্বের কথা বলেছেন। কিন্তু বাজেটে চাষিদের আয় বাড়বে কী করে তা বলেননি। ভারত জুড়ে কৃষকরা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বিবৃতি আশা করেছিলেন। কিন্তু তিনি সে পথ মাড়ান নি। অর্থাৎ এই বাজেটে কৃষকদের আয় বাড়ানোর দিকটিও অবহেলিত থেকে গেল। উল্টে, সারের ভর্তুকি কমায় চাষের উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। দেশের কৃষকদের প্রায় ৮৬% ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক । তাদের অভাব মোচনের কোন রাস্তা বাজেটে নেই। এই বাজেট চাষিকে গরিব থেকে আরো গরিব করবে।
বাজেট ও বাস্তবতা
কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বাজেটে তিনটি নতুন স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে। সরকার ৫০০টি শীর্ষ কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করবে । আগামী পাঁচ বছরে ৪ কোটি চাকরি সৃষ্টির জন্য ২ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করবে । এতে নাকি দেশে নতুন কর্মসংস্থানের জোয়ার আসবে। বাস্তবে তা এলে দেশের মঙ্গল!
‘কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণের’ যে বাজেটের কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তার সারমর্ম পেলাম আমার বন্ধু তুষারের মন্তব্যে - “…এবারের বাজেট একটা ভাঁওতা। জোড়াতালির সরকার, ক্ষমতায় টিকে থাকতে যা যা করা দরকার বাজেটে তাই তাই করেছে। বেকার যুবক যুবতীরা প্রশিক্ষণ নিলেই কাজ পাবে, এমন কোনো দিশা বাজেটে নেই। গ্রামে দেখছি তো, কাপড়, স্যানিটারি ন্যাপকিন, বাসনপত্র এমন কী মুদিখানার জিনিসপত্র বিক্রির জন্য দোকানদার ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন, কখন খরিদ্দার আসবে। আমরা যারা নিয়ম করে মাসে কিছু রোজগার করি, তারা দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের দুর্দশা বুঝতে পারব না।” তুষার অর্থনীতির একসময়ের কৃতি ছাত্র। দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামে পিছিয়ে পড়া ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া এবং ওখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করছে। খুব কাছ থেকে দেখা মানুষের জীবন যন্ত্রনা আর সেই যন্ত্রণার মুক্তির উপায় হিসেবে এই বাজেট – সংক্ষেপে এর চেয়ে ভালো বিশ্লেষণ আর কী হতে পারে।
শেষে যে কথাটা বলার - বেকারত্ব, দারিদ্র্য, মুদ্রাস্ফীতি, কৃষকের দুর্দশা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের টিকে থাকার সম্ভাবনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাগুলি এখন ভারতীয় অর্থনীতির মূল সমস্যা। সরকার এই সমস্যাগুলির কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন। তবে সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য যে ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন এবং কৌশল গ্রহণ করা উচিৎ - তা করতে তারা রাজি নয়। এবারের বাজেট অন্তত তাই বলছে।