আবার একটা ১৬ ডিসেম্বর আসছে। ২০১৯ সালের ১৬ই ডিসেম্বর তথাকথিত 'নির্ভয়া'র ধর্ষণকাণ্ডের সাত বছর পূর্ণ হবে। ২০১২ সালে নির্ভয়ার ধর্ষণ ছাড়া, আরেকটা ধর্ষণকাণ্ড পশ্চিমবঙ্গ তথা দেশে প্রচার পেয়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে, সুজেট জর্ডনের ধর্ষণ । ব্যক্তিগত ভাবে,অ্যাডভান্সড স্টেজের প্রেগনেন্সি নিয়ে সেই বছর আরেকবার নিশ্চিত হয়েছিলাম, এমন এক অসুরক্ষিত পৃথিবীতে সন্তানকে আনছি, যেখানে ধর্ষিত হওয়ার পর ধর্ষিতার জামার ঝুল, ডিভোর্সি স্টেটাস, অ্যালকোহল ইনটেক ইত্যাদি বিবেচ্য হয়। সুতরাং সে মেয়ে হলে, তাকে জানাতে হবে, নানা ধরণের হিংসা প্রতিরোধ করতে করতে, তা সত্ত্বেও আহত হতে হতে, তারপর সেই আঘাত অতিক্রম করতে করতেই জীবন কেটে যাবে। আর সে যদি পুরুষজন্ম নেয়? তবে তাকে বুঝতে হবে, পুরুষের জন্যও এ পৃথিবী বড় কঠিন। তার নিজের সাধের সামাজিক উচ্চতাই তাকে যে কোনো মুহূর্তে টেনে অপরাধের অতলে নামাবে। কারণ পিতৃতন্ত্র 'অপরাধ'-কে অপরাধহীনতা, এমনকি কখনও ধর্ম-কর্তব্য-প্রেম-ভালোবাসার মোড়কেও তার সামনে হাজির করতে পারে। সেই বছর জুন মাস নাগাদ নিউজ চ্যানেলের আলো আঁধারির আদিখ্যেতা সরিয়ে সুজেট স্টুডিওতে ঘুরে বসেন। সুজেটের এই নিজস্ব মুখ ও পরিচিতি সহ দেশের মুখোমুখি হওয়া ছিল এক ঐতিহাসিক অধ্যায়। এই প্রথম ভারতীয় সমাজে কেউ বললেন, ‘ধর্ষিতা’ হওয়াটাই তাঁর একমাত্র পরিচয় নয়। অন্তর্গতভাবে প্যাসিভ একটি শব্দে তাঁকে মেপে ফেলার চেষ্টার বিরুদ্ধে সুজেট সরব হয়েছিলেন। তাই আমরা আজও নতমস্তকে তাঁকে আলোকবর্তিকা মানি। কিন্তু বলা বাহুল্য,পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিটি অগ্রগতিই আসলে জগদ্দল পাথরকে কয়েক ইঞ্চি নড়ানো মাত্র। তা আবার গড়িয়ে আসতেই পারে পিছিয়ে, যে কোনো মুহূর্তে। সুতরাং আরও অনেক ধর্ষণ পেরিয়ে ১৬ই ডিসেম্বরের রাতের দিল্লিতে জ্যোতি সিং-এর ধর্ষণ ঘটল। ২৩ বছরের ফিজিও ইন্টার্ন, যে পুরুষবন্ধুর সাথে সিনেমা দেখে বাড়ি ফেরার পথে ধর্ষিত হয় চলন্ত বাসে, যার ধর্ষকদের মধ্যে একজন ছিল নাবালক, যার ইন্টেস্টাইন ভ্যাজাইনার পথে রড পেঁচিয়ে ঢুকিয়ে শরীরের বাইরে বের করে আনা হয়েছিল। আর তার ঠিক সাতবছরের মাথায় আরও অনেক ধর্ষণ পেরিয়ে , আসিফা পেরিয়ে, বিলকিস বানো পেরিয়ে, উন্নাও পেরিয়ে, ঘটল হায়দ্রাবাদের ধর্ষণের ঘটনা৷ অতঃপর মুসলমান ধর্ষকের নামটি নিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা জলঘোলা করলেন৷ আর প্রতিবাদ করতে গিয়ে হিন্দুত্ববাদী নেতা-মন্ত্রীদের যৌন লালসার ফিরিস্তি দেওয়া হল। ধর্ষণ নিয়ে যে যার মতো রাজনীতি করলেন৷ গৌণ হয়ে গেল ধর্ষণ নামক যৌন অপরাধটি। হায়দ্রাবাদের ঘটনা দেখালো, বর্তমান ভারতে হিন্দু-মুসলিম মিলে হাতে হাত ধরে একটি কাজই সম্পন্ন করতে পারে। ২৬ বছরের একটি মেয়ের গণধর্ষণ। তারপর তাকে পুড়িয়ে দেওয়া। এ আদিম বিকারই সাম্প্রদায়িক সমন্বয় ঘটায়, এমনকি বিজেপির ভারতেও। পরে জানা গেল, সেই মৃতদেহর অনতিদূরে আরেকটি পোড়া মৃতদেহ পাওয়া গেছে৷ খোঁজ চলছে, সেই লাশও কোনো ধর্ষিতা মেয়ের কিনা, অপরাধীরা একই কিনা। শুধু কি তাই? একে একে উঠে আসছে রাঁচীর মেয়েটির কথা, কালীঘাটের মেয়েগুলির কথা, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই। ******** সাত বছর আগে নির্ভয়ার মৃত্যুর পর ইন্ডিয়া গেট, রাইসিনা হিল, কলকাতা, বেঙ্গালুরু এমনকি নেপাল, বাংলাদেশ পর্যন্ত রাগে ফেটে পড়েছিল। ভারতীয় পর্যটন শিল্প রাতারাতি ধ্বসে গেছিল। নিউ ইয়র্ক টাইমস দিল্লিকে ‘ভারতের রেপ ক্যাপিটাল’ চিহ্নিত করেছিল। কাঁদানে গ্যাস আর জল মিসাইল ছুঁড়েছিল বটে পুলিশ,কিন্তু প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেছিলেন, সঙ্গত কারণেই এই বিক্ষোভ। ধর্ষণের কেসের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের মাধ্যমে চটজলদি নিষ্পত্তির আশ্বাস এসেছিল। ভার্মা কমিটি গঠিত হয়েছিল যৌন হেনস্থা ও ধর্ষণ সংক্রান্ত আইনে উপযুক্ত পরিবর্তন ও সংযোজনের জন্য। সেই কমিটি যখন সিভিল সোসাইটি, উইমেন্স অর্গানাইজেশন ইত্যাদির থেকে অভিমত চেয়েছিল, তখন সাজেশন জমা পড়েছিল প্রায় ৮০০০ মতো। কেন এই জনরোষ? কেন ৮০০০ রকমের প্রস্তাব নারীনির্যাতন রুখতে? কারণ সরকার আর মধ্যবিত্ত জনসাধারণের মধ্যে লিখিত বা অলিখিত সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট বিশ্রীভাবে ভেঙে পড়েছিল। আসলে ভেঙে পড়াটা নতুন নয়। নির্ভয়ার মৃত্যু সেই ভেঙে পড়াটাকে দৃশ্যমান করেছিল। সরকারের দায়িত্ব জনসাধারণের নিরাপত্তা। কনস্টিট্যুশন নারী-পুরুষ সবাইকেই পথে ঘাটে সমান নিরাপত্তা দিচ্ছে, কিন্তু শুধু মৌখিকভাবে। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে নয় কেন? এই প্রশ্নই সেদিন পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙেছিল। আসলে জ্যোতি ছিল মধ্যবিত্ত, স্বাধীনতাকামী, উচ্চাকাঙ্খী অথচ ‘ভালো’ মেয়েদের প্রতিনিধি — যাদের দিল্লি শহর তার পথেঘাটে, বাসে-ট্রেনে-মেট্রোতে, অফিস-কাছারিতে, কলেজ-ইউনিভার্সিটি-ক্যাম্পাসে রোজ দেখতে পায়; কিন্তু সামন্ততান্ত্রিক, পিতৃতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে গিলতে পারে না ঠিকমতো, মেনে নিতে পারে না। বর্ণগত ও লিঙ্গগত নির্যাতনের শিকার কোনও দলিত নারী উচ্চবর্ণের দ্বারা ধর্ষিত হলে সিভিল সোসাইটির দৃষ্টিভঙ্গিটি খানিক করুণার, খানিক সহমর্মিতার হত। কিন্তু নির্ভয়ার জন্য প্রতিটি স্লোগান ছিল নাগরিক মধ্যবিত্ত নারীর নিজস্ব ভয় ও অসহায়তা প্রসূত। জ্যোতি এক শ্রেণির ভারতীয় মেয়েদের মুখ হয়ে উঠেছিল, যেখানে 'বারে-যাওয়-মেয়ে', ডিভোর্সী সুজেট বরং ছিল বহিরাগত। হায়দ্রাবাদের ভেটারনারি ডাক্তার তরুণীও শ্রেণি-অবস্থানে, শিক্ষাগত ও পেশাগত যোগ্যতায় যেন জ্যোতিরই প্রতিবিম্ব৷ তাই আবারও শহুরে মধ্যবিত্ত সমাজ তার মধ্যে নিজের, নিজের বাড়ির মেয়েদের ছায়া দেখছে। তারা ভয় পাচ্ছে। ২০০০ সালে প্রকাশিত ‘Women, Gender and the State’ বইতে সন্ধ্যা আর্য বলেন, আশির দশকের আইনি পরিবর্তনসমূহ ভারতীয় নারীর সামাজিক অবস্থান বদলাতে আদৌ সাহায্য করেনি। বরং আইন স্বয়ং নারীকে সহনাগরিক, সমনাগরিকের মর্যাদা না দিয়ে তাকে ‘পারিবারিক মর্যাদা’, ‘মেয়ে-মা-বোন’, ‘পরনির্ভরশীল’ ইত্যাদি পিতৃতান্ত্রিক রেটরিকে বন্দী করেছে। প্রকারান্তরে, আইন-ই ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ‘খারাপ মেয়ে/ভালো মেয়ে’ বাইনারি তৈরি করেছে, ধরে নিয়েছে — ’সুরক্ষা’ দরকার শুধু পিতৃতান্ত্রিক পরিভাষা অনুযায়ী ‘ভালো মেয়েদের’। তদুপরি ছিল এবং আছে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, দুর্নীতি, নির্যাতিতর অজ্ঞতা — যা এমনকি প্রচলিত অসম্পূর্ণ আইনকেও বহুলাংশে ভোঁতা করে রেখেছিল। নির্ভয়া কাণ্ডের জেরে ২০১৩ সালের ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট একটা বড় প্রাপ্তি, যা ভার্মা কমিটির সুপারিশকে বহুলাংশে মেনেছিল। ফেব্রুয়ারিতে অর্ডিন্যান্স পাশ, অতঃপর রাষ্ট্রপতি, লোকসভা ও রাজ্যসভার সম্মতিক্রমে নতুন আইন। এই আইন নিখুঁত নয়, তবে উন্নততর। এখানে বলা আছে, শুধু ‘vagina, anus, mouth’-এ penis এর insertion-ই ধর্ষণ নয়, তা হতে পারে আরও নানাভাবে। এখানে sexual harassment-এর সীমা বাড়ানো হয়েছে বাচিক যৌন হয়রানি, অশালীন ছবি তোলা বা জোর করে পর্ন দেখানো পর্যন্তও। এখানে স্পষ্টতই বলা হয়েছে, passion নয়, power অর্থাৎ ক্ষমতা প্রদর্শনই ধর্ষণের কারণ। এখানে চূড়ান্ত গুরুত্ব পেয়েছে consent বা সম্মতির ধারণা। Consent-কে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এভাবে: ‘unequivocal agreement to engage in a particular sexual act’. তারপরেও যে ২০১৭ সালে মহম্মদ ফারুকি সংক্রান্ত একটি পশ্চাৎপদ রায় বেরোতে পারে ভারতীয় আদালত থেকে, তা দুর্ভাগ্যের। অবশ্য কার্যক্ষেত্রে, আজও, ২০১৩ সালের নতুন আইন অনুসারে পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষণের কেস নথিভুক্ত করার ব্যাপারে গড়িমসি দেখালে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে — এই ঘোষণা সত্ত্বেও, অনেক কেস নথিভুক্ত হয় না। এমনকী বহু-আলোচিত হায়দ্রাবাদের ক্ষেত্রেও পুলিসের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অভিযোগ আছে গড়িমসির, এক থানা থেকে আরেক থানায় নিখোঁজ মেয়ের আত্মীয় স্বজনদের ঘুরিয়ে মারার। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট হয়েছে বটে। সেই ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ কোর্টেই অগাস্ট, ২০১৬ পর্যন্ত পেন্ডিং কেস ছিল প্রায় সাড়ে তিন হাজার। এবং হ্যাঁ, নারীনির্যাতনের নথিভুক্ত কেস কমেনি, বেড়েছে। ঘটনা বেড়েছে, না পুলিশে রিপোর্টিং-এর হার — তা অবশ্য গবেষণাযোগ্য। এক হাজার কোটির নির্ভয়া ফান্ড গঠিত হয়েছিল, যা থেকে প্রতি ভিক্টিম তিন লক্ষ টাকা পাবেন। আজও সেই প্রাপ্য আদায় করতে বহু বছর কেটে যায় বা তা অনাদায়ী থাকে। ভার্মা কমিটি ম্যারাইটাল রেপকে ধর্ষণের অন্তর্ভুক্ত করেছিল। কিন্তু বৈবাহিক ধর্ষণের অস্তিত্ব আজও মানা হয়নি। ভার্মা কমিটি বলেছিল, নির্বাচনে যেকোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ থাকলে সে প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য বিবেচিত হোক। তাও হল কই? বরং উন্নাও কাণ্ডে দেখা গেল, রাজনৈতিক মদতপুষ্ট ব্যক্তিরা ধর্ষণের ব্যাপারে অকুতোভয়৷ ********* চারবছর পরে নির্ভয়ার ধর্ষকদের ফাঁসি হয়েছিল বটে, জনসাধারণ ভেবেছিল বটে, ন্যায় নেমে এল কলিকালের পৃথিবীতে। কিন্তু তা যৌন নির্যাতন বিরোধী লড়াই-এ তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য ধাপ নয় বলেই মনে হয়। এবার যখন আবার একটি নৃশংস ধর্ষণ ঘটেছে হায়দাবাদে, তখন আবারও ফাঁসিবাদীরা জেগে উঠবেন। 'ফাঁসি দাও, লিঙ্গকর্তন করো, জনসমক্ষে কোরো' ইত্যাদি শোনা যাবে। ধর্ষকের মানবাধিকার নিয়ে কি আমি চিন্তিত? না, ততটাও নয়। মৃত্যুদণ্ডের ঠিক/বেঠিক দিকসমূহ নিয়ে আলোচনার পরিসর এটা নয়। তবে বিচ্ছিন্ন ফাঁসির ঘটনায় যৌন নির্যাতন কমেনি, কমবে না, কমার নয়। এ হল বড়জোর ‘symptomatic treatment’। অসুখের উৎস সন্ধানে আমাদের বড় অনীহা। কারণ উৎস সন্ধান করতে গেলে তো সেই মর্মমূলেই পৌঁছব, যা সংখ্যাগরিষ্ঠের সাধের অসাম্যভূমি, যাকে নারীবাদীরা পিতৃতন্ত্র বলে ডাকি। আমি শঙ্কিত, আজ যাঁরা ফাঁসি চাইবেন, তাঁদেরই কাল রেপ জোক বলতে শুনব, রেপ রেটরিক ব্যবহার করতে শুনব। এঁরা বলবেন, ভারতের ক্রিকেট টিম তো বাংলাদেশকে রেপ করে দিল! এরা সামান্য ঝগড়া হলেই প্রতিপক্ষের মাকে *দে দিতে চাইবেন৷ একে আমরা 'রেপ কালচার' বলি। ধর্ষণ সংস্কৃতি৷ যেখানে রেপ আসলে এতই সামান্য ঘটনা যে তাকে নিয়ে মস্করা চলে। মস্করার প্রতিবাদ যারা করে, তারা 'ফেমিনিস্ট কিলজয়'। আমরা রেপ কালচারে বাস করি। এখানে মুড়ি মুড়কির মতো রেপ ঘটবে, এ আর আশ্চর্য কী? শুধু ফাঁসি ও ক্রিনিমাল ল-ই আমাদের মাথাব্যথার কারণ না হোক। ভাবতে হবে সিভিল ল নিয়েও — ভাবতে হবে সিভিল ল কীভাবে নারীর ক্ষমতায়নে সাহায্য করতে পারে। প্রখ্যাত আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং বলেছেন, ‘Violence, the Language of Rights’ নিবন্ধে — “Civil justice is far more accessible and democratic. It enables the woman to choose her remedies, depending on her need, and have more control over her case’’. অর্থাৎ, আইনের কথাও যদি বলা হয়, শুধু ক্রিমিনাল ল নয়, সিভিল ল-কেও ঢেলে সাজানো প্রয়োজন — যাতে নারীর শিক্ষার অধিকার, সম্পত্তির অধিকার, কাজের অধিকার ইত্যাদি নিশ্চিত হয়। তবেই না সে পূর্ণ শক্তিতে ক্রিমিনাল ল-কে কাজে লাগিয়ে নিজের বিরুদ্ধে ঘটতে থাকা হিংসাকে প্রতিহত করতে পারবে! আর দরকার লিঙ্গসাম্যের শিক্ষা। যেখানেই 'আস্কিং ফর ইট' লজিক দেখা যাবে, অবশ্যই প্রতিবাদ করতে হবে৷ কিন্তু প্রতিবাদের ভাষা সর্বত্র একইরকম আক্রমণাত্মক হলে হয়ত চলবে না৷ কারণ পুরুষ-নারী নির্বিশেষে সকলেই পিতৃতান্ত্রিক অন্ধকার পেয়েছে পুরুষানুক্রমে৷ সে অন্ধকার থেকে তাদের বের করতে হলে ধৈর্যশীল হতে হবে৷ গভীরতর শোধনের এই পথ লিঙ্গসাম্যের শিক্ষা ছাড়া অসম্ভব৷ আর তা শুরু করতে হবে একেবারে ছোট বয়স থেকে। কালিঘাটের ভিখারি মেয়েদুটির ধর্ষণ যারা ঘটিয়েছে, তাদের বয়স তের ও চোদ্দ। এদের ভিতরে জন্তুকে জাগিয়ে তোলার দায় পিতৃতান্ত্রিক ধর্ষণ সংস্কৃতি ঝেড়ে ফেলতে পারবে তো?
|