ভিতরে ভিতরে অস্থিরতা গ্ৰাস করছিল আহেলীকে। মোবাইলটাও চার্জ বন্ধ হয়ে মৃতের মতো পড়ে আছে। কাউকে যে ফোন করে জানাবে সে উপায়ও নেই। ওভার হেডের তার ছিঁড়ে যখন ট্রেনটা বিধাননগর আর দমদমের মাঝে দাঁড়িয়ে ছিল, তখন মায়ের সঙ্গে শেষ বারের মতো কথা বলেছিল।
এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে নেয় আহেলী। আগে এখানে কতগুলো টেলিফোন বুথ ছিল। কিন্তু মোবাইলের রমরমা সেগুলোর মালিকদের পেশা বদলাতে বাধ্য করেছে। ইস একটা বুথ থাকলে মা'কে অন্তত জানিয়ে দিতে পারত। আগে হলে বাবা ঠিক এসে সন্ধ্যা থেকে স্টেশনে বসে আহেলীর জন্য অপেক্ষা করতো। কিন্তু আজ সাতমাস ধরে বাবা বিছানায় শয্যাশায়ী।বাবাকে ফেলে মা এক মুহূর্তের জন্য কোথাও যেতে পারে না।আহেলীর মাঝে মাঝে মায়ের জন্য দুঃশ্চিন্তা হয়, এত পরিশ্রমে মায়ের না কিছু হয়ে যায়।তাই মা'কে সবসময় চিন্তা মুক্ত রাখার চেষ্টা করে।তবে মাঝে মাঝে বড় অসহায় লাগে আহেলীর। মা-বাবা ছাড়া এতবড় পৃথিবীতে তার আর কেউ নেই।
হঠাৎ করে চোখে পড়ে একটা টোটো খুব ধীর গতিতে এগিয়ে আসছে। আহলী দাঁড় করালে টোটোওয়ালা জানায় চার্জ কম আছে, তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। যদি যায় তবে আহেলীকে বিবেকসঙ্ঘ ক্লাবের সামনে নেমে যেতে হবে। আহেলী তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য বেশি ভাড়া দেওয়ার প্রস্তাব দেয়।কিন্তু টোটোওয়ালা রাজী হয় না। বলে, "দিদি আপনার ভাড়া দেওয়া লাগবে না। এমনিই চলুন। আমার বাড়ি শরিফাবাদ পেড়িয়ে দেবীগঞ্জে। আপনি তো জানেন শরিফাবাদ কেমন জায়গা। ওখানে টোটো বন্ধ হয়ে পড়লে আমার সাড়ে সব্বোনাশ হয়ে যাবে।"
আর কথা না বাড়িয়ে আহেলী টোটোতে উঠে বসে। বিবেকসঙ্ঘ ক্লাব থেকেও তাদের বাড়ি দেড় কিমির মতো।
টোটোতে ওঠার পর পরই আবার ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামল। টোটোওয়ালা বলল,"আজ সকাল থেকেই এই দুর্যোগ চলছে। কী কুক্ষণেই যে আজ বেড়িয়েছিলাম। কোথাও কারেন্ট নেই। ভেবেছিলাম স্ট্যান্ডে চার্জ দিয়ে নেব।"
সত্যি আহেলীও তো আজ কী কুক্ষণে অফিসে গেল সি.এল বাঁচাতে। মা কতবার মানা করেছিল, "আহি এমন বৃষ্টিতে আজ আর অফিস যাস না।" শোনেনি। আসলে বাবার জন্য সিএল গুলো বাঁচিয়ে রাখে। কখন কী দরকার পড়ে হঠাৎ করে।
অফিসে আজ অনেক স্টাফ অফ ছিল। তাই কাজের প্রেশারও খুব ছিল। অনেকগুলো ফাইল রেডি করে বড় সাহেবের টেবিলে পাঠিয়েছে। সাহেব খুব প্রশংসা করেছে আহেলীর কাজের। আহেলী জানে ডিপার্টমেন্টাল পরীক্ষার পাশাপাশি বড় সাহেবের সুপারিশও প্রমোশনে সাহায্য করে। আর প্রমোশনটা পেতেই হবে আহেলীকে।
" দিদি, আপনি এখানে নেমে যান।" টোটোওয়ালার কথায় সম্বিত ফেরে আহেলীর। এখনো জোরে বৃষ্টি হচ্ছে। টোটো থেকে নেমে দৌড়ে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দাঁড়ালো। উল্টো দিকে বিবেকসঙ্ঘ ক্লাবের উজ্জ্বল আলো বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার কিছুটা অংশকে ভিজিয়ে দিচ্ছে। ঘন অন্ধকারের মাঝে এই আলোকে যেন অশনিসংকেত বলে মনে হচ্ছে আহেলীর। বাসস্ট্যান্ডের অন্ধকারে যতটা সম্ভব মিশে দাঁড়িয়ে রইল। একসময় খুব ঘটা করে এখানে বাস টার্মিনাল আর স্ট্যান্ডটা করা হয়েছিল। তৎকালীন পরিবহন মন্ত্রী করেছিলেন। কোলকাতা, ব্যারাকপুরের বাস ছাড়তো। দু'বছর যেতে না যেতে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে সব বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে এই সুবিশাল জায়গা হানাবাড়ির মতো পড়ে আছে। বাস টার্মিনালের গা ঘেঁষেই বিবেকসঙ্ঘ ক্লাব মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এলাকার মানুষ সমঝে চলে এই ক্লাবকে।
আর এই মাঝরাতে ঘন অন্ধকারে বৃষ্টির মধ্যে অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে আহেলীকে। যখন তখন কোনো অঘটন ঘটে গেলে কেউ হয়তো আহেলীর কোনো খোঁজই পাবে না। ঠিক যেমন বছর দেড়েক আগে মিষ্টুদির ক্ষতবিক্ষত শরীরটা বাঁশবাগানের ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছিল। আজ পর্যন্ত মিষ্টুদির খুনিরা কেউ ধরা পড়েনি। পুলিশ অবশ্য এই বিবেকসঙ্ঘ ক্লাবের দু'জন ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছিল। কিন্তু প্রমাণের অভাবে আর সম্বুদ্ধ রায়চৌধুরীর তৎপরতায় তারা ছাড়া পেয়ে গেছিল কয়েকদিনের মধ্যে।
হঠাৎ একটা নারীকন্ঠের তীব্র চিৎকার আহেলীর শরীরকে স্থবির করে দিল। প্রস্তরবৎ দাঁড়িয়ে আহেলী দেখতে পেল তিন চারজন ছেলে মিলে একজনকে টেনে হিঁচড়ে ক্লাবের বারান্দায় তুলছে। আর সে চীৎকার করে বলছে "ছাড়, ছাড়, মর মর।" কোনোরকমে তাকে বারান্দায় তুলে থামের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখল। চীৎকার অবরুদ্ধ করার জন্য তার মুখের দশাও এক হল। আহেলী বিস্ফারিত চোখে দেখল আরে এ তো মালতী পাগলী। যে কোমরে অজস্র জামা কাপড় জড়িয়ে ঘুরে বেড়ায়। তাকে যতই জামা কাপড় দাও না কেন সমস্ত ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত রেখে কোমরে জড়িয়ে রাখবে। যার ভারে পাগলীর হাঁটা চলা করতেও অসুবিধা হয়। আজ সেই পাগলীকেই এরা জোরকরে তুলে এনে বেঁধে রেখেছে। যার একমাথা জট পাকানো রুক্ষ চুল। সারা গায়ে নোংরার কালো আস্তরণ, আর এই শীতে সারা শরীর যেন চৈত্রের চৌচির ভূমি হয়ে আছে। দুদিন আগেই আহেলীর মা মালতী পাগলীকে একটা পুরোনো কম্বল দিয়েছিল। আহেলী সেদিন বারান্দা থেকে ভালো করে নিরীক্ষণ করেছিল। এখনও কম্বলটা কোমরে বাঁধা। মানুষ কতটা অমানুষ হলে এই পাগলীটাকেও রেয়াত করে না। এমন সময় একটা বুলেট এসে থামে ক্লাবের সামনে। দু'জন দুটো ব্যাগ নিয়ে বাইক থেকে নামে। লোক দুটোকে চিনতে কোনও রকম অসুবিধা হয়না আহেলীর। একজন চান্দু, যে আহেলীদের পাড়ার বখাটে ছেলে। যাকে ছোটবেলায় পড়াত আহেলী। একরাশ ঘৃণা দলাপাকিয়ে ওঠে আহেলীর ভিতর থেকে। আর একজন সম্বুদ্ধ রায়চৌধুরী। বিখ্যাত ব্যারিস্টার বোধিসত্ত্ব রায়চৌধুরীর নাতি।
মা-বাপ মরা নাতিকে অবাধ স্বাধীনতা আর আদর দিয়ে মানুষ করেছিলেন বোধিসত্ত্ব বাবু।এলএলবি. পাশ করার পর সম্বুদ্ধ দাদুর সঙ্গে কিছুদিন প্রাকটিসও করেছিল। কিন্তু দাদু মারা যাওয়ার পর অগাধ সম্পত্তির মালিক হওয়ার পর ওকালতির ব্যবসা লাটে তুলে মস্তানি করে বেড়ানো ধরেছে। টার্মিনালের গা ঘেঁষে এই ক্লাবের পত্তন সম্বুদ্ধর হাতেই। কয়েকজন বাঁধা দিয়েছিল ক্লাবের বিল্ডিং তোলার সময় কিন্তু তাদের নামে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে এমন নাকানি চোবানি খাইয়েছিল যে ভয়তে লোকে ওর কাছ থেকে শতযোজন দূরে থাকে। আসলে শিক্ষিত মস্তানের থেকে, বোধহয় অশিক্ষিত মস্তান মানুষের কাছে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ।
আহেলী যখন ক্লাস টুয়েলভে পড়ে, তখন কিশোর সম্বুদ্ধ এসে আহেলীকে প্রেম প্রস্তাব দিয়েছিল। আহেলী না করে দিয়েছিল। কিন্তু তবুও আহেলীর স্কুল যাওয়ার সময়, টিউশনি যাওয়ার সময় পিছু করত, এমনকি বাড়ির সামনে এসে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত। শেষে আহেলী বাধ্য হয়ে বোধিসত্ত্ব বাবুর কাছে নালিশ করেছিল। বোধিসত্ত্ব বাবু আহেলীর পরিচয় জিজ্ঞাসা করে আহেলীর মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিল, "তুমি বাড়ি যাও দিদিভাই। আমি কথা দিচ্ছি সম্বুদ্ধ তোমাকে আর ডিস্টার্ব করবে না।"
না, তারপর থেকে আর কখনও সম্বুদ্ধ আহেলীকে ডিস্টার্ব করেনি। কিন্তু এরপর থেকে যতবারই আহেলীর সঙ্গে দেখা হয়েছে, এমন ভাবে আহেলীর দিকে তাকায় যে আহেলীর বুকের ধুকপুকুনি কয়েকশো গুণ বেড়ে যায়।
আজ সেই সম্বুদ্ধকে দেখে ঘৃণায় হতাশায় ভয়ে চোখ ফেটে জল বেড়িয়ে আসছে আহেলীর। আজ এই পাগলীর শরীরকে নিয়ে নিজেদের জৈব চাহিদা পূরণ করতে চায়, তাহলে আহেলীকে পেলে এরা কী না করবে!
দুঃশাসনের মতো চান্দু পাগলীর কোমর থেকে এক এক করে কাপড় খুলছে, আর অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে সবাই। তারপর সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে দেওয়া হল। অনতি দূরে স্তূপিকৃত পাগলীর জামা কাপড়, যার দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে গোঙাচ্ছে পাগলী। এরপর সম্বুদ্ধ তাতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিল। তারপর পাগলীর চুলগুলো ধারালো কাঁচি দিয়ে নিমেষে নামিয়ে দিল, পাগলী এবার কান্না করছে। বুঝি, সব মেয়েদের যন্ত্রণার সুর একই। অগ্নিকুন্ডের সামনে অনাবৃত পাগলীকে যেন মাকালীর মতো লাগে আহেলীর। কিন্তু মাকালীর করাল মূর্তি নয়, যেন অসহায় আতুর মূর্তি প্রতিভাত হচ্ছে বলে মনে হয়।
ক্লাবঘরের দরজা হাট করে খোলা। সেখানে মদ মাংসের আসর বসেছে। উদর পূর্তির পর চাহিদার পূর্তি। লাল আগুনের তাপে বিবেকানন্দর মূর্তিকেও অসহায় লাগে, আহেলীর মনে বিবেকের দহন উৎসব পালিত হচ্ছে যেন।
নাহ্, আর এক মুহূর্ত নয়, এদের চোখে ধরা পড়লে আহেলীকেও এরা ছিঁড়ে খাবে। পালাতে হবে এখান থেকে। ঝটপট নিজেকে মনে মনে গুছিয়ে নেয়। কিন্তু আহেলী যেই দৌড়ে বেরোতে যাবে, এতক্ষণ গুটিসুটি মেরে পড়ে থাকা কুকুর গুলো তারস্বরে চীৎকার করে ওঠে। ওপার থেকে তীব্র টর্চের আলো এপারে ঝাঁপিয়ে পড়ে,সঙ্গে "কে রে শালা, কে রে "। আহেলী তীব্র আতঙ্কে আবার বাসস্ট্যান্ডের অন্ধকার আড়ালে নিজেকে মিশিয়ে দেয়।
"ও কিছু নয়,শিয়াল টিয়াল দেখে চেল্লাচ্ছে গুরু। তুমি চিন্তা করো না। এই ফাঁপিতে সব শালারা লেপের তলায় সিঁটকে আছে।"
আহেলী তীব্র ঠান্ডায়ও দরদর করে ঘামতে থাকে।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে আবার পাগলীকে ঘিরে ধরে তিনজন। পাগলী এখন নিশ্চুপ। বোধহয় বুঝে গেছে তার সব প্রতিরোধ ব্যর্থ এদের কাছে। ক্লাবের ভেতর থেকে ধোঁয়া ওঠা গরম জলের বালতি নিয়ে আসে একজন। সম্বুদ্ধ বলে "গরমটা চেক করে নিস, আবার পুড়িয়ে দিস না।"
ছেলেগুলো মিলে পাগলীর নগ্ন শরীরে, মাথায়, মুখে সাবান মাখিয়ে স্নান করিয়ে দেয়। তারপর গা মুছিয়ে দেয়। আহেলী বোঝে বলির আগে ছাগশিশুকে যেমন পরিচর্যা করে আহুতির উদ্দেশ্যে রেডি করা হয়, এক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। সম্বুদ্ধ এসে আদেশ দেয় "বারান্দাটা ভালো করে পরিষ্কার করে দে। কোন চিহ্ন যেন না থাকে।"
একজন ছেলে ব্যাগের থেকে শাড়ি বের করে। চান্দু পাগলীকে ধরে সায়া শাড়ি ব্লাউজ পরিয়ে দেয়। বলে, "দেখ শালী যদি এগুলো খুলে ফের ন্যাংটা হয়ে ঘুরবি তো এখানেই পুঁতে ফেলে দেব।" সম্বুদ্ধর উদ্দেশ্যে বলে, "দেখ গুরু আমার মায়ের কাপড়ে পাগলীকে আমার মায়ের মতোই লাগছে।"
সম্বুদ্ধ বলে ,"নে, নে মালতীদিকে এবার খেতে দে। আর কাল তোরা ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবি। আর এই ক্লাবেই থাকার ব্যবস্থা করবি। অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম মালতীদির জন্য কিছু করা যায় কিনা। আজ সন্ধ্যা থেকেই মিষ্টুদির কথা মনে পড়ছিল। তখন মনে হল আমাদের আশপাশের মানুষের মাঝে মিশে থাকা শয়তানগুলো মালতীদির সঙ্গেও না অমন করে।"
"ঠিক বলেছ গুরু।"
চান্দুর দিকে চোখ যায় আহেলীর। দেখে পরম মমতায় চান্দু সম্বুদ্ধর মালতীদিকে খাইয়ে দিচ্ছে। আর মালতী পাগলী যেন শিশু হয়ে পরম নির্ভরতায় সেই খাবার গুলো মুখে তুলে নিচ্ছে।
না, আহেলীর আর ভয় করে না। মনে হয় ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার মতো, ওর শরীর থেকে ভয়টাও ছেড়ে চলে গেছে।
ধীর পদক্ষেপে অন্ধকারের পর্দা সরিয়ে বেড়িয়ে আসে আহেলী। কুকুর গুলোর আর নিদ্রাভঙ্গ হয়না। সম্বুদ্ধর সামনে এসে দাঁড়ায়। আহেলীকে দেখে চমকে ওঠে সম্বুদ্ধসহ সকলে। চান্দু বলে, "আহি দি তুমি এত রাতে এখানে?"
"হ্যাঁ ভাই, ট্রেন গন্ডগোলে এমন দুর্ভোগ। তোর সম্বুদ্ধদাকে বল না, আমায় যেন একটু বাড়ি পৌঁছে দেয়।"
সম্বুদ্ধ বাইকে স্টার্ট দেয়। বাইকে বসে পরম নির্ভরতায় সম্বুদ্ধর কাঁধে হাত রাখে। সম্বুদ্ধর হৃদয়ের তীরে উথাল পাতাল ঢেউ আছড়ে পড়ে। আর আহেলীর মনে হাজারটা রঙিন প্রজাপতি যেন রঙের আল্পনা এঁকে চলে। নিমেষে বাড়ি পৌঁছে যায়। নামার সময় সম্বুদ্ধকে নিজের ফোন নাম্বার দিয়ে বলে, "ঠিক এক ঘন্টা পরে ফোন করো, আমি অপেক্ষা করব।"
আহেলী যতক্ষণ না ঘরের ভিতরে ঢোকে, ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে সম্বুদ্ধ। দশবছর আগের কিশোর বেলার স্মৃতিতে দু'জনেই আর্দ্র হয়ে ওঠে। হঠাৎ করে কারেন্ট আসে, আলো জ্বলে ওঠে রাস্তার পোস্ট গুলোতে। এই আলো যেন দুজনের জীবনে নতুন দিনের আলোকবর্তিকা হয়ে দেখা দেয়। সম্বুদ্ধ বাইকে স্টার্ট দেয়, সম্বুদ্ধর বুলেটের আওয়াজ যেন শ্যামের বাঁশি হয়ে অবিরাম বেজে চলে আহেলীর মননে।
---------------