পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

বাজেট ২০২৫-২৬: বাইরে কোঁচার পত্তন ভিতরে ছুঁচোর কেত্তন

  • 10 February, 2025
  • 0 Comment(s)
  • 453 view(s)
  • লিখেছেন : অমিত দাশগুপ্ত
শাসক ও তাদের তাঁবেদার প্রচার মাধ্যম বিজেপি যখন যেমন বলে তেমনি প্রচার করে। দিল্লি বা পশ্চিমবঙ্গে অন্যতর শাসক দল যদি জনমোহিনী কোনো প্রকল্প গ্রহণ করে, যদি সাধারণ মানুষের হাতে ভরতুকি বা টাকা তুলে দেয় তাহলে তাকে খারাপ বলে মোদিজি রেউরি সংস্কৃতি বলে ব্যঙ্গ করবেন, প্রচার মাধ্যম তাকে তেমনি ভাবেই তুলে ধরবে। আয়করের ছাড়ও তেমনি ব্যাপার। গত বাজেটেও উনি তেমন কর ছাড় দেননি, তখন কি উনি মধ্যবিত্ত বান্ধব ছিলেন ছিলেন না?

বাজেট পেশ করার পরে ১ সপ্তাহ হয়ে গেছে। মধ্যবিত্তের জন্য আয়করের সুরাহা ফল দিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জিতেছে। বাজেট কিংবা পুলিশি ব্যবস্থা, মন্দির তৈরি কিংবা প্রয়াগে সঙ্গমে ডুব, সব কিছুর উদ্দেশ্য তো একটিই, নির্বাচনী মোক্ষলাভ। সেই জন্যই দিল্লি বিধানসভা ভোটের আগেই করে সুরাহা। যে দেশের শাসক নির্বাচনে জেতার জন্যই সমস্ত চিন্তাকে সংহত করে, এবং শেয়ার বাজারের দিকে চোখ রেখে অর্থনীতিকে পরিচালিত করে, তারা  যদি কোন ‘জনমুখী’ সিদ্ধান্তও নেন তা সামগ্রিকে স্বল্পকালিন ভাবনা, আদতে নির্বাচনে জেতার তাগিদে জনমোহিনী প্রয়োগ, যা অবশ্যই সেই শাসকের নিজ শ্রেণির প্রতি আনুগত্যকে একটুও খর্ব না করেই তৈরি করা হয়। এই বাজেটের করের সুরাহাও তেমনি এক প্রকরণ, যার দ্বারা একদিকে মধ্যবিত্তের ভোগচাহিদা সৃষ্টি করে কর্পোরেট দুনিয়ার মুনাফা বৃদ্ধি করার প্রচেষ্টা করা হল, অপরদিকে কেবল নতুন কর জমানার জন্য করের সুরাহা দ্বারা বিমা, স্বাস্থ্য বিমা, আবাসন ঋণে সুদ, ৮০সি ধারায় সঞ্চয় এরূপ সমস্ত বিষয়কে নিরুৎসাহিত করে শেয়ার বাজারে মধ্যবিত্তের সঞ্চয়কে আকৃষ্ট করা হল।

যেহেতু আয়করের ছাড় বা সুরাহার উপরেই এই বাজেটের আলোচনাকে কেন্দ্রীভূত করতে চাইছে শাসকেরা তাই সেবিষয়ে প্রথমে দৃষ্টি দেওয়া যাক। শাসক ও তাদের তাঁবেদার প্রচার মাধ্যম বিজেপি যখন যেমন বলে তেমনি প্রচার করে। দিল্লি বা পশ্চিমবঙ্গে অন্যতর শাসক দল যদি জনমোহিনী কোনো প্রকল্প গ্রহণ করে, যদি সাধারণ মানুষের হাতে ভরতুকি বা টাকা তুলে দেয় তাহলে তাকে খারাপ বলে মোদিজি রেউরি সংস্কৃতি বলে ব্যঙ্গ করবেন, প্রচার মাধ্যম তাকে তেমনি ভাবেই তুলে ধরবে। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে বা মহারাষ্ট্রে ভোট কেনবার জন্য লাডলি বহেন বা অনুরূপ কোনো টাকা দেওয়ার প্রকল্পকে মাস্টার স্ট্রোক বলে প্রশংসা করা হবে, মোদিজিও যথাবিহিত দ্বিচারিতায় সেগুলির গুণ গেয়ে টেলিপ্রম্পটার দেখে বক্তৃতা দেবেন। আয়করের ছাড়ও তেমনি ব্যাপার। গত বাজেটেও উনি তেমন কর ছাড় দেননি, তখন কি উনি মধ্যবিত্ত বান্ধব ছিলেন ছিলেন না? এবার একলাফে ৭ লাখ অবধি নিস্কর আয়ের বন্দোবস্ত থেকে তা বাড়িয়ে ১২ লাখ করে দিলেন, অর্থাৎ বৃদ্ধির হিসেবে ৭১ শতাংশের বেশি। করেই বলতে শুরু করলেন, নেহরু, ইন্দিরা, রাজীব সকলকে মাত করে দিয়েছি। কোনো প্রচার মাধ্যম প্রশ্ন করল না, তুলনাটা গত ইউপিএ সরকারের সঙ্গে করা দরকার, ৬১ বছর আগে গত হওয়া , বা ৪১ কিংবা ৩৪ বছর আগে খুন হওয়া ব্যক্তিদের আমলের সঙ্গে নয়। তাছাড়া হিসেবের তুলনা করার জন্য সমস্তরের, সমবিন্যাসের  বিষযের মধ্যে তুলনা করা দরকার। ওই  ৭ লাখ বনাম ১২ লাখ তো মোদিজির আমলে সৃষ্ট নতুন কর কাঠামো, যা ২০১৪ সালে ক্ষমতা থেকে নির্বাসিত হওয়া মনমোহন সিংএর ইউপিএ সরকারের আমলে ছিলই না। যদি তুলনা করতে হয় তাহলে তা করা উচিত পুরোনো কর কাঠামোর প্রেক্ষিতে, যেটা এখনো বর্তমান। ২০১৪ সালে যে আয় পর্যন্ত কর দিতে হত না তা ছিল ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। সেই পুরোনো কাঠামো এখনো বজায় রয়েছে। সেখানে ওই করমুক্ত আয়ের সীমা এখন ৫ লক্ষ টাকা।   গত ১১ বছরে বাজার দর বৃদ্ধির নিরিখে ২০১৪ সালের ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা বর্তমানের ৫ লক্ষ টাকার কম হবে বলে মনে হয় কি?

নতুন কর কাঠামোয় মধ্যবিত্তের উপরে করের বোঝা কমেছে। সাধারণ মধ্যবিত্তের উপরে করের বোঝা কমানোকে সমর্থন না করে তার নিন্দে করা কখনোই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। কিন্তু এই সরকারগুলি এমনই যে মধ্যবিত্তের উপরে কর কমানোর পিছনেও অন্য উদ্দেশ্য থাকে। গত বাজেট পর্যন্ত নতুন করা কাঠামোর করের বোঝা ও পুরোনো কর কাঠামোয় বিভিন্ন ছাড়ের সুবিধার ফলে করের বোঝার পরিমাণ  তুল্যমূল্য ছিল, অনেক ক্ষেত্রে পুরোনো কাঠামো আকর্ষণীয় ছিল। এই বাজেটে পুরোনো কাঠামোকে (আয়এর স্ল্যাব ও করের হার) একই রেখে দেওয়া এবং নতুন কাঠামোয় করের স্ল্যাব ও হারকে কমানোর ফলে নতুন কাঠামো বেশির ভাগ করদাতার কাছেই সুবিধেজনক হবে। নতুন কাঠামোয় ৮০ সি ধারার অধীনে সঞ্চয়, নতুন পেনশন প্রকল্পে জমা, ৮০ ডি ধারার স্বাস্থ্যবীমার প্রিমিয়াম, গৃহঋণের সুদে বা মূলধন শোধ, ব্যাঙ্ক আমানতের সুদ ইত্যাদিতে কোনো ছাড় পাওয়া যাবে না। ফলে মধ্যবিত্ত হয়তো বেশি ব্যয় করবে। কিন্তু এর সঙ্গে ছাপোষা মধ্যবিত্ত যেখানে নিরাপদ সঞ্চয় করত  সেই অর্থ তাঁরা শেয়ার বাজারে খাটাবে, ঝুঁকি থাকা সত্বেও, তার লোভ তো নিত্যিই দেখানো হচ্ছে। কেবল তাই নয়, কারুর আয় ১২ লক্ষ (বেতনভোগীদের ক্ষেত্রে ১২ লক্ষ ৭৫ হাজার) টাকার থেকে ১ টাকা বেশি হলেই তাঁর করের পরিমাণ হবে ৬২,৪০০ টাকা। ফলে যে সমস্ত বয়স্ক মানুষ সুদের টাকা আয় করেন, ব্যাঙ্কে নিরাপদ আমানত রেখে, তাঁরা সুদের আয় কমিয়ে ওই কর বাঁচাতে চাইবেন বলে নিরাপদ ব্যাঙ্ক আমানতের থেকে সেই অর্থও শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করবেন। ফলে যে শেয়ার বাজারের দিকে মধ্যবিত্তকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা বরাবর এই বেনিয়া সরকার চালিয়ে যাচ্ছে তাকে উৎসাহ দেওয়ার কাজটিও করা হয়েছে এই ধরণের কর বিন্যাসের ফলে। তাই করের সুরাহার বিষয়টিকে মোদি সরকারের কেবল সদিচ্ছা বলে ভাবার  তেমন কারণ দেখা যাচ্ছে না।

বাজেটে ব্যক্তিগত আয়কর এক এবং একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। মোট কর এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব থেকে কেন্দ্রীয় সরকার আদায় করবে ৫২.৫৮ লক্ষ কোটি টাকা। যার মধ্যে আয়করের পরিমাণ ২৪.৪২ লক্ষ কোটি টাকা; অর্থাৎ, ৪৬. ৪ শতাংশ। ওই আয়করের মধ্যে কর্পোরেটদের কাছথেকে কর আদায় হবে ১০.৮২ লক্ষ কোটি টাকা (৪৪.৩ শতাংশ)  ও ব্যক্তিগত আয়কর আদায় হবে ১৩.৫৭ লক্ষ কোটি টাকা (৫৫.৬ শতাংশ)। ২০২৪-২৫ অর্থ বর্ষের সংশোধিত হিসেবে তা ছিল যথাক্রমে ৪৫.১ শতাংশ ও ৫৪.৯ শতাংশ। অবশ্য ২০২৪-২৫এর বাজেটে অনুমান ছিল যথাক্রমে ৪৭ শতাংশ ও ৫৩ শতাংশ। ২০২৩-২৪ সালের আদায় ছিল যথাক্রমে ৪৭.৪ শতাংশ ও ৫২.৬ শতাংশ। উপরোক্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী আয়করের মধ্যে কর্পোরেটদের কর কমছে ও ব্যক্তিগত আয়করের অংশ বাড়ছে। এমনকি, বর্তমান বাজেটে ব্যক্তিগত আয়করে সুরাহা দেওয়ার পরেও তার অংশ বাড়বে বলেই ধরা হয়েছে। এদেশে কর্পোরেটদের মুনাফার উপরে আয়কর যে কম তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু সরকার সেই আয়ের উপরে করের হার বাড়াতে নারাজ। কারণ, সরকারটা পুঁজিপতিদের উপরে নির্ভরশীল; শাসক দলটাও পুঁজিপতিদের চাঁদার কাছে নতজানু। কর্পোরেট পুঁজি ও শাসকের মধ্যে বিনিময়ের সম্পর্ক বর্তমান।

সরকার বাজেটের সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যয়ের হিসেব করে তার জন্য আয়ের বন্দোবস্ত করাই দস্তুর। অবশ্য সেই ব্যয়ের বাজেট করার সময়ে দেশের আর্থিক অবস্থার সাপেক্ষে প্রয়োজনীয়তাকে বিচার করা হয়। সাধারণভাবে সরকার চালানোর প্রশাসনিক ব্যয় ব্যতিরেকে সমাজকল্যাণ মূলক ক্ষেত্রে ব্যয় সরকারি বাজেট গঠনে বিশেষ  ভূমিকা রাখে। একদিকে শিক্ষা স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে মূলধনী ব্যয় ও সেসব ক্ষেত্রে দৈনন্দিন কাজ চালানোর ব্যয়, অপরদিকে সরকারি মালিকানায় থাকা বাণিজ্যিক ভাবে পরিচালিত সংস্থাগুলির জন্য মূলধনী ব্যয় সরকারের দৃষ্টিভঙ্গীর পরিচয় দেয়। ভারত সরকার বাণিজ্যিক সংস্থা থেকে হাত প্রায় গুটিয়েই নিয়েছে। বাণিজ্যিক সংস্থায় বিনিয়োগ নেই বললেই চলে। রেলওয়ের বিবিধ কাজ বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া সত্বেও রেল দফতরের জন্য একটি বড় বাজেট বরাদ্দ এই সরকার সাধারণ বাজেটেই করতে শুরু করেছে, রেলওয়ের জন্য আলাদা বাজেটকে তুলে দিয়ে। যদি সামাজিক ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ সালের বাজেট বরাদ্দ ও সংশোধিত অনুমানকে দেখা যায় তাহলেই বোঝা যাবে যে, সামাজিক ক্ষেত্রগুলিতে ব্যয় কীভাবে কমানো হয়েছে। ২৩-২৪ সালে সামাজিক সেবার রাজস্ব খাতে ব্যয় ছিল ২.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা, ২৪-২৫ সালের বাজেট বরাদ্দ ছিল ২.৪১ কোটি টাকা, সংশোধিত বরাদ্দে তা কমে হয়েছে ১.৮৯ কোটি টাকা। ২৫-২৬ এর বাজেটে গতবারের বরাদ্দের থেকে ১৭ শতাংশ কমিয়ে তা ১.৯৯ কোটি টাকা করা হয়েছে।  ফলে সামগ্রিক রাজস্ব খাতে খরচের মাত্র ৫.৫ শতাংশ সামাজিক সেবা খাতে খরচ করার কথা ভাবা হয়েছে। গত ২০২৪ সালের বাজেটেও সেই বরাদ্দ ছিল ৭ শতাংশ। ২০২৩-২৪ সালে প্রকৃত বরাদ্দ হযেছিল ৭.৬ শতাংশ। ফলে বাজেটে সামাজিক সেবার ব্যয় ক্রমাগত কমছে এটা দেখাই যাচ্ছে।

আরেকটু খতিয়ে দেখা যেতে পারে। ২০২৩-২৪ সালে সাধারণ শিক্ষায় মোট রাজস্ব খাতে খরচের মাত্র ১.৭ শতাংশ খরচ করা হযেছিল। ২৪-২৫ সালের বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছিল ১.২ শতাংশ। এই বাজেটে তার অংশ কমে হয়েছে ১.১ শতাংশ।

কৃষির উপরে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বাজেট বক্তৃতায়। সেই খাতটিও দেখা যাক। ২০২৩-২৪ সালে মোট রাজস্ব খাতে খরচের ১২.২ শতাংশ খরচ করা হযেছিল। ২৪-২৫ সালের বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছিল ১০.৮ শতাংশ। এই বাজেটে তার অংশ কমে হয়েছে ১০.৩ শতাংশ। গ্রামোন্নয়নে ২০২৩-২৪ সালে খরচ ছিল মোট রাজস্ব খাতে খরচের ২.৯ শতাংশ, ২৪-২৫ সালের বাজেট বরাদ্দ ছিল ২.৬ শতাংশ। এই বাজেটে কমিয়ে করা হয়েছে ২.৫ শতাংশ। গ্রামোন্নয়নের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল গ্রামীণ কর্মসংস্থান যা ১০০ দিনের কাজ দিয়ে করা হয়। সেই খাতে ২০২৩-২৪ সালে খরচ হয়েছিল ৮৯ হাজার কোটি টাকা, ২০২৪-২৫ সালে বাজেট বরাদ্দ ছিল ৮৬ হাজার কোটি টাকা, ২০২৫-২৬ সালের বাজেটেও তা ৮৬ হাজার কোটি টাকাই রেখে দেওয়া হয়েছে। ২ বছর ধরে যে মূল্যবৃদ্ধি  হয়েছে তাকে পাত্তাই দেওয়া হয়নি। সেচ এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের রাজস্ব বাজেটেও খরচ কমানো হচ্ছে। ২০২৩-২৪ সালে যেখানে খরচ হয়েছিল ১০,৩৭১ কোটি টাকা (.০৩ শতাংশ) তা এই বাজেটে কমে হয়েছে ৭,৯৮০ কোটি টাকা (.০২ শতাংশ)।

বাজেটের বিশদ বিশ্লেষণ এরকম বহু অনালোচিত বিষয় তুলে ধরবে যা সমাজের গরিষ্ঠাংশের প্রতি সরকারের তাচ্ছিল্য প্রকট করে তুলবে। যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি বাজেট বক্তৃতায় দেওয়া হয় তা কবে কোথায় কার্যকরী হয় তা জানা যায় না। পরে তা মানুষ ভুলে যায়, বা ভুলিয়ে দেওয়া হয়। যেমন গত বাজেটে কর্মসংস্থান সংক্রান্ত ৫টি কর্মসূচির কথা এই বাজেটে আর কেউ মনে রাখেনি। মনে করা যাক। প্রথম বার নিয়োজিত কর্মীদের ভবিষ্যনিধি খাতে তিন কিস্তিতে এক মাসের বেতন বা  ১৫ হাজার টাকা (যেটা কম) জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। জানানো হয়েছিল ২০ লক্ষ নব্য নিয়োজিত উপকৃত হবে। এবারের বাজেটে জানানো হয়েছে খসড়া প্রস্তাব তৈরির কাজ চলছে। দ্বিতীয়ত, আগের বাজেটে বলা হয়েছিল ম্যানুফাকচারিং ক্ষেত্রে প্রথম নিয়োজিত  ৩০ লক্ষ কর্মীর প্রথম ৪ বছরের কাজের সময়ে নির্দিষ্ট হারে কর্মী ও নিয়োগকর্তার ভবিষ্যনিধিতে দেয় টাকা প্রদান করা হবে। এটির ক্ষেত্রেও খসড়া প্রস্তাব তৈরির কাজ চলছে। তৃতীয়ত, নিয়োগকর্তা যে অতিরিক্ত নিয়োগ করবে তার জন্য ভবিষ্যনিধিতে নিয়োগকর্তার দেয় টাকার ৩০০০ টাকা প্রতি মাসে দেওয়া হবে। তার দ্বারা ৫০ লক্ষ নিয়োগের সংস্থান হবে। এটিরও খসড়া নিয়ে কাজ চলছে। চতুর্থত, ২০ লক্ষ যুবককে ১০০০ আইটিআইএ প্রশিক্ষিত করা হবে , তার জন্য আইটিআই গুলিকে উন্নত করা হবে। এখানেও ক্যাবিনেট নোট চূড়ান্ত করা হচ্ছে। পঞ্চমত, ৫ বছরে ১ কোটি যুবককে ৫০০টি বৃহৎ কোম্পানিতে শিক্ষানবিশির বন্দোবস্ত করা হবে। এক্ষেত্রে কাজ এগিয়েছে। ওয়েব পোর্টাল তৈরি হয়েছে। কোম্পানিরা ১.২৭ লক্ষ শিক্ষানবিশের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ৬.২১ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে ৫ বছরের মধ্যে ১ বছর চলে গেছে। একটিও শিক্ষানবিশ নেওয়া হয়নি। বছরে ১.২৭ লক্ষ করেও যদি বিজ্ঞপ্তি বেরোয় তাহলেও আগামী চার বছরে ৫ লক্ষ শিক্ষানবিশও নিয়োজিত হবে না। ফলে আড়ম্বর করে করা ওই ঘোষণার বিষয়ে পুনরায় বাজেটে বলা হয় না কেন?

এই বাজেটে কী নেই এবং কী আছে তা নিয়ে বহু কথা বলা যেতে পারে। এক কথায় বলা যায় মোদি সরকারের সকল কাজ ও বাজেটের মত এই বাজেটেও সাদারণের জন্য অন্তর্বস্তুতে কিছু নেই, বহিরঙ্গে চমক আছে।

0 Comments

Post Comment