পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

বিকল্পহীন, তাই মোদিই ক্যাশিয়ার

  • 24 May, 2024
  • 0 Comment(s)
  • 1016 view(s)
  • লিখেছেন : বর্ণালী মুখার্জী
দেশ জুড়ে জয় শ্রী রাম স্লোগান তোলা মানুষ ভোট দিতে ঘর থেকে বেরোননি। তারা টের পেয়েছেন মোদী রাম নয়, এই যুগের রাবণ। যে সাধু বেশে, ভোট ভিক্ষা করতে এসেছে সীতাদের কাছে। ফলে এই ভোটে মহিলা পুরুষ নির্বিশেষে লক্ষণের গণ্ডি কেউ লংঘন করতে রাজি নয়। রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি বিরোধী দলগুলো যে গণ্ডি কেটে দিয়েছে।

মোদী অনবরত বলে যাচ্ছেন যে তাঁর কোন বিকল্প নেই । তিনি ঈশ্বরের দূত। আর ততোই আরএসএস রেগে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই চারটি দফায় আরএসএস নরেন্দ্র মোদির উপর থেকে হাত তুলে নিয়েছ বলে অভিযোগ বহু বিজেপি নেতা কর্মীর।  

রাগবে নাই বা কেন? বিজেপির মধ্যে চলে এক নেতা ফর্মুলা। মোদী নিজেকে সেই এক নেতার আসনে সেই যে বসিয়েছে আর নামার নাম করছেন না। সুতরাং এক নেতার নিয়ম অনুযায়ী দলের মধ্যে যত টাকা আসছে সব জমা হচ্ছে এবং হবে সেই এক নেতা, বিকল্পহীন, ঈশ্বরের দূত মোদিরই কাছে। এই যে সকলেই বলছেন বিজেপি ওয়াশিং মেশিন। সেই মেশিনে যে ২৫ জন ঢুকলো তারা তো ওই দুর্নীতির টাকা সমেত ঢুকলেন। ২৫ জনের চুরির টাকা আগে জমা হলো মোদির কাছে।  ফলে এই এক নেতা, বিকল্পহীন মোদী নিজের ভাগ ( যদি কর্ণাটক রাজ্য বিজেপি সরকারের ফর্মুলায় 40% হয়, তবে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ) সরিয়ে তার পর অজিত পাওয়ারকে বাকিটা ফেরত দিয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারী, হেমন্ত বিশ্ব শর্মা যে টাকা নিয়ে ঢুকেছেন সেটাও প্রথমেই জমা পড়েছে বিকল্পহীন মোদীরই জহর কোটের ঐশ্বরিক তহবিলে। নোট বন্দির কালো টাকা জমা হলো বিকল্প হীন মোদির কাছে। জাল কোম্পানির টাকা জমা হলো বিকল্প হীন মোদির কাছে । মেহুল চোকশির কাটমানি জমা হল বিকল্প হীন মোদীর কাছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের লোপাট ১৬ লাখ কোটির কাটমানি জমা পড়ল ঐশ্বরিক তহবিলে। লক্ষণ অমিত শাহ হয়তো কিছু পেলেন। কিন্তু আরএসএসের অন্যান্য নেতা কি শুধুই আঙুল চুষবে?

ভোটের এই পতনের পর্যায়ে এসে আরএসএস ভাবতেই পারে গাডকারিকে সামনে এনে মারাঠি সেন্টিমেন্ট উস্কে এবারের মত বিপদ কাটাবে। তারা ভাবতেই পারে উত্তরপ্রদেশে যোগীকে সামনে রেখে গুজরাটি ব্যবসায়ী বনাম উত্তরপ্রদেশের ব্যবসায়ীদের দ্বন্দ্বকে মোকাবেলা করবে। কিন্তু না মোদী সেসব হতে দেবেন না। তিনি বলেই দিচ্ছেন তিনি বিকল্পহীন। অতএব আরএসএসও আর মোদিকে রেয়াত করছে না। দেশ জুড়ে জয় শ্রী রাম স্লোগান তোলা মানুষ ভোট দিতে ঘর থেকে বেরোননি। তারা টের পেয়েছেন মোদী রাম নয়, এই যুগের রাবণ। যে সাধু বেশে, ভোট ভিক্ষা করতে এসেছে সীতা দের কাছে। ফলে এই ভোটে মহিলা পুরুষ নির্বিশেষে লক্ষণের গণ্ডি কেউ লংঘন করতে রাজি নয়। রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি বিরোধী দলগুলো যে গণ্ডি কেটে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সেই গণ্ডি । উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদব। তামিলনাড়ুতে স্ট্যালিন ।

যদিও বেচারা নরেন্দ্র মোদিরও হয়তো কিছু করার নেই । সে জানে যে সে যদি নিজেকে একমবদ্বিতীয়ম করতে না পারেন তবে তারই প্রাণ সংশয়। বিজেপির এত দিনের ফর্মুলা সেই ইঙ্গিতই করছে। সত্যপাল মালিক যে ভয়ে ভীত। কোন বিকল্পের অস্তিত্ব রাখে না মোদী। গুজরাটে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে মোদীর বিকল্প ছিলেন আরএসএস নেতা হারেন পান্ডিয়া। যার লাশ পাওয়া গেল রাস্তায়। স্ত্রী বলেছিলেন, রাজনৈতিক হত্যা।

অতএব মোদির বিকল্প যদি অন্য কেউ উঠে আসে, অথবা মোদি নিজেই যদি অন্য কারোর বিকল্প হয়ে ওঠে তাহলে সাঙ্ঘাতিক বিপদ।  সেক্ষেত্রে মোদির প্রাণ নিয়েও কি টানাটানি হয় না? তার চেয়ে চুরির বিশ্ব গুরু হওয়ার অপরাধে তিহার জেলটাই কি শ্রেয় নয় ঈশ্বরের এই সন্তানের? তবে ভারতের বিশ্ব গুরু হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যে দেশের ১৬ লাখ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে উধাও হওয়া সত্ত্বেও দেশ ভেঙে যায় না, দেউলিয়া হয় না, সেই দেশের ভিত মজবুত সন্দেহ নেই । কিন্তু যে সরকারের দেশকে শ্রেষ্ঠ আসনে বসানোর সদিচ্ছা থাকবে সে দেশের আয়কর যাতে মোট করের অন্তত ৫৫% হয় সেটা নিশ্চিত করতে চাইবে। আমেরিকা, জাপান, ইয়োরোপীয় দেশগুলি নিজেদের জিডিপির দেড়শো গুণ, তিনশো গুণ ঋণ নিয়ে থাকে। কারণ তারা বিশ্বগুরু। আমাদের দেশ সেদিন বিশ্ব গুরু হবে যেদিন অনির নিশ্চিন্তে 300 লাখ কোটি ঋণ নিতে পারবো। আর সেই ঋণ নিয়ে দেশের অন্তত ২০ শতাংশ মানুষকে আয়কর দাতা করতে পারব। বিশ্বগুরু একসময় ছিল ইংল্যান্ড। তার পর কিছুদিনের জন্য জার্মানি। এখন আমেরিকা হাফ বিশ্বগুরু। ভারত সেই জায়গা নিক, কিন্তু যুদ্ধবাজ হয়ে নয়। এটাই বুদ্ধ, চৈতন্য, গান্ধী, নেহরু, মানবেন্দ্রনাথ রায়, ভগৎ সিং, রবীন্দ্রনাথের ভারত চায়।

0 Comments

Post Comment