পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

EIA ড্রাফ্‌ট নোটিফিকেশন ২০২০ঃ পরিবেশ সংরক্ষণ নয়, লক্ষ্য কর্পোরেট স্বার্থপূরণ !

  • 29 June, 2020
  • 0 Comment(s)
  • 2630 view(s)
  • লিখেছেন : মধুরিমা বক্সী
পরিবেশ সম্পর্কিত নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে ইনক্লুসিভ মডেলের প্রয়োজন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা আদিবাসী জনগোষ্ঠী, বনবাসী, কৃষক, মৎসজীবি, মহিলা সহ সমস্ত প্রান্তিক মানুষেরা যেখানে গুরুত্ব পাবেন। অথচ বাস্তবে বারবার 'উন্নয়নের' নামে এদেরকেই জল জঙ্গল জমি থেকে উৎখাত করা হয়ে চলেছে।

সার্বিক ভাবে ভারতবর্ষে EIA (এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট) এর আইন আসে ১৯৯৪ সাল নাগাদ যার প্রেক্ষাপটে ছিল ভারতবর্ষের ১৯৮৬ সালের এনভায়রনমেন্ট প্রোটেকশন অ্যাক্ট বা পরিবেশ সুরক্ষা আইন এবং ১৯৯২ এ ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত আর্থ সামিট এর রিও ঘোষণাপত্র। ১৯৯৪ এর সেই নোটিফিকেশন পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হয় ২০০৬ সালে যা আরও কিছু সংশোধনীর মধ্য দিয়ে এতদিন কার্যকরী ছিল। এই নোটিফিকেশন অনুযায়ী শিডিউল ১ এ অন্তর্ভুক্ত যেকোনো নতুন শিল্প বা প্রকল্প শুরু করা, চালু প্রকল্পের মধ্যে কোন পরিবর্তন সম্প্রসারণ বা আধুনিকীকরণ, এমনকি উৎপাদিত পণ্যে কোন বদল করতে হলেও প্রয়োজনীয় পরিবেশগত ছাড়পত্রের (এনভায়রনমেন্টাল ক্লিয়ারেন্স) জন্য EIA আবশ্যিক। এর মূল উদ্দেশ্য প্রকল্প শুরুর আগেই তার কি কি প্রভাব পরিবেশের উপরে পড়তে পারে তা যাচাই করে সেগুলি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। প্রকল্পগুলিকে (খনি, বাঁধ, বিদ্যুৎ, সেচ, নির্মাণ, সিমেন্ট, ধাতু শিল্প, নদী উপত্যকার প্রকল্প, সড়ক, পরিকাঠামো ইত্যাদি) আকার, ও পরিবেশগত প্রভাবের মাত্রা অনুযায়ী শ্রেণীভুক্ত করা হয় এ, বি (বি ১ ও বি ২) ভাগে। সমস্ত পরিবেশ সম্বন্ধীয় খুঁটিনাটি মাথায় রেখে নির্দিষ্ট টার্মস অফ রেফারেন্স (TOR) অনুযায়ী জৈবিক, রাসায়নিক, আর্থ- সামাজিক বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা ও সমীক্ষার পরে রিপোর্টটি প্রকল্পের শ্রেণী অনুযায়ী নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের (কেন্দ্রীয় বা রাজ্য স্তরে) কাছে মূল্যায়নের জন্য জমা পরে এবং বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে পরিবেশগত ছাড়পত্র পাওয়া গেলে প্রকল্পটি চালু হতে পারে। EIA এর বিভিন্ন ধাপের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্ক্রিনিং, স্কোপিং, পাবলিক কন্সাল্টেশন ও এপ্রেইজাল। এই প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল বুনিয়াদি স্তরে যারা প্রকল্পটির দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তাঁদের মতামত।

কোভিড মহামারীর মত সংবেদনশীল পরিস্থিতিতেও আমাদের সরকার ব্যস্ত একের পর এক জনবিরোধী আইন পাশ করতে আর বেনজির ভাবে গনআন্দোলনের নেতা কর্মীদের জেলে পুরতে। ১২ ই মার্চ ঠিক লকডাউন চালু হওয়ার দোরগোড়ায় এই খসড়াটি কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক নিয়ে আসে, ২৩ মার্চ এই বিজ্ঞপ্তি ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হয়। নজিরবিহীন ভাবে এই লকডাউনের সময়ে সাধারন মানুষকে মাত্র ৬০ দিন সময় দেওয়া হয় এর কোন পরিবর্তন বা সংশোধন সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়ার করার জন্য। ব্যাপক বিরোধিতা ও সমালোচনার মধ্যে পড়ায় পরিবেশ মন্ত্রক মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সেই সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত করেছে। এই খসড়া বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার সাথে সাথে শোরগোল পরে যায় দেশের পরিবেশ আইন, অধিকার ও আন্দোলনের সাথে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠন ও পরিবেশ কর্মীদের মধ্যে। বিস্তারিত ভাবে এই খসড়া অধ্যয়ন করলে দেখা যাবে এটি শুধু পরিবেশ বা দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ বিরোধীই নয়, কর্পোরেট স্বার্থে দেশের জনগণকে এই পুরো প্রক্রিয়া থেকে বাদ রাখার এক চক্রান্ত।

অবৈধ প্রকল্পগুলিকে বৈধতা প্রদান

‘ইজ অফ ডুইং বিজনেস’ এর নামে বস্তুত একের পর এক অবৈধ কার্যকলাপকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে বৈধতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে ২০২০ এর খসড়ায়। এনভায়রনমেন্টাল ক্লিয়ারেন্স ছাড়াই চালু করে দেওয়া বা এনভায়রনমেন্টাল ক্লিয়ারেন্সে নির্দিষ্ট করে দেওয়া নিয়ম ভাঙ্গা সমস্ত প্রকল্প বা শিল্প এতদিন EIA আইন ভায়োলেশন বা লঙ্ঘণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হত, যার ফলে তাদের মোটা অঙ্কের জরিমানা, ক্লিয়ারেন্স বাতিল সহ অন্যান্য আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হত। এই নতুন খসড়ায় এই ‘ভায়োলেশন’কে একপ্রকার আইনি বৈধতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইব্যুনাল (NGT) ২০১৬ সালে ৩০০ টিরও বেশী রাসায়নিক ও অন্যান্য শিল্প (যার মধ্যে ২৩ টি গুজরাতের)-র ছাড়পত্র বাতিল করে কারখানা বন্ধ ও জরিমানার নির্দেশ দেয় কারণ এই প্রত্যেকটি কারখানাই ২০০২ সালে পরিবেশ মন্ত্রক থেকে ‘পোস্ট ফ্যাক্টো অ্যাপ্রুভাল’ বা উৎপাদন চালু করে দেওয়ার পরে আবেদন করে পরিবেশ ছাড়পত্র পেয়েছিল। এই ‘এক্স পোস্ট ফ্যাক্টো’ প্রক্রিয়াকে ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে সরাসরি এক প্রহসন হিসেবে আখ্যা দেয়। এই বছরে পয়লা এপ্রিল সুপ্রীম কোর্টও গুজরাটের তিনটি শিল্প প্রকল্পের ‘পোস্ট ফ্যাক্টো অ্যাপ্রুভাল’কে অবৈধ ঘোষণা করে বলে, “উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবসময়েই পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যৌক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখা প্রয়োজন। সমাজ ও পরিবেশের উপরে শিল্পের প্রভাব মূল্যায়ন ও পরিবেশ আইনের সাথে সাযুজ্য রেখে চলাকে উন্নয়নের পরিপন্থী হিসেবে নয় বরং দেখা উচিত স্থিতিশীল উন্নয়ন, সাম্য ও ন্যায়ের দিকে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা হিসেবে”। অথচ NGT ও সুপ্রিম কোর্টের সমস্ত রায়কে উড়িয়ে দিয়ে EIA এর নতুন খসড়ায় এনভায়রনমেন্টাল ক্লিয়ারেন্স নর্ম লঙ্ঘন করা অর্থাৎ ছাড়পত্র ছাড়াই চালু্ করে দেওয়া সমস্ত নির্মাণ কাজ বা শিল্প প্রকল্পগুলিকে ‘পোস্ট ফ্যাক্টো ক্লিয়ারেন্স’-এর জন্য সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পরিবেশ আইনের সাথে বারবার বিশ্বাসঘাতকতা করে পরিবেশ মন্ত্রক প্রথমে ২০০২ সালে ও তারপরে ২০১৭ সালে ‘শেষ বারের মত’ এই পোস্ট ফ্যাক্টো ক্লিয়ারেন্সের অনুমোদন দেওয়ার কথা বলেছিল। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, শেষ বার তো দূর, ২০২০-র খসড়ায় পাকাপাকি ভাবে এই বেআইনি প্রকল্পগুলোকে পেছনের দরজা দিয়ে ছাড়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সাধারণ মানুষের মতামতকে গুরুত্বহীন করে দেওয়ার চক্রান্ত

পরিবেশগত ছাড়পত্রের ক্ষেত্রে পাবলিক কনসাল্টেশন একটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যেখানে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি যে মানুষদের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে, প্রকল্প চালুর আগে অন্তিম সিদ্ধান্ত নেওয়া ও নীতি নির্ধারণের প্রশ্নে তাঁদের মতামত নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে। এর আগেও কিছু প্রকল্পকে পাবলিক কনসাল্টেশন এর আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছিল, এবার সেই তালিকাকে আরও লম্বা করে বস্তুত সাধারণ মানুষের অংশীদারিত্বের পুরো প্রক্রিয়াটাকেই বানচাল করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তালিকায় যুক্ত হয়েছে সেচ প্রকল্পগুলির আধুনিকীকরণ, সমস্ত আবাসন, নির্মাণ ও উন্নয়নমূলক প্রকল্প, অন্তর্দেশীয় জলপথ, জাতীয় সড়কের এর সম্প্রসারণ, সীমান্ত এলাকার (সীমান্তের ১০০ কিলোমিটার অব্দি) জাতীয় সড়ক ও পাইপ লাইন, ১২ নটিক্যাল মাইলের পরে সব অফ শোর প্রকল্প এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা, সুরক্ষা সম্পর্কিত যেকোনো প্রোজেক্ট। নতুন খসড়ায় 'স্ট্র্যাটেজিক প্রোজেক্ট' এর মত শব্দবন্ধ ব্যবহার করে সরকারের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে নিজের মর্জি মত যেকোনো প্রকল্পকে (তা সে সেচ, বিদ্যুৎ, খনি যাই হোক না কেন) 'স্ট্র্যাটেজিক প্রোজেক্ট' তকমা লাগিয়ে স্থানীয় মানুষের মতামত অগ্রাহ্য করে EIA ছাড়াই পরিবেশ ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়ার। বাকি প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে জনগনের মতামত জমা করবার সময় ৩০ দিন থেকে কমিয়ে ২০ দিন এবং পাবলিক হেয়ারিং এর সময়সীমা ৪৫ থেকে কমিয়ে ৪০ দিন করে দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পগুলির শ্রেণীবিন্যাসের প্রক্রিয়া শিথিল করে EIA এড়িয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা

কিছু প্রকল্প যেমন ২০০০-১০০০০ সিসিএ সেচ প্রকল্প, নির্দিষ্ট আয়তনের নির্মাণ প্রকল্প ইত্যাদি যেগুলো আগে ক্যাটেগরি এ বা বি ১ হিসেবে চিহ্নিত ছিল, নতুন খসড়ায় সেগুলোকে ক্যাটেগরি বি ২ এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে অর্থাৎ এই প্রকল্পগুলোর পরিবেশগত প্রভাব খতিয়ে না দেখে, কোন বিশেষজ্ঞ কমিটির পর্যবেক্ষণ ছাড়াই সরাসরি অনুমোদন দিয়ে দেওয়া হবে। এই নতুন খসড়া আসলে দেশের আবাসন ও নির্মাণ প্রকল্পের কর্পোরেট খেলোয়ারদের কাছে সরকারের নির্লজ্জ আত্মসমর্পণ। মোদী সরকারের আমলে ২০১৬ সালেই সংশোধনী এনে ২০০০০-১৫০০০০ বর্গ মিটার নির্মাণ প্রকল্পগুলিকে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই কাজ চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল যা পরে NGT র হস্তক্ষেপে স্থগিত হয়। ২০২০ র খসড়ায় আইন করে কর্পোরেট নির্মাণ ব্যবসায়ীদের সমস্ত ঝুট ঝামেলা থেকে মুক্ত করে ছাড় দিয়ে দেওয়া হল ইচ্ছেমত কাজ আর ইচ্ছেমত মুনাফা করার। এছাড়াও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শব্দের সংজ্ঞার পরিবর্তন করে প্রকল্পগুলিকে EIA এর আওতা থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। যেমন ২০০৬ এ ‘ক্যাপিটাল ড্রেজিং’ এর মধ্যে সমুদ্র ও নদীতল ড্রেজিং উভয়ই EIA প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত ছিল, অথচ নতুন বিজ্ঞপ্তিতে কেবল সমুদ্র বন্দর বানানোর জন্য ড্রেজিংকে রেখে নদীর বুকে এ ধরণের কার্যকলাপকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে জীববৈচিত্র্য যে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে তার কোনো মূল্যায়ন হবেনা।

উপেক্ষিত মনিটরিং ও কমপ্লায়েন্স এর প্রক্রিয়া

পরিবেশগত ছাড়পত্র পাওয়ার পরে এত দিন প্রতি ছয়মাস অন্তর কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট জমা দিতে হত যেখানে দেখা হত পরিবেশগত ছাড়পত্রে নির্দিষ্ট করে দেওয়া শর্ত ও বিধি মেনে চলা হচ্ছে কিনা। সেই নিয়ম বদলে ছ’মাসের বদলে প্রতি এক বছরে দিতে হবে কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট। এই একবছর সময়কালে যেকোনো পরিবেশগত, সামাজিক, স্বাস্থ্যগত, দূষণজনিত পরিবর্তন ঘটলে, পর্যবেক্ষণ বা মনিটরিং এর অভাবে তা উপেক্ষিত থেকে যাবে, যার ফল পরিবেশের জন্য সুদূরপ্রসারী ও অপরিবর্তনীয় হতে পারে; এর ক্ষতিপূরণ কোন ভাবেই খসড়ায় উল্লেখিত জরিমানা দিয়ে করা সম্ভব নয়। তাছাড়াও এই কমপ্লায়েন্স রিপোর্টটি স্ব-ঘোষিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে জমা হয়, ফলে সেখানেও তথ্য গোপনের প্রভূত উদাহরণ দেখা গেছে। এই সমস্যা দূর করাতো দূর অস্ত, উলটে প্রস্তাবিত খসড়ায় প্রক্রিয়াটিকেই আরো দুর্বল করে দেওয়া হচ্ছে। ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ ও পরিবেশ ছাড়পত্রের শর্তপূরণের প্রতি মনযোগী হওয়ার বদলে কর্পোরেট হাউজগুলির নিজেদের দেওয়া হলফনামার উপরে বেশী নির্ভরশীল এই নয়া EIA বিজ্ঞপ্তি আদতে পরিবেশ বিধির মূলে কুঠারাঘাত করছে। এমনকি এর আগে কোন খনন প্রকল্পের পরিবেশ ছাড়পত্রের সর্বোচ্চ মেয়াদ যেখানে ছিল ৩০ বছর তা বাড়িয়ে ৫০ বছর করে দেওয়া হয়েছে।

পরিবেশ সম্পর্কিত নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে ইনক্লুসিভ মডেলের প্রয়োজন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা আদিবাসী জনগোষ্ঠী, বনবাসী, কৃষক, মৎসজীবি, মহিলা সহ সমস্ত প্রান্তিক মানুষেরা যেখানে গুরুত্ব পাবেন। অথচ বাস্তবে বারবার 'উন্নয়নের' নামে এদেরকেই জল জঙ্গল জমি থেকে উৎখাত করা হয়ে চলেছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক ও সামাজিক নীতিতে এই অংশের মানুষদের স্থান সবচেয়ে নীচের স্তরে। ইতিমধ্যেই দেশের একচল্লিশটি কয়লা ভাণ্ডার নিলামে উঠেছে, সিস্টেমেটিক ভাবে বিভিন্ন সরকারী বিজ্ঞপ্তি জারি করে অরণ্যের অধিকার আইন খর্ব করে আদিবাসীদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রস্তাবিত EIA নোটিফিকেশনটিতেও পরিবেশ ও পরিবেশ সম্পৃক্ত মানব গোষ্ঠী গৌণ বিষয়, লক্ষ্য আসলে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্যে তথা মানব সম্পদকে কর্পোরেট স্বার্থে বিনা বাধায় ব্যবহার করে যাওয়া। আসুন এই পরিবেশ বিরোধী, জন বিরোধী EIA নোটিফিকেশন বাতিলের দাবিতে সোচ্চার হই।

0 Comments

Post Comment